এরশাদের অনুষ্ঠানে জুতা নিয়ে ধাওয়া হট্টগোল by নিয়াজ মাহমুদ
নির্দেশ মেনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো
প্রার্থীদের সান্ত্বনা দিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এরশাদ। ক্ষুব্ধ নেতারা
ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একে অন্যের প্রতি। তৃণমূলের নেতারা প্রকাশ্যে ক্ষোভ
ঝাড়েন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের ওপর। এ সময় জুতা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানত হোসেনকে বহিষ্কার
করা হয়েছে দল থেকে।
ক্ষোভ
প্রশমনে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গেও সুর মিলিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদ
বলেন, আমি নিঃস্ব, প্রেসিডিয়াম সদস্যদের দলে কোন কন্ট্রিবিউশন নেই। সকাল
১১টায় বনানীস্থ এরশাদের রাজনৈতিক কার্যালয় এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে
সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ছিল না। এরশাদের বক্তব্যের পর পরই বৈঠক শেষ হয়
দুপুর ১টায়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একাধিক নেতা মানবজমিনকে জানিয়েছেন,
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ বক্তৃতা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় হৈ
হট্টগোল। নেতারা এরশাদের কাছে তাদের কথা তুলে ধরার সুযোগ চান। এরশাদ বলেন,
তোমাদের সবার কথাই শুনবো। এরপর এরশাদ বক্তব্য শুরু করলে সমস্বরে উপস্থিত
নেতারা বলেন, ‘স্যার, আপনার আশপাশে দালাল। ওদেরকে বাদ দেন, ওরা দালাল। সারা
দেশে সংগঠন নেই। কমিটি নেই।’ এ সময় এরশাদ বলেন, ‘আমি তো মহাসচিবকে সংগঠন
করতে পাঠিয়েছি। মহাসচিব তো সারা দেশ সংগঠনকে সংগঠিত করতে কাজ করছেন।’ তখন
নেতারা বলেন, ‘সারা দেশে সংগঠন নেই। আপনি তৃণমূলে যান। ঘুরে আসুন, দেখে
আসুন।’ জাতীয় ও উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে টেনে কর্মীরা বলেন, ‘প্রেসিডিয়াম
সদস্যরা আমাদের কোন গাইডলাইন দেন না। প্রেসিডিয়ামে যারা আছেন তারা দলের
কথা চিন্তা করেন না। তারা শুধু নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। আমরা এখানে যারা আছি
তারা অনেক প্রেসিডিয়াম সদস্যদের চেয়েও যোগ্য।’ এরশাদ তখন নেতাদের সঙ্গে
কণ্ঠ মিলিয়ে বলেন, ‘তোমরা ঠিকই বলেছো। প্রেসিডিয়াম সদস্যদের দলে কোন
কন্ট্রিবিউশন নেই। আমি নিঃস্ব। আমি রিক্ত। তবে, তোমাদের দুঃখ তোমরা
নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারোনি। আর আমি তো সব হারিয়েছি। তারপরও আমি বেঁচে
আছি। আমি যতদিন আছি তোমাদের সঙ্গেই আছি। তোমরা আমার আদেশ-নির্দেশ মান্য
করেছো। আমি পিতা হিসেবে গর্বিত।’ এরশাদ বলেন, ‘আমি কেন নির্বাচনে যাই নাই।
তোমরা একদিন বুঝবে। এটাই ইতিহাস হবে। ইতিহাসই এর উত্তর দেবে।’ এরশাদ অরও
বলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। হতাশ হওয়ারও কারণ নেই। সংসদ
নির্বাচন নিয়ে যা ঘটেছে তা পেছনে ফেলে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার পথে আমাদের
এগিয়ে যেতে হবে। আমরা অনেক দুঃসময় পেছনে ফেলে এসেছি। এবার আমাদের সামনে
এগিয়ে যেতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’ এরশাদ বলেন, ‘আমি ৫ বছর জেলে ছিলাম।
২৩টি মামলা হয়েছিল। এখনও আমার মামলা শেষ হয়নি। মামলা চলছে। আমার প্রশ্ন,
আমার মামলা কেন শেষ হয় না?’ তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিটি মুহূর্তে, সেকেন্ডে
জ্বালা-যন্ত্রণায় ভুগি। তবে আমি গর্বিত, আমার নির্দেশে তোমরা মনোনয়নপত্র
প্রত্যাহার করেছো। তোমরা আমার বাধ্য সন্তান। আর যারা করেনি তারা আমার
অবাধ্য সন্তান। তোমরা সরকারের কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগতে পারো। আমাকে
বলো। আমি তোমাদের দেখবো।’
নির্বাচনে অংশ নেয়া নেতাদের উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, ‘এ নির্বাচনই জীবনের শেষ নির্বাচন নয়। সামনে আরও নির্বাচন হবে। জাতীয় পার্টি সে নির্বাচনে অংশ নেবে। সে নির্বাচনে তোমাদের সবাইকে প্রার্থী করা হবে। আমি তোমাদের তালিকা রেখে দিয়েছি। বৈঠক চলাকালে এরশাদের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানত হোসেন বক্তৃতা দিতে চাইলে তাকে চুপ থাকতে বলেন ঢাকা উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতি। এ সময় আমানত হোসেনও ফয়সলকে চুপ থাকতে বলেন। সেখানে উপস্থিত নেতারা ফয়সাল চিশতিকে ‘দালাল, দালাল, তুই দালাল’ ইত্যাদি বলে গালাগাল করেন। উভয় পক্ষে জুতা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানত হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়েছে দল থেকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল কাশেম, মীর আবদুস সবুর আসুদ, যুগ্ম মহাসচিব জহিরুল ইসলাম জহির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম রুবেল, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন বাবুল, টাঙ্গাইল জেলা জাপার সভাপতি আবদুস সালাম চাকলাদারসহ সারাদেশের প্রায় শতাধিক মনোনয়নপ্রত্যাহারকারি নেতা। এর অগে বৈঠকের শুরুতেই বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলেন, আগামীতে দলের কাউন্সিলে আপনারাই নেতৃত্ব দেবেন। আগামী নির্বাচনে আপনারাই প্রার্থী হবেন। এজন্য তৃণমূলে পার্টিকে সংগঠিত করতে হবে। হাওলাদার বলেন, আপনারা পার্টিকে সংগঠিত করুন। আমাকে জানান, আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি। স্যারকে আপনাদের সব কর্মসূচিতে নিয়ে যাবো। জানি, আপনাদের সীমাবদ্ধতা আছে। আমাকে জানান, আমি আপনাদের সব- ধরনের সহযোগিতা করবো। বৈঠক শেষ আবার জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ জাতীয় পার্টিকে সারাদেশে সুসংগঠিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। ৭২টি জেলার নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। পার্টির ঐক্য ও নেতাদের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। বৈঠকের ব্যাপারে হাওলাদার মানবজমিনকে বলেন, ‘যারা নির্বাচনে গিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছে স্যার তাদের সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছেন।’
নির্বাচনে অংশ নেয়া নেতাদের উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, ‘এ নির্বাচনই জীবনের শেষ নির্বাচন নয়। সামনে আরও নির্বাচন হবে। জাতীয় পার্টি সে নির্বাচনে অংশ নেবে। সে নির্বাচনে তোমাদের সবাইকে প্রার্থী করা হবে। আমি তোমাদের তালিকা রেখে দিয়েছি। বৈঠক চলাকালে এরশাদের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানত হোসেন বক্তৃতা দিতে চাইলে তাকে চুপ থাকতে বলেন ঢাকা উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতি। এ সময় আমানত হোসেনও ফয়সলকে চুপ থাকতে বলেন। সেখানে উপস্থিত নেতারা ফয়সাল চিশতিকে ‘দালাল, দালাল, তুই দালাল’ ইত্যাদি বলে গালাগাল করেন। উভয় পক্ষে জুতা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানত হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়েছে দল থেকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল কাশেম, মীর আবদুস সবুর আসুদ, যুগ্ম মহাসচিব জহিরুল ইসলাম জহির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম রুবেল, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন বাবুল, টাঙ্গাইল জেলা জাপার সভাপতি আবদুস সালাম চাকলাদারসহ সারাদেশের প্রায় শতাধিক মনোনয়নপ্রত্যাহারকারি নেতা। এর অগে বৈঠকের শুরুতেই বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলেন, আগামীতে দলের কাউন্সিলে আপনারাই নেতৃত্ব দেবেন। আগামী নির্বাচনে আপনারাই প্রার্থী হবেন। এজন্য তৃণমূলে পার্টিকে সংগঠিত করতে হবে। হাওলাদার বলেন, আপনারা পার্টিকে সংগঠিত করুন। আমাকে জানান, আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি। স্যারকে আপনাদের সব কর্মসূচিতে নিয়ে যাবো। জানি, আপনাদের সীমাবদ্ধতা আছে। আমাকে জানান, আমি আপনাদের সব- ধরনের সহযোগিতা করবো। বৈঠক শেষ আবার জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমীন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ জাতীয় পার্টিকে সারাদেশে সুসংগঠিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। ৭২টি জেলার নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। পার্টির ঐক্য ও নেতাদের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। বৈঠকের ব্যাপারে হাওলাদার মানবজমিনকে বলেন, ‘যারা নির্বাচনে গিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছে স্যার তাদের সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছেন।’
No comments