মন্ত্রীর মহিষের খোঁজে পুলিশ হয়রান!
এবার মন্ত্রীর হারানো মহিষের পালের খোঁজে ব্যাপক তল্লাসিতে নেমেছে পুলিশ। হারানো সাতটি মহিষের মধ্যে চারটি উদ্ধারও হয়েছে। তবে নিখোঁজ রয়েছে আরও তিনটি। আর এই মহিষগুলো উত্তরপ্রদেশের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী আজম খানের। আজম খান শুধু উত্তরপ্রদেশের নগর উন্নয়ন মন্ত্রীই নন, তিনি ক্ষমতাসীন সমাজবাদী পার্টির সবচেয়ে জবরদস্ত নেতা। মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবও তাকে রীতিমতো সমীহ করে চলেন। তার আর একটা পরিচয়, আজম খান কখনওই বিতর্ক থেকে বেশিদিন দূরে থাকেন না। মোজাফফরনগরের দাঙ্গা থেকে ইউরোপ-আমেরিকায় বিধায়কদের নিয়ে প্রমোদ ভ্রমণ, সব বিষয়েই আজম খানের নানা মন্তব্যকে মিডিয়া তুলোধুনা করেছে, কিন্তু তিনি কখনও এতটুকুও বিচলিত হয়েছেন বলে জানা নেই। এই আজম খানের গ্রামের খামারবাড়ি থেকেই কে বা কারা শনিবার ভোররাতে সাতটি মহিষ নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপরেই নাটকের শুরু। দাঙ্গা দমন থেকে নারী-নির্যাতন রোধ কোনো ব্যাপারেই যে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ কোনো তৎপরতা দেখায় না বলে অভিযোগ, সেই পুলিশই বিশাল বাহিনী, গাড়ির বহর আর গোয়েন্দা কুকুর নিয়ে তাদের বিরাট দল সঙ্গে সঙ্গে হাজির হয়ে যায় মন্ত্রীর খামারবাড়িতে।
এরপরই শুরু হয় তল্লাশি। আর এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন রামপুরের পুলিশ সুপার সাধনা গোস্বামী নিজে। তিনি জানান, ‘এই রিসোর্ট আর এই মহিষের পাল সবই মন্ত্রীজীর। এই পাসিয়াপুরা গ্রামে খামারবাড়ির পেছনে যে চাষের ক্ষেত আর জঙ্গল আছে সে দিক থেকে চোররা এসে মহিষগুলোকে ভাগিয়ে নিয়ে গেছে বলে আমরা সন্দেহ করছি।’ এসপি আরও বলেন, ‘এখন মহিষের পায়ের ছাপ ধরে ধরে আমরা এগোচ্ছি। আশা করছি এই পথে এগিয়েই আমরা চুরির কিনারা করতে পারব।’ মহিষের পালের সন্ধানে দিনরাত এক করে এরপর খোঁজা শুরু করে এলাকার অন্তত তিনটি থানার পুলিশ। এলাকার কারও মন্ত্রীর বাড়ি থেকে চুরির সাহস হবে না ধরে নিয়ে আশপাশের জেলাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তৈরি করা হয় সন্দেহভাজনদের নামের তালিকা। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদও শুরু করে দেয়। এসপি সাধনা গোস্বামী জানান, ‘এ রকম চুরির ইতিহাস যাদের আছে বা যাদের আমরা সন্দেহ করছি, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি আমরা। আশা করছি তা থেকে আমরা তদন্তের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সূত্রও পাব।’ চুরির প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর রোববার বিকালে অবশেষে পুলিশ জানায়, খোয়া যাওয়া মহিষগুলোর মধ্যে কয়েকটিকে তারা উদ্ধার করেছে। এখন এগুলোই আজম খানের হারানো মহিষ কিনা, তা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।
No comments