ভোট শেষ নির্বাচন শেষ হয়নি
থাইল্যান্ডে উত্তেজনাপূর্ণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোটগ্রহণ ব্যাহত হয়। প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পুনর্নির্বাচন ঠেকাতে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক প্রচেষ্টার মধ্যে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। নির্বাচন কমিশনের তথ্য মোতাবেক, এদিনের নির্বাচনে ৮৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। নির্বাচন কমিশন জানায়, স্থানীয় সময় বিকাল ৩টার নির্ধারিত সময়েই ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীদের বাধার কারণে কয়েকশ’ কেন্দ্রে ভোট নেয়াই সম্ভব হয়নি। ভোট আগেই বন্ধ করে দিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান সুপাচাঈ সচারয়েন বলেন, ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ভোট গণনাও শেষ। তবে নির্বাচন এখনও শেষ হয়নি। যে সব কেন্দ্রগুলোতে রোববার ভোট নেয়া গেল না সেসব কেন্দ্রের ভোটগ্রহণের পরই নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এছাড়া ২ ফ্রেব্র“য়ারি জাতীয় নির্বাচনের আগে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ‘আগাম ভোট গ্রহণ’র সময়ও বিরোধীদের বাধায় কিছু কিছু কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়েছিল। সেসব কেন্দ্রেও নতুন করে ভোট গ্রহণের পর থাইল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। ফেব্র“য়ারির ২৩ তারিখকে থাইল্যান্ডের পরবর্তী নির্বাচনের দিন হিসেবে ধার্য করেছেন সুপাচাঈ সচারয়েন। এদিন যদি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়া ভোটগ্রহণ সুসম্পন্ন হয় তবেই নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এদিকে, থাইল্যান্ডের সংসদ নির্বাচন ২ ফেব্র“য়ারি পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুরু হওয়ার পর গোলযোগ দেখা দিয়েছে। ব্যাংককের ৪৩৮টি কেন্দ্রে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে ও দক্ষিণের ৯টি প্রদেশ, যেখানে কোনো নির্বাচনী তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। থাইল্যান্ডে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৯৩৫২টি, যাদের মধ্যে ৪৩৮টি কেন্দ্র অচল হয়ে পড়ে আছে। রোববার নির্বাচন শুরুর প্রথম প্রহরে ইংলাক তার ব্যাংককে বাসভবনের নিকটস্থ ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার সমুন্নত রাখার জন্যে এ নির্বাচন সংঘটিত হওয়া প্রয়োজন। এদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে বিরোধী বিক্ষোভকারীরা ভোট গ্রহণে বাধা দিচ্ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। ব্যাংককে সরকার সমর্থক ও বিরোধী বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দেশটিতে আরও সহিংসতার আশংকা জোরদার হওয়ার একদিন পর এ ভোট হল। প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সরকারের পদত্যাগ এবং একটি অনির্বাচিত ‘পিপলস কাউন্সিল’ গঠনের দাবিতে প্রায় তিন মাস ধরে রাজধানীতে বিক্ষোভ করে আসছেন সরকার বিরোধীরা। এ প্রেক্ষাপটে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টিসহ বিরোধীরা এ নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছে। তারা ভোটকেন্দ্র পাহারা দেয়ারও অঙ্গীকার করে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, পরবর্তী সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ এবং সত্যিকারের ভোট হতে হলে প্রথমে সংস্কার প্রয়োজন। রোববারের নির্বাচনে যারা বিভিন্ন কারণে ভোট দিতে পারবেন না তাদের জন্য গত রোববার ২৬ জানুয়ারি আগাম ভোট নেয়া হয়। তবে বিক্ষোভকারীরা ভোটকেন্দ্রের বাইরে অবস্থান নেয়ায় ভোটগ্রহণ ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। সরকার বিরোধীরা ইংলাকের পুয়ে থাই পার্টির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ভোট কেনাবেচার অভিযোগ করে বলেছেন, ইংলাক তার ভাই ও পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার হাতের পুতুল মাত্র। ইংলাক এ অভিযোগ প্রত্যাখান করেছেন। কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোট নেয়া শুরু হয়েছে।
No comments