বাশারকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা বাড়িয়েছে ইরান

বাশার আল-আসাদ
চতুর্থ বছরে গড়াতে চলেছে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ। এমন প্রেক্ষাপটে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীকে সহায়তা দেওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে ইরান। তারা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে এবং সেনাদের প্রশিক্ষণ দিতে অভিজাত দল পাঠিয়েছে। সামরিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে অবগত সূত্রগুলো এ খবর দিয়েছে। দীর্ঘদিনের মিত্র রাশিয়ার সামরিক রসদ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি সরবরাহের পাশাপাশি তেহরানের এই বৃহত্তর সহায়তা বাশারকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিরাট ভূমিকা রাখছে। আর এমন একটা সময়ে তিনি ইরানের সহায়তা পাচ্ছেন, যখন লড়াইয়ের ক্ষেত্রে তাঁর বাহিনী বা বিরোধী যোদ্ধাদের কেউই চূড়ান্ত জয় পাওয়ার মতো অবস্থানে নেই। শিয়াপন্থী ইরান এরই মধ্যে আসাদের হাত শক্তিশালী করতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেছে, যা সুন্নিপন্থী আরব দেশগুলোর সঙ্গে একটা সাম্প্রদায়িক পরোক্ষ যুদ্ধের রূপ নিয়েছে। সিরিয়ায় ইরানের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতির বিষয়টি যদিও নতুন নয়, সামরিক বিশ্লেষকদের বিশ্বাস, তেহরান সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটিতে অধিক হারে বিশেষজ্ঞ পাঠিয়েছে।
এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশ-বিদেশে বাশারের শত্রুদের নিশ্চিহ্ন করা। সামরিক সদস্যদের মোতায়েন বিষয়ে অবগত ইরানি সূত্র, সিরিয়ার বিরোধী সূত্র এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়ায় তেহরানের যে শত শত সামরিক বিশেষজ্ঞ মোতায়েন রয়েছেন, তাঁদের থেকে এখন ব্যাপক সুবিধা পাচ্ছেন বাশার। এর মধ্যে রয়েছেন প্রভাবশালী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের বহির্বিভাগ ও গোপন শাখা অভিজাত কুদস বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কমান্ডাররা। পাশাপাশি আইআরজিসির সদস্যরাও রয়েছেন। তাঁদের কাজ সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেওয়া নয়; বরং সিরিয়ার বাহিনীকে নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া। পাশাপাশি গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহেও তাঁরা সহায়তা দিয়ে থাকেন। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘অস্ত্রশস্ত্র বা আর্থিক সহায়তা দিয়ে বা সেনাসদস্য পাঠিয়ে ইরান কখনোই সিরিয়ায় সম্পৃক্ত হয়নি।’ তবে ইরানের সাবেক একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, যিনি আইআরজিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ—জানিয়েছেন সিরিয়ায় ইরানি বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। তিনি জানান, কুদস বাহিনী সিরিয়ায় গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছে। কুদস বাহিনী এবং আইআরজিসির শত শত কমান্ডার সিরিয়ায় রয়েছেন, তবে তাঁরা সরাসরি লড়াইয়ে সম্পৃক্ত নেই। সম্প্রতি অবসর নেওয়া একজন জ্যেষ্ঠ আইআরজিসি কমান্ডার জানান, সিরিয়ায় কুদস বাহিনীর কমপক্ষে ৬০-৭০ জন কমান্ডারকে আসাদের সামরিক বাহিনী ও তাঁর কমান্ডারদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কুদস বাহিনীর কমান্ডারদের নির্দেশনা অনুসারেই রেভল্যুশনারি গার্ড যুদ্ধ পরিচালনা করে থাকে। ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দাবি মোতাবেক, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীকে উপদেশ, প্রশিক্ষণ এবং কিছু ক্ষেত্রে পরিচালনার জন্য দেশটিতে শত শত ইরানি সক্রিয় রয়েছে।

 

No comments

Powered by Blogger.