সরকার সতর্কবার্তাটি বুঝতে পেরেছে কি? by সুলতান মাহমুদ রানা
গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির অন্যতম
ইতিবাচক শর্ত নির্বাচনে জনগণের অবাধ অংশগ্রহণ। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক
রূপ দিতে নির্বাচনে কে হারল আর কে জিতল তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জনগণের অবাধ
অংশগ্রহণ। গত ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হল চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এ
নির্বাচনে সরকারদলীয় জোটের ভরাডুবি হয়েছে। নির্বাচনে জনগণের অবাধ অংশগ্রহণ
এবং স্বচ্ছতার বিষয়ে কোনো প্রশ্নই ওঠেনি। সরকার-সমর্থিত প্রার্থীদের হারিয়ে
বিরোধী জোটের প্রার্থীরা বিজয়ের মুকুট ঘরে তুলেছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন
সম্পন্ন করাকে বড় জয় হিসেবে দেখার চেষ্টা করে সান্ত্বনার পথ খুঁজছে সরকার।
উল্লেখ্য, স্থানীয় নির্বাচন হলেও জাতীয় নির্বাচনের কাছাকাছি দূরত্ব হওয়াতে
নির্বাচনী ফলাফলে ভিন্ন মাত্রা রয়েছে। ২০০৮ সালে চার সিটির নির্বাচনে
মহাজোট-সমর্থিতদের বিজয়ের কয়েক মাস পরেই নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের
বিজয় হয়।
চার সিটির নির্বাচন যেহেতু সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে, সেহেতু সরকার এখন এটা বলার সুযোগ পাচ্ছে যে, আগামী সাধারণ নির্বাচনও দলীয় সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু হবে। অর্থাৎ বিরোধী দলের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে অযৌক্তিক প্রমাণ করার চেষ্টা করছে সরকার। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চার সিটি নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক, তারা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসবে না। এটা ঠিক যে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আর জাতীয় নির্বাচন এক বিষয় নয়। স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনী ফলাফল দিয়ে সরকার পরিবর্তন হয় না। গুরুত্বের বিবেচনায় জাতীয় সংসদের সঙ্গে স্থানীয় নির্বাচনের পার্থক্য রাত-দিন।
যে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান লক্ষ্য হল নির্বাচনের মাধ্যমে বা বৈধ উপায়ে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া। নির্বাচনে জয়লাভ করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য একটি দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল সর্বাÍক শক্তি প্রয়োগের চেষ্টা করে। আমাদের দেশেও এর ব্যতিক্রম হয় না। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফলাফলে আওয়ামী লীগের কাছে পরিষ্কার হল, সরকারের জনপ্রিয়তার মাত্রা নেমে এসেছে অনেক নিচে; সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করার পরিস্থিতি কঠিন বটে। এক্ষেত্রে বিএনপিকেও বুঝতে হবে যে, তাদের এই জয়জয়কার নিজেদের জনপ্রিয়তার কারণে নয় বরং এর পেছনে রয়েছে সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস। এক্ষেত্রে সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাসের সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দলও সরকার-সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে দাবি করা যায়।
তবে এ ফলাফলকে সরকার ও বিরোধী দলের জন্য পরীক্ষামূলকও বলা যায়, কারণ সরকারের জনপ্রিয়তার মান বাড়াতে না পারলে জাতীয় নির্বাচনে ফলাফল এভাবেই মঞ্চস্থ হতে পারে। আবার বিরোধী দলেরও সাবধান থাকতে হবে ভোট বাক্সকে ভবিষ্যতে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য। কাজেই কোনো পক্ষ ভুল করলে আসন্ন সংসদ নির্বাচনের ফলাফলেও পরিবর্তন হতেই পারে।
বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতির খেলায় ১৯৯১ সালের পর দেশের কোনো ক্ষমতাসীন দলই পরবর্তী নির্বাচনে সরকার গঠন করতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একদলীয় নির্বাচনী নাটক মঞ্চস্থ করার পর টানা দ্বিতীয় মেয়াদে বিএনপি ক্ষমতা গ্রহণ করলেও বৈধতার সংকটে স্থায়িত্ব লাভ করতে পারেনি। আবার ২০০৬ সালে ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় মেয়াদে আসার জন্য বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে অনুগত ব্যক্তিকে বসাতে চেয়েছিল বিএনপি। তার পরিণতি কী হয়েছে তা আমরা সবাই দেখেছি। এবার আওয়ামী লীগও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানকে বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনী প্রস্তুতির পথে পা বাড়াচ্ছে। ইতিমধ্যেই আদালতের দোহাই দিয়ে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। নির্দলীয় সরকার ছাড়া দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তা ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবমুক্ত থাকবে- এ কথা খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
চার সিটির তিনটিতেই ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছিলেন বিদায়ী মেয়ররা। নির্বাচনের আগে ধারণা করা হয়েছিল, উন্নয়ন কাজ দেখে যদি জনগণ ভোট দেন তাহলে রাজশাহী, খুলনা ও বরিশালে সরকার-সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, চারটি সিটিতেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফলের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, স্থানীয় উন্নয়ন করে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া যায় না, এ জন্য দরকার জাতীয় উন্নয়ন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে জনবান্ধব ইস্যু।
ভরাডুবির কারণ কী তা ইতিমধ্যেই নানাভাবে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে টকশোর মাধ্যমে বিভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয়েছে। তবে স্থানীয় জনগণ সবাই একবাক্যে বলেছেন, এ রকম নিরপেক্ষ নির্বাচন আগে কখনও তারা দেখেননি। এ ধরনের প্রতিবন্ধকতাহীন নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। স্থানীয় জনগণের এমন মতামত অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। দলীয় সরকারের অধীনে এত ভালো নির্বাচন আগে কখনও দেখা গেছে কিনা আমি জানি না। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, দেশের সিভিল সমাজ ও আন্তর্জাতিক সম্প্র্রদায় নিরপেক্ষভাবে সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছে সরকারকে। নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। তারা এখন জোর দিয়ে বলতে পারে, তাদের পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব। ঢাকা সফররত কমনওয়েলথ মহাসচিব কমলেশ শর্মা একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছেন, নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ছে। সেই সঙ্গে পরাজিত হয়েও সরকার তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছে। পরাজিতরা নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে বিজয়ীদের মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন। অভিনন্দন জানাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও বিএনপি সমর্থিত নবনির্বাচিত মেয়রদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ ধরনের অভিনন্দন বার্তাকে নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের ইতিবাচক সংস্কৃতি হিসেবেই বিবেচনা করা যায়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কখনোই পরাজিত প্রার্থীকে অভিনন্দন জানানো কিংবা নির্বাচনকে নির্দ্বিধায় মেনে নেয়ার সংস্কৃতি ছিল না। সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিশেষত ৯১-পরবর্তী জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের কোনো নির্বাচনেই পরাজিত প্রার্থী ফলাফল মেনে নেয়নি। কাজেই রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষণ গণতন্ত্র বিকাশের মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলেই আমরা আশা করছি।
লেখক : সুলতান মাহমুদ রানা : শিক্ষক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
চার সিটির নির্বাচন যেহেতু সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে, সেহেতু সরকার এখন এটা বলার সুযোগ পাচ্ছে যে, আগামী সাধারণ নির্বাচনও দলীয় সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু হবে। অর্থাৎ বিরোধী দলের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে অযৌক্তিক প্রমাণ করার চেষ্টা করছে সরকার। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চার সিটি নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক, তারা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে আসবে না। এটা ঠিক যে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আর জাতীয় নির্বাচন এক বিষয় নয়। স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনী ফলাফল দিয়ে সরকার পরিবর্তন হয় না। গুরুত্বের বিবেচনায় জাতীয় সংসদের সঙ্গে স্থানীয় নির্বাচনের পার্থক্য রাত-দিন।
যে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান লক্ষ্য হল নির্বাচনের মাধ্যমে বা বৈধ উপায়ে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া। নির্বাচনে জয়লাভ করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য একটি দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল সর্বাÍক শক্তি প্রয়োগের চেষ্টা করে। আমাদের দেশেও এর ব্যতিক্রম হয় না। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফলাফলে আওয়ামী লীগের কাছে পরিষ্কার হল, সরকারের জনপ্রিয়তার মাত্রা নেমে এসেছে অনেক নিচে; সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করার পরিস্থিতি কঠিন বটে। এক্ষেত্রে বিএনপিকেও বুঝতে হবে যে, তাদের এই জয়জয়কার নিজেদের জনপ্রিয়তার কারণে নয় বরং এর পেছনে রয়েছে সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস। এক্ষেত্রে সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাসের সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দলও সরকার-সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে দাবি করা যায়।
তবে এ ফলাফলকে সরকার ও বিরোধী দলের জন্য পরীক্ষামূলকও বলা যায়, কারণ সরকারের জনপ্রিয়তার মান বাড়াতে না পারলে জাতীয় নির্বাচনে ফলাফল এভাবেই মঞ্চস্থ হতে পারে। আবার বিরোধী দলেরও সাবধান থাকতে হবে ভোট বাক্সকে ভবিষ্যতে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য। কাজেই কোনো পক্ষ ভুল করলে আসন্ন সংসদ নির্বাচনের ফলাফলেও পরিবর্তন হতেই পারে।
বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতির খেলায় ১৯৯১ সালের পর দেশের কোনো ক্ষমতাসীন দলই পরবর্তী নির্বাচনে সরকার গঠন করতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একদলীয় নির্বাচনী নাটক মঞ্চস্থ করার পর টানা দ্বিতীয় মেয়াদে বিএনপি ক্ষমতা গ্রহণ করলেও বৈধতার সংকটে স্থায়িত্ব লাভ করতে পারেনি। আবার ২০০৬ সালে ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় মেয়াদে আসার জন্য বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে অনুগত ব্যক্তিকে বসাতে চেয়েছিল বিএনপি। তার পরিণতি কী হয়েছে তা আমরা সবাই দেখেছি। এবার আওয়ামী লীগও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানকে বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনী প্রস্তুতির পথে পা বাড়াচ্ছে। ইতিমধ্যেই আদালতের দোহাই দিয়ে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। নির্দলীয় সরকার ছাড়া দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তা ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবমুক্ত থাকবে- এ কথা খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
চার সিটির তিনটিতেই ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছিলেন বিদায়ী মেয়ররা। নির্বাচনের আগে ধারণা করা হয়েছিল, উন্নয়ন কাজ দেখে যদি জনগণ ভোট দেন তাহলে রাজশাহী, খুলনা ও বরিশালে সরকার-সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, চারটি সিটিতেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফলের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, স্থানীয় উন্নয়ন করে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া যায় না, এ জন্য দরকার জাতীয় উন্নয়ন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে জনবান্ধব ইস্যু।
ভরাডুবির কারণ কী তা ইতিমধ্যেই নানাভাবে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে টকশোর মাধ্যমে বিভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয়েছে। তবে স্থানীয় জনগণ সবাই একবাক্যে বলেছেন, এ রকম নিরপেক্ষ নির্বাচন আগে কখনও তারা দেখেননি। এ ধরনের প্রতিবন্ধকতাহীন নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। স্থানীয় জনগণের এমন মতামত অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। দলীয় সরকারের অধীনে এত ভালো নির্বাচন আগে কখনও দেখা গেছে কিনা আমি জানি না। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, দেশের সিভিল সমাজ ও আন্তর্জাতিক সম্প্র্রদায় নিরপেক্ষভাবে সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছে সরকারকে। নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। তারা এখন জোর দিয়ে বলতে পারে, তাদের পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব। ঢাকা সফররত কমনওয়েলথ মহাসচিব কমলেশ শর্মা একটি পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছেন, নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ছে। সেই সঙ্গে পরাজিত হয়েও সরকার তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছে। পরাজিতরা নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে বিজয়ীদের মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন। অভিনন্দন জানাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও বিএনপি সমর্থিত নবনির্বাচিত মেয়রদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ ধরনের অভিনন্দন বার্তাকে নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রের ইতিবাচক সংস্কৃতি হিসেবেই বিবেচনা করা যায়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কখনোই পরাজিত প্রার্থীকে অভিনন্দন জানানো কিংবা নির্বাচনকে নির্দ্বিধায় মেনে নেয়ার সংস্কৃতি ছিল না। সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিশেষত ৯১-পরবর্তী জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের কোনো নির্বাচনেই পরাজিত প্রার্থী ফলাফল মেনে নেয়নি। কাজেই রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষণ গণতন্ত্র বিকাশের মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলেই আমরা আশা করছি।
লেখক : সুলতান মাহমুদ রানা : শিক্ষক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
No comments