দুনৌকায় পা দিয়ে নদী পার হওয়া যায় না by আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
শাহবাগ
গণজাগরণ মঞ্চের ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন শেষ পর্যন্ত দু-তিন দিন আগে জামিনে
মুক্ত হয়েছে। তার এই মুক্তির জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। আমিও পুড়িয়েছি।
শুধু একজন ভালো লেখক হিসেবে নয়, আরেকটি কারণে সে আমার স্নেহভাজন। আসিফ
আমাদের বিখ্যাত কথাশিল্পী প্রয়াত শামসুদ্দীন আবুল কালামের আপন ভাগ্নে। এই
পরিবারটির সঙ্গে আমার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। তার বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত শিবিরের
প্রচারণা, সে নাস্তিক। নাস্তিক হওয়া কোনো অপরাধ নয়। অপরাধ হলে নাস্তিকদের
দ্বারা প্রচারিত দর্শন ও তত্ত্বে (যেমন- কমিউনিজম) কেউ বিশ্বাসী হতে পারত
না। বিখ্যাত দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বর এবং প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ
সাইয়েদুর রহমান প্রকাশ্যে নাস্তিক ছিলেন, নাস্তিকতা প্রচার করেছেন। কিন্তু
সে জন্য তারা অভিযুক্ত ও দণ্ডিত হননি। দণ্ড হয় ধর্মের বা ধর্মীয় মহামানবদের
অবমাননা করা হলে। ব্রিটেনে খ্রিস্টান ধর্মের সমালোচনা, এমনকি বিরোধিতা
করাও অপরাধ নয়। কিন্তু এই ধর্মের অবমাননা করা হলে এ যুগেও অসম্মানকারীকে
শাস্তি দেয়ার জন্য ব্লাসফেমি আইন আছে। যদিও তার ব্যবহার এখন নেই বললেই চলে।
আসিফের সব লেখা নয়, কিছু লেখা আমি পড়েছি। তাতে ধর্মীয় বিধিবিধানের কঠোর সমালোচনা আমার চোখে পড়েছে। কিন্তু ধর্মবিশ্বাস ও মহানবীর (সা.) অবমাননামূলক মন্তব্য আমার চোখে পড়েনি। আসিফ আমাকে বলেছে, তার এবং শাহবাগ-সমর্থক আরও কোনো কোনো ব্লগারের নাম ব্যবহার করে জামায়াত-শিবিরের লোকরা ধর্ম ও মহানবীর (সা.) অবমাননাসূচক মন্তব্য প্রচার করেছে। শুধু তার নয়, শাহবাগ সমর্থক অন্য ব্লগারদের নামেও করেছে। উদ্দেশ্য ছিল শাহবাগ আন্দোলন এবং তার সমর্থক তরুণ ব্লগারদের ধর্মের অবমাননাকারী হিসেবে প্রচার করা এবং শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করে তাকে ব্যর্থ করা।
আসিফের এই অভিযোগটি যে একেবারে অসত্য নয়, যারা সে সময় আমার দেশ কাগজটির এই ব্লগারদের সবার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক এবং বানোয়াট প্রচারণা লক্ষ্য করেছেন তারা সবাই জানে। এই প্রচারণারই বলি হয়েছে আসিফের এক ব্লগার বন্ধু রাজীব। তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার আগেই আসিফকে কুপিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। সে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে থাকার সময়েও তার ওপর আবারও হামলা চালানোর হুমকি দেয়া হয়। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম আহত আসিফকে বাঁচাতে তার জন্য একটা পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করতে। তিনি আমার অনুরোধে কর্ণপাত করেননি। আসিফের ওপর হামলাকে কোনো গুরুত্বই দেননি। ফলে আসিফকে হত্যায় ব্যর্থ হয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই আরেক ব্লগার রাজীবকে হত্যা করে জামায়াত-শিবিরের ঘাতকরা। ঢালাওভাবে শাহবাগ মঞ্চের সমর্থক অধিকাংশ ব্লগারকে ধর্মের অবমাননাকারী হিসেবে গ্রেফতার করে হেফাজত ও জামায়াতিদের তুষ্ট করার চেষ্টা হয়েছে। সবচেয়ে শক্তিশালী গণজাগরণ মঞ্চটিকে বিতর্কিত, নিন্দিত এবং শেষ পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। তার সুদূরপ্রসারী ফল আমরা লক্ষ্য করছি সাম্প্রতিক সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন পর্যন্ত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি অনুরোধ করেছিলাম আহত আসিফকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। তার পুলিশ গুরুতর আহত আসিফকে দীর্ঘ সময়ের জন্য জেলে নিক্ষেপ করে এই অনুরোধ উল্টোভাবে রক্ষা করেছে। তার জামিনের আবেদনও বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল।
আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষ দিই না। কিন্তু তার উপদেষ্টাদের অনেকেই (মন্ত্রী এবং উপদেষ্টা) কোন জগতের বাসিন্দা তা আমি জানি না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে হেফাজতিদের অভ্যুদয় আকস্মিক মনে হতে পারে; কিন্তু তা যে পূর্বপরিকল্পিত তা বুঝতে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা কেন ব্যর্থ হলেন, তা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের অগম্য। হেফাজতি সমস্যা সমাধানের জন্য তারা দু’মুখোনীতি অনুসরণ করেছেন।
একদিকে ৫ মে রাতে তারা হেফাজত সমাবেশ ভাঙার জন্য নূ্যূনতম শক্তি প্রয়োগ করেও হাজার হাজার মানুষ হত্যার বানোয়াট অপবাদ নিয়েছেন। অন্যদিকে পর্দার আড়ালে হেফাজতিদের তুষ্ট করার জন্য শাহবাগ মঞ্চ ভেঙেছেন; নির্দোষ ব্লগারদেরও গ্রেফতার করেছেন। শুনেছি (কতটা সঠিক জানি না) হেফাজতিদের দলে টানার জন্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দু’পক্ষ থেকেই লাখ নয়, কোটি কোটি টাকার লেনদেন করা হয়েছে। হেফাজতিরা নাকি দু’পক্ষ থেকে টাকা কামিয়েছে। ধর্ম নিয়ে এমন ব্যবসা বর্তমান দুনিয়ার আর কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তাতে দেশের গণতান্ত্রিক শক্তি লাভবান হয়েছে কি? হেফাজতিরা তুষ্ট হয়েছে কি? চারটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে হেফাজতিদের ভূমিকা এবং নির্বাচনের ফল কী বলে? হেফাজতিদের ঢাকা অবরোধের হুমকির পর যখন সরকারের এক মন্ত্রী হুমকি দিয়েছেন তাদের দমন করা হবে এবং অন্য মন্ত্রী হাটহাজারিতে ছুটেছেন হেফাজত নেতাকে এই বলে শান্ত করার জন্য যে, তাদের অধিকাংশ দাবিই সরকার মেনে নিয়েছে; তখন মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেনন এই মর্মে সরকারের জন্য সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলেন যে, ‘সরকারের জন্য আম এবং ছালা দুই-ই যাবে।’ চার চারটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে, মেনন সরকারের জন্য বড় কঠিন এবং সঠিক সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলেন। চার চারটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শোচনীয় পরাজয়ের পর এখন সামনে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। আমার আরেকটি লেখায় লিখেছি, এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য স্ট্যালিনগ্রাডের যুদ্ধ। এই যুদ্ধেই হয়তো নির্ধারিত হবে আগামী সাধারণ নির্বাচনে (যদি যথাসময়ে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হয়) আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারবে কিনা! যদি তারা না পারে, তাহলে রাশেদ খান মেননের প্রোফেসিই আরও সত্য হবে- অর্থাৎ আওয়ামী লীগের জন্য আম ও ছালা দুই-ই যাবে। যদি কোনোক্রমে তারা গাজীপুর নির্বাচনে বৈধভাবেও জয়ী হয়, তাহলেও বিএনপি তার স্বভাবসুলভ চিৎকার শুরু করবে, ‘আমাদের জয় ছিনতাই করা হয়েছে।’ এজন্য ফখর মির্জারা তো তৈরি হয়েই আছেন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের আর চার-পাঁচ দিন বাকি। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হবে কিনা তা নিয়ে আমার মনে অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। ঠিক এই সময় গাজীপুর সম্পর্কে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে টেলিফোন করে জানতে চাইলাম, তাদের অবস্থা কী? তিনি আমাকে আশ্বস্ত করে বললেন, অবস্থা ভালোর দিকে। আমরা হেফাজতিদের ভাগ করে ফেলতে পেরেছি। তাদের এক অংশ আমাদের প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছে। অন্য অংশ দিচ্ছে বিএনপি প্রার্থীকে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। সুতরাং গাজীপুরে আমাদের জয় অনেকটাই নিশ্চিত।
তাকে বলেছি, আপনার মুখে ফুলচন্দন পড়ুক। কিন্তু হেফাজতিদের সমর্থন লাভ সম্পর্কে যে কথা বলছেন, তাতে খুব আশ্বস্ত হতে পারছি না। ব্রিটিশ আমলের এক বিখ্যাত নির্বাচনের গল্প বলে এর কারণটা দর্শাতে চাচ্ছি। ত্রিশের দশকের কথা। অবিভক্ত বঙ্গের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম লীগ নেতা খাজা নাজিমুদ্দীন এবং কৃষক প্রজা পার্টির নেতা একে ফজলুল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন হচ্ছিল পটুয়াখালী কেন্দ্রে। এই পটুয়াখালী ছিল নাজিমুদ্দীনের জমিদারের অন্তর্ভুক্ত। তিনি এলাকার জমিদার। তার ওপর দু’হাতে টাকা ছড়াচ্ছেন। ফজলুল হকের অত টাকা নেই। সুতরাং সবাই ধরে নিয়েছিল, নির্বাচনে নাজিমুদ্দীন জয়ী হবেন।
নির্বাচনের দিন মাঠের মধ্যে পাশাপাশি হক সাহেব ও নাজিমুদ্দীনের নির্বাচনী ক্যাম্প। নাজিমুদ্দীনের শিবিরের ভোটদাতাদের জন্য পোলাও-কোর্মা ইত্যাদি খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হক সাহেবের শিবিরের ভোটদাতাদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে কেবল পান-তামাকের। হক সাহেব মাঝে মাঝেই ভোটদাতাদের উদ্দেশ করে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। তিনি বলছিলেন, ‘ভাই সাহেবেরা, নাজিমুদ্দীন আপনাদের জমিদার। বড় লোক। তাই আপনাদের জন্য পোলাও-কোর্মার ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। আমি গরিব এবং গরিবের বন্ধু। তাই আপনাদের জন্য শুধু পান-তামাকের ব্যবস্থা করতে পেরেছি। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা নাজিমুদ্দীন সাহেবের ক্যাম্পে প্রথম যান। পোলাও-কোর্মা খান। তারপর ভোটকেন্দ্রে ঢুকে আমাকে ভোটটা দিয়ে আমার ক্যাম্পে এসে পান-তামাক সেবন করুন।’ হক সাহেবের আবেদনে পটুয়াখালীর ভোটদাতারা তা-ই করেছিল। হক সাহেবের কাছে নাজিমুদ্দীন বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন।
গল্পটি বলে আওয়ামী লীগ নেতাকে বললাম, আজকাল মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদেরও আর বোকা মনে করবেন না। তারা অনেক চালাক-চতুর হয়ে গেছে। এমনও হতে পারে, তারা গাজীপুর নির্বাচনে দুই পক্ষ থেকেই নগদ কড়ি লুটবে; ভান করবে আওয়ামী প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছে; আসলে সমর্থনটা দেবে বিএনপি প্রার্থীকেই। গাজীপুরে জয়ী হতে হলে আওয়ামী লীগকে প্রকৃত জনসমর্থনের ওপরই নির্ভর করতে হবে। দু’মুখো নীতি দ্বারা বা দুই নৌকায় পা দিয়ে নদী পার হওয়া যাবে না।
আওয়ামী লীগ একটি বিরাট গণতান্ত্রিক পার্টি। অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময়ের রাজনীতির অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে। এই অভিজ্ঞতা থেকেই তাদের বোঝা উচিত রাজনীতিতে কৌশল অবশ্যই থাকবে। কিন্তু নীতিভ্রষ্টতাকে তারা যেন কৌশল বলে না ভাবেন। এক সময়ে জামায়াতের সঙ্গে সমান্তরাল আন্দোলন, ফতোয়া চুক্তি আওয়ামী লীগকে কোনো বেনিফিট দেয়নি; বরং তার রাজনৈতিক অবস্থানকে বিতর্কিত ও দুর্বল করেছে। হেফাজতি সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে তাদের ৫ মের শক্ত ভূমিকা (বিএনপি-জামায়াতের অপপ্রচার সত্ত্বেও) দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। এ সম্পর্কে সরকারের পূর্বাপর ভূমিকা প্রশংসিত হয়নি; বিতর্কিত হয়েছে এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণের পর শেখ হাসিনা অত্যন্ত সাহসী ও কৌশলী ভূমিকার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আমলে দলটির যে ইডিওলজিক্যাল অবস্থান ছিল, সেই অবস্থান থেকে ক্রমেই দূরে সরে এসেছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের যে ইডিওলজিক্যাল যুদ্ধ, সেই যুদ্ধ থেকে সরে এসে আওয়ামী লীগ তাকে কেবল রাজনৈতিক ক্ষমতার লড়াইয়ে পরিণত করে জয়ী হতে চেয়েছে। ফলে তার মিত্রের সংখ্যা কমেছে। শত্র“ সবল হয়েছে।
এখন লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, আওয়ামী লীগের শত্র“ কেবল বিএনপি-জামায়াত এবং হেফাজত জোট নয়; দেশের তথাকথিত সুশীল সমাজ, একশ্রেণীর বড় এনজিও এবং মিডিয়া, ড. ইউনূস ও ড. কামালের ক্যাম্প, ট্রান্সপারেন্সি, সুজন ইত্যাদি উদ্দেশ্যপরায়ণ এলিটদের চ্যাটারিং ক্লাবগুলো বর্তমান আওয়ামী সরকারের চারদিকে ব্যূহ তৈরি করে বিরুদ্ধ অবস্থান নিয়েছে। তাতে গণতন্ত্র, সেকুলারিজম গোল্লায় যাক পরোয়া নেই। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করতে পারছে না, মুক্তিযুদ্ধের মৌল আদর্শ গণতন্ত্র ও সেকুলারিজমের তারা এখনও শক্তিশালী প্রহরী। শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ ভেঙে দেয়া আওয়ামী লীগের একটি বড় ভুল। হেফাজতিদের বিশ্বাস করা ও তোল্লা দেয়া আরেকটি বড় ভুল। গণতান্ত্রিক শিবিরের মহাজোট শক্তিশালী না করা এবং শরিক দলগুলোকে সমান সুযোগ-সুবিধা না দিয়ে নিষ্ক্রিয় করে রাখাও বড় ভুল। ভারত ও আমেরিকার সমর্থন আওয়ামী লীগের জন্য স্থায়ী রবে এই ধারণাটা সঠিক নয়। টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মত হওয়ার পরও প্রেসিডেন্ট ওবামা কর্তৃক বাংলাদেশকে জিএসপির সুবিধা দান স্থগিত করার ঘোষণা তার প্রমাণ।
দেশে যদি আওয়ামী লীগ সরকার জনসমর্থন হারায়, তাহলে বিদেশী মিত্রদেরও সমর্থন তার পেছনে থাকবে না। এখন বিশ্ব জগতের কোথাও নীতি-নৈতিকতার বালাই নেই, আছে সুবিধাবাদিতা। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভাগ্যে জয়-পরাজয় যা-ই ঘটুক, তাকে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের নীতিগত অবস্থানে ফিরে যেতে হবে। জনগণের সমর্থন নিয়ে কেবল ক্ষমতার যুদ্ধে নয়, ইথিওলজিক্যাল যুদ্ধেও নামতে হবে। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে, তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে জানে। তাকে প্রমাণ করতে হবে, সে হারানো জনসমর্থন ফিরিয়ে এনে আরও বিরাটভাবে ক্ষমতায় ফিরে আসতেও জানে। গাজীপুর নির্বাচন তাকে সেই পথ দেখাক।
আসিফের সব লেখা নয়, কিছু লেখা আমি পড়েছি। তাতে ধর্মীয় বিধিবিধানের কঠোর সমালোচনা আমার চোখে পড়েছে। কিন্তু ধর্মবিশ্বাস ও মহানবীর (সা.) অবমাননামূলক মন্তব্য আমার চোখে পড়েনি। আসিফ আমাকে বলেছে, তার এবং শাহবাগ-সমর্থক আরও কোনো কোনো ব্লগারের নাম ব্যবহার করে জামায়াত-শিবিরের লোকরা ধর্ম ও মহানবীর (সা.) অবমাননাসূচক মন্তব্য প্রচার করেছে। শুধু তার নয়, শাহবাগ সমর্থক অন্য ব্লগারদের নামেও করেছে। উদ্দেশ্য ছিল শাহবাগ আন্দোলন এবং তার সমর্থক তরুণ ব্লগারদের ধর্মের অবমাননাকারী হিসেবে প্রচার করা এবং শাহবাগ আন্দোলনের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করে তাকে ব্যর্থ করা।
আসিফের এই অভিযোগটি যে একেবারে অসত্য নয়, যারা সে সময় আমার দেশ কাগজটির এই ব্লগারদের সবার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক এবং বানোয়াট প্রচারণা লক্ষ্য করেছেন তারা সবাই জানে। এই প্রচারণারই বলি হয়েছে আসিফের এক ব্লগার বন্ধু রাজীব। তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার আগেই আসিফকে কুপিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। সে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে থাকার সময়েও তার ওপর আবারও হামলা চালানোর হুমকি দেয়া হয়। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম আহত আসিফকে বাঁচাতে তার জন্য একটা পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করতে। তিনি আমার অনুরোধে কর্ণপাত করেননি। আসিফের ওপর হামলাকে কোনো গুরুত্বই দেননি। ফলে আসিফকে হত্যায় ব্যর্থ হয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই আরেক ব্লগার রাজীবকে হত্যা করে জামায়াত-শিবিরের ঘাতকরা। ঢালাওভাবে শাহবাগ মঞ্চের সমর্থক অধিকাংশ ব্লগারকে ধর্মের অবমাননাকারী হিসেবে গ্রেফতার করে হেফাজত ও জামায়াতিদের তুষ্ট করার চেষ্টা হয়েছে। সবচেয়ে শক্তিশালী গণজাগরণ মঞ্চটিকে বিতর্কিত, নিন্দিত এবং শেষ পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। তার সুদূরপ্রসারী ফল আমরা লক্ষ্য করছি সাম্প্রতিক সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন পর্যন্ত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি অনুরোধ করেছিলাম আহত আসিফকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। তার পুলিশ গুরুতর আহত আসিফকে দীর্ঘ সময়ের জন্য জেলে নিক্ষেপ করে এই অনুরোধ উল্টোভাবে রক্ষা করেছে। তার জামিনের আবেদনও বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল।
আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষ দিই না। কিন্তু তার উপদেষ্টাদের অনেকেই (মন্ত্রী এবং উপদেষ্টা) কোন জগতের বাসিন্দা তা আমি জানি না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে হেফাজতিদের অভ্যুদয় আকস্মিক মনে হতে পারে; কিন্তু তা যে পূর্বপরিকল্পিত তা বুঝতে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা কেন ব্যর্থ হলেন, তা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের অগম্য। হেফাজতি সমস্যা সমাধানের জন্য তারা দু’মুখোনীতি অনুসরণ করেছেন।
একদিকে ৫ মে রাতে তারা হেফাজত সমাবেশ ভাঙার জন্য নূ্যূনতম শক্তি প্রয়োগ করেও হাজার হাজার মানুষ হত্যার বানোয়াট অপবাদ নিয়েছেন। অন্যদিকে পর্দার আড়ালে হেফাজতিদের তুষ্ট করার জন্য শাহবাগ মঞ্চ ভেঙেছেন; নির্দোষ ব্লগারদেরও গ্রেফতার করেছেন। শুনেছি (কতটা সঠিক জানি না) হেফাজতিদের দলে টানার জন্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দু’পক্ষ থেকেই লাখ নয়, কোটি কোটি টাকার লেনদেন করা হয়েছে। হেফাজতিরা নাকি দু’পক্ষ থেকে টাকা কামিয়েছে। ধর্ম নিয়ে এমন ব্যবসা বর্তমান দুনিয়ার আর কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তাতে দেশের গণতান্ত্রিক শক্তি লাভবান হয়েছে কি? হেফাজতিরা তুষ্ট হয়েছে কি? চারটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে হেফাজতিদের ভূমিকা এবং নির্বাচনের ফল কী বলে? হেফাজতিদের ঢাকা অবরোধের হুমকির পর যখন সরকারের এক মন্ত্রী হুমকি দিয়েছেন তাদের দমন করা হবে এবং অন্য মন্ত্রী হাটহাজারিতে ছুটেছেন হেফাজত নেতাকে এই বলে শান্ত করার জন্য যে, তাদের অধিকাংশ দাবিই সরকার মেনে নিয়েছে; তখন মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রাশেদ খান মেনন এই মর্মে সরকারের জন্য সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলেন যে, ‘সরকারের জন্য আম এবং ছালা দুই-ই যাবে।’ চার চারটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে, মেনন সরকারের জন্য বড় কঠিন এবং সঠিক সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলেন। চার চারটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শোচনীয় পরাজয়ের পর এখন সামনে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। আমার আরেকটি লেখায় লিখেছি, এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য স্ট্যালিনগ্রাডের যুদ্ধ। এই যুদ্ধেই হয়তো নির্ধারিত হবে আগামী সাধারণ নির্বাচনে (যদি যথাসময়ে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হয়) আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারবে কিনা! যদি তারা না পারে, তাহলে রাশেদ খান মেননের প্রোফেসিই আরও সত্য হবে- অর্থাৎ আওয়ামী লীগের জন্য আম ও ছালা দুই-ই যাবে। যদি কোনোক্রমে তারা গাজীপুর নির্বাচনে বৈধভাবেও জয়ী হয়, তাহলেও বিএনপি তার স্বভাবসুলভ চিৎকার শুরু করবে, ‘আমাদের জয় ছিনতাই করা হয়েছে।’ এজন্য ফখর মির্জারা তো তৈরি হয়েই আছেন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের আর চার-পাঁচ দিন বাকি। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হবে কিনা তা নিয়ে আমার মনে অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। ঠিক এই সময় গাজীপুর সম্পর্কে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে টেলিফোন করে জানতে চাইলাম, তাদের অবস্থা কী? তিনি আমাকে আশ্বস্ত করে বললেন, অবস্থা ভালোর দিকে। আমরা হেফাজতিদের ভাগ করে ফেলতে পেরেছি। তাদের এক অংশ আমাদের প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছে। অন্য অংশ দিচ্ছে বিএনপি প্রার্থীকে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। সুতরাং গাজীপুরে আমাদের জয় অনেকটাই নিশ্চিত।
তাকে বলেছি, আপনার মুখে ফুলচন্দন পড়ুক। কিন্তু হেফাজতিদের সমর্থন লাভ সম্পর্কে যে কথা বলছেন, তাতে খুব আশ্বস্ত হতে পারছি না। ব্রিটিশ আমলের এক বিখ্যাত নির্বাচনের গল্প বলে এর কারণটা দর্শাতে চাচ্ছি। ত্রিশের দশকের কথা। অবিভক্ত বঙ্গের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম লীগ নেতা খাজা নাজিমুদ্দীন এবং কৃষক প্রজা পার্টির নেতা একে ফজলুল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন হচ্ছিল পটুয়াখালী কেন্দ্রে। এই পটুয়াখালী ছিল নাজিমুদ্দীনের জমিদারের অন্তর্ভুক্ত। তিনি এলাকার জমিদার। তার ওপর দু’হাতে টাকা ছড়াচ্ছেন। ফজলুল হকের অত টাকা নেই। সুতরাং সবাই ধরে নিয়েছিল, নির্বাচনে নাজিমুদ্দীন জয়ী হবেন।
নির্বাচনের দিন মাঠের মধ্যে পাশাপাশি হক সাহেব ও নাজিমুদ্দীনের নির্বাচনী ক্যাম্প। নাজিমুদ্দীনের শিবিরের ভোটদাতাদের জন্য পোলাও-কোর্মা ইত্যাদি খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হক সাহেবের শিবিরের ভোটদাতাদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে কেবল পান-তামাকের। হক সাহেব মাঝে মাঝেই ভোটদাতাদের উদ্দেশ করে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। তিনি বলছিলেন, ‘ভাই সাহেবেরা, নাজিমুদ্দীন আপনাদের জমিদার। বড় লোক। তাই আপনাদের জন্য পোলাও-কোর্মার ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। আমি গরিব এবং গরিবের বন্ধু। তাই আপনাদের জন্য শুধু পান-তামাকের ব্যবস্থা করতে পেরেছি। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা নাজিমুদ্দীন সাহেবের ক্যাম্পে প্রথম যান। পোলাও-কোর্মা খান। তারপর ভোটকেন্দ্রে ঢুকে আমাকে ভোটটা দিয়ে আমার ক্যাম্পে এসে পান-তামাক সেবন করুন।’ হক সাহেবের আবেদনে পটুয়াখালীর ভোটদাতারা তা-ই করেছিল। হক সাহেবের কাছে নাজিমুদ্দীন বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন।
গল্পটি বলে আওয়ামী লীগ নেতাকে বললাম, আজকাল মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদেরও আর বোকা মনে করবেন না। তারা অনেক চালাক-চতুর হয়ে গেছে। এমনও হতে পারে, তারা গাজীপুর নির্বাচনে দুই পক্ষ থেকেই নগদ কড়ি লুটবে; ভান করবে আওয়ামী প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছে; আসলে সমর্থনটা দেবে বিএনপি প্রার্থীকেই। গাজীপুরে জয়ী হতে হলে আওয়ামী লীগকে প্রকৃত জনসমর্থনের ওপরই নির্ভর করতে হবে। দু’মুখো নীতি দ্বারা বা দুই নৌকায় পা দিয়ে নদী পার হওয়া যাবে না।
আওয়ামী লীগ একটি বিরাট গণতান্ত্রিক পার্টি। অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময়ের রাজনীতির অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে। এই অভিজ্ঞতা থেকেই তাদের বোঝা উচিত রাজনীতিতে কৌশল অবশ্যই থাকবে। কিন্তু নীতিভ্রষ্টতাকে তারা যেন কৌশল বলে না ভাবেন। এক সময়ে জামায়াতের সঙ্গে সমান্তরাল আন্দোলন, ফতোয়া চুক্তি আওয়ামী লীগকে কোনো বেনিফিট দেয়নি; বরং তার রাজনৈতিক অবস্থানকে বিতর্কিত ও দুর্বল করেছে। হেফাজতি সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে তাদের ৫ মের শক্ত ভূমিকা (বিএনপি-জামায়াতের অপপ্রচার সত্ত্বেও) দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। এ সম্পর্কে সরকারের পূর্বাপর ভূমিকা প্রশংসিত হয়নি; বিতর্কিত হয়েছে এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণের পর শেখ হাসিনা অত্যন্ত সাহসী ও কৌশলী ভূমিকার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আমলে দলটির যে ইডিওলজিক্যাল অবস্থান ছিল, সেই অবস্থান থেকে ক্রমেই দূরে সরে এসেছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের যে ইডিওলজিক্যাল যুদ্ধ, সেই যুদ্ধ থেকে সরে এসে আওয়ামী লীগ তাকে কেবল রাজনৈতিক ক্ষমতার লড়াইয়ে পরিণত করে জয়ী হতে চেয়েছে। ফলে তার মিত্রের সংখ্যা কমেছে। শত্র“ সবল হয়েছে।
এখন লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, আওয়ামী লীগের শত্র“ কেবল বিএনপি-জামায়াত এবং হেফাজত জোট নয়; দেশের তথাকথিত সুশীল সমাজ, একশ্রেণীর বড় এনজিও এবং মিডিয়া, ড. ইউনূস ও ড. কামালের ক্যাম্প, ট্রান্সপারেন্সি, সুজন ইত্যাদি উদ্দেশ্যপরায়ণ এলিটদের চ্যাটারিং ক্লাবগুলো বর্তমান আওয়ামী সরকারের চারদিকে ব্যূহ তৈরি করে বিরুদ্ধ অবস্থান নিয়েছে। তাতে গণতন্ত্র, সেকুলারিজম গোল্লায় যাক পরোয়া নেই। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করতে পারছে না, মুক্তিযুদ্ধের মৌল আদর্শ গণতন্ত্র ও সেকুলারিজমের তারা এখনও শক্তিশালী প্রহরী। শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ ভেঙে দেয়া আওয়ামী লীগের একটি বড় ভুল। হেফাজতিদের বিশ্বাস করা ও তোল্লা দেয়া আরেকটি বড় ভুল। গণতান্ত্রিক শিবিরের মহাজোট শক্তিশালী না করা এবং শরিক দলগুলোকে সমান সুযোগ-সুবিধা না দিয়ে নিষ্ক্রিয় করে রাখাও বড় ভুল। ভারত ও আমেরিকার সমর্থন আওয়ামী লীগের জন্য স্থায়ী রবে এই ধারণাটা সঠিক নয়। টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মত হওয়ার পরও প্রেসিডেন্ট ওবামা কর্তৃক বাংলাদেশকে জিএসপির সুবিধা দান স্থগিত করার ঘোষণা তার প্রমাণ।
দেশে যদি আওয়ামী লীগ সরকার জনসমর্থন হারায়, তাহলে বিদেশী মিত্রদেরও সমর্থন তার পেছনে থাকবে না। এখন বিশ্ব জগতের কোথাও নীতি-নৈতিকতার বালাই নেই, আছে সুবিধাবাদিতা। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভাগ্যে জয়-পরাজয় যা-ই ঘটুক, তাকে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের নীতিগত অবস্থানে ফিরে যেতে হবে। জনগণের সমর্থন নিয়ে কেবল ক্ষমতার যুদ্ধে নয়, ইথিওলজিক্যাল যুদ্ধেও নামতে হবে। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে, তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে জানে। তাকে প্রমাণ করতে হবে, সে হারানো জনসমর্থন ফিরিয়ে এনে আরও বিরাটভাবে ক্ষমতায় ফিরে আসতেও জানে। গাজীপুর নির্বাচন তাকে সেই পথ দেখাক।
No comments