গাদ্দাফির বিপদ, গাদ্দাফির ভরসা
রাজধানী ত্রিপোলির দিকে ধাবমান বিদ্রোহীরা লিবিয়ার নেতা গাদ্দাফির জন্য যতটা না হুমকি, এর চেয়ে এখন তাঁর বড় বিপদ, এই দুঃসময়ে সহযোগীদের একে একে দূরে সরে যাওয়া।
বিদ্রোহ শুরুর পরপরই বিপদের আঁচ পেয়ে দেরি না করে কিছু মন্ত্রী, আমলা ও কূটনীতিক গাদ্দাফির পক্ষ ত্যাগ করে ভিড়ে গিয়েছেন বিদ্রোহী শিবিরে। এর পরও গাদ্দাফি শক্ত হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে গত বুধবার তাঁর ওপর বড় আঘাতটা হেনেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুসা কুসা। পদত্যাগ করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে উঠেছেন।
ঘোরতর এই বিপদের দিনে যে গুটিকয়েক লোকের ওপর গাদ্দাফি নির্ভর করতেন, মুসা কুসা ছিলেন সেই দলে। তিনি গাদ্দাফিকে ছেড়ে যাওয়ায় এখন অন্যরাও দ্রুত সটকে পড়ার চেষ্টা করবেন বলে আশা করছেন বিদ্রোহীরা।
এখন গাদ্দাফির বড় সহায় তাঁর আত্মীয়স্বজন এবং তাঁর নিজের আদিবাসী গাদ্দাফা গোষ্ঠী। লিবিয়ার প্রায় ১৪০টি আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যে গাদ্দাফা একটি এবং এদের সংখ্যাও বেশ কম। কাজেই এখন অন্য গোষ্ঠীগুলোর সমর্থন গাদ্দাফির দরকার, যাদের অনেককে তিনি চার দশকের শাসনামলে হাত করেছিলেন রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর বড় বড় পদগুলো দিয়ে।
গাদ্দাফির জন্য গুরুত্বপূর্ণ দুটি মিত্র আদিবাসী গোষ্ঠী হলো ওয়ারফাল্লা ও মাগারাহ। এ দুটি দেশের অন্যতম বড় দুটি আদিবাসী গোষ্ঠী, প্রতিটির সদস্যসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ করে। এই দুই গোষ্ঠীর লোকজন অসীন আছেন নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি বড় বড় পদগুলোতে। গাদ্দাফির অন্যতম ডানহাত বলে পরিচিত সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আবদুল্লাহ সেনেউসি মাগারাহ গোষ্ঠীর সদস্য। এ ছাড়া তিনি গাদ্দাফির আত্মীয়।
গাদ্দাফির ছেলেদের মধ্যে তিনজন খামিস, মুতাচ্ছিম ও আল-সাদির গঠিত রক্ষীবাহিনীর অধিকাংশ সদস্য ওয়ারফাল্লা ও মাগারাহ গোষ্ঠীর। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে গাদ্দাফির লড়াইয়ের অন্যতম ভরসা এই বাহিনী।
তবে গত ফেব্রুয়ারিতে বিদ্রোহ শুরুর পর ওই দুই গোষ্ঠীর কিছু নেতা বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছেন এবং তাঁদের গোষ্ঠীর অনেকে বিদ্রোহী বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। বিদ্রোহীদের পূর্বাঞ্চলীয় নেতা মাহমুদ জিবরিল জাতিতে একজন ওয়ারফাল্লা।
তবে ওয়ারফাল্লা গোষ্ঠীর বেশির ভাগ মানুষ এখনো গাদ্দাফির প্রতি অনুগত। এর কারণ হতে পারে তারা আশা করছে, গাদ্দাফি ক্ষমতায় টিকে গেলে তারা এই আনুগত্যের পুরস্কার পাবে।
লিবিয়ার ইতিহাস এবং আদিবাসীদের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ফারাজ নাজিম জানিয়েছেন, ওয়ারফাল্লা গোষ্ঠীর মধ্যে যাঁরা গাদ্দাফির ঘনিষ্ঠ যেমন, অবকাঠামোমন্ত্রী মাতৌক মাতৌক, তাঁরা সম্প্রতি নিজেদের গোষ্ঠীর লোকজনকে গাদ্দাফির অনুগত থাকার জন্য শাসিয়ে দিয়েছেন।
ফারাজ নাজিম বলেন, ‘তাঁরা লোকজনকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, কেউ গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে তাঁকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। এভাবেই লোকজনকে জোর করে বশে রাখা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু একসময় এটা আর সম্ভব হবে না। পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে তাঁরাও গাদ্দাফিকে ডুবাতে পারেন, সেটা হয় সরাসরি গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে, নতুবা তাঁর পক্ষ ত্যাগ করে চুপচাপ থেকে।’
একা হয়ে পড়ছেন গাদ্দাফি: দিন দিন একা হয়ে পড়ছেন লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি। তাঁকে ছেড়ে ইতিমধ্যে অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চলে গেছেন। চলে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন আরও অনেকে। কিন্তু নিরাপত্তা ও দেশ ত্যাগে সমস্যা হওয়ার কারণে তাঁরা সে কথা প্রকাশ করতে পারছেন না।
আরবের বিভিন্ন পত্রপত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, গাদ্দাফিকে ছেড়ে যাওয়ার দলে নতুন করে শামিল হয়েছেন লিবীয় পার্লামেন্টের সমকক্ষ পপুলার কমিটির প্রধান মোহাম্মদ আবু আল-কাশিম জাওয়ি এবং শীর্ষ তেল কর্মকর্তা শুকরি ঘানেম। ঘানেম অবশ্য স্বপক্ষ ত্যাগের কথা অস্বীকার করেছেন।
তিউনিসিয়ায় অবস্থানরত আল-জাজিরার সাংবাদিক নাজনিন মুশহিরি বলেছেন, লিবিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবু জায়েদ দোরদাও গাদ্দাফির সঙ্গ ত্যাগ করেছেন। তিনি ১৯৯০ থেকে ৯৪ সাল পর্যন্ত লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবু আবদেস সালাস ত্রেকি বর্তমানে কায়রোতে অবস্থান করছেন। তাঁকে গাদ্দাফি জাতিসংঘে লিবিয়ার দূত হিসেবে নিয়োগ দিলেও তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, গাদ্দাফির হয়ে তিনি কাজ করতে রাজি নন।
লিবিয়ায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গাদ্দাফির বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেল ফাত্তাহ ইউনিস এবং বিচারমন্ত্রী মুস্তফা মোহাম্মদ আল-জলিল। পদস্থ সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তা স্বপক্ষ ত্যাগের চেষ্টা করছেন। কিন্তু কঠোর সরকারি নজরদারিতে থাকার কারণে এবং দেশ ত্যাগ করতে না পারায় তাঁরা তা করতে পারছেন না।
বিদ্রোহ শুরুর পরপরই বিপদের আঁচ পেয়ে দেরি না করে কিছু মন্ত্রী, আমলা ও কূটনীতিক গাদ্দাফির পক্ষ ত্যাগ করে ভিড়ে গিয়েছেন বিদ্রোহী শিবিরে। এর পরও গাদ্দাফি শক্ত হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে গত বুধবার তাঁর ওপর বড় আঘাতটা হেনেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুসা কুসা। পদত্যাগ করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে উঠেছেন।
ঘোরতর এই বিপদের দিনে যে গুটিকয়েক লোকের ওপর গাদ্দাফি নির্ভর করতেন, মুসা কুসা ছিলেন সেই দলে। তিনি গাদ্দাফিকে ছেড়ে যাওয়ায় এখন অন্যরাও দ্রুত সটকে পড়ার চেষ্টা করবেন বলে আশা করছেন বিদ্রোহীরা।
এখন গাদ্দাফির বড় সহায় তাঁর আত্মীয়স্বজন এবং তাঁর নিজের আদিবাসী গাদ্দাফা গোষ্ঠী। লিবিয়ার প্রায় ১৪০টি আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যে গাদ্দাফা একটি এবং এদের সংখ্যাও বেশ কম। কাজেই এখন অন্য গোষ্ঠীগুলোর সমর্থন গাদ্দাফির দরকার, যাদের অনেককে তিনি চার দশকের শাসনামলে হাত করেছিলেন রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর বড় বড় পদগুলো দিয়ে।
গাদ্দাফির জন্য গুরুত্বপূর্ণ দুটি মিত্র আদিবাসী গোষ্ঠী হলো ওয়ারফাল্লা ও মাগারাহ। এ দুটি দেশের অন্যতম বড় দুটি আদিবাসী গোষ্ঠী, প্রতিটির সদস্যসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ করে। এই দুই গোষ্ঠীর লোকজন অসীন আছেন নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি বড় বড় পদগুলোতে। গাদ্দাফির অন্যতম ডানহাত বলে পরিচিত সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আবদুল্লাহ সেনেউসি মাগারাহ গোষ্ঠীর সদস্য। এ ছাড়া তিনি গাদ্দাফির আত্মীয়।
গাদ্দাফির ছেলেদের মধ্যে তিনজন খামিস, মুতাচ্ছিম ও আল-সাদির গঠিত রক্ষীবাহিনীর অধিকাংশ সদস্য ওয়ারফাল্লা ও মাগারাহ গোষ্ঠীর। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে গাদ্দাফির লড়াইয়ের অন্যতম ভরসা এই বাহিনী।
তবে গত ফেব্রুয়ারিতে বিদ্রোহ শুরুর পর ওই দুই গোষ্ঠীর কিছু নেতা বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছেন এবং তাঁদের গোষ্ঠীর অনেকে বিদ্রোহী বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। বিদ্রোহীদের পূর্বাঞ্চলীয় নেতা মাহমুদ জিবরিল জাতিতে একজন ওয়ারফাল্লা।
তবে ওয়ারফাল্লা গোষ্ঠীর বেশির ভাগ মানুষ এখনো গাদ্দাফির প্রতি অনুগত। এর কারণ হতে পারে তারা আশা করছে, গাদ্দাফি ক্ষমতায় টিকে গেলে তারা এই আনুগত্যের পুরস্কার পাবে।
লিবিয়ার ইতিহাস এবং আদিবাসীদের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ফারাজ নাজিম জানিয়েছেন, ওয়ারফাল্লা গোষ্ঠীর মধ্যে যাঁরা গাদ্দাফির ঘনিষ্ঠ যেমন, অবকাঠামোমন্ত্রী মাতৌক মাতৌক, তাঁরা সম্প্রতি নিজেদের গোষ্ঠীর লোকজনকে গাদ্দাফির অনুগত থাকার জন্য শাসিয়ে দিয়েছেন।
ফারাজ নাজিম বলেন, ‘তাঁরা লোকজনকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, কেউ গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে তাঁকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। এভাবেই লোকজনকে জোর করে বশে রাখা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু একসময় এটা আর সম্ভব হবে না। পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে তাঁরাও গাদ্দাফিকে ডুবাতে পারেন, সেটা হয় সরাসরি গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে, নতুবা তাঁর পক্ষ ত্যাগ করে চুপচাপ থেকে।’
একা হয়ে পড়ছেন গাদ্দাফি: দিন দিন একা হয়ে পড়ছেন লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি। তাঁকে ছেড়ে ইতিমধ্যে অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চলে গেছেন। চলে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন আরও অনেকে। কিন্তু নিরাপত্তা ও দেশ ত্যাগে সমস্যা হওয়ার কারণে তাঁরা সে কথা প্রকাশ করতে পারছেন না।
আরবের বিভিন্ন পত্রপত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, গাদ্দাফিকে ছেড়ে যাওয়ার দলে নতুন করে শামিল হয়েছেন লিবীয় পার্লামেন্টের সমকক্ষ পপুলার কমিটির প্রধান মোহাম্মদ আবু আল-কাশিম জাওয়ি এবং শীর্ষ তেল কর্মকর্তা শুকরি ঘানেম। ঘানেম অবশ্য স্বপক্ষ ত্যাগের কথা অস্বীকার করেছেন।
তিউনিসিয়ায় অবস্থানরত আল-জাজিরার সাংবাদিক নাজনিন মুশহিরি বলেছেন, লিবিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবু জায়েদ দোরদাও গাদ্দাফির সঙ্গ ত্যাগ করেছেন। তিনি ১৯৯০ থেকে ৯৪ সাল পর্যন্ত লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবু আবদেস সালাস ত্রেকি বর্তমানে কায়রোতে অবস্থান করছেন। তাঁকে গাদ্দাফি জাতিসংঘে লিবিয়ার দূত হিসেবে নিয়োগ দিলেও তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, গাদ্দাফির হয়ে তিনি কাজ করতে রাজি নন।
লিবিয়ায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গাদ্দাফির বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেল ফাত্তাহ ইউনিস এবং বিচারমন্ত্রী মুস্তফা মোহাম্মদ আল-জলিল। পদস্থ সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তা স্বপক্ষ ত্যাগের চেষ্টা করছেন। কিন্তু কঠোর সরকারি নজরদারিতে থাকার কারণে এবং দেশ ত্যাগ করতে না পারায় তাঁরা তা করতে পারছেন না।
No comments