ইউপি নির্বাচন, অকার্যকর উপজেলা ও আরও কিছু কথা by তোফায়েল আহমেদ
তিন বছর বিলম্বে ইউপি নির্বাচনের যে তফসিল ঘোষিত হলো, সে অনুযায়ী ২৯ মার্চ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে উপকূলীয় ১১টি জেলার ৫৬৮টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আশা করা যায়, আগামী মে-জুন, ২০১১-এর মধ্যে বাকি ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচন সমাপ্ত হবে। এবারের ইউপি নির্বাচনে বিশেষত, উপকূলীয় এলাকায় যে বৈশিষ্ট্যসমূহ ফুটে উঠেছে তা নিয়ে একটু আলোচনা করা যায়। প্রথমত, দলীয় মনোনয়নে স্থানীয় নির্বাচন না করার নির্বাচন কমিশনের যে দৃঢ়তা, তাতে দুটি বড় দলের ‘মৌন সম্মতি’ পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা যায়। কারণ, দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়ার বা না দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনে সরকারের মধ্যবর্তী সময়ে জনমত যাচাইয়ের একটি সুযোগ হিসেবে নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণে রাজনৈতিক মেরুকরণ বিশ্লেষণের প্রবণতা ইউপি নির্বাচনে খুব একটা চোখে পড়ছে না। তৃতীয়ত, মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা খুব বেশি চোখে না পড়লেও অস্থিরতা ও সহিংসতা গত উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনের তুলনায় বেশি দেখা যাচ্ছে। চতুর্থত, মাঠপর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত হওয়ায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও নির্বাচনী অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। তা ছাড়া উপকূলীয় এলাকার বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য এবং বিগত সিডর ও আইলার কারণে নির্বাচনী প্রচারণায় ত্রাণসামগ্রী ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের হিসাব-নিকাশ বিরাট একটি স্থান অধিকার করেছে।
নির্বাচন অদলীয় হলেও মোটেই অরাজনৈতিকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। রাজনৈতিক দলের সক্রিয় নেতা-কর্মীরাই নির্বাচন করছেন। দল কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত না হলেও দলের সাংসদ, দলের কেন্দ্রীয় বা জেলা-উপজেলার কোনো কোনো নেতার নামে অনেকেই নির্বাচনী মাঠে পরিচিত হচ্ছেন। একই দলের একাধিক প্রার্থী কোথাও বিরল নয়। বিশেষত, ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের মধ্যে একই পদে একাধিক প্রার্থী বেশি সংখ্যায় রয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠান গণতন্ত্রের পথে নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ সরকার বাস্তবায়ন করছে। এর লক্ষ্য হওয়া উচিত পরিষদকে কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা ও ব্যবহার করা। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন-পরবর্তী সময়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। এক. নির্বাচনের পর দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্য সবার জন্য উপজেলা ও জেলাভিত্তিক প্রশিক্ষণ আয়োজন করে নতুন ইউনিয়ন পরিষদ আইন, ২০০৯ এবং উপজেলা পরিষদ আইন, ২০০৯ তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা করা উচিত। দুই. পরিষদসমূহকে দিনবদলের সনদ বাস্তবায়নের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। বিশেষত, ২০১১-১৫ পর্যন্ত কার্যকালের জন্য দেশের ইউনিয়ন পরিষদসমূহ যাতে নিজ নিজ ইউনিয়নের ভৌত অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদ, পয়োনিষ্কাশন, নিরাপদ পানীয় জল, আবাসন প্রভৃতি খাতে পাঁচ বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা তৈরি করে এগোতে পারে, সে বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের একটি রূপরেখা প্রদান করা যেতে পারে। ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদ আইনে এ নির্দেশনা দেওয়া আছে। তিন. ইউনিয়ন পরিষদে প্রয়োজনীয় জনবল অর্থাৎ সচিবের অতিরিক্ত অন্য একজন কর্মচারী প্রদানের দীর্ঘদিনের অঙ্গীকারটি অবিলম্বে পূরণ করা উচিত। চার. ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রচুর সম্পদ বরাদ্দ করা হয়। তা ছাড়া আরও ১০টি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দও ওই দুটি পর্যায়ে ব্যয়িত হয়। কিন্তু এ সম্পদসমূহ যথাযথভাবে ব্যবহার করে কার্যক্রম বাস্তবায়নের সঙ্গে উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের পঞ্চবার্ষিক ও বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার একটি যোগসূত্র স্থাপিত হওয়া প্রয়োজন। পাঁচ. আইনানুযায়ী ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদে যেসব মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হস্তান্তরিত করা হয়েছে, তাঁদের পরিষদের সঙ্গে কাজ করার বিধিবিধান স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রয়োগের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আশা করা যায়, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। নির্বাচনের পরপরই একদিকে প্রশিক্ষণ এবং অপর দিকে উপরিউক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করা হলে ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদসমূহ দেশের সুশাসন ও উন্নয়নে যথাযথ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
অকার্যকর উপজেলা পরিষদ: একটি জরিপ
২০০৯ সালের মার্চ মাস থেকে উপজেলা পরিষদসমূহ কাজ শুরু করেছে। ২০১১ সালের মার্চে দুই বছর পূর্ণ হলো। ইতিমধ্যে উপজেলা আইনকে কার্যকর করার লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় থেকে অনেক প্রয়োজনীয় বিধি, সার্কুলার ও নির্দেশিকা জারি হয়েছে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে ওই সব বিধিবিধান ও নির্দেশনা কার্যকর হচ্ছে না। জাতীয় সংসদে পাস করা আইন এবং মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিধিবিধান মাঠপর্যায়ে কার্যকর না হওয়ার প্রতিকারের কোনো উপযুক্ত ব্যবস্থা কোথাও গৃহীত হচ্ছে না। উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদব্যবস্থা মোটামুটি অকার্যকরই বলা যায়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের প্রতিটি উপজেলায় পরিষদের কার্যকারিতা সম্পর্কে মতামত গ্রহণের লক্ষ্যে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। ফেব্রুয়ারির ১৫ থেকে মার্চ ১৫—এ সময় নিয়ে জরিপটি চালানো হয়। জরিপে ডাকযোগে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা ও পুরুষ) এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে ২০টি প্রশ্নসংবলিত একটি প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়। একই প্রশ্ন ১৬০ জন চেয়ারম্যান, ১৬১ জন ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ), ১৬১ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১৬০ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে পাঠানো হয়। চেয়ারম্যানদের ১১ শতাংশ, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানদের ২২ শতাংশ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রশ্নপত্র উত্তরসহ ফেরত পাঠিয়েছেন। ১৬০ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কেউই এ প্রশ্নপত্রের কোনো উত্তর পাঠাননি।
চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৪৮১টি (১০০ শতাংশ) প্রশ্নপত্রের মধ্যে ১০৫টি (২২ শতাংশ) উত্তর পাওয়া গেছে, তা থেকে শুধু চারটি বিষয়ের ফলাফল নিম্নে দেওয়া হলো। (১) প্রতিষ্ঠার পর থেকে উপজেলা পরিষদের সভাসমূহ সঠিকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল না, বেশির ভাগ উপজেলা পরিষদ, পরিষদের নিয়মিত মাসিক সভার পরিবর্তে উপজেলা পরিষদ পূর্বাবস্থার মতো ‘উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি’র সভাই হয়ে আসছিল। এভাবে ২০১০-এর মাঝামাঝি পর্যন্ত উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভাই হয়েছে। সমপ্রতি বিভিন্ন প্রশিক্ষণের পর সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। ৯০ শতাংশ উত্তরদাতার মতে, উপজেলা পরিষদে অন্তত ২০১০-এর অক্টোবর-নভেম্বরের পর থেকে পরিষদের নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু সভাসমূহের আয়োজনের ক্ষেত্রে আইনের কিছু অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিধান অনুসরণ করা হচ্ছে না। যেমন সভার নোটিশ অন্তত সাত দিন আগে ইস্যু করা এবং প্রতিটি সভার জন্য একটি কর্মপত্র প্রণয়ন। (২) উপজেলা পরিষদে প্রতি অর্থবছরে একটি বাজেট প্রণয়ন হওয়ার কথা এবং এ লক্ষ্যে বিধিও জারি করা হয়েছে। কিন্তু ১০৫টি প্রশ্নপত্রের উত্তর বিশ্লেষণে দেখা যায় যে ১০৫টি উপজেলার মধ্যে মাত্র ১০টি উপজেলা (৯ দশমিক ৬১ শতাংশ) ২০০৯-১০ সালে বাজেট প্রণয়ন করেছে এবং ২০১০-১১ সালে বাজেট প্রণয়ন করেছে মাত্র ১৩টি উপজেলা (১২ দশমিক ৩৮ শতাংশ)। বাকি ৯৪টি জেলা ২০০৯-১০ এবং ৯১টি উপজেলা (৮৭ শতাংশ) ২০১০-১১ সালে কোনো বাজেট প্রণয়ন করেনি। (৩) উপজেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী প্রতিটি উপজেলায় ১৪টি করে ‘স্থায়ী কমিটি’ গঠনের বিধান রয়েছে। উত্তরদাতা উপজেলাসমূহের মধ্যে শুধু ২৫টি উপজেলায় কোনো না কোনো স্থায়ী কমিটি গঠিত হয়েছে, বাকি ৮০টি উপজেলায় (৭৬ শতাংশ) কোনো স্থায়ী কমিটি গঠিত হয়নি। (৪) উপজেলা পরিষদ আইন ২০০৯-এর বিধান অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের নিজস্ব বার্ষিক ও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা হওয়ার কথা। ১০৫টির মধ্যে মাত্র ২০টি উপজেলায় পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়, পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা এখনো কোথাও হয়নি। জরিপের ফলাফল থেকে বোঝা যায়, উপজেলা পদ্ধতি কীভাবে কাজ করছে।
প্রতি উপজেলায় গত দুই অর্থবছরে সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে বরাদ্দ প্রদান করেছে, যা জনসংখ্যা ও আয়তন অনুসারে ৬০-৯০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তা ছাড়া প্রতিটি উপজেলার কমবেশি রাজস্ব আয় রয়েছে। কোনো কোনো উপজেলা কর্মকর্তাদের বাড়িভাড়া, হাটবাজার তহবিল, অন্যান্য ইজারা, ভূমি উন্নয়ন করের ১ শতাংশ এবং ভূমি হস্তান্তর রাজস্বের ২ শতাংশ মিলে ৩০ লাখ থেকে ৫-১০ কোটি টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে। এসব অর্থ ছাড়াও উপজেলার প্রতিটি দপ্তরের নিজস্ব উন্নয়ন, অনুন্নয়ন, উপকরণ ও সেবা খাতের বরাদ্দ তো রয়েছেই। কোনো রকমের বাজেটই যদি পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত না হলো, তাহলে ওই অর্থসমূহ ব্যয় করা কি নিয়মসিদ্ধ হয়েছে? বিভাগীয় কমিশনাররা, জেলায় ডেপুটি কমিশনাররা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা কি এ বিষয়ে সরকারের কাছে জবাবদিহি করবেন?
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের উপজেলায় লাগাতার অনুপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। অনেকেই নিজেদের স্বেচ্ছায় উপজেলা থেকে কার্যত প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সরকার এসব বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে নির্বিকার। এ মুহূর্তে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় থেকে উপজেলা পরিষদকে মাঠপর্যায়ে সহায়তা করা প্রয়োজন। সরকার যদি এ ব্যাপারে কিছু করতে চায় তাহলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও স্থানীয় সরকার সচিবের নেতৃত্বে বিভাগীয় কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনারদের মাধ্যমে প্রতিটি জেলার অধীন উপজেলাসমূহের অবস্থা সরেজমিনে নিরীক্ষণ করতে পারে এবং চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।
জেলা পরিষদ পুনর্গঠন
প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে প্রদত্ত বক্তৃতার একপর্যায়ে জেলা পরিষদ গঠনের প্রস্তুতি বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বক্তব্য প্রদান করেন। জেলা পরিষদ পুনর্গঠনের এ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত ইতিবাচক। তাই জেলা পরিষদ গঠনের এ সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন। বিগত আওয়ামী লীগের সরকার ২০০০ সালে জেলা পরিষদ আইন প্রণয়ন করেছিল। বর্তমানে সে আইনের অধীনে, নাকি ওই আইন সংশোধন করে বা নতুন আইন প্রণয়ন করে জেলা পরিষদ গঠিত হতে যাচ্ছে, সেটি স্বচ্ছ হওয়া প্রয়োজন। আশা করি, জেলা পরিষদ আইন সংসদে পেশ করার আগে বিভিন্ন নাগরিক ফোরামে যথাযথভাবে আলোচিত হবে। যত দ্রুত সম্ভব জেলা পরিষদ আইন চূড়ান্ত করে সংবিধানের স্থানীয় সরকার-সম্পর্কিত বিধানসমূহ চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
শেষের কথা
স্থানীয় সরকারব্যবস্থার ওপর নতুন আইনকানুন প্রবর্তন না করা হলেও অন্তত প্রচলিত আইনসমূহ কার্যকর করে এ ব্যবস্থাকে ‘দিনবদলে’র লক্ষ্যে কাজে লাগানো যেত। কিন্তু গত দুই বছরে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়ন ও প্রশাসনকে একটি নৈরাজ্যের আঁধারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এখানে সরকারি কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান—কেউই তাদের যোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারেনি। আগামী তিন বছরের জন্য আইন ও নীতি অনুযায়ী যাতে প্রত্যেকে দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালন করতে পারে, সে জন্য সরকারের সচেষ্ট হওয়া উচিত। সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা প্রত্যেকের নিজ নিজ ক্ষেত্রে একটি শৃঙ্খলা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠ সম্ভব নয়।
ড. তোফায়েল আহমেদ, সদস্য, অধুনালুপ্ত স্থানীয় সরকার কমিশন।
নির্বাচন অদলীয় হলেও মোটেই অরাজনৈতিকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। রাজনৈতিক দলের সক্রিয় নেতা-কর্মীরাই নির্বাচন করছেন। দল কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত না হলেও দলের সাংসদ, দলের কেন্দ্রীয় বা জেলা-উপজেলার কোনো কোনো নেতার নামে অনেকেই নির্বাচনী মাঠে পরিচিত হচ্ছেন। একই দলের একাধিক প্রার্থী কোথাও বিরল নয়। বিশেষত, ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের মধ্যে একই পদে একাধিক প্রার্থী বেশি সংখ্যায় রয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠান গণতন্ত্রের পথে নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ সরকার বাস্তবায়ন করছে। এর লক্ষ্য হওয়া উচিত পরিষদকে কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা ও ব্যবহার করা। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন-পরবর্তী সময়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। এক. নির্বাচনের পর দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্য সবার জন্য উপজেলা ও জেলাভিত্তিক প্রশিক্ষণ আয়োজন করে নতুন ইউনিয়ন পরিষদ আইন, ২০০৯ এবং উপজেলা পরিষদ আইন, ২০০৯ তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা করা উচিত। দুই. পরিষদসমূহকে দিনবদলের সনদ বাস্তবায়নের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। বিশেষত, ২০১১-১৫ পর্যন্ত কার্যকালের জন্য দেশের ইউনিয়ন পরিষদসমূহ যাতে নিজ নিজ ইউনিয়নের ভৌত অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদ, পয়োনিষ্কাশন, নিরাপদ পানীয় জল, আবাসন প্রভৃতি খাতে পাঁচ বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা তৈরি করে এগোতে পারে, সে বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের একটি রূপরেখা প্রদান করা যেতে পারে। ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদ আইনে এ নির্দেশনা দেওয়া আছে। তিন. ইউনিয়ন পরিষদে প্রয়োজনীয় জনবল অর্থাৎ সচিবের অতিরিক্ত অন্য একজন কর্মচারী প্রদানের দীর্ঘদিনের অঙ্গীকারটি অবিলম্বে পূরণ করা উচিত। চার. ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রচুর সম্পদ বরাদ্দ করা হয়। তা ছাড়া আরও ১০টি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দও ওই দুটি পর্যায়ে ব্যয়িত হয়। কিন্তু এ সম্পদসমূহ যথাযথভাবে ব্যবহার করে কার্যক্রম বাস্তবায়নের সঙ্গে উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের পঞ্চবার্ষিক ও বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার একটি যোগসূত্র স্থাপিত হওয়া প্রয়োজন। পাঁচ. আইনানুযায়ী ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদে যেসব মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হস্তান্তরিত করা হয়েছে, তাঁদের পরিষদের সঙ্গে কাজ করার বিধিবিধান স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রয়োগের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আশা করা যায়, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। নির্বাচনের পরপরই একদিকে প্রশিক্ষণ এবং অপর দিকে উপরিউক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করা হলে ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদসমূহ দেশের সুশাসন ও উন্নয়নে যথাযথ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
অকার্যকর উপজেলা পরিষদ: একটি জরিপ
২০০৯ সালের মার্চ মাস থেকে উপজেলা পরিষদসমূহ কাজ শুরু করেছে। ২০১১ সালের মার্চে দুই বছর পূর্ণ হলো। ইতিমধ্যে উপজেলা আইনকে কার্যকর করার লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় থেকে অনেক প্রয়োজনীয় বিধি, সার্কুলার ও নির্দেশিকা জারি হয়েছে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে ওই সব বিধিবিধান ও নির্দেশনা কার্যকর হচ্ছে না। জাতীয় সংসদে পাস করা আইন এবং মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিধিবিধান মাঠপর্যায়ে কার্যকর না হওয়ার প্রতিকারের কোনো উপযুক্ত ব্যবস্থা কোথাও গৃহীত হচ্ছে না। উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদব্যবস্থা মোটামুটি অকার্যকরই বলা যায়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের প্রতিটি উপজেলায় পরিষদের কার্যকারিতা সম্পর্কে মতামত গ্রহণের লক্ষ্যে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। ফেব্রুয়ারির ১৫ থেকে মার্চ ১৫—এ সময় নিয়ে জরিপটি চালানো হয়। জরিপে ডাকযোগে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা ও পুরুষ) এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে ২০টি প্রশ্নসংবলিত একটি প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়। একই প্রশ্ন ১৬০ জন চেয়ারম্যান, ১৬১ জন ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ), ১৬১ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১৬০ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে পাঠানো হয়। চেয়ারম্যানদের ১১ শতাংশ, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানদের ২২ শতাংশ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রশ্নপত্র উত্তরসহ ফেরত পাঠিয়েছেন। ১৬০ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কেউই এ প্রশ্নপত্রের কোনো উত্তর পাঠাননি।
চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৪৮১টি (১০০ শতাংশ) প্রশ্নপত্রের মধ্যে ১০৫টি (২২ শতাংশ) উত্তর পাওয়া গেছে, তা থেকে শুধু চারটি বিষয়ের ফলাফল নিম্নে দেওয়া হলো। (১) প্রতিষ্ঠার পর থেকে উপজেলা পরিষদের সভাসমূহ সঠিকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল না, বেশির ভাগ উপজেলা পরিষদ, পরিষদের নিয়মিত মাসিক সভার পরিবর্তে উপজেলা পরিষদ পূর্বাবস্থার মতো ‘উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি’র সভাই হয়ে আসছিল। এভাবে ২০১০-এর মাঝামাঝি পর্যন্ত উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভাই হয়েছে। সমপ্রতি বিভিন্ন প্রশিক্ষণের পর সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। ৯০ শতাংশ উত্তরদাতার মতে, উপজেলা পরিষদে অন্তত ২০১০-এর অক্টোবর-নভেম্বরের পর থেকে পরিষদের নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু সভাসমূহের আয়োজনের ক্ষেত্রে আইনের কিছু অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিধান অনুসরণ করা হচ্ছে না। যেমন সভার নোটিশ অন্তত সাত দিন আগে ইস্যু করা এবং প্রতিটি সভার জন্য একটি কর্মপত্র প্রণয়ন। (২) উপজেলা পরিষদে প্রতি অর্থবছরে একটি বাজেট প্রণয়ন হওয়ার কথা এবং এ লক্ষ্যে বিধিও জারি করা হয়েছে। কিন্তু ১০৫টি প্রশ্নপত্রের উত্তর বিশ্লেষণে দেখা যায় যে ১০৫টি উপজেলার মধ্যে মাত্র ১০টি উপজেলা (৯ দশমিক ৬১ শতাংশ) ২০০৯-১০ সালে বাজেট প্রণয়ন করেছে এবং ২০১০-১১ সালে বাজেট প্রণয়ন করেছে মাত্র ১৩টি উপজেলা (১২ দশমিক ৩৮ শতাংশ)। বাকি ৯৪টি জেলা ২০০৯-১০ এবং ৯১টি উপজেলা (৮৭ শতাংশ) ২০১০-১১ সালে কোনো বাজেট প্রণয়ন করেনি। (৩) উপজেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী প্রতিটি উপজেলায় ১৪টি করে ‘স্থায়ী কমিটি’ গঠনের বিধান রয়েছে। উত্তরদাতা উপজেলাসমূহের মধ্যে শুধু ২৫টি উপজেলায় কোনো না কোনো স্থায়ী কমিটি গঠিত হয়েছে, বাকি ৮০টি উপজেলায় (৭৬ শতাংশ) কোনো স্থায়ী কমিটি গঠিত হয়নি। (৪) উপজেলা পরিষদ আইন ২০০৯-এর বিধান অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের নিজস্ব বার্ষিক ও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা হওয়ার কথা। ১০৫টির মধ্যে মাত্র ২০টি উপজেলায় পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়, পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা এখনো কোথাও হয়নি। জরিপের ফলাফল থেকে বোঝা যায়, উপজেলা পদ্ধতি কীভাবে কাজ করছে।
প্রতি উপজেলায় গত দুই অর্থবছরে সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে বরাদ্দ প্রদান করেছে, যা জনসংখ্যা ও আয়তন অনুসারে ৬০-৯০ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তা ছাড়া প্রতিটি উপজেলার কমবেশি রাজস্ব আয় রয়েছে। কোনো কোনো উপজেলা কর্মকর্তাদের বাড়িভাড়া, হাটবাজার তহবিল, অন্যান্য ইজারা, ভূমি উন্নয়ন করের ১ শতাংশ এবং ভূমি হস্তান্তর রাজস্বের ২ শতাংশ মিলে ৩০ লাখ থেকে ৫-১০ কোটি টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকে। এসব অর্থ ছাড়াও উপজেলার প্রতিটি দপ্তরের নিজস্ব উন্নয়ন, অনুন্নয়ন, উপকরণ ও সেবা খাতের বরাদ্দ তো রয়েছেই। কোনো রকমের বাজেটই যদি পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত না হলো, তাহলে ওই অর্থসমূহ ব্যয় করা কি নিয়মসিদ্ধ হয়েছে? বিভাগীয় কমিশনাররা, জেলায় ডেপুটি কমিশনাররা এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা কি এ বিষয়ে সরকারের কাছে জবাবদিহি করবেন?
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের উপজেলায় লাগাতার অনুপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। অনেকেই নিজেদের স্বেচ্ছায় উপজেলা থেকে কার্যত প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সরকার এসব বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে নির্বিকার। এ মুহূর্তে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় থেকে উপজেলা পরিষদকে মাঠপর্যায়ে সহায়তা করা প্রয়োজন। সরকার যদি এ ব্যাপারে কিছু করতে চায় তাহলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও স্থানীয় সরকার সচিবের নেতৃত্বে বিভাগীয় কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনারদের মাধ্যমে প্রতিটি জেলার অধীন উপজেলাসমূহের অবস্থা সরেজমিনে নিরীক্ষণ করতে পারে এবং চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।
জেলা পরিষদ পুনর্গঠন
প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে প্রদত্ত বক্তৃতার একপর্যায়ে জেলা পরিষদ গঠনের প্রস্তুতি বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বক্তব্য প্রদান করেন। জেলা পরিষদ পুনর্গঠনের এ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত ইতিবাচক। তাই জেলা পরিষদ গঠনের এ সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন। বিগত আওয়ামী লীগের সরকার ২০০০ সালে জেলা পরিষদ আইন প্রণয়ন করেছিল। বর্তমানে সে আইনের অধীনে, নাকি ওই আইন সংশোধন করে বা নতুন আইন প্রণয়ন করে জেলা পরিষদ গঠিত হতে যাচ্ছে, সেটি স্বচ্ছ হওয়া প্রয়োজন। আশা করি, জেলা পরিষদ আইন সংসদে পেশ করার আগে বিভিন্ন নাগরিক ফোরামে যথাযথভাবে আলোচিত হবে। যত দ্রুত সম্ভব জেলা পরিষদ আইন চূড়ান্ত করে সংবিধানের স্থানীয় সরকার-সম্পর্কিত বিধানসমূহ চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
শেষের কথা
স্থানীয় সরকারব্যবস্থার ওপর নতুন আইনকানুন প্রবর্তন না করা হলেও অন্তত প্রচলিত আইনসমূহ কার্যকর করে এ ব্যবস্থাকে ‘দিনবদলে’র লক্ষ্যে কাজে লাগানো যেত। কিন্তু গত দুই বছরে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়ন ও প্রশাসনকে একটি নৈরাজ্যের আঁধারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এখানে সরকারি কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান—কেউই তাদের যোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারেনি। আগামী তিন বছরের জন্য আইন ও নীতি অনুযায়ী যাতে প্রত্যেকে দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালন করতে পারে, সে জন্য সরকারের সচেষ্ট হওয়া উচিত। সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা প্রত্যেকের নিজ নিজ ক্ষেত্রে একটি শৃঙ্খলা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠ সম্ভব নয়।
ড. তোফায়েল আহমেদ, সদস্য, অধুনালুপ্ত স্থানীয় সরকার কমিশন।
No comments