সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট, ২০১১ -রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে
সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট, ২০১১ বা জনপ্রশাসনের জন্য আইন চূড়ান্ত হওয়ার ঘটনাটি একই সঙ্গে ইতিবাচক ও নেতিবাচক। ইতিবাচক এ কারণে যে গত ৩৯ বছরে যা হয়নি তা হলো। সংবিধানে বেসামরিক প্রশাসন আইনের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও আইন ও এর প্রয়োগ উভয়ই ছিল অসংগতিপূর্ণ। আর নেতিবাচক হলো, নতুন পদ্ধতিতে বেশুমার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সুযোগ থাকা এবং পদে পদে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থার মাধ্যমে তার যথেচ্ছ ব্যবহারেরও অবকাশ থেকে যাচ্ছে। তাই বিষয়টির পুনঃপর্যালোচনা প্রয়োজন।
সরকারের জনপ্রশাসনে নিয়োগ ও পরিচালনার বেলায় জনপ্রশাসনের জটিল ও গভীর সমস্যাগুলো আগে চিহ্নিত করা উচিত। প্রশাসনে দুর্নীতির কথা সুবিদিত, পাশাপাশি অদক্ষতা ও রাজনৈতিক পক্ষপাতও স্পষ্ট। যেখানে অদক্ষতা, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক পক্ষপাত সহাবস্থান করে, সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যাতে জনপ্রশাসনে অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে থাকা এসব উপসর্গ ঝেঁটিয়ে বিদায় করা যায়। কিন্তু অবসর নেওয়া বা দেওয়ার বিষয়ে সরকারের একচেটিয়া অধিকার কিছুটা খর্ব করা হলেও অন্য ক্ষেত্রে তা পুষিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আইনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবাধ সুযোগ রাখায় প্রশ্ন উঠেছে যে এর মাধ্যমে একদিকে যেমন সরকারের রাজনৈতিক ইচ্ছাপূরণের সুযোগ থাকে, তেমনি নিয়মিত প্রশাসনিক কাঠামোর সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের সংঘাতেরও ঝুঁকি বেড়ে যায়। কেননা, এভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নিয়মিত চাকরিজীবী না হওয়ায় চাকরির বিধিবিধানও মানেন না। নিয়োগকর্তাকে খুশি করতেই তাঁরা সব সময় ব্যস্ত থাকেন। নিয়োগকর্তাও তাঁদের রাজনৈতিক অভিলাষ পূরণের কাজে লাগাতে সচেষ্ট থাকেন। এতে যেমন জনপ্রশাসনেরর কর্মকর্তাদের মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরি হয়, তেমনি শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে বাধ্য। নিয়মিত সরকারি কর্মচারীরা কাঙ্ক্ষিত পদোন্নতি থেকেও বঞ্চিত হন। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ আসলে রাষ্ট্রপতির পছন্দের নিয়োগ, যা মোট নিয়োগের ১০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এবং এ ক্ষেত্রে যোগ্যতা-দক্ষতার চাইতে বড় হয়ে ওঠে দলীয় পরিচয়। একই সঙ্গে সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার বিধান বহাল থাকায় কর্মচারীদের সর্বদাই ওপরমহল বা রাজনৈতিক কর্তাদের সন্তোষের ওপর চলতে হয়।
নিশ্চয়ই নতুন সার্ভিস অ্যাক্টে ভালো অনেক কিছুই রয়েছে। কিন্তু অবাধ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ও সুরক্ষা, পদোন্নতি ও অবসরের বিধানগুলোর কারণে এই অ্যাক্টকে সর্বাঙ্গীণ সুন্দর বলার উপায় নেই। প্রস্তাবিত আইনের খসড়াটি ওয়েবসাইটে দেওয়ায় সবাই মতামত জানানোর সুযোগ পাবেন। তদুপরি বিশেষজ্ঞ ও জনপ্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলেরও পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
সর্বোপরি এটি জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হবে। সেখানে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে একটি যুগোপযোগী ও পক্ষপাতমুক্ত সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট চূড়ান্ত করা হবে—এটাই সবাই আশা করে। সব ভালো তার, শেষ ভালো যার।
সরকারের জনপ্রশাসনে নিয়োগ ও পরিচালনার বেলায় জনপ্রশাসনের জটিল ও গভীর সমস্যাগুলো আগে চিহ্নিত করা উচিত। প্রশাসনে দুর্নীতির কথা সুবিদিত, পাশাপাশি অদক্ষতা ও রাজনৈতিক পক্ষপাতও স্পষ্ট। যেখানে অদক্ষতা, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক পক্ষপাত সহাবস্থান করে, সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, যাতে জনপ্রশাসনে অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে থাকা এসব উপসর্গ ঝেঁটিয়ে বিদায় করা যায়। কিন্তু অবসর নেওয়া বা দেওয়ার বিষয়ে সরকারের একচেটিয়া অধিকার কিছুটা খর্ব করা হলেও অন্য ক্ষেত্রে তা পুষিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আইনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবাধ সুযোগ রাখায় প্রশ্ন উঠেছে যে এর মাধ্যমে একদিকে যেমন সরকারের রাজনৈতিক ইচ্ছাপূরণের সুযোগ থাকে, তেমনি নিয়মিত প্রশাসনিক কাঠামোর সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের সংঘাতেরও ঝুঁকি বেড়ে যায়। কেননা, এভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নিয়মিত চাকরিজীবী না হওয়ায় চাকরির বিধিবিধানও মানেন না। নিয়োগকর্তাকে খুশি করতেই তাঁরা সব সময় ব্যস্ত থাকেন। নিয়োগকর্তাও তাঁদের রাজনৈতিক অভিলাষ পূরণের কাজে লাগাতে সচেষ্ট থাকেন। এতে যেমন জনপ্রশাসনেরর কর্মকর্তাদের মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরি হয়, তেমনি শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে বাধ্য। নিয়মিত সরকারি কর্মচারীরা কাঙ্ক্ষিত পদোন্নতি থেকেও বঞ্চিত হন। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ আসলে রাষ্ট্রপতির পছন্দের নিয়োগ, যা মোট নিয়োগের ১০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এবং এ ক্ষেত্রে যোগ্যতা-দক্ষতার চাইতে বড় হয়ে ওঠে দলীয় পরিচয়। একই সঙ্গে সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার বিধান বহাল থাকায় কর্মচারীদের সর্বদাই ওপরমহল বা রাজনৈতিক কর্তাদের সন্তোষের ওপর চলতে হয়।
নিশ্চয়ই নতুন সার্ভিস অ্যাক্টে ভালো অনেক কিছুই রয়েছে। কিন্তু অবাধ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ও সুরক্ষা, পদোন্নতি ও অবসরের বিধানগুলোর কারণে এই অ্যাক্টকে সর্বাঙ্গীণ সুন্দর বলার উপায় নেই। প্রস্তাবিত আইনের খসড়াটি ওয়েবসাইটে দেওয়ায় সবাই মতামত জানানোর সুযোগ পাবেন। তদুপরি বিশেষজ্ঞ ও জনপ্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলেরও পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
সর্বোপরি এটি জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হবে। সেখানে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে একটি যুগোপযোগী ও পক্ষপাতমুক্ত সিভিল সার্ভিস অ্যাক্ট চূড়ান্ত করা হবে—এটাই সবাই আশা করে। সব ভালো তার, শেষ ভালো যার।
No comments