বিরোধীদলীয় নেত্রীর ক্ষীণ উপস্থিতি
সংসদ যে ভালোভাবে চলছে না, সেটা অধিবেশন চলার সময় কক্ষের ফাঁকা চেয়ারগুলো দেখলেই বোঝা যায়। কিন্তু আরও উদ্বেগজনক চিত্রটি হলো সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার ক্ষীণ উপস্থিতি। বর্তমান সংসদে ১১৭ কার্যদিবসের মধ্যে তিনি মাত্র চার দিন উপস্থিত ছিলেন। বলতে হয়, সংসদের অবস্থা শুধু খারাপই নয়, খুব খারাপ। কারণ সংসদে বিরোধী দলের মনোনীত কোনো উপনেতাও নেই। তাই নেত্রীর অনুপস্থিতিতে সংসদে তাদের ভূমিকা অনেকাংশে দুর্বল হয়ে পড়ে। সংসদে কান্ডারিবিহীন বিরোধী দলের পক্ষে পরিকল্পিত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয় না। সংসদীয় কার্যক্রম গুরুত্ব হারায়। এই পরিস্থিতি কার্যকর সংসদের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
অথচ নির্বাচনের আগে বিএনপি তাদের ইশতেহারে সংসদকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করার জন্য বিরোধী দলের ভূমিকার প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছিল। বিশেষভাবে তারা উল্লেখ করেছিল যে কোনো সংসদ সদস্য সংসদের অনুমোদন ছাড়া ৩০ দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলে তাঁর সদস্যপদ শূন্য হবে। ইস্যুভিত্তিক ওয়াকআউট ছাড়া কোনো দল বা জোট সংসদের পুরো সেশন বা বৈঠক বর্জন করতে পারবে না। আশান্বিত হওয়ার মতো এসব প্রতিশ্রুতি থেকে বিএনপি এখন দূরে সরে এসেছে। নির্বাচনে জয়লাভ করতে না পারলে নীতিগত অবস্থান পরিবর্তনের এই অনুশীলন একটি রাজনৈতিক দলের অদূরদর্শিতার প্রমাণ।
শুধু বিরোধীদলীয় নেত্রী নয়, সংসদে সামগ্রিকভাবে বিরোধী দলের উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে কম। ১১৭ দিবসের মধ্যে গড়ে মাত্র ৩২ কার্যদিবস উপস্থিতি সংসদের প্রতি বিরোধী দলের অনাগ্রহের প্রকাশ। তাহলে তারা নির্বাচন করেছিল কেন? কেন মানুষ তাদের ভোট দিয়েছে? সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকারি দলের কাজকর্মের জবাবদিহি হয় সংসদ অধিবেশনে। বিরোধী দলের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের প্রশ্ন করেন, তাঁদের কাজের ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা করেন। সংসদে বিরোধী দলের অনুপস্থিতির অর্থ দাঁড়ায় সরকারের ভালো-মন্দ সবকিছু বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে নিতে মানুষকে বাধ্য করা। এটা অন্যায়। সংসদে উপস্থিত থেকে সরকারকে জনকল্যাণকর কাজ করতে বাধ্য করা বিরোধী দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। বিরোধী দলের দেখা উচিত, যেন তারা এই প্রত্যাশিত অবস্থান থেকে বিচ্যুত না হয়।
এখানে সরকারি দলকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিরোধী দলকে কোণঠাসা করে রাখার প্রবণতা পরিণামে সরকারের জন্যও বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিরোধী দলের জন্য অমর্যাদাকর কোনো কথা বা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা দরকার। সরকারি দলের উদ্দেশ্য হবে বিরোধী দলকে সংসদে ধরে রাখা, দূরে ঠেলে দেওয়া নয়।
বিগত দুটি সংসদের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিরোধীদলীয় নেত্রী সংসদ অধিবেশনে খুব কম উপস্থিত থাকেন। এই সংস্কৃতি সংসদীয় গণতন্ত্রের আকাশে কালো মেঘের মতো বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে অর্থবহ উদ্যোগ নিতে হবে। সংসদ কার্যকর থাকলে গণতন্ত্র সংকটমুক্ত থাকে এবং দেশের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত হয়। তাই মাথাব্যথাটা তাদেরই বেশি থাকা দরকার, যারা সংবিধানবহির্ভূত শক্তির হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার। কার্যকর সংসদ নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র নিরাপদ হবে না।
অথচ নির্বাচনের আগে বিএনপি তাদের ইশতেহারে সংসদকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করার জন্য বিরোধী দলের ভূমিকার প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছিল। বিশেষভাবে তারা উল্লেখ করেছিল যে কোনো সংসদ সদস্য সংসদের অনুমোদন ছাড়া ৩০ দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলে তাঁর সদস্যপদ শূন্য হবে। ইস্যুভিত্তিক ওয়াকআউট ছাড়া কোনো দল বা জোট সংসদের পুরো সেশন বা বৈঠক বর্জন করতে পারবে না। আশান্বিত হওয়ার মতো এসব প্রতিশ্রুতি থেকে বিএনপি এখন দূরে সরে এসেছে। নির্বাচনে জয়লাভ করতে না পারলে নীতিগত অবস্থান পরিবর্তনের এই অনুশীলন একটি রাজনৈতিক দলের অদূরদর্শিতার প্রমাণ।
শুধু বিরোধীদলীয় নেত্রী নয়, সংসদে সামগ্রিকভাবে বিরোধী দলের উপস্থিতি আশঙ্কাজনকভাবে কম। ১১৭ দিবসের মধ্যে গড়ে মাত্র ৩২ কার্যদিবস উপস্থিতি সংসদের প্রতি বিরোধী দলের অনাগ্রহের প্রকাশ। তাহলে তারা নির্বাচন করেছিল কেন? কেন মানুষ তাদের ভোট দিয়েছে? সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকারি দলের কাজকর্মের জবাবদিহি হয় সংসদ অধিবেশনে। বিরোধী দলের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের প্রশ্ন করেন, তাঁদের কাজের ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা করেন। সংসদে বিরোধী দলের অনুপস্থিতির অর্থ দাঁড়ায় সরকারের ভালো-মন্দ সবকিছু বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে নিতে মানুষকে বাধ্য করা। এটা অন্যায়। সংসদে উপস্থিত থেকে সরকারকে জনকল্যাণকর কাজ করতে বাধ্য করা বিরোধী দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। বিরোধী দলের দেখা উচিত, যেন তারা এই প্রত্যাশিত অবস্থান থেকে বিচ্যুত না হয়।
এখানে সরকারি দলকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিরোধী দলকে কোণঠাসা করে রাখার প্রবণতা পরিণামে সরকারের জন্যও বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিরোধী দলের জন্য অমর্যাদাকর কোনো কথা বা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা দরকার। সরকারি দলের উদ্দেশ্য হবে বিরোধী দলকে সংসদে ধরে রাখা, দূরে ঠেলে দেওয়া নয়।
বিগত দুটি সংসদের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বিরোধীদলীয় নেত্রী সংসদ অধিবেশনে খুব কম উপস্থিত থাকেন। এই সংস্কৃতি সংসদীয় গণতন্ত্রের আকাশে কালো মেঘের মতো বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে অর্থবহ উদ্যোগ নিতে হবে। সংসদ কার্যকর থাকলে গণতন্ত্র সংকটমুক্ত থাকে এবং দেশের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত হয়। তাই মাথাব্যথাটা তাদেরই বেশি থাকা দরকার, যারা সংবিধানবহির্ভূত শক্তির হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার। কার্যকর সংসদ নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র নিরাপদ হবে না।
No comments