খাদ্যনিরাপত্তা ও ক্ষুধা সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি -বিশ্ব খাদ্য দিবস by হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন
বিশ্বের ১০০ কোটিরও বেশি মানুষের জীবনের জন্য প্রতি দিন খাদ্য উত্পাদন, ক্রয় বা বিক্রয় করার প্রচেষ্টা সুনির্দিষ্টভাবে এক সংগ্রাম। বিষয়টি আমাদের সবার কাছেই গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্বের সাধারণ ক্ষুদ্র এক কৃষকের প্রাত্যহিক জীবনের কথা ধরা যাক। সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা, এশিয়া অথবা লাতিন আমেরিকার কোনো এক পল্লীগ্রামে এক নারী কৃষক বাস করেন। তিনি একটুকরো জমি চাষ করেন, যা তাঁর নিজের নয়। তিনি সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে ওঠেন এবং কয়েক মাইল হেঁটে পানি সংগ্রহ করতে যান; সারা দিন মাঠে কাজ করেন। মাঝেমধ্যে তাঁর শিশুটিকে পিঠের সঙ্গে বেঁধেও কাজ করতে হয়। খরা, ফসলের বিভিন্ন রোগ বা পোকামাকড় যদি তাঁর ফসল ধ্বংস করে না দেয় এবং তিনি তাঁর পরিবারকে খাওয়ানোর জন্য পর্যাপ্ত শস্য ফলাতে পারেন, তাহলে তিনি ভাগ্যবতী। অবশ্য কিছু শস্য তাঁর কাছে অবশিষ্ট থেকে যেতে পারে, কিন্তু তা বিক্রি করতে নিকটবর্তী বাজারে যাওয়ার জন্য সেখানে কোনো রাস্তা নেই অথবা তাঁর কাছ থেকে তা কেনার সামর্থ্যও কারও নেই।
এবার ওই কৃষকের কাছ থেকে ১০০ মাইল দূরবর্তী জনাকীর্ণ শহরের এক যুবকের জীবনের কথা ধরা যাক। তাঁর কোনো চাকরি নেই, অথবা তিনি অল্প বেতনের কোনো কাজ করেন। তিনি বাজারে গিয়ে দেখেন, খাদ্য পচে যাচ্ছে, অথবা সেই খাদ্য তাঁর ক্রয়সীমার বাইরে। তিনি ক্ষুধার্ত এবং এ জন্য প্রায়ই ক্ষুব্ধ থাকেন।
ওই কৃষকের বিক্রি করার জন্য অতিরিক্ত খাদ্য আছে এবং এ যুবক তা কিনতে চান; তবে তাঁদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে কিছু জটিল অবস্থার কারণে এ সাধারণ লেনদেনের বিষয়টি ঘটতে পারে না।
বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাই হচ্ছে মূল কথা, যাকে আমরা ‘খাদ্যনিরাপত্তা’ বলছি। এর অর্থ হচ্ছে জমিতে বীজ বপন ও পর্যাপ্ত ফসল ফলাতে বিশ্বব্যাপী কৃষকদের ক্ষমতায়ন, পশুসম্পদের কার্যকর পরিচর্যা অথবা মত্স্য আহরণ করে তাদের উত্পাদিত এ খাদ্য যেসব মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের কাছে পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা।
খাদ্যনিরাপত্তা নিছক খাদ্য-সম্পর্কিত কোনো বিষয় নয়। এটি জটিল কিছু বিষয়ের একটি সমন্বিত রূপ। তা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট খরা ও বন্যা; বিশ্ব অর্থনীতির উত্থান-পতন, যা খাদ্যমূল্যকে প্রভাবিত করে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের ভাগ্যকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয় এবং জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, যা পরিবহন খরচ বাড়িয়ে দেয়।
খাদ্যনিরাপত্তা হচ্ছে নিরাপত্তা-সম্পর্কিত সবকিছুই। প্রলম্বিত ক্ষুধা সরকার, সমাজ ও দেশের সীমান্তের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে। ক্ষুধার্ত অথবা পুষ্টিহীন মানুষ, যাদের কোনো উপার্জন নেই এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের যত্ন নিতে পারে না, তারা নিরাশা ও হতাশার অনুভূতিতে ভোগে। আর এ নিরাশাই তাদের উত্তেজনা, বিবাদ এমনকি সহিংসতার পথে নিয়ে যেতে পারে। গত ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬০টিরও বেশি দেশে খাদ্য নিয়ে দাঙ্গা হয়েছে।
উন্নয়নের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা খাদ্যনিরাপত্তা প্রয়াসকে আরও তথ্যসমৃদ্ধ করবে। আসলে স্থায়ী ফলাফল অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে, এমন প্রকল্পের পেছনে আমরা অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় করে ফেলেছি। অবশ্য এসব প্রয়াস থেকে আমরা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আমরা জানি, হাজার মাইল দূরের কোনো বিদেশি সরকার বা প্রতিষ্ঠান নয়, বরং যারা সমস্যার সবচেয়ে কাছাকাছি রয়েছে তাদের কাছ থেকেই সমাধানের কার্যকর কৌশল বেরিয়ে আসে। আর আমরা এটাও জানি, উন্নয়নকে তখনই সবচেয়ে ভালোভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, যখন এটাকে সহায়তা নয় বরং বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এসব অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই আমাদের খাদ্যনিরাপত্তা উদ্যোগটি পাঁচটি নীতির আলোকে পরিচালিত হবে, যা আমাদের সমস্যার মূলে পৌঁছাতে সহায়তা করে স্থায়ী পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
প্রথমত, আমরা জানি, কৃষিক্ষেত্রে সর্বজনপ্রযোজ্য বলে একক কোনো মডেল নেই। এ জন্য অংশীদার দেশগুলোর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করে যাব।
দ্বিতীয়ত, ক্ষুদ্র কৃষককে বাঁচাতে আমরা উন্নত মানের বীজ থেকে শুরু করে ঝুঁকি-বণ্টন কর্মসূচিতে বিনিয়োগ করে ক্ষুধার মূল কারণগুলো মোকাবিলা করব। আর বিশ্বের অধিকাংশ কৃষক যেহেতু নারী, তাই কৃষিক্ষেত্রে আমাদের বিনিয়োগ যেন তাদের আকাঙ্ক্ষা ও দৃঢ়তাকে আরও সক্ষম করে তোলে সে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তৃতীয়ত, কোনো নির্দিষ্ট কিছু এককভাবে ক্ষুধাকে সমূলে উত্পাটন করতে পারবে না। তবে সংশ্লিষ্টরা যদি রাষ্ট্রীয়, আঞ্চলিক ও ভৌগোলিক পর্যায়ে সমন্বয় বজায় রেখে কাজ করে, তাহলে আমাদের কাজের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে যেতে পারে।
চতুর্থত, কোনো একটি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রসারিত হওয়ার মতো সম্পদ ও ব্যাপ্তি বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে। তাদের প্রয়াসগুলোতে সহায়তা করার মাধ্যমে আমরা বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা থেকে লাভবান হতে পারি।
অবশেষে, আমরা দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতি ও জবাবদিহির অঙ্গীকার করছি। এর প্রমাণস্বরূপ আমরা এমন কিছু পরিকল্পনায় বিনিয়োগ করব, যাতে আমরা কী করছি তা জনগণ যাচাই ও মূল্যায়ন করতে পারে।
এ প্রয়াসের গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়তো বা অনেক বছর কিংবা অনেক যুগ লেগে যেতে পারে, তবু এ জন্য আমাদের সম্পূর্ণ সম্পদ ও শক্তি প্রয়োগ করার অঙ্গীকার করছি।
এ প্রয়াসের জন্য কাজ করে যাওয়ার পাশাপাশি জরুরি খাদ্যসহায়তা এবং দুর্যোগ ও বিপর্যয়কালে সাহায্যের আকুল আবেদনে সাড়া দেওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকারও আমরা অক্ষুণ্ন রাখব। যেমন, বর্তমানে ‘হর্ন অব আফ্রিকা’য় বিপর্যয় চলছে, যেখানে অনাবৃষ্টি, ফসল নষ্ট এবং গৃহযুদ্ধের কারণে গত ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে।
বিশ্বকৃষিকে উজ্জীবিত করে তোলাটা সহজ হবে না। সত্যিকার অর্থে এ উদ্যোগ আমাদের দেশের নেওয়া সর্বকালের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী এবং সর্বজনীন কূটনৈতিক ও উন্নয়ন উদ্যোগগুলোর অন্যতম। তবে এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভবপর ও যুক্তিসংগত। আর আমরা যদি এতে সাফল্য অর্জন করতে পারি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যত্ অতীতের চেয়ে অনেক বেশি শান্তিময় ও সমৃদ্ধ হবে।
ইংরেজি থেকে অনূদিত
হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিশ্বের সাধারণ ক্ষুদ্র এক কৃষকের প্রাত্যহিক জীবনের কথা ধরা যাক। সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা, এশিয়া অথবা লাতিন আমেরিকার কোনো এক পল্লীগ্রামে এক নারী কৃষক বাস করেন। তিনি একটুকরো জমি চাষ করেন, যা তাঁর নিজের নয়। তিনি সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে ওঠেন এবং কয়েক মাইল হেঁটে পানি সংগ্রহ করতে যান; সারা দিন মাঠে কাজ করেন। মাঝেমধ্যে তাঁর শিশুটিকে পিঠের সঙ্গে বেঁধেও কাজ করতে হয়। খরা, ফসলের বিভিন্ন রোগ বা পোকামাকড় যদি তাঁর ফসল ধ্বংস করে না দেয় এবং তিনি তাঁর পরিবারকে খাওয়ানোর জন্য পর্যাপ্ত শস্য ফলাতে পারেন, তাহলে তিনি ভাগ্যবতী। অবশ্য কিছু শস্য তাঁর কাছে অবশিষ্ট থেকে যেতে পারে, কিন্তু তা বিক্রি করতে নিকটবর্তী বাজারে যাওয়ার জন্য সেখানে কোনো রাস্তা নেই অথবা তাঁর কাছ থেকে তা কেনার সামর্থ্যও কারও নেই।
এবার ওই কৃষকের কাছ থেকে ১০০ মাইল দূরবর্তী জনাকীর্ণ শহরের এক যুবকের জীবনের কথা ধরা যাক। তাঁর কোনো চাকরি নেই, অথবা তিনি অল্প বেতনের কোনো কাজ করেন। তিনি বাজারে গিয়ে দেখেন, খাদ্য পচে যাচ্ছে, অথবা সেই খাদ্য তাঁর ক্রয়সীমার বাইরে। তিনি ক্ষুধার্ত এবং এ জন্য প্রায়ই ক্ষুব্ধ থাকেন।
ওই কৃষকের বিক্রি করার জন্য অতিরিক্ত খাদ্য আছে এবং এ যুবক তা কিনতে চান; তবে তাঁদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে কিছু জটিল অবস্থার কারণে এ সাধারণ লেনদেনের বিষয়টি ঘটতে পারে না।
বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাই হচ্ছে মূল কথা, যাকে আমরা ‘খাদ্যনিরাপত্তা’ বলছি। এর অর্থ হচ্ছে জমিতে বীজ বপন ও পর্যাপ্ত ফসল ফলাতে বিশ্বব্যাপী কৃষকদের ক্ষমতায়ন, পশুসম্পদের কার্যকর পরিচর্যা অথবা মত্স্য আহরণ করে তাদের উত্পাদিত এ খাদ্য যেসব মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের কাছে পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা।
খাদ্যনিরাপত্তা নিছক খাদ্য-সম্পর্কিত কোনো বিষয় নয়। এটি জটিল কিছু বিষয়ের একটি সমন্বিত রূপ। তা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট খরা ও বন্যা; বিশ্ব অর্থনীতির উত্থান-পতন, যা খাদ্যমূল্যকে প্রভাবিত করে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের ভাগ্যকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয় এবং জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, যা পরিবহন খরচ বাড়িয়ে দেয়।
খাদ্যনিরাপত্তা হচ্ছে নিরাপত্তা-সম্পর্কিত সবকিছুই। প্রলম্বিত ক্ষুধা সরকার, সমাজ ও দেশের সীমান্তের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে। ক্ষুধার্ত অথবা পুষ্টিহীন মানুষ, যাদের কোনো উপার্জন নেই এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের যত্ন নিতে পারে না, তারা নিরাশা ও হতাশার অনুভূতিতে ভোগে। আর এ নিরাশাই তাদের উত্তেজনা, বিবাদ এমনকি সহিংসতার পথে নিয়ে যেতে পারে। গত ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬০টিরও বেশি দেশে খাদ্য নিয়ে দাঙ্গা হয়েছে।
উন্নয়নের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা খাদ্যনিরাপত্তা প্রয়াসকে আরও তথ্যসমৃদ্ধ করবে। আসলে স্থায়ী ফলাফল অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে, এমন প্রকল্পের পেছনে আমরা অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় করে ফেলেছি। অবশ্য এসব প্রয়াস থেকে আমরা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আমরা জানি, হাজার মাইল দূরের কোনো বিদেশি সরকার বা প্রতিষ্ঠান নয়, বরং যারা সমস্যার সবচেয়ে কাছাকাছি রয়েছে তাদের কাছ থেকেই সমাধানের কার্যকর কৌশল বেরিয়ে আসে। আর আমরা এটাও জানি, উন্নয়নকে তখনই সবচেয়ে ভালোভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, যখন এটাকে সহায়তা নয় বরং বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এসব অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই আমাদের খাদ্যনিরাপত্তা উদ্যোগটি পাঁচটি নীতির আলোকে পরিচালিত হবে, যা আমাদের সমস্যার মূলে পৌঁছাতে সহায়তা করে স্থায়ী পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
প্রথমত, আমরা জানি, কৃষিক্ষেত্রে সর্বজনপ্রযোজ্য বলে একক কোনো মডেল নেই। এ জন্য অংশীদার দেশগুলোর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করে যাব।
দ্বিতীয়ত, ক্ষুদ্র কৃষককে বাঁচাতে আমরা উন্নত মানের বীজ থেকে শুরু করে ঝুঁকি-বণ্টন কর্মসূচিতে বিনিয়োগ করে ক্ষুধার মূল কারণগুলো মোকাবিলা করব। আর বিশ্বের অধিকাংশ কৃষক যেহেতু নারী, তাই কৃষিক্ষেত্রে আমাদের বিনিয়োগ যেন তাদের আকাঙ্ক্ষা ও দৃঢ়তাকে আরও সক্ষম করে তোলে সে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তৃতীয়ত, কোনো নির্দিষ্ট কিছু এককভাবে ক্ষুধাকে সমূলে উত্পাটন করতে পারবে না। তবে সংশ্লিষ্টরা যদি রাষ্ট্রীয়, আঞ্চলিক ও ভৌগোলিক পর্যায়ে সমন্বয় বজায় রেখে কাজ করে, তাহলে আমাদের কাজের প্রভাব অনেক গুণ বেড়ে যেতে পারে।
চতুর্থত, কোনো একটি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে প্রসারিত হওয়ার মতো সম্পদ ও ব্যাপ্তি বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর রয়েছে। তাদের প্রয়াসগুলোতে সহায়তা করার মাধ্যমে আমরা বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা থেকে লাভবান হতে পারি।
অবশেষে, আমরা দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতি ও জবাবদিহির অঙ্গীকার করছি। এর প্রমাণস্বরূপ আমরা এমন কিছু পরিকল্পনায় বিনিয়োগ করব, যাতে আমরা কী করছি তা জনগণ যাচাই ও মূল্যায়ন করতে পারে।
এ প্রয়াসের গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়তো বা অনেক বছর কিংবা অনেক যুগ লেগে যেতে পারে, তবু এ জন্য আমাদের সম্পূর্ণ সম্পদ ও শক্তি প্রয়োগ করার অঙ্গীকার করছি।
এ প্রয়াসের জন্য কাজ করে যাওয়ার পাশাপাশি জরুরি খাদ্যসহায়তা এবং দুর্যোগ ও বিপর্যয়কালে সাহায্যের আকুল আবেদনে সাড়া দেওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকারও আমরা অক্ষুণ্ন রাখব। যেমন, বর্তমানে ‘হর্ন অব আফ্রিকা’য় বিপর্যয় চলছে, যেখানে অনাবৃষ্টি, ফসল নষ্ট এবং গৃহযুদ্ধের কারণে গত ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে।
বিশ্বকৃষিকে উজ্জীবিত করে তোলাটা সহজ হবে না। সত্যিকার অর্থে এ উদ্যোগ আমাদের দেশের নেওয়া সর্বকালের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী এবং সর্বজনীন কূটনৈতিক ও উন্নয়ন উদ্যোগগুলোর অন্যতম। তবে এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভবপর ও যুক্তিসংগত। আর আমরা যদি এতে সাফল্য অর্জন করতে পারি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যত্ অতীতের চেয়ে অনেক বেশি শান্তিময় ও সমৃদ্ধ হবে।
ইংরেজি থেকে অনূদিত
হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
No comments