সীমান্তে ‘অস্বাভাবিক’ পরিস্থিতি -বাংলাদেশ-মিয়ানমার by সৈয়দ আবুল মকসুুদ
ভারত ও মিয়ানমার বাংলাদেশের অব্যবহিত প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে শুধু এই দুই রাষ্ট্রের সঙ্গেই বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে; সমুদ্রসীমানাও তাদের সঙ্গে। স্বাধীনতার পর থেকে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, যা যেকোনো নিকটতম প্রতিবেশীর সঙ্গে হওয়া স্বাভাবিক নয়। একটি সমস্যা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু, অন্যটি বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় তেল ও গ্যাসকূপ খননকে কেন্দ্র করে। তবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যা বা বিরোধ মীমাংসায় বিশ্বাস করে বাংলাদেশ।
এর মধ্যে পত্রপত্রিকার প্রতিবেদনে জানা গেছে, বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে মংদাউ থেকে পালেওয়া পর্যন্ত এলাকায় মিয়ানমার বিপুলসংখ্যক লাইট ব্যাটালিয়ন ও লাইট ইনফ্যানট্রি ব্যাটালিয়ন সেনাদল মোতায়েন করেছে। গত কয়েক দিনে ১০টি ফাইটার বিমান আনা হয়েছে সিতো (Sittowe) বা আকিয়াব বিমানঘাঁটিতে। ১২টি যুদ্ধজাহাজ মিয়ানমারের দুটি নদীর মোহনায় টহল দিচ্ছে। অর্থাত্ বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে একটি যুদ্ধ-প্রস্তুতিমূলক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে প্রকাশিত খবরে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী নাসাকা তাদের দেশের নাগরিক ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর জন্য সীমান্ত এলাকায় জড়ো করেছে। এসব অবশ্যই উসকানিমূলক তত্পরতা। এর ফলে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের মানুষ গভীর উত্কণ্ঠার মধ্যে দিন যাপন করছে।
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা কোনো দলীয় বিষয় নয়। এ প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ভিন্নমতের সুযোগ নেই। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কোনো নীতি-আদর্শেরও ব্যাপার নয়, অস্তিত্বের প্রশ্ন। একমাত্র রাষ্ট্রদ্রোহী ছাড়া এই প্রশ্নে কারও মতপার্থক্য নেই।
প্রতিরক্ষার বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও বিষয়। কোন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কেমন সম্পর্ক তা পররাষ্ট্র দপ্তরই ভালো অবগত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এটা মিয়ানমারের রুটিন সামরিক মহড়া। বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত আমাদের পররাষ্ট্রসচিবকেও একই কথা বলেছেন। আমাদের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। সে জন্যই আমাদের উদ্বেগ।
গত এপ্রিলে সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা হয়েছে, তবে মীমাংসায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সমুদ্রসীমাসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বাংলাদেশ বাধ্য হয়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটাই শান্তিপূর্ণ উপায়। বিরোধ নিষ্পত্তিতে বলপ্রয়োগে বাংলাদেশ বিশ্বাস করে না।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত থেকে যখন উত্তেজনার সংবাদ আসছে, তখন আমাদের জাতীয় সংসদ অধিবেশন চলছে। সেখানে বিরোধী দল অনুপস্থিত। অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যত মতপার্থক্যই থাকুক—আমাদের প্রত্যাশা, সরকারি দল ও বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কোনো সম্ভাব্য বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিহত করা সরকারের একার কাজ নয়; তবে নেতৃত্ব দিতে হবে সরকারকেই।
সৈয়দ আবুল মকসুুদ: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।
এর মধ্যে পত্রপত্রিকার প্রতিবেদনে জানা গেছে, বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে মংদাউ থেকে পালেওয়া পর্যন্ত এলাকায় মিয়ানমার বিপুলসংখ্যক লাইট ব্যাটালিয়ন ও লাইট ইনফ্যানট্রি ব্যাটালিয়ন সেনাদল মোতায়েন করেছে। গত কয়েক দিনে ১০টি ফাইটার বিমান আনা হয়েছে সিতো (Sittowe) বা আকিয়াব বিমানঘাঁটিতে। ১২টি যুদ্ধজাহাজ মিয়ানমারের দুটি নদীর মোহনায় টহল দিচ্ছে। অর্থাত্ বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে একটি যুদ্ধ-প্রস্তুতিমূলক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে প্রকাশিত খবরে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী নাসাকা তাদের দেশের নাগরিক ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর জন্য সীমান্ত এলাকায় জড়ো করেছে। এসব অবশ্যই উসকানিমূলক তত্পরতা। এর ফলে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের মানুষ গভীর উত্কণ্ঠার মধ্যে দিন যাপন করছে।
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা কোনো দলীয় বিষয় নয়। এ প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ভিন্নমতের সুযোগ নেই। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কোনো নীতি-আদর্শেরও ব্যাপার নয়, অস্তিত্বের প্রশ্ন। একমাত্র রাষ্ট্রদ্রোহী ছাড়া এই প্রশ্নে কারও মতপার্থক্য নেই।
প্রতিরক্ষার বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও বিষয়। কোন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কেমন সম্পর্ক তা পররাষ্ট্র দপ্তরই ভালো অবগত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এটা মিয়ানমারের রুটিন সামরিক মহড়া। বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত আমাদের পররাষ্ট্রসচিবকেও একই কথা বলেছেন। আমাদের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। সে জন্যই আমাদের উদ্বেগ।
গত এপ্রিলে সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা হয়েছে, তবে মীমাংসায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সমুদ্রসীমাসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বাংলাদেশ বাধ্য হয়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটাই শান্তিপূর্ণ উপায়। বিরোধ নিষ্পত্তিতে বলপ্রয়োগে বাংলাদেশ বিশ্বাস করে না।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত থেকে যখন উত্তেজনার সংবাদ আসছে, তখন আমাদের জাতীয় সংসদ অধিবেশন চলছে। সেখানে বিরোধী দল অনুপস্থিত। অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যত মতপার্থক্যই থাকুক—আমাদের প্রত্যাশা, সরকারি দল ও বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কোনো সম্ভাব্য বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিহত করা সরকারের একার কাজ নয়; তবে নেতৃত্ব দিতে হবে সরকারকেই।
সৈয়দ আবুল মকসুুদ: গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।
No comments