সরকারের বিদ্যুৎ উত্পাদন পরিকল্পনা -আশা কি দুরাশায় পরিণত হতে চলেছে?
আশার
পেছনেই ছোটে জনগণ। আগের জোট সরকার জনগণকে বিদ্যুত্ দিতে পারেনি। মহাজোট
ক্ষমতায় এলে বিদ্যুত্ সমস্যার সমাধানে কাজের কাজ কিছু হবে, উত্পাদন বাড়বে—এ
আশ্বাসে ভরসা রাখা ছাড়া জনগণের সামনে আর কোনো পথ ছিল না। জনগণ তাদের
ক্ষমতায় এনেছে, সরকারও তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।
দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসের মাথায় একটি পরিকল্পনাও হাজির করেছে। আগামী সাড়ে
চার বছরে চার হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ উত্পাদনের একটি পরিকল্পনার কথা
গত জুলাই মাসে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। সবই আশার কথা। কিন্তু কাজের
গতি আর ধারা বিবেচনায় নিলে মনে হবে, এ আশা দুরাশায় পরিণত হতে যাচ্ছে। একটি
বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্র নিয়ে যা ঘটছে, তাতে এমন মনে হওয়াই স্বাভাবিক।
সিদ্ধিরগঞ্জের ৩০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্লান্টের জন্য দরপত্র চাওয়া
হয়েছিল প্রায় মাস পাঁচেক আগে। এত সময় নিয়েও কারা কাজ পাবে, তা চূড়ান্ত করা
যায়নি। কারণ কাজ পেতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে তদবিরে শক্তভাবে মাঠে
রয়েছে ক্ষমতাবান আর প্রভাবশালী চক্র। এই সব চক্রের কমিশন ও ভাগবাটোয়ারার
লড়াইয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের চাকা কবে ঘুরবে, তা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে ঝুলছে।
৩০ অক্টোবরের মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্র-প্রক্রিয়া শেষ করতে না পারলে নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার বাতিল হয়ে যাবে। প্রথম আলোয় প্রকাশিত গত সোমবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সিনোহাইড্রোকে কাজ দেওয়ার প্রস্তাব প্রস্তুত করতে যাচ্ছে পিডিবির অধীন ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ (ইজিসিবি)। অথচ সিনোহাইড্রোর বিরুদ্ধে দরপত্রের সঙ্গে জাল সনদ ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদনে দুজন সদস্য এই কোম্পানিকে অযোগ্য ঘোষণা করে লিখিত আপত্তি দেন। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবেই যে একজনকে পরে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়, তা অনুমান করা যায়। এরপর গত বুধবার প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির সদস্য অসভালডো এ জুভিয়ের লিখিত আপত্তি দিয়ে সিনোহাইড্রোকে কাজ দেওয়ার প্রস্তাবে সই করেন। এরপর তাঁকেও কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়। এত কিছুর পরও যখন এই প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার তোড়জোড় চলছে, তখন বোঝা যায় যে এর পেছনে কোনো স্বার্থ কাজ করছে; আর যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা কতটা প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবান।
সিদ্ধিরগঞ্জের এই বিদ্যুত্ উত্পাদন প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ১৯৯১ সালের পর এই প্রথম বিদ্যুত্ খাতে সহায়তায় এগিয়ে এসেছে বিশ্বব্যাংক। অর্থ জোগানদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বব্যাংক টেন্ডার-প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণের বিষয়টি ও নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতার বিষয়টি যাচাই করে দেখবে। এখন ইজিসিবি যদি জাল সনদ ও মিথ্যা তথ্য দেওয়া একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার প্রস্তাব চূড়ান্ত করে, তবে বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়নে তা বাতিল হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর চারটি কোম্পানি সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠান অযোগ্য বিবেচিত হলে পর্যায়ক্রমে পরবর্তী প্রতিষ্ঠানগুলোকে একে একে বিবেচনায় নেওয়ার কথা। শেষ পর্যন্ত যদি সব কটি প্রতিষ্ঠানই অযোগ্য বিবেচিত হয়, তখন নতুন দরপত্র আহ্বানের প্রশ্ন আসতে পারে। কিন্তু একটি অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার খেসারত হিসেবে যদি দরপত্র বাতিল করে তা করতে হয়, সেটি এক বড় সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। বর্তমান দরপত্র অনুযায়ী, কাজ পাওয়ার ২২ মাসের মধ্যে বিদ্যুেকন্দ্রের নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে। নতুন দরপত্র ডাকতে হলে এর সঙ্গে আরও ১২ মাস যোগ করতে হবে। ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের জন্য আরও অন্তত ৩৪ মাস অপেক্ষা করতে হবে।
ভাগবাটোয়ারার লড়াইয়ে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্র-প্রক্রিয়া নিয়ে যা হচ্ছে, তাতে সরকার তার বিদ্যুত্ উত্পাদন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবে, সে আশায় ভরসা রাখা।
৩০ অক্টোবরের মধ্যে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্র-প্রক্রিয়া শেষ করতে না পারলে নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার বাতিল হয়ে যাবে। প্রথম আলোয় প্রকাশিত গত সোমবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সিনোহাইড্রোকে কাজ দেওয়ার প্রস্তাব প্রস্তুত করতে যাচ্ছে পিডিবির অধীন ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ (ইজিসিবি)। অথচ সিনোহাইড্রোর বিরুদ্ধে দরপত্রের সঙ্গে জাল সনদ ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদনে দুজন সদস্য এই কোম্পানিকে অযোগ্য ঘোষণা করে লিখিত আপত্তি দেন। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবেই যে একজনকে পরে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়, তা অনুমান করা যায়। এরপর গত বুধবার প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির সদস্য অসভালডো এ জুভিয়ের লিখিত আপত্তি দিয়ে সিনোহাইড্রোকে কাজ দেওয়ার প্রস্তাবে সই করেন। এরপর তাঁকেও কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়। এত কিছুর পরও যখন এই প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার তোড়জোড় চলছে, তখন বোঝা যায় যে এর পেছনে কোনো স্বার্থ কাজ করছে; আর যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা কতটা প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবান।
সিদ্ধিরগঞ্জের এই বিদ্যুত্ উত্পাদন প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ১৯৯১ সালের পর এই প্রথম বিদ্যুত্ খাতে সহায়তায় এগিয়ে এসেছে বিশ্বব্যাংক। অর্থ জোগানদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বব্যাংক টেন্ডার-প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণের বিষয়টি ও নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতার বিষয়টি যাচাই করে দেখবে। এখন ইজিসিবি যদি জাল সনদ ও মিথ্যা তথ্য দেওয়া একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার প্রস্তাব চূড়ান্ত করে, তবে বিশ্বব্যাংকের মূল্যায়নে তা বাতিল হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর চারটি কোম্পানি সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠান অযোগ্য বিবেচিত হলে পর্যায়ক্রমে পরবর্তী প্রতিষ্ঠানগুলোকে একে একে বিবেচনায় নেওয়ার কথা। শেষ পর্যন্ত যদি সব কটি প্রতিষ্ঠানই অযোগ্য বিবেচিত হয়, তখন নতুন দরপত্র আহ্বানের প্রশ্ন আসতে পারে। কিন্তু একটি অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার খেসারত হিসেবে যদি দরপত্র বাতিল করে তা করতে হয়, সেটি এক বড় সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। বর্তমান দরপত্র অনুযায়ী, কাজ পাওয়ার ২২ মাসের মধ্যে বিদ্যুেকন্দ্রের নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে। নতুন দরপত্র ডাকতে হলে এর সঙ্গে আরও ১২ মাস যোগ করতে হবে। ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের জন্য আরও অন্তত ৩৪ মাস অপেক্ষা করতে হবে।
ভাগবাটোয়ারার লড়াইয়ে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্র-প্রক্রিয়া নিয়ে যা হচ্ছে, তাতে সরকার তার বিদ্যুত্ উত্পাদন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবে, সে আশায় ভরসা রাখা।
No comments