শিশুর জন্ডিস ও চিকিৎসা by ডা: এম এ রাজ্জাক
জন্ডিস
ইংরেজি শব্দ। এর বাংলা শব্দ হলো ন্যাবা কমলা। কামেলা হলুদ রোগও বলা হয়।
এটি একটি বহুল প্রচলিত রোগ যা ছোট বড় সবাই অন্তত নাম শুনে থাকে কম বেশি। যা
যকৃতের পিত্ত নিঃসরণ ক্রিয়ার স্বল্পতা অথবা অবরুদ্ধতাবশত রক্তের পিত্ত
মিশ্রিত হয়ে শারীরিক রক্তের মধ্যে সঞ্চালিত হয়ে শরীরস্থ চর্মে, চোখের শ্বেত
বর্ণ স্থান, মূত্র, পীত বর্ণ ও হলদে বা কমলা রঙের হলে ন্যাবা বা জন্ডিস
বলে। নারী, পুরুষ, শিশু সবারই জন্ডিস হতে পারে। শতকরা ৬০ ভাগ শিশুর জন্মের
পর জন্ডিস হয়ে থাকে।
আপনি যেভাবে বুঝবেন জন্ডিস হয়েছে : ১. রোগীর মুখে তিক্ত স্বাদ অনুভব করে ২. ক্ষুধাহীনতা থাকে ৩. খাদ্যে অরুচি বিরাজ করে ৪. বমি ভাব হয় ৫. বমি হয় ৬. পিত্তবমি হয় ৭. গায়ে জ্বর ভাব থাকে ৮. পেটের ডান দিকে বা বাম দিকে বেদনার অনুভব হয় ৯. চোখের সাদা অংশ হলুদ ভাব হয় ১০. গায়ের রঙ হলুদ বর্ণ ১১. জামা-কাপড় অথবা বিছানায় এই ঘাম লাগলে তাও হলুদ দেখায় ১২. রক্তস্বল্পতার ভাব থাকে, রক্তে বিলোরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায় ১৩. প্রস্রাব হলুদ হয়, কখনো কখনো সরিষার তেলের মতো প্রস্রাব হয় ১৪. শিশু বুকের দুধ পান ছেড়ে দেয় ১৫. শরীর দিন দিন দুর্বল হতে থাকে, অন্যান্য লক্ষণের সাথে শিশুর কপালে আঙুল দিয়ে আলত ভাবে চাপ দিয়ে উঠিয়ে নিন। যদি আঙুল উঠানোর পরে স্কিন হলদে দেখায় তবে বুঝতে হবে জন্ডিস হয়েছে।
সাধারণত যে কারণে জন্ডিস হয় : ১. রক্তের লোহিত কণিকাগুলো ধ্বংস অর্থাৎ হ্যামোলাইসিস হেতু ২. লিভারের ওপর থেকে অন্ত্রের মধ্যে প্রবাহিত হওয়ার যে পিত্ত পথ থাকে সেই বাইল ডাক্ট-এর কোনো অংশে বা কোনো স্থানে বাধা হলে ৩. হেপাটাইটিস হলে, ভাইরাল হেপাটাইটিস হলে- হেপাটো সিলোলার জন্ডিস হতে পারে ৪. ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর এবং সর্পদংশনের জন্য হেমোলাইটিক জন্ডিস হতে পারে ৫. গলস্টোন বা পিত্ত পাথরের ফলে পিত্ত নিঃসরণ বাধাপ্রাপ্ত হেমোলাইটিক জন্ডিস হতে পারে ৭. বিষাক্ত ও সংক্রামক জীবাণুঘটিত কারণে হতে পারে ৮. গর্ভাবস্থায় মায়ের জন্ডিস থাকলে ৯. মা ও সন্তানের রক্তের বিষণ্নতা কারণে শিশুর জন্ডিস হতে পারে।
সাধারণত উপরোক্ত লক্ষণ নিয়েই হোমিওপ্যাথিতে জন্ডিসের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। পরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নিতে চাইলে রক্তের- টিসিডিসি, এইচবিএস এজি%, আরবিসি, ব্লাড কালচার, বিলোরুবিন/ এসজিপিটি/এসজিওটি/ টোটাল প্রুটিন এজি, ইউরিন-এর আরই, স্টোল-এর আরই, লিভার ফাংশন টেস্ট, লিভার বায়োপসি করা যেতে পারে।
চিকিৎসা : হোমিওপ্যাথিতে রোগীর চিকিৎসা করা হয়। তাই সম্পূর্ণভাবে লক্ষণ সংগ্রহ করে ওষুধের লক্ষণ মিলিয়ে সঠিক ওষুধ, শক্তি, মাত্রা নির্ধারণ করে রোগীকে দিতে হয়, যা একজন আদর্শ চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব। আর এতে জন্ডিস সম্পূর্ণভাবে আরোগ্য হয়।
সচরাচর যেসব ওষুধ হোমিওপ্যাথিতে ব্যবহৃত হয় সেগুলো হলো : একোনাইট, ব্রায়ুনিয়া, চায়না, চেলিডুনিয়াম, কার্ডোয়াস ম্যাজ, কারিকা পেপায়া, লাইকোপুড়িয়াম, মাইরিকা, সালফার, নেট্রাস সালফ, নাক্স ইত্যাদি।
পথ্য ও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা : যা করবেন না- কঠোর পরিশ্রম, স্বাস্থ্য বিধির লঙ্ঘন, কঠিন রোদে, অত্যধিক তাপে থাকবেন না, উগ্রমশলাযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত খাবার, বাসি-পচা খাবার, ঝাল-কঠিন টক একদম খাবেন না।
যা করবেন : বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম, সুপেয় পানি পান করা। ঢাকা শহরবাসীর একমাত্র সুপেয় বা বিশুদ্ধ পানি হলো ঘরে ফোটানো পানি। এছাড়া কোনো পানিই জীবাণুমুক্ত নয়। আমার ধারণা যেদিন থেকে বোতল জাত পানি পান শুরু হয়েছে, সেদিন থেকে পানিবাহিত রোগগুলো বহুগুণে বেড়েছে। যেমন জন্ডিস, আমাশায়, ডাইরিয়া, হেপাইটাইটিস ইত্যাদি। তাজা ফল, বেল, আখের রস, ডাবের পানি, গ্লুকোজের পানি (ডাইবেটিসহীনদের)।
জটিলতা : জন্ডিস হলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। এ ব্যাপারে সামান্যতম সময় ব্যয় করা আপনার জন্য সমীচীন নয়। ১. জন্ডিসের ফলে লিভার ফোড়া হতে পারে, ২. জন্ডিস থেকে লিভার সিরোসিস হতে পারে ৩. দীর্ঘদিন ভুগলে লিভার ক্যান্সার হতে পারে ৪. শেষ পরিণতি মৃত্যুও হতে পারে।
>>>লেখক : সহকারী অধ্যাপক, তানজিম হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, নারায়ণগঞ্জ।
>>>চেম্বার : সিটি হোমিও ইন্টারন্যাশনাল ২৩, জয়কালী মন্দির, ঢাকা। ফোন : ০১৯১২৮৪২৫৮৮
আপনি যেভাবে বুঝবেন জন্ডিস হয়েছে : ১. রোগীর মুখে তিক্ত স্বাদ অনুভব করে ২. ক্ষুধাহীনতা থাকে ৩. খাদ্যে অরুচি বিরাজ করে ৪. বমি ভাব হয় ৫. বমি হয় ৬. পিত্তবমি হয় ৭. গায়ে জ্বর ভাব থাকে ৮. পেটের ডান দিকে বা বাম দিকে বেদনার অনুভব হয় ৯. চোখের সাদা অংশ হলুদ ভাব হয় ১০. গায়ের রঙ হলুদ বর্ণ ১১. জামা-কাপড় অথবা বিছানায় এই ঘাম লাগলে তাও হলুদ দেখায় ১২. রক্তস্বল্পতার ভাব থাকে, রক্তে বিলোরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায় ১৩. প্রস্রাব হলুদ হয়, কখনো কখনো সরিষার তেলের মতো প্রস্রাব হয় ১৪. শিশু বুকের দুধ পান ছেড়ে দেয় ১৫. শরীর দিন দিন দুর্বল হতে থাকে, অন্যান্য লক্ষণের সাথে শিশুর কপালে আঙুল দিয়ে আলত ভাবে চাপ দিয়ে উঠিয়ে নিন। যদি আঙুল উঠানোর পরে স্কিন হলদে দেখায় তবে বুঝতে হবে জন্ডিস হয়েছে।
সাধারণত যে কারণে জন্ডিস হয় : ১. রক্তের লোহিত কণিকাগুলো ধ্বংস অর্থাৎ হ্যামোলাইসিস হেতু ২. লিভারের ওপর থেকে অন্ত্রের মধ্যে প্রবাহিত হওয়ার যে পিত্ত পথ থাকে সেই বাইল ডাক্ট-এর কোনো অংশে বা কোনো স্থানে বাধা হলে ৩. হেপাটাইটিস হলে, ভাইরাল হেপাটাইটিস হলে- হেপাটো সিলোলার জন্ডিস হতে পারে ৪. ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর এবং সর্পদংশনের জন্য হেমোলাইটিক জন্ডিস হতে পারে ৫. গলস্টোন বা পিত্ত পাথরের ফলে পিত্ত নিঃসরণ বাধাপ্রাপ্ত হেমোলাইটিক জন্ডিস হতে পারে ৭. বিষাক্ত ও সংক্রামক জীবাণুঘটিত কারণে হতে পারে ৮. গর্ভাবস্থায় মায়ের জন্ডিস থাকলে ৯. মা ও সন্তানের রক্তের বিষণ্নতা কারণে শিশুর জন্ডিস হতে পারে।
সাধারণত উপরোক্ত লক্ষণ নিয়েই হোমিওপ্যাথিতে জন্ডিসের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। পরীক্ষার মাধ্যমে জেনে নিতে চাইলে রক্তের- টিসিডিসি, এইচবিএস এজি%, আরবিসি, ব্লাড কালচার, বিলোরুবিন/ এসজিপিটি/এসজিওটি/ টোটাল প্রুটিন এজি, ইউরিন-এর আরই, স্টোল-এর আরই, লিভার ফাংশন টেস্ট, লিভার বায়োপসি করা যেতে পারে।
চিকিৎসা : হোমিওপ্যাথিতে রোগীর চিকিৎসা করা হয়। তাই সম্পূর্ণভাবে লক্ষণ সংগ্রহ করে ওষুধের লক্ষণ মিলিয়ে সঠিক ওষুধ, শক্তি, মাত্রা নির্ধারণ করে রোগীকে দিতে হয়, যা একজন আদর্শ চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব। আর এতে জন্ডিস সম্পূর্ণভাবে আরোগ্য হয়।
সচরাচর যেসব ওষুধ হোমিওপ্যাথিতে ব্যবহৃত হয় সেগুলো হলো : একোনাইট, ব্রায়ুনিয়া, চায়না, চেলিডুনিয়াম, কার্ডোয়াস ম্যাজ, কারিকা পেপায়া, লাইকোপুড়িয়াম, মাইরিকা, সালফার, নেট্রাস সালফ, নাক্স ইত্যাদি।
পথ্য ও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা : যা করবেন না- কঠোর পরিশ্রম, স্বাস্থ্য বিধির লঙ্ঘন, কঠিন রোদে, অত্যধিক তাপে থাকবেন না, উগ্রমশলাযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত খাবার, বাসি-পচা খাবার, ঝাল-কঠিন টক একদম খাবেন না।
যা করবেন : বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম, সুপেয় পানি পান করা। ঢাকা শহরবাসীর একমাত্র সুপেয় বা বিশুদ্ধ পানি হলো ঘরে ফোটানো পানি। এছাড়া কোনো পানিই জীবাণুমুক্ত নয়। আমার ধারণা যেদিন থেকে বোতল জাত পানি পান শুরু হয়েছে, সেদিন থেকে পানিবাহিত রোগগুলো বহুগুণে বেড়েছে। যেমন জন্ডিস, আমাশায়, ডাইরিয়া, হেপাইটাইটিস ইত্যাদি। তাজা ফল, বেল, আখের রস, ডাবের পানি, গ্লুকোজের পানি (ডাইবেটিসহীনদের)।
জটিলতা : জন্ডিস হলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। এ ব্যাপারে সামান্যতম সময় ব্যয় করা আপনার জন্য সমীচীন নয়। ১. জন্ডিসের ফলে লিভার ফোড়া হতে পারে, ২. জন্ডিস থেকে লিভার সিরোসিস হতে পারে ৩. দীর্ঘদিন ভুগলে লিভার ক্যান্সার হতে পারে ৪. শেষ পরিণতি মৃত্যুও হতে পারে।
>>>লেখক : সহকারী অধ্যাপক, তানজিম হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, নারায়ণগঞ্জ।
>>>চেম্বার : সিটি হোমিও ইন্টারন্যাশনাল ২৩, জয়কালী মন্দির, ঢাকা। ফোন : ০১৯১২৮৪২৫৮৮
No comments