ঐতিহাসিক তাজহাট জমিদার বাড়ির ভেতর-বাহির by নাকিবুল আহসান নিশাদ
তাজহাট জমিদার বাড়ি |
বাংলায়
জমিদার প্রথা বা জমিদারিত্ব বিলীন হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু তাদের রেখে
যাওয়া ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রাচীন স্থাপত্য বাংলার বুকে ঠিকই মাথা উঁচু করে
দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের তাজহাট জমিদার বাড়ি অন্যতম। রংপুর শহর
থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্থাপনা দেখতে
প্রতিদিন দেশ-বিদেশের পর্যটকদের উপস্থিতি দেখা যায়।
প্রাচীন রঙ্গপুরের ইতিহাস পুস্তক থেকে জানা যায়, তাজহাট জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা রত্ন ব্যবসায়ী মান্নালাল রায়। হীরা, জহরত ও স্বর্ণ ব্যবসার জন্য রঙ্গপুরের মাহিগঞ্জে এসেছিলেন তিনি। প্রথমে বিভিন্ন ধরনের নামিদামি হীরা, মানিক, জহরতখচিত তাজ বা টুপির ব্যবসা ছিল তার। তাজ বিক্রির লক্ষ্যে এখানে হাট বসতো। তাজহাটকে কেন্দ্র করে এই জমিদার বাড়ির নামকরণ হয়। সাদা রঙের বিশাল প্রাসাদটি বেশ বড় জায়গা নিয়ে বিস্তৃত।
প্রাচীন মোগল স্থাপত্যের আদলে বানানো বাড়িটির মধ্যভাগে বিশাল একটি গম্বুজ। দু’পাশে ছড়িয়ে যাওয়া দালানগুলোর একটি মসজিদ আকৃতির। এটি প্রায় ২১০ ফুটের মতো প্রশস্ত ও চার তলার সমান উঁচু। প্রাসাদে মোট ৩১টি সিঁড়ি আছে। প্রতিটিই ইতালীয় ঘরানার মার্বেল পাথরে তৈরি।
সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠলেই চোখে পড়ে বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী কক্ষ। এগুলোতে শোভা পাচ্ছে দশম ও একাদশ শতাব্দীর টেরাকোটা শিল্পকর্ম। এখানে রয়েছে সংস্কৃত ও আরবি ভাষায় লেখা বেশকিছু প্রাচীন পাণ্ডুলিপি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলের কোরআন, মহাভারত ও রামায়ণের মূল কপি। পেছনের ঘরে বেশকিছু কালো পাথর দিয়ে সাজানো হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর প্রতিকৃতি। কিন্তু জাদুঘরের ভেতরে ছবি তোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
প্রাচীন রঙ্গপুরের ইতিহাস পুস্তক থেকে জানা যায়, তাজহাট জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা রত্ন ব্যবসায়ী মান্নালাল রায়। হীরা, জহরত ও স্বর্ণ ব্যবসার জন্য রঙ্গপুরের মাহিগঞ্জে এসেছিলেন তিনি। প্রথমে বিভিন্ন ধরনের নামিদামি হীরা, মানিক, জহরতখচিত তাজ বা টুপির ব্যবসা ছিল তার। তাজ বিক্রির লক্ষ্যে এখানে হাট বসতো। তাজহাটকে কেন্দ্র করে এই জমিদার বাড়ির নামকরণ হয়। সাদা রঙের বিশাল প্রাসাদটি বেশ বড় জায়গা নিয়ে বিস্তৃত।
প্রাচীন মোগল স্থাপত্যের আদলে বানানো বাড়িটির মধ্যভাগে বিশাল একটি গম্বুজ। দু’পাশে ছড়িয়ে যাওয়া দালানগুলোর একটি মসজিদ আকৃতির। এটি প্রায় ২১০ ফুটের মতো প্রশস্ত ও চার তলার সমান উঁচু। প্রাসাদে মোট ৩১টি সিঁড়ি আছে। প্রতিটিই ইতালীয় ঘরানার মার্বেল পাথরে তৈরি।
সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠলেই চোখে পড়ে বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী কক্ষ। এগুলোতে শোভা পাচ্ছে দশম ও একাদশ শতাব্দীর টেরাকোটা শিল্পকর্ম। এখানে রয়েছে সংস্কৃত ও আরবি ভাষায় লেখা বেশকিছু প্রাচীন পাণ্ডুলিপি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলের কোরআন, মহাভারত ও রামায়ণের মূল কপি। পেছনের ঘরে বেশকিছু কালো পাথর দিয়ে সাজানো হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর প্রতিকৃতি। কিন্তু জাদুঘরের ভেতরে ছবি তোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
বাড়িটির চত্বরে রয়েছে বিশাল খালি মাঠ আর সারি সারি গাছ। বাড়ির দু’পাশে দুটি পুকুর। বাড়ির সামনে সুন্দর ফোয়ারার শ্বেতশুভ্র মার্বেল ও তার সবুজাভ নকশা কালের বিবর্তনে কিছুটা মলিন হলেও এখনও এর জৌলুস বোঝা যায়। কথিত আছে, রানির জন্য বিশেষভাবে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
রাজবাড়ির পেছনের অংশে রয়েছে গুপ্ত সিঁড়ি। জনশ্রুতি রয়েছে, এটি কোনও একটি সুড়ঙ্গের সঙ্গে যুক্ত যা সরাসরি ঘাঘট নদীর সঙ্গে যুক্ত। যদিও সিঁড়িটি নিরাপত্তাজনিত কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তাজহাট জমিদার বাড়ি একটি ঐতিহাসিক প্রাসাদ। ১৯৮৪ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত রংপুর হাইকোর্ট ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একটি শাখা বা বেঞ্চ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই প্রাসাদ।
১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ তাজহাট জমিদার বাড়িকে একটি সংরক্ষিত স্থাপনা তথা স্থাপত্য হিসেবে ঘোষণা করে। এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুধাবন করে ২০০৫ সালে রংপুর জাদুঘরকে সরিয়ে এই প্রাসাদের দোতলায় নিয়ে আসে। এটি এখন জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। জাদুঘরে ঢুকতে লাগে নির্দিষ্ট প্রবেশমূল্য। গাড়ি নিয়ে ঢুকতে চাইলে আলাদা ফি দিতে হয়।
যেভাবে যাবেন
সড়ক পথে ঢাকা থেকে রংপুর রুটে চলাচল করে গ্রিন লাইন, টিআর ট্রাভেলস, আগমনী পরিবহন, এস আর, শ্যামলী, হানিফ, কেয়া ইত্যাদি পরিবহন। ঢাকার কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ছাড়ে এসব বাস।
কোথায় থাকবেন
রংপুরে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হোটেল শাহ আমানত, হোটেল গোল্ডেন টাওয়ার ও হোটেল দি পার্ক (জাহাজ কোম্পানির মোড়), হোটেল তিলোত্তমা (থানা রোড), হোটেল বিজয় ও আরডিআরএস (জেল রোড)।
No comments