মৌলভীবাজারে ‘ইভটিজিং স্ট্যান্ড’ ঘিরে আতঙ্ক by ইমাদ উদ দীন
চোখ
টিপুনি, গা ঘেঁষে দাঁড়ানো কিংবা কায়দা কৌশলে শরীর ছোঁয়া। আর নানা
অঙ্গভঙ্গি এবং অশ্লীল কথাবার্তায় স্কুল-কলেজের মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা।
ওখানে যাত্রীর জন্য অপেক্ষমাণ গাড়িচালকদের যেন এটিই প্রধান কাজ। স্থানটি
যেন ইভটিজিংয়ের স্ট্যান্ড। তাই মেয়েরা এই স্থান পাড়ি দেন চরম আতঙ্কে।
মৌলভীবাজার চাঁদনীঘাট গাড়িস্ট্যান্ড। হয়রানির শিকার এমন মেয়েদের কাছে
ওখানকার পরিচিতি এখন এমনই। স্থানটি নিয়ে মেয়েদের অভিযোগের অন্ত নেই।
স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা প্রতিদিনই ওখানে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার সময় ওদের পাতানো ফাঁদে পড়ছেন তারা। প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে চলে ওদের এমন বখাটেপনা। কিন্তু কেউ প্রতিবাদী হয় না। এমন অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। আর লোকলজ্জার ভয়ে নীরবে সহ্য করেন ওই সকল শিক্ষার্থীরা। পরিবার, সহপাঠী কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- সবস্থানেই অভিযোগ দিয়ে মিলছে না প্রতিকার। সম্প্রতি অসহনীয় মাত্রায় বেড়েছে বখাটেপনা। এতে অতীষ্ঠ ছাত্রীরা। তাই নিজেদের কিংবা তাদের পরিবারের সদস্যদের ফেসবুক আইডিতে এই বখাটেপনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। মৌলভীবাজার শহরের প্রবেশদ্বার চাঁদনীঘাট এলাকা। স্থানটি জেলা শহরের সেতুবন্ধন হিসেবেই পরিচিত। কারণ, ৪টি উপজেলার মানুষের জেলা শহরের সঙ্গে পরিবহনে যোগাযোগ ওখান থেকেই। বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, আর সিএনজিচালিত অটোরিকশা (সিএনজি) ও টমটম এর স্ট্যান্ড ওখানেই। মৌলভীবাজার- কুলাউড়া সড়কের উপরেই তাদের স্ট্যান্ড। মনু ব্রিজের (চাঁদনীঘাট ব্রিজ) উত্তর পাশ থেকে শুরু হয়ে প্রায় অর্ধকিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অবৈধ এই গাড়ি স্ট্যান্ড। ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীর জন্য অপেক্ষমাণ ছোট-বড় গাড়িগুলোর চালক ও সহযোগীরাই মেয়েদের নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে। কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও রাজনগরের মানুষের নির্দিষ্ট গন্তব্যে আসা-যাওয়া ওখান থেকে। মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, শাহ মোস্তফা কলেজ, কাশিনাথ আলাউদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইম্পিরিয়াল কলেজ, হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আলী আমজদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শাহ্ হেলাল উচ্চবিদ্যালয় ও মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা এ পথেই যাওয়া আসা করেন। তাদের আসা-যাওয়ার সময় চাঁদনীঘাট গাড়িস্ট্যান্ড এলাকায় শিকার হতে হয় চরম বখাটেপনার। ওদের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়ে মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয় শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ অনুযায়ী শহরের এই ইভটিজিং স্পটগুলো হলো- পৌরসভা ও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠের পূর্বপাশের গাড়িস্ট্যান্ড, শিল্পকলা একাডেমির সামনের গাড়িস্ট্যান্ড, শমশেরনগর রোডের সিএনজি গাড়িস্ট্যান্ড, কুসুমভাগ চৌমহনার পশ্চিম পাশের গাড়িস্ট্যান্ড। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, অনেক গাড়িচালক ও তাদের সহযোগীদের এমন অশ্লীলতা, বখাটেপনা ও ইভটিজিংয়ের কারণে আমাদের এলাকার দুর্নাম হচ্ছে। তাদের এমন যন্ত্রণায় আমরা অতীষ্ঠ। ওই বখাটেপনা বন্ধ করতে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাচ্ছি। সম্প্রতি সরকারি কলেজ ও মহিলা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী এ বিষয়ে তাদের ফেসবুক আইডিতে ওই স্থানগুলোতে তাদের চরম অসহায়ত্বের বিষয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এদের মধ্যে জামি রহমান ও স্টুডেন্ট প্লাটফরম অব মৌলভীবাজার নামক ফেসবুক আইডির লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো। মৌলভীবাজার চাঁদনীঘাট বহু পরিচিত একটা জায়গার নাম। কুলাউড়া, রাজনগর, মুন্সীবাজার এলাকার লোকজনকে এই রোডে মৌলভীবাজার শহরে আসতে হলে তারা অবশ্যই চাঁদনীঘাট হয়ে আসতে হয়। চাঁদনীঘাট বাসস্ট্যান্ড, সিএনজিস্ট্যান্ড মৌলভীবাজারের অনেক প্রাচীন ও পুরাতন। জেলা শহরে সরকারি-বেসরকারি নামি-দামি স্কুল-কলেজ থাকায় রাজনগরের আশপাশের অনেকেই সেখানে লেখাপড়া করে থাকেন। শ’ শ’ ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিন চাঁদনীঘাট হয়ে জেলা শহরে আসা যাওয়া করেন। তখন তাদের প্রতিনিয়ত সিএনজি ড্রাইভার দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হয়। লাঞ্ছিত হন মেয়েরা। এখন আতঙ্কের নাম চাঁদনীঘাট সিএনজিস্ট্যান্ড। মৌলভীবাজার মহিলা কলেজের এক ছাত্রী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার প্রতিদিন লাঞ্ছিত হওয়ার বর্ণনা এভাবেই দেন। আমি ও আমার সহপাঠীরা মহিলা কলেজে পড়ি। আমরা রাজনগর থেকে প্রতিদিন কলেজে আসি। সে ক্ষেত্রে চাঁদনীঘাট ব্রিজ হয়েই আমাদের আসতে হয়। আমরা বাড়ি থেকে যখন চাঁদনীঘাট এসে সিএনজি করে নামি। তখন অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকা ড্রাইভারদের কাছ থেকে ইভটিজিং-অশ্লীল কথাবার্তার শিকার হতে হয়। অনেক ড্রাইভার আমাদের শরীরের সঙ্গে ঘেঁষাঘেঁষি করার চেষ্টা করেন। কিছু বখাটে যুবক এভাবেই আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। কিছু ড্রাইভার গাড়ি ভাড়া দিতে গেলে বলে আপনার ভাড়া লাগবে না। আপনার ফোন নম্বর দেন। আপনাকে আমার ভালো লাগে। অনেক সময় চাঁদনীঘাট হয়ে হেঁটে কলেজে যেতে হয়। তখন মাঝে-মধ্যে আরো বড় বড় পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। পৌরসভার পাশে যে কারস্ট্যান্ড সেখানের ছেলেরাও আমাদের সঙ্গে একই আচরণ করে। শুধু আমাদের কলেজপড়ুয়া সব মেয়েরই একই অভিযোগ। সামনে আমাদের পরীক্ষার সময় (২টা-৫টা) সেক্ষেত্রে আমাদের বাড়ি পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। আমাদের নিরাপত্তা আছে কি? মেয়ে বলে কি আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই? আমরাতো বোরকা পরে বের হই। তাহলে কেন আমাদের প্রতিদিন ভয় নিয়ে যাত্রা করতে হয়। আমরা সামাজিক, শারীরিক, মানসিক অত্যাচারের শিকার। আমাদের সাহায্য করুন। মুরব্বিরা দেখেন কিন্তু তারা এড়িয়ে যান। আমরা কি পড়াশোনা বন্ধ করে দেবো? উত্তরটা আপনাদের কাছে। ভুক্তভোগী অনেকেই এভাবে ফেসবুকে লিখে তাদের এই মানসিক যন্ত্রণার কথা তুলে ধরছেন। চাঁদনীঘাট এলাকার সমাজকর্মী আবদুল মুহিত দিপু মানবজমিনকে জানান, হঠাৎ করে এই স্থানটিতে ইভটিজিংয়ের মাত্রা বেড়েছে। সম্প্রতি কয়েকজনকে হাতেনাতে ধরে উত্তম-মধ্যম দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে একটি প্রতিরোধ কমিটি করেছি। প্রতিটি দোকানে আমাদের ফোন নম্বর দেয়া আছে। কেউ ইভটিজিংয়ের শিকার হলে আমাদের জানালে আমরা অবশ্যই তা প্রতিহত করবো। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ওই বখাটেদের কারণে আমাদের এলাকার ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। জেলা যৌন হয়রানি নির্মূল নেটওয়ার্ক মৌলভীবাজার-এর আহ্বায়ক ও হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদা বেগম জানান, যারা এই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তারা আমাদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে আমাদেরও ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হয়। অবশ্য যারা অভিযোগ দেবে তাদের পরিচয় গোপন রাখা হবে। ইভটিজিং প্রতিরোধে সকলের সচেতনতার প্রয়োজন। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল এ বিষয়ে মানবজমিনকে জানান, কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ করেনি। তারপরও যেহেতু স্থানগুলোতে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ উঠছে তাই এখন থেকে এই স্থানগুলোর প্রতি আমাদের আরো বাড়তি নজরদারি থাকবে।
স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা প্রতিদিনই ওখানে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার সময় ওদের পাতানো ফাঁদে পড়ছেন তারা। প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে চলে ওদের এমন বখাটেপনা। কিন্তু কেউ প্রতিবাদী হয় না। এমন অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। আর লোকলজ্জার ভয়ে নীরবে সহ্য করেন ওই সকল শিক্ষার্থীরা। পরিবার, সহপাঠী কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- সবস্থানেই অভিযোগ দিয়ে মিলছে না প্রতিকার। সম্প্রতি অসহনীয় মাত্রায় বেড়েছে বখাটেপনা। এতে অতীষ্ঠ ছাত্রীরা। তাই নিজেদের কিংবা তাদের পরিবারের সদস্যদের ফেসবুক আইডিতে এই বখাটেপনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। মৌলভীবাজার শহরের প্রবেশদ্বার চাঁদনীঘাট এলাকা। স্থানটি জেলা শহরের সেতুবন্ধন হিসেবেই পরিচিত। কারণ, ৪টি উপজেলার মানুষের জেলা শহরের সঙ্গে পরিবহনে যোগাযোগ ওখান থেকেই। বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, আর সিএনজিচালিত অটোরিকশা (সিএনজি) ও টমটম এর স্ট্যান্ড ওখানেই। মৌলভীবাজার- কুলাউড়া সড়কের উপরেই তাদের স্ট্যান্ড। মনু ব্রিজের (চাঁদনীঘাট ব্রিজ) উত্তর পাশ থেকে শুরু হয়ে প্রায় অর্ধকিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অবৈধ এই গাড়ি স্ট্যান্ড। ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীর জন্য অপেক্ষমাণ ছোট-বড় গাড়িগুলোর চালক ও সহযোগীরাই মেয়েদের নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে। কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও রাজনগরের মানুষের নির্দিষ্ট গন্তব্যে আসা-যাওয়া ওখান থেকে। মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, শাহ মোস্তফা কলেজ, কাশিনাথ আলাউদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইম্পিরিয়াল কলেজ, হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আলী আমজদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শাহ্ হেলাল উচ্চবিদ্যালয় ও মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা এ পথেই যাওয়া আসা করেন। তাদের আসা-যাওয়ার সময় চাঁদনীঘাট গাড়িস্ট্যান্ড এলাকায় শিকার হতে হয় চরম বখাটেপনার। ওদের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়ে মানসিক যন্ত্রণার শিকার হয় শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ অনুযায়ী শহরের এই ইভটিজিং স্পটগুলো হলো- পৌরসভা ও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠের পূর্বপাশের গাড়িস্ট্যান্ড, শিল্পকলা একাডেমির সামনের গাড়িস্ট্যান্ড, শমশেরনগর রোডের সিএনজি গাড়িস্ট্যান্ড, কুসুমভাগ চৌমহনার পশ্চিম পাশের গাড়িস্ট্যান্ড। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, অনেক গাড়িচালক ও তাদের সহযোগীদের এমন অশ্লীলতা, বখাটেপনা ও ইভটিজিংয়ের কারণে আমাদের এলাকার দুর্নাম হচ্ছে। তাদের এমন যন্ত্রণায় আমরা অতীষ্ঠ। ওই বখাটেপনা বন্ধ করতে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাচ্ছি। সম্প্রতি সরকারি কলেজ ও মহিলা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী এ বিষয়ে তাদের ফেসবুক আইডিতে ওই স্থানগুলোতে তাদের চরম অসহায়ত্বের বিষয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এদের মধ্যে জামি রহমান ও স্টুডেন্ট প্লাটফরম অব মৌলভীবাজার নামক ফেসবুক আইডির লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো। মৌলভীবাজার চাঁদনীঘাট বহু পরিচিত একটা জায়গার নাম। কুলাউড়া, রাজনগর, মুন্সীবাজার এলাকার লোকজনকে এই রোডে মৌলভীবাজার শহরে আসতে হলে তারা অবশ্যই চাঁদনীঘাট হয়ে আসতে হয়। চাঁদনীঘাট বাসস্ট্যান্ড, সিএনজিস্ট্যান্ড মৌলভীবাজারের অনেক প্রাচীন ও পুরাতন। জেলা শহরে সরকারি-বেসরকারি নামি-দামি স্কুল-কলেজ থাকায় রাজনগরের আশপাশের অনেকেই সেখানে লেখাপড়া করে থাকেন। শ’ শ’ ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিন চাঁদনীঘাট হয়ে জেলা শহরে আসা যাওয়া করেন। তখন তাদের প্রতিনিয়ত সিএনজি ড্রাইভার দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হয়। লাঞ্ছিত হন মেয়েরা। এখন আতঙ্কের নাম চাঁদনীঘাট সিএনজিস্ট্যান্ড। মৌলভীবাজার মহিলা কলেজের এক ছাত্রী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার প্রতিদিন লাঞ্ছিত হওয়ার বর্ণনা এভাবেই দেন। আমি ও আমার সহপাঠীরা মহিলা কলেজে পড়ি। আমরা রাজনগর থেকে প্রতিদিন কলেজে আসি। সে ক্ষেত্রে চাঁদনীঘাট ব্রিজ হয়েই আমাদের আসতে হয়। আমরা বাড়ি থেকে যখন চাঁদনীঘাট এসে সিএনজি করে নামি। তখন অনেক সময় দাঁড়িয়ে থাকা ড্রাইভারদের কাছ থেকে ইভটিজিং-অশ্লীল কথাবার্তার শিকার হতে হয়। অনেক ড্রাইভার আমাদের শরীরের সঙ্গে ঘেঁষাঘেঁষি করার চেষ্টা করেন। কিছু বখাটে যুবক এভাবেই আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। কিছু ড্রাইভার গাড়ি ভাড়া দিতে গেলে বলে আপনার ভাড়া লাগবে না। আপনার ফোন নম্বর দেন। আপনাকে আমার ভালো লাগে। অনেক সময় চাঁদনীঘাট হয়ে হেঁটে কলেজে যেতে হয়। তখন মাঝে-মধ্যে আরো বড় বড় পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। পৌরসভার পাশে যে কারস্ট্যান্ড সেখানের ছেলেরাও আমাদের সঙ্গে একই আচরণ করে। শুধু আমাদের কলেজপড়ুয়া সব মেয়েরই একই অভিযোগ। সামনে আমাদের পরীক্ষার সময় (২টা-৫টা) সেক্ষেত্রে আমাদের বাড়ি পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। আমাদের নিরাপত্তা আছে কি? মেয়ে বলে কি আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই? আমরাতো বোরকা পরে বের হই। তাহলে কেন আমাদের প্রতিদিন ভয় নিয়ে যাত্রা করতে হয়। আমরা সামাজিক, শারীরিক, মানসিক অত্যাচারের শিকার। আমাদের সাহায্য করুন। মুরব্বিরা দেখেন কিন্তু তারা এড়িয়ে যান। আমরা কি পড়াশোনা বন্ধ করে দেবো? উত্তরটা আপনাদের কাছে। ভুক্তভোগী অনেকেই এভাবে ফেসবুকে লিখে তাদের এই মানসিক যন্ত্রণার কথা তুলে ধরছেন। চাঁদনীঘাট এলাকার সমাজকর্মী আবদুল মুহিত দিপু মানবজমিনকে জানান, হঠাৎ করে এই স্থানটিতে ইভটিজিংয়ের মাত্রা বেড়েছে। সম্প্রতি কয়েকজনকে হাতেনাতে ধরে উত্তম-মধ্যম দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে একটি প্রতিরোধ কমিটি করেছি। প্রতিটি দোকানে আমাদের ফোন নম্বর দেয়া আছে। কেউ ইভটিজিংয়ের শিকার হলে আমাদের জানালে আমরা অবশ্যই তা প্রতিহত করবো। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ওই বখাটেদের কারণে আমাদের এলাকার ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। জেলা যৌন হয়রানি নির্মূল নেটওয়ার্ক মৌলভীবাজার-এর আহ্বায়ক ও হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদা বেগম জানান, যারা এই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তারা আমাদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে আমাদেরও ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হয়। অবশ্য যারা অভিযোগ দেবে তাদের পরিচয় গোপন রাখা হবে। ইভটিজিং প্রতিরোধে সকলের সচেতনতার প্রয়োজন। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল এ বিষয়ে মানবজমিনকে জানান, কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ করেনি। তারপরও যেহেতু স্থানগুলোতে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ উঠছে তাই এখন থেকে এই স্থানগুলোর প্রতি আমাদের আরো বাড়তি নজরদারি থাকবে।
No comments