বাংলাদেশে দুধে চার ধরণের ক্ষতিকর মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়ার দাবি by রাকিব হাসনাত
দুধের মান পরীক্ষায় গবেষক। (ফাইল ফটো) |
বাংলাদেশের
বাজারে থাকা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেট-জাত দুধে অ্যান্টিবায়োটিকের
উপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের মধ্যেই দ্বিতীয় দফায় গবেষণা করেছেন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ঔষধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ.ব.ম. ফারুক।
তিনি বলছেন, বিশ্বমানের ল্যাবে পরীক্ষা করে দশটি স্যাম্পলের সবগুলোতেই অ্যান্টিবায়োটিক পেয়েছে তার গবেষক দল।
বিবিসি বাংলাকে অধ্যাপক ফারুক বলেন, গত সপ্তাহে তারা আবার নমুনা পরীক্ষা করেছেন। আগের পাঁচটি কোম্পানির সাতটি পাস্তুরিত প্যাকেট-জাত দুধের একই জায়গা থেকে সংগৃহীত নমুনা এবং একই জায়গা থেকে খোলা দুধের সংগৃহীত তিনটি নমুনা অর্থাৎ মোট দশটি নমুনা উন্নত ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।
"এবারের সবগুলো নমুনাতেই অ্যান্টিবায়োটিক সনাক্ত হয়েছে"। তিনি বলেন, উঁচু মাত্রার এই অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের দেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
অধ্যাপক ফারুক বলেন, আগের গবেষণায় তিনটি অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেলেও এবার তারা চারটির সন্ধান পেয়েছেন। এর মধ্যে আগের বার পাওয়া যায়নি এমন নতুন দুটি অ্যান্টিবায়োটিক পেয়েছেন।
এর আগে গত ২৫শে জুন ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ফারুক প্রথম যখন দুধে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতির কথা প্রকাশ করেছিলেন তখন তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছিলো। কারণ এতে বলা হয়েছিলো যে বাজারে থাকা প্রথম সারির প্রায় সব দুধেই ক্ষতিকর ডিটারজেন্ট ও অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে।
এরপরই তার গবেষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলো সরকারি কয়েকটি সংস্থা ও দুধ ব্যবসায়ীরা। এ কারণেই মি ফারুককে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষার ফল আসলে কতটা গ্রহণযোগ্য?
জবাবে তিনি বলেন, মানসম্পন্ন উন্নত ল্যাবে পরীক্ষা হয়েছে এবং এ পরীক্ষাগার নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন তিনি।
আগের দফায় গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ঐ গবেষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এটি প্রমাণে ব্যর্থ হলে অধ্যাপক ফারুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলেন।
এমনকি একজন মন্ত্রী সংসদে তার গবেষণাকে অসত্য বলে দাবি করে বলেছিলেন সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই)র পরীক্ষায় বাজারের দুধ নিরাপদ পাওয়া গেছে।
কিন্তু আজ (শনিবার) বিএসটিআইয়ের পরিচালক এসএম ইসহাক আলী বিবিসিকে বলেন, যেসব মানদণ্ড ধরে তারা খাদ্য পরীক্ষা করেন তাতে অ্যান্টিবায়োটিকের বিষয়টিই নেই। অর্থাৎ দুধ বা অন্য খাদ্যে অ্যান্টিবায়োটিক আছে কিনা তা আসলে কখনো পরীক্ষাই হয়নি, যা বিএসটিআই আদালতকেও জানিয়েছে।
"১৮১
টি পণ্য আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মনিটরিংয়ের জন্য। লোকবল কম
হলেও সেটি আমরা করছি। আমরা আদালতে ৩০৫ রকমের দুধ ও দুগ্ধজাতীয় পণ্যের
রিপোর্ট দিয়েছে। সেখানে আমরা বলেছি অ্যান্টিবায়োটিক টেস্টের ক্যাপাসিটি
আমাদের নেই। সুতরাং সেটা আমরা টেস্ট করিনি"।
মি. আলী বলছেন, খাদ্যে পরীক্ষার জন্য যেসব মানদণ্ড নির্ধারণ করা আছে তাতে অ্যান্টিবায়োটিকের বিষয়টি নেই। ফলে অনেক খাদ্য তারা নিয়মিত পরীক্ষা করলেও এ বিষয়টি তাতে উঠে আসেনা।
অধ্যাপক ফারুক বলছেন, দুধের ক্ষেত্রে বিএসটিআই নয়টি মানদণ্ড বিবেচনায় নেয় যেখানে তারা উনিশটি মানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষা করেছেন।
তবে দুধের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য নিয়ে এই বিতর্কের প্রতিক্রিয়া পড়ছে ভোক্তাদের মধ্যেই।
বেসরকারি চাকুরিজীবি মুশাররত রুবিনা মান্নান যেমন বলছেন, খাদ্যে সমস্যা থাকলে তা স্বীকার করে সমাধানের পথে গেলেই বরং তাদের আস্থা বাড়বে।
গ্রাহকদের আস্থার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গবেষণার বিস্তারিত জানতে গবেষকদের চিঠি দেয়ার কথা জানিয়েছেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।
"এটা (অ্যান্টিবায়েটিক) যদি ক্ষতিকর মাত্রায় থাকে তাহলে সমস্যা। পরীক্ষার মেথডও গুরুত্বপূর্ণ। এসব নিয়ে আমরা নিজেরা কাজ করছি। দেখা যাক কি ফল আসে"।
মি. হক বলেন, খাদ্যের সঠিক পরীক্ষা নিরীক্ষা নিশ্চিত করতে রেফারেন্স ল্যাবরেটরি তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং এখন যে গবেষণাগারগুলো আছে সেগুলোর মান উন্নত করারও পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা।
তিনি বলছেন, বিশ্বমানের ল্যাবে পরীক্ষা করে দশটি স্যাম্পলের সবগুলোতেই অ্যান্টিবায়োটিক পেয়েছে তার গবেষক দল।
বিবিসি বাংলাকে অধ্যাপক ফারুক বলেন, গত সপ্তাহে তারা আবার নমুনা পরীক্ষা করেছেন। আগের পাঁচটি কোম্পানির সাতটি পাস্তুরিত প্যাকেট-জাত দুধের একই জায়গা থেকে সংগৃহীত নমুনা এবং একই জায়গা থেকে খোলা দুধের সংগৃহীত তিনটি নমুনা অর্থাৎ মোট দশটি নমুনা উন্নত ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছে।
"এবারের সবগুলো নমুনাতেই অ্যান্টিবায়োটিক সনাক্ত হয়েছে"। তিনি বলেন, উঁচু মাত্রার এই অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের দেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
অধ্যাপক ফারুক বলেন, আগের গবেষণায় তিনটি অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেলেও এবার তারা চারটির সন্ধান পেয়েছেন। এর মধ্যে আগের বার পাওয়া যায়নি এমন নতুন দুটি অ্যান্টিবায়োটিক পেয়েছেন।
এর আগে গত ২৫শে জুন ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ফারুক প্রথম যখন দুধে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতির কথা প্রকাশ করেছিলেন তখন তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছিলো। কারণ এতে বলা হয়েছিলো যে বাজারে থাকা প্রথম সারির প্রায় সব দুধেই ক্ষতিকর ডিটারজেন্ট ও অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে।
এরপরই তার গবেষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলো সরকারি কয়েকটি সংস্থা ও দুধ ব্যবসায়ীরা। এ কারণেই মি ফারুককে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে তাদের পরীক্ষা নিরীক্ষার ফল আসলে কতটা গ্রহণযোগ্য?
জবাবে তিনি বলেন, মানসম্পন্ন উন্নত ল্যাবে পরীক্ষা হয়েছে এবং এ পরীক্ষাগার নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন তিনি।
আগের দফায় গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ঐ গবেষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এটি প্রমাণে ব্যর্থ হলে অধ্যাপক ফারুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছিলেন।
এমনকি একজন মন্ত্রী সংসদে তার গবেষণাকে অসত্য বলে দাবি করে বলেছিলেন সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই)র পরীক্ষায় বাজারের দুধ নিরাপদ পাওয়া গেছে।
কিন্তু আজ (শনিবার) বিএসটিআইয়ের পরিচালক এসএম ইসহাক আলী বিবিসিকে বলেন, যেসব মানদণ্ড ধরে তারা খাদ্য পরীক্ষা করেন তাতে অ্যান্টিবায়োটিকের বিষয়টিই নেই। অর্থাৎ দুধ বা অন্য খাদ্যে অ্যান্টিবায়োটিক আছে কিনা তা আসলে কখনো পরীক্ষাই হয়নি, যা বিএসটিআই আদালতকেও জানিয়েছে।
মি. আলী বলছেন, খাদ্যে পরীক্ষার জন্য যেসব মানদণ্ড নির্ধারণ করা আছে তাতে অ্যান্টিবায়োটিকের বিষয়টি নেই। ফলে অনেক খাদ্য তারা নিয়মিত পরীক্ষা করলেও এ বিষয়টি তাতে উঠে আসেনা।
অধ্যাপক ফারুক বলছেন, দুধের ক্ষেত্রে বিএসটিআই নয়টি মানদণ্ড বিবেচনায় নেয় যেখানে তারা উনিশটি মানদণ্ড বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষা করেছেন।
তবে দুধের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি খাদ্য নিয়ে এই বিতর্কের প্রতিক্রিয়া পড়ছে ভোক্তাদের মধ্যেই।
বেসরকারি চাকুরিজীবি মুশাররত রুবিনা মান্নান যেমন বলছেন, খাদ্যে সমস্যা থাকলে তা স্বীকার করে সমাধানের পথে গেলেই বরং তাদের আস্থা বাড়বে।
গ্রাহকদের আস্থার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গবেষণার বিস্তারিত জানতে গবেষকদের চিঠি দেয়ার কথা জানিয়েছেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।
"এটা (অ্যান্টিবায়েটিক) যদি ক্ষতিকর মাত্রায় থাকে তাহলে সমস্যা। পরীক্ষার মেথডও গুরুত্বপূর্ণ। এসব নিয়ে আমরা নিজেরা কাজ করছি। দেখা যাক কি ফল আসে"।
মি. হক বলেন, খাদ্যের সঠিক পরীক্ষা নিরীক্ষা নিশ্চিত করতে রেফারেন্স ল্যাবরেটরি তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং এখন যে গবেষণাগারগুলো আছে সেগুলোর মান উন্নত করারও পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা।
No comments