'জয় শ্রীরাম' না বলায় মাদ্রাসা ছাত্রদের মারধর, ভারতের উত্তর প্রদেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা
উন্নাওতে মুসলিমদের বিক্ষোভ সমাবেশ |
ভারতের উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলায়
কয়েকজন মাদ্রাসা ছাত্র 'জয় শ্রীরাম' না বলতে চাওয়ায় তাদের মারধর করা
হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠার পর শহরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরী হয়েছে।
ভারতে বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি এরকম একাধিক ঘটনা ঘটেছে।
লক্ষ্ণৌ
থেকে বিবিসির সমীরাত্মজ মিশ্র বলছেন, হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে
পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ প্রদর্শনের পরে উন্নাও শহরে ব্যাপক হারে পুলিশ আর
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
যে মাদ্রাসার ছাত্ররা
মার খেয়েছে, সেখানকার কর্মকর্তারা অভিযোগ করছেন, ছাত্রদের দিয়ে জোর করে
'জয় শ্রীরাম' বলানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ওই স্লোগান দিতে অস্বীকার
করায় তাদের ব্যাপক মারধর করা হয়।
মাদ্রাসা দার-উল উলুমের পরিচালক মো. নঈম। জানান, কজন ছাত্র বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় জি আই সি ময়দানে ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিল।
"১২-১৪
বছরের কয়েকজন ছাত্র যখন ওই মাঠে খেলছিল, সেখানে কয়েকজন বয়সে বড় কিছু
ছেলে হাজির হয়। তারা ব্যাট কেড়ে নিয়ে 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান দেওয়ার
জন্য জবরদস্তি করতে থাকে। আমাদের ছাত্ররা 'জয় শ্রীরাম' বলতে অস্বীকার করে।
তখন ওই ক্রিকেট ব্যাট দিয়েই মারা হতে থাকে। কয়েকজন ছাত্রের মাথা ফেটে
গেছে।"
তার অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ
বলছে, জবরদস্তি 'জয় শ্রীরাম' বলানো হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, ঘটনা
তা নয়। কেন মাদ্রাসা ছাত্রদের মারধর করা হয়েছে, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
কিন্তু
হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বলছে, পুলিশ একতরফাভাবে তাদের সদস্য সমর্থকদের
বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। মারধর বা জয় শ্রীরাম বলানোর জন্য জবরদস্তি - এসব
কিছুই হয় নি।
হিন্দু যুবা বাহিনীর এক কর্মকর্তা রঘুবংশ বলছিলেন, "একটা সামান্য
মারামারির ঘটনাতে ধর্মীয় রঙ লাগানো হচ্ছে। ইচ্ছে করেই করা হচ্ছে এটা। যে
ভিডিওটা প্রকাশ্যে এসেছে, সেখানে (মাদ্রাসা) ছাত্ররা জয় শ্রীরাম বলানোর
কথা যখন বলছে, সেটা যে কেউ ওদের বলতে শিখিয়ে দিচ্ছে, এটা তো স্পষ্ট।"
তিনি বলেন, "ওই ভিডিওটা পরীক্ষা করে দেখা হোক। হিন্দু যুবকদের বিরুদ্ধে পুলিশ যেসব অভিযোগ এনেছে, সেগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।"
দুই
সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনার পরিস্থিতির কারণে গোটা শহর জুড়ে প্রচুর
পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ ছাড়াও রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ,
যাকে উত্তরপ্রদেশে প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্ট্যাবুলারি বা পিএসি বলা হয়,
সেই বাহিনীও নিয়ে আসা হয়েছে।
এখনও উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদদাতারা জানিয়েছেন।
মাদ্রাসা ছাত্রদের মারধরের পর উত্তর প্রদেশের উন্নাওতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা |
No comments