বিশ্বকাপের ইতিহাস by পিন্টু আনোয়ার
ব্যাটে-বলে
২২ গজের লড়াইয়ের শুরু ষোড়শ শতকে। খেলাটির শুরু দক্ষিণ পূর্ব ইংল্যান্ডে।
অষ্টাদশ শতকে ইংল্যান্ডের জাতীয় খেলার মর্যাদা পায় ক্রিকেট। আর ক্রমোন্নতি
নিয়ে ক্রিকেট খেলা জমে ওঠে ইংল্যান্ডের বাইরেও। ১৮৭৭ সালে মাঠে গড়ায় টেস্ট
ক্রিকেট। পরে বিবর্তিত হয়ে জন্ম আজকের ওয়ানডে ক্রিকেটের। তবে ওয়ানডে
ক্রিকেটের শুরুটা অস্ট্রেলিয়ায়। এর শুরুর গল্পটাও মজার। ১৪২ বছরের ইতিহাসে
এখন পর্যন্ত ৪২২টি টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায়। তার মধ্যে
একটি টেস্ট ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে যে ম্যাচে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। আর সে
পরিত্যক্ত টেস্ট ম্যাচটিই রচনা করে এক ইতিহাস। মেলবোর্নের সে ম্যাচ থেকেই
প্রবর্তন হয় ওয়ানডে ক্রিকেটের। যার ধারাবাহিকতায় চার বছর পর বিশ্বকাপ।
ম্যাচটি পরিত্যক্ত না হলে হয়তো এখনও ক্রিকেটের বিশ্বকাপ দেখতে পেতেন না
ক্রীড়াপ্রেমীরা।
এর আগে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে একটি বিশ্বকাপ আয়োজনের অনেক চেষ্টাই করেছে আইসিসি। ১৮৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রায় দুই যুগ পর ১৯০০ সালে অলিম্পিকে ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সে আসরে গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্স অংশ নেয়। ফ্রান্সকে ১৫৮ রানে হারিয়ে স্বর্ণপদক জিতে নেয় ব্রিটেন। কিন্তু এক আসর না যেতেই ক্রিকেটকে বাদ দেয় অলিম্পিক কমিটি। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা চিন্তায় পড়ে যায়। খেলাটিকে বৈশ্বিক করতে একটি জমজমাট আসর যে চাই।
সে ভাবনা থেকে ১৯১২ সালে ওই সময়ের তিনটি টেস্ট খেলুড়ে দেশ ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রথম প্রচেষ্টাও চালানো হয়। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়া ও দর্শকদের অনাগ্রহের মুখে থুবড়ে পড়ে সে আসর। তখন থেকেই টেস্ট ক্রিকেট দ্বিপক্ষীয় সিরিজে পরিণত হয়। তখন আইসিসি যেন একটু ব্যাকফুটে চলে যায়।
অন্যদিকে ফুটবল, আইস হকি এমনকি টেবিল টেনিস বিশ্বকাপেরও তখন রমরমা অবস্থা। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন, রাগবি ও ভলিবলও বিশ্বকাপ আয়োজন শুরু করে। পড়ে থাকে অভিজাত খেলা ক্রিকেট। কালক্রমে নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত ও পাকিস্তানের আবির্ভাব টেস্ট আঙিনায়। ‘টাইমলেস’ যুগ থেকে পাঁচদিনের জামানায় যাত্রা করে খেলাটি। তারপরও এক একটি ম্যাচ পাঁচ দিনের হলে তো বিশ্বকাপ আয়োজনে লেগে যাবে লম্বা সময়।
সব সমস্যার সমাধান করে দেয় মেলবোর্নের সেই পরিত্যক্ত ম্যাচটি। ১৯৭১ সালের ১লা জানুয়ারি শুরু হওয়ার কথা ছিল টেস্ট ম্যাচটির। কিন্তু ম্যাচের শুরুর চার দিনে টানা বৃষ্টিতে একটি বলও মাঠে গড়ানো সম্ভব হয়নি। পঞ্চম দিনে মেলবোর্নে ঝকঝকে রোদ ওঠে। মজার ব্যাপার সে দিনও স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল দর্শকে পরিপূর্ণ। অথচ সেদিন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো। কনকনে শীতেও প্রিয় দলের খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত সমর্থকরা। আগের দু’টি টেস্ট ড্র হওয়ায় আগ্রহটা অনেক। এদিকে দোটানায় পড়ে যায় মেলবোর্ন কর্তৃপক্ষ। একদিনে টেস্ট ম্যাচ শেষ হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না। আর টেস্ট ড্র হলে একটি অতিরিক্ত ম্যাচ আয়োজন করতে গচ্চা দিতে হবে ৮০ হাজার পাউন্ড। কারণ ইংল্যান্ড দলকে নিজ দেশে রাখতে খরচ ছাড়াও তাদের অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে। এছাড়া শিডিউল করা টেস্ট শেষ হতেই সময় লাগবে ৪০ দিন। অন্যদিকে ৪৮ দিনের মধ্যে পাকিস্তান দলও আসছিল অস্ট্রেলিয়া সফরে। আর আগের দুই টেস্ট ড্র হওয়ায় দর্শকরাও হতাশ ও উত্তেজিত। স্বল্প সময়ে সমর্থকদের দেখার মতো কিছু তো দিতে হবে! অবশেষে ইংল্যান্ড একাদশ ও অস্ট্রেলিয়া একাদশ নামে একটি একদিনের সীমিত ওভারের ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। ৪০ ওভারে ম্যাচটি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তখন ৮ বলে ওভার হতো।
শেষ মুহূর্তে সিগারেট কোম্পানি রথম্যান্স ম্যাচটির পৃষ্ঠপোষকতা করে ৫০০০ পাউন্ড দেয় ম্যাচটি আয়োজনের জন্য এবং ম্যান অব দ্য ম্যাচের জন্য দেয়া হয় ৯০ পাউন্ড।
ঐতিহাসিক ম্যাচটি ৪২ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। তবে সে ম্যাচের আবহ নিয়ে অধিনায়ক রে ইলিংওয়ার্থ ১৯৯৪ সালে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি অনেকক্ষণ ধরে ড্রেসিং রুমে অপেক্ষা করি। শেষ পর্যন্ত খেলতে পেরেই কৃতজ্ঞ ছিলাম। এটা শুধুমাত্র বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য আয়োজিত হয়েছিল। আমি বলতে পারবো না, আমি নিজের সেরাটা দিয়ে খেলেছি কি না।’ অনেকটা মজার ছলেই প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি খেলেছিলেন ক্রিকেটাররা। অস্ট্রেলিয়ার অফস্পিনার অ্যাশলে মালে বলেছিলেন, ‘তারা সেটাকে প্রথম আন্তর্জাতিক একদিনের ক্রিকেট ম্যাচ বলে, সেটা আমাকে অনেক বছর বিস্মিত করেছে। এখন ভাবি, আমিও এই ইতিহাসের অংশ। কিন্তু এক সময় এটাকে আমি স্রেফ কৌতুক হিসেবেই মনে করতাম।’
তবে তার উত্তরসূরিরা ইতিহাস যে গড়ে ফেলেছেন তা বুঝতে পেরেছিলেন সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। সে ম্যাচের আগে অসি দলের সব খেলোয়াড়কে একত্রিত করে একটি বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা দিয়েছিলেন। সবশেষে দর্শকদের দেখিয়ে বলেছিলেন, ‘তোমরা দেখতে পাচ্ছ, একটা ইতিহাস তৈরি হতে যাচ্ছে।’
সে ম্যাচে দিনের শুরুতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিল ২০ হাজার দর্শক। ম্যাচের সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা গিয়ে ঠেকে ৪৬ হাজার ৬ জনে। সে ধারায় এ সফলতা ও জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে ঘরোয়া ভিত্তিতে একদিনের প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে আইসিসি আবার নড়েচড়ে বসে। ১৯৭৫ সালে আয়োজন করে ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রথম আসর। তবে তখনও ঠিকভাবে হাঁটা শিখতে পারেনি ওয়ানডে ক্রিকেট। বিশ্বকাপের আগে মোটে ওয়ানডে ম্যাচ হয়েছে ১৮টি। যে আট দল নিয়ে আয়োজিত হয় বিশ্বকাপ, তাদের মধ্যে বেশ কিছু দলের এ সংস্করণে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল শূন্যের কোঠায়। তখন ক্রিকেটের সবকিছুই ইংল্যান্ড কেন্দ্রিক। তাই স্বাগতিক দেশ বাছাই করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি আয়োজকদের। ইংল্যান্ডে সেবছর ৭ই জুন মাঠে গড়ায় বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথম বল। ইংল্যান্ডের ৬টি ভেন্যুতে হয় খেলাগুলো। আসরের প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রুডেন্সিয়াল অ্যাসিউরেন্স কোম্পানির নামে আসরের নামকরণ করা হয় প্রুডেন্সিয়াল কাপ! আর ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ জিতে নেয় অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এর আগে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে একটি বিশ্বকাপ আয়োজনের অনেক চেষ্টাই করেছে আইসিসি। ১৮৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রায় দুই যুগ পর ১৯০০ সালে অলিম্পিকে ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সে আসরে গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্স অংশ নেয়। ফ্রান্সকে ১৫৮ রানে হারিয়ে স্বর্ণপদক জিতে নেয় ব্রিটেন। কিন্তু এক আসর না যেতেই ক্রিকেটকে বাদ দেয় অলিম্পিক কমিটি। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা চিন্তায় পড়ে যায়। খেলাটিকে বৈশ্বিক করতে একটি জমজমাট আসর যে চাই।
সে ভাবনা থেকে ১৯১২ সালে ওই সময়ের তিনটি টেস্ট খেলুড়ে দেশ ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রথম প্রচেষ্টাও চালানো হয়। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়া ও দর্শকদের অনাগ্রহের মুখে থুবড়ে পড়ে সে আসর। তখন থেকেই টেস্ট ক্রিকেট দ্বিপক্ষীয় সিরিজে পরিণত হয়। তখন আইসিসি যেন একটু ব্যাকফুটে চলে যায়।
অন্যদিকে ফুটবল, আইস হকি এমনকি টেবিল টেনিস বিশ্বকাপেরও তখন রমরমা অবস্থা। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন, রাগবি ও ভলিবলও বিশ্বকাপ আয়োজন শুরু করে। পড়ে থাকে অভিজাত খেলা ক্রিকেট। কালক্রমে নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত ও পাকিস্তানের আবির্ভাব টেস্ট আঙিনায়। ‘টাইমলেস’ যুগ থেকে পাঁচদিনের জামানায় যাত্রা করে খেলাটি। তারপরও এক একটি ম্যাচ পাঁচ দিনের হলে তো বিশ্বকাপ আয়োজনে লেগে যাবে লম্বা সময়।
সব সমস্যার সমাধান করে দেয় মেলবোর্নের সেই পরিত্যক্ত ম্যাচটি। ১৯৭১ সালের ১লা জানুয়ারি শুরু হওয়ার কথা ছিল টেস্ট ম্যাচটির। কিন্তু ম্যাচের শুরুর চার দিনে টানা বৃষ্টিতে একটি বলও মাঠে গড়ানো সম্ভব হয়নি। পঞ্চম দিনে মেলবোর্নে ঝকঝকে রোদ ওঠে। মজার ব্যাপার সে দিনও স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল দর্শকে পরিপূর্ণ। অথচ সেদিন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো। কনকনে শীতেও প্রিয় দলের খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত সমর্থকরা। আগের দু’টি টেস্ট ড্র হওয়ায় আগ্রহটা অনেক। এদিকে দোটানায় পড়ে যায় মেলবোর্ন কর্তৃপক্ষ। একদিনে টেস্ট ম্যাচ শেষ হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব না। আর টেস্ট ড্র হলে একটি অতিরিক্ত ম্যাচ আয়োজন করতে গচ্চা দিতে হবে ৮০ হাজার পাউন্ড। কারণ ইংল্যান্ড দলকে নিজ দেশে রাখতে খরচ ছাড়াও তাদের অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে। এছাড়া শিডিউল করা টেস্ট শেষ হতেই সময় লাগবে ৪০ দিন। অন্যদিকে ৪৮ দিনের মধ্যে পাকিস্তান দলও আসছিল অস্ট্রেলিয়া সফরে। আর আগের দুই টেস্ট ড্র হওয়ায় দর্শকরাও হতাশ ও উত্তেজিত। স্বল্প সময়ে সমর্থকদের দেখার মতো কিছু তো দিতে হবে! অবশেষে ইংল্যান্ড একাদশ ও অস্ট্রেলিয়া একাদশ নামে একটি একদিনের সীমিত ওভারের ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। ৪০ ওভারে ম্যাচটি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তখন ৮ বলে ওভার হতো।
শেষ মুহূর্তে সিগারেট কোম্পানি রথম্যান্স ম্যাচটির পৃষ্ঠপোষকতা করে ৫০০০ পাউন্ড দেয় ম্যাচটি আয়োজনের জন্য এবং ম্যান অব দ্য ম্যাচের জন্য দেয়া হয় ৯০ পাউন্ড।
ঐতিহাসিক ম্যাচটি ৪২ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। তবে সে ম্যাচের আবহ নিয়ে অধিনায়ক রে ইলিংওয়ার্থ ১৯৯৪ সালে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি অনেকক্ষণ ধরে ড্রেসিং রুমে অপেক্ষা করি। শেষ পর্যন্ত খেলতে পেরেই কৃতজ্ঞ ছিলাম। এটা শুধুমাত্র বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য আয়োজিত হয়েছিল। আমি বলতে পারবো না, আমি নিজের সেরাটা দিয়ে খেলেছি কি না।’ অনেকটা মজার ছলেই প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি খেলেছিলেন ক্রিকেটাররা। অস্ট্রেলিয়ার অফস্পিনার অ্যাশলে মালে বলেছিলেন, ‘তারা সেটাকে প্রথম আন্তর্জাতিক একদিনের ক্রিকেট ম্যাচ বলে, সেটা আমাকে অনেক বছর বিস্মিত করেছে। এখন ভাবি, আমিও এই ইতিহাসের অংশ। কিন্তু এক সময় এটাকে আমি স্রেফ কৌতুক হিসেবেই মনে করতাম।’
তবে তার উত্তরসূরিরা ইতিহাস যে গড়ে ফেলেছেন তা বুঝতে পেরেছিলেন সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। সে ম্যাচের আগে অসি দলের সব খেলোয়াড়কে একত্রিত করে একটি বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা দিয়েছিলেন। সবশেষে দর্শকদের দেখিয়ে বলেছিলেন, ‘তোমরা দেখতে পাচ্ছ, একটা ইতিহাস তৈরি হতে যাচ্ছে।’
সে ম্যাচে দিনের শুরুতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিল ২০ হাজার দর্শক। ম্যাচের সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা গিয়ে ঠেকে ৪৬ হাজার ৬ জনে। সে ধারায় এ সফলতা ও জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে ঘরোয়া ভিত্তিতে একদিনের প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে আইসিসি আবার নড়েচড়ে বসে। ১৯৭৫ সালে আয়োজন করে ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রথম আসর। তবে তখনও ঠিকভাবে হাঁটা শিখতে পারেনি ওয়ানডে ক্রিকেট। বিশ্বকাপের আগে মোটে ওয়ানডে ম্যাচ হয়েছে ১৮টি। যে আট দল নিয়ে আয়োজিত হয় বিশ্বকাপ, তাদের মধ্যে বেশ কিছু দলের এ সংস্করণে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল শূন্যের কোঠায়। তখন ক্রিকেটের সবকিছুই ইংল্যান্ড কেন্দ্রিক। তাই স্বাগতিক দেশ বাছাই করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি আয়োজকদের। ইংল্যান্ডে সেবছর ৭ই জুন মাঠে গড়ায় বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথম বল। ইংল্যান্ডের ৬টি ভেন্যুতে হয় খেলাগুলো। আসরের প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রুডেন্সিয়াল অ্যাসিউরেন্স কোম্পানির নামে আসরের নামকরণ করা হয় প্রুডেন্সিয়াল কাপ! আর ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ জিতে নেয় অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
No comments