মেঘালয় রাজ্যপালের একার বাংলাবিরোধী টুইট বোমা
তিনি
যদিও বর্তমানে মেঘালয়ের রাজ্যপাল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সাবেক বিজেপি নেতা।
তার নাম তথাগত রায়। সবসময় বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতেই পছন্দ করেন।
এবারে, যারা নরেন্দ্র মোদি সরকারের স্কুল-কলেজে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার
পরিকল্পনার বিরুদ্ধাচারণ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে একচোট নিলেন তিনি।
অনেকে বলছেন, হিন্দির পক্ষে তথাগত এবারে টুইট বোমা ফাটালেন। এবারে তার তত্ত্ব হলো, বাংলা আর বাঙালির সুদিন আর নেই। তাই বাংলার দাম নেই। তিনি নজির টেনেছেন এই বলে যে, বাঙালি মেয়ে এখন মুম্বইর বারে ড্যান্স করে।
তাই বাঙালির হিন্দি শিখতে আপত্তি কি।
তথাগত রায়ের টুইটে হিন্দি কেন বাধ্যতামূলক করা উচিত, তা বোঝাতে বিভিন্ন যুক্তি দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘তামিলনাড়ু বাদে ভারতের সব জায়গার লোক মোটামুটি হিন্দি বোঝে। অপরপক্ষে শহুরে বুদ্ধিজীবী শ্রেণি ছাড়া ইংরেজি কেউ বুঝবে না। যারা ঠিক করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বাইরে এক পাও বেরুবেন না, তারা ছাড়া বাকিদের বর্তমানকে, বাস্তবকে মেনে নিতে হলে হিন্দি শিখতে হবে। না হলে পস্তাতে হবে।’
তিনি আগুনে ঘি ঢেলেছেন অন্য একটি টুইটে।
তার কথায়: ‘একদিকে যখন বাংলা বাঁচাতে বাঙালি মনীষীদের কথা উঠে আসছে, তখন তাদের প্রসঙ্গ টেনেই যুক্তি খাড়া করেছেন তথাগত রায়। তার মতে বিদ্যাসাগর-বিবেকানন্দ-রবীন্দ্রনাথ-নেতাজির সঙ্গে হিন্দি শেখার কোনো বিরোধ নেই। তিনি লিখেছেন, ‘এই মনীষীদের কাল বহুদিন গত, তারপর বাংলার বৃহদংশও গত, এখন বাঙালি ছেলেরা হরিয়ানা থেকে কেরালা পর্যন্ত সব জায়গায় ঘর ঝাঁট দেয়, বাঙালি মেয়েরা মুম্বইতে বার-ডান্স করে, যা আগে অকল্পনীয় ছিল।’ অর্থাৎ তার যুক্তি, বাঙালি মেয়েরা মুম্বইতে বার-ডান্স করলে হিন্দি শিখতেও বাঙালিদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
তথাগত এও জানিয়েছেন, দক্ষিণী রাজ্যগুলো হিন্দির বিরোধিতা করছে ঠিকই, তবে তামিলনাড়ু ছাড়া বাকি দক্ষিণী রাজ্যগুলোর হিন্দির প্রতি কোনো সিরিয়াস বিরোধিতা নেই। এমনকি অসম, ওড়িশা, মহারাষ্ট্রও অ-হিন্দিভাষী রাজ্য হলেও তারা হিন্দির বিশেষ বিরোধিতা করছে না বলে দাবি করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে মেঘালয় হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়েছিল, ধর্মের ভিত্তিতে যেহেতু দেশভাগ হয়েছিল, তাই ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। কেউ যেন ভারতকে আরেকটি ইসলামিক দেশে পরিণত করার চেষ্টা না করেন, তাহলে সেটা হবে ভারত আর বিশ্বের ধ্বংসের দিন।’ এই রায় নিয়ে রায়দানকারী বিচারপতির অপসারণের দাবিতে হৈচৈ এবং বিতর্ক হলেও তখন নীরব ছিলেন তথাগত রায়।
মুম্বই হামলার ১০ বছর পূর্তিতে একটি টুইট বার্তায় তথাগত লিখেছিলেন, ‘মুম্বইয়ে পাকিস্তান সমর্থনপুষ্ট হামলায় নিরপরাধ মানুষকে হত্যার (মুসলমান ছাড়া) দশ বছর আজ, যা ২৬/১১ হামলা নামে সুপরিচিত। কেউ কী মনে করতে পারেন কেন পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়নি (সম্পর্ক ছিন্ন বা যুদ্ধে জড়ানোর কথা না হয় বাদই দিলাম)।’
বিজেপির শক্তিশালী এই নেতা এরপর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন দল। তিনি অতঃপর ওই টুইট বার্তা মুছে দায়সারাভাবে ক্ষমা চান।
এর আগেও বিভিন্ন সময় বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় এসেছিলেন তথাগত। পাঞ্জাবের পাঠানকোটের বিমানঘাঁটিতে হামলা নিয়ে এক টুইট বার্তায় তথাগত লিখেছিলেন, সন্ত্রাসীদের মৃতদেহগুলোকে শূকরের চামড়ায় মুড়ে উপুড় করে শূকরের বিষ্ঠার মধ্যে ফেলে দেয়া হোক, যাতে তাদের ভাগ্যে হুর না জোটে।
মুসলিমদের নিস্কৃতি দেয়া তথ্য ছিল ভুয়া। কারণ ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে ওই হামলায় ১৬৬ জন নিহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ৪৪ জনই ছিলেন মুসলমান।
আরেকবার ‘কাশ্মীরে যাবেন না, কাশ্মীরী পণ্য কিনবেন না’, সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে চলা এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছিলেন মেঘালয় রাজ্যের গভর্নর তথাগত রায়।
২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গে গোরক্ষার পর এবার ছাগল-রক্ষা তর্ক ওঠে। গো-মাতার পর ছাগ-মাতা। ‘হিন্দুরা ছাগলের মাংস খাওয়া বন্ধ করুন’। এমনই টুইট করে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রপৌত্র চন্দ্র কুমার বসু। বিতর্ক ঠেকাতে আবার আসরে নামেন তথাগত রায়। তার পাল্টা টুইট, ‘ছাগল নয়, গরুই আমাদের মাতা।’
চন্দ্র বসু বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, ‘এটা ব্যক্তিগত মত। বিজেপি শাসিত রাজ্যে গরুকেন্দ্রিক রাজনীতি এবং গোরক্ষায় গণপিটুনির ঘটনা বেড়ে গেছে। এটা উদ্বেগের এবং বিরক্তিকর। গান্ধীজী আমাদের বাড়িতে থাকার সময় বারবার ছাগলের দুধ খেতে চাইছেন। সুতরাং এটা ধরেই নেয়া যায়, তিনি ছাগলকে ‘মাতা’ হিসেবেই মনে করতেন। বলার প্রয়োজন পড়ে না।’
‘তাতে কী হলো? এতেই কি প্রমাণ হয়, ছাগল ‘মাতা’? প্রশ্নবাণ ছুড়ে তথাগত রায়ের পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন: ‘গান্ধীজীর প্রিয় শিষ্য জওহরলাল নেহরু নিজে এবং তার সমাজ কাশ্মীরী পণ্ডিতরা মাংস খেতেন।’
অনেকে বলছেন, হিন্দির পক্ষে তথাগত এবারে টুইট বোমা ফাটালেন। এবারে তার তত্ত্ব হলো, বাংলা আর বাঙালির সুদিন আর নেই। তাই বাংলার দাম নেই। তিনি নজির টেনেছেন এই বলে যে, বাঙালি মেয়ে এখন মুম্বইর বারে ড্যান্স করে।
তাই বাঙালির হিন্দি শিখতে আপত্তি কি।
তথাগত রায়ের টুইটে হিন্দি কেন বাধ্যতামূলক করা উচিত, তা বোঝাতে বিভিন্ন যুক্তি দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘তামিলনাড়ু বাদে ভারতের সব জায়গার লোক মোটামুটি হিন্দি বোঝে। অপরপক্ষে শহুরে বুদ্ধিজীবী শ্রেণি ছাড়া ইংরেজি কেউ বুঝবে না। যারা ঠিক করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বাইরে এক পাও বেরুবেন না, তারা ছাড়া বাকিদের বর্তমানকে, বাস্তবকে মেনে নিতে হলে হিন্দি শিখতে হবে। না হলে পস্তাতে হবে।’
তিনি আগুনে ঘি ঢেলেছেন অন্য একটি টুইটে।
তার কথায়: ‘একদিকে যখন বাংলা বাঁচাতে বাঙালি মনীষীদের কথা উঠে আসছে, তখন তাদের প্রসঙ্গ টেনেই যুক্তি খাড়া করেছেন তথাগত রায়। তার মতে বিদ্যাসাগর-বিবেকানন্দ-রবীন্দ্রনাথ-নেতাজির সঙ্গে হিন্দি শেখার কোনো বিরোধ নেই। তিনি লিখেছেন, ‘এই মনীষীদের কাল বহুদিন গত, তারপর বাংলার বৃহদংশও গত, এখন বাঙালি ছেলেরা হরিয়ানা থেকে কেরালা পর্যন্ত সব জায়গায় ঘর ঝাঁট দেয়, বাঙালি মেয়েরা মুম্বইতে বার-ডান্স করে, যা আগে অকল্পনীয় ছিল।’ অর্থাৎ তার যুক্তি, বাঙালি মেয়েরা মুম্বইতে বার-ডান্স করলে হিন্দি শিখতেও বাঙালিদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
তথাগত এও জানিয়েছেন, দক্ষিণী রাজ্যগুলো হিন্দির বিরোধিতা করছে ঠিকই, তবে তামিলনাড়ু ছাড়া বাকি দক্ষিণী রাজ্যগুলোর হিন্দির প্রতি কোনো সিরিয়াস বিরোধিতা নেই। এমনকি অসম, ওড়িশা, মহারাষ্ট্রও অ-হিন্দিভাষী রাজ্য হলেও তারা হিন্দির বিশেষ বিরোধিতা করছে না বলে দাবি করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে মেঘালয় হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়েছিল, ধর্মের ভিত্তিতে যেহেতু দেশভাগ হয়েছিল, তাই ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। কেউ যেন ভারতকে আরেকটি ইসলামিক দেশে পরিণত করার চেষ্টা না করেন, তাহলে সেটা হবে ভারত আর বিশ্বের ধ্বংসের দিন।’ এই রায় নিয়ে রায়দানকারী বিচারপতির অপসারণের দাবিতে হৈচৈ এবং বিতর্ক হলেও তখন নীরব ছিলেন তথাগত রায়।
মুম্বই হামলার ১০ বছর পূর্তিতে একটি টুইট বার্তায় তথাগত লিখেছিলেন, ‘মুম্বইয়ে পাকিস্তান সমর্থনপুষ্ট হামলায় নিরপরাধ মানুষকে হত্যার (মুসলমান ছাড়া) দশ বছর আজ, যা ২৬/১১ হামলা নামে সুপরিচিত। কেউ কী মনে করতে পারেন কেন পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়নি (সম্পর্ক ছিন্ন বা যুদ্ধে জড়ানোর কথা না হয় বাদই দিলাম)।’
বিজেপির শক্তিশালী এই নেতা এরপর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন দল। তিনি অতঃপর ওই টুইট বার্তা মুছে দায়সারাভাবে ক্ষমা চান।
এর আগেও বিভিন্ন সময় বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় এসেছিলেন তথাগত। পাঞ্জাবের পাঠানকোটের বিমানঘাঁটিতে হামলা নিয়ে এক টুইট বার্তায় তথাগত লিখেছিলেন, সন্ত্রাসীদের মৃতদেহগুলোকে শূকরের চামড়ায় মুড়ে উপুড় করে শূকরের বিষ্ঠার মধ্যে ফেলে দেয়া হোক, যাতে তাদের ভাগ্যে হুর না জোটে।
মুসলিমদের নিস্কৃতি দেয়া তথ্য ছিল ভুয়া। কারণ ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে ওই হামলায় ১৬৬ জন নিহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ৪৪ জনই ছিলেন মুসলমান।
আরেকবার ‘কাশ্মীরে যাবেন না, কাশ্মীরী পণ্য কিনবেন না’, সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে চলা এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছিলেন মেঘালয় রাজ্যের গভর্নর তথাগত রায়।
২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গে গোরক্ষার পর এবার ছাগল-রক্ষা তর্ক ওঠে। গো-মাতার পর ছাগ-মাতা। ‘হিন্দুরা ছাগলের মাংস খাওয়া বন্ধ করুন’। এমনই টুইট করে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রপৌত্র চন্দ্র কুমার বসু। বিতর্ক ঠেকাতে আবার আসরে নামেন তথাগত রায়। তার পাল্টা টুইট, ‘ছাগল নয়, গরুই আমাদের মাতা।’
চন্দ্র বসু বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, ‘এটা ব্যক্তিগত মত। বিজেপি শাসিত রাজ্যে গরুকেন্দ্রিক রাজনীতি এবং গোরক্ষায় গণপিটুনির ঘটনা বেড়ে গেছে। এটা উদ্বেগের এবং বিরক্তিকর। গান্ধীজী আমাদের বাড়িতে থাকার সময় বারবার ছাগলের দুধ খেতে চাইছেন। সুতরাং এটা ধরেই নেয়া যায়, তিনি ছাগলকে ‘মাতা’ হিসেবেই মনে করতেন। বলার প্রয়োজন পড়ে না।’
‘তাতে কী হলো? এতেই কি প্রমাণ হয়, ছাগল ‘মাতা’? প্রশ্নবাণ ছুড়ে তথাগত রায়ের পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন: ‘গান্ধীজীর প্রিয় শিষ্য জওহরলাল নেহরু নিজে এবং তার সমাজ কাশ্মীরী পণ্ডিতরা মাংস খেতেন।’
No comments