ব্যালটের প্রত্যাবর্তন না ধারাবাহিকতা by মুনির হোসেন
দীর্ঘ
২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট উৎসব। প্রায় ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী ভোটে
নির্বাচন করবেন তাদের প্রতিনিধি। ছয় ঘণ্টার ভোটে চূড়ান্ত হবে প্রাচ্যের
অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতৃত্ব। এই নির্বাচন
সামনে রেখে উৎসবমুখর ক্যাম্পাস। আছে শঙ্কাও। বিরোধী প্রার্থীদের দাবি
উপেক্ষা করে রাতেই কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে ব্যালট-বাক্স। গণমাধ্যমের ওপর এক
ধরনের নিয়ন্ত্রণ চেষ্টা করছে প্রশাসন।
মান্দাতার আমলের স্টিলের ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হচ্ছে নির্বাচনে।
প্রচার প্রচারণায় আচরণবিধির নানা অভিযোগ থাকলেও কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নজির গড়তে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। হলের বাইরে ভোট কেন্দ্র স্থাপন আর ভোট গ্রহণের সময় বাড়ানোর জোরালো দাবি ছিল শুরু থেকেই। এসব দাবি উপেক্ষা করা হয়েছে। ভোটের আগের এসব আলামতকে খুব ভালোভাবে নিতে পারেননি সাধারণ প্রার্থীরা। তাদের মধ্যে শেষ মুহূর্তে এসে ভর করেছে নানা শঙ্কা। দেশের আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার ডাকসুর নির্বাচনে চোখ পুরো দেশের। বিগত নির্বাচনগুলোর নানা নেতিবাচক অভিজ্ঞতা সামনে রেখে সবার অধির আগ্রহ কি হবে ডাকসুতে।
অতীতের জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে যেসব মডেল প্রত্যক্ষ করা গেছে তা কি ডাকসুতেও দেখা যাবে? নাকি সাধারণ ভোটাররা নিজেদের রায় দিয়ে পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যালটের শক্তি ফিরিয়ে আনবেন এমন প্রশ্ন এখন মুখে মুখে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনেও আজকের নির্বাচন এক বড় চ্যালেঞ্জ। শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তার অতীতের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারবে নাকি অপচেষ্টার কাছে আত্মসমর্পণ করবে এটিই এখন দেখার বিষয়। এমন পরিস্থিতিতে আজ সকাল আটটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হবে ডাকসুর।
নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত প্রশাসন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মু. সামাদ বলেন, ‘বহুল প্রত্যাশিত ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমাদের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট কেন্দ্রে আসতে অন্যান্য দিনের মতো গাড়িগুলো চলাচল করবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি শিক্ষার্থীরা নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের নেতা নির্বাচিত করবে। যিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সব সমস্যা নিয়ে কাজ করবে। প্রশাসনের কাছে উপস্থাপন করে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান কিভাবে আরো সুন্দর হয় সে বিষয়ে কাজ করবে।’ প্রো-ভিসি বলেন, ‘আমারা সব আয়োজন সম্পন্ন করেছি। এখানে শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করবেন। এটা শিক্ষকদের নৈতিকতার প্রশ্ন। আমরা আশা করি শিক্ষার্থীরা আমাদের শিক্ষকদের প্রতি আস্থা রাখবে। শিক্ষকদের দায়িত্ব নিয়ে সন্দেহ করা শিক্ষার্থীদের ঠিক না।’
অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট, কী বলছে প্রশাসন: বহুল প্রত্যাশিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হচ্ছে অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে। স্টিলের রঙিন বাক্সে ব্যালট পেপার সংরক্ষিত করা হবে। যে বাক্সটি তালা দেয়া থাকবে। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রার্থীরা। যদিও প্রশাসন বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির নির্বাচন, রেজিস্ট্রার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনে এ বাক্স ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ডাকসুর আগের সব নির্বাচনেও এ ধরনের বাক্স ব্যবহার করা হয়েছিল। এবার ভোটার বেশি হওয়ায় কিছু বাক্স নতুনভাবে তৈরি করা হয়েছে। এদিকে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রার্থীরা। গতকালও ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব বাক্স পরিবর্তনের দাবি করেন তারা। বলেন, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহারের। এ বিষয়ে জিএস প্রার্থী রাশেদ খান বলেন, অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহারের মাধ্যমে কারচুপির আশঙ্কা থেকে যায়। আমি মনে করি এর মাধ্যমে একটি গোষ্ঠিকে সুবিধা দিতে চায় প্রশাসন। যারা রাতের আঁধারে ব্যালটে সিল মেরে বাক্সে ফেলে দিলেও কেউ কিছু বলতে পারবে না। আমরা এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মু. সামাদ বলেন, যে বাক্সগুলো ডাকসু নির্বাচনে ব্যবহার হচ্ছে এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচনসহ সব নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়। ডাকসুতেও আগের সব নির্বাচনে এসব বাক্স ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রার্থীরা যদি বিষয়টি আমাদের আগে জানাতো তাহলে আমরা বাক্সগুলো ব্যবহার না করে অন্য চিন্তা করতাম। কিন্তু তারা নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে এসে এসব বাক্সের ব্যবহার না করার দাবিতে আন্দোলন করছে। এ মুহূর্তে বাক্সগুলো পরিবর্তন করে অন্য বাক্সের ব্যবহার করা আমাদের দ্বারা সম্ভব নয়। এখানে কোনো অনৈতিক কাজের সম্ভাবনা নেই। কারণ শিক্ষকরাই নির্বাচনী কাজে সংশ্লিষ্ট থাকবেন।
প্রার্থীদের দাবি উপেক্ষিত, রাতেই হলে হলে ব্যালট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ব্যালট ও ব্যালট বাক্স রাতেই হলগুলোতে পাঠিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও ভোটের আগের দিন ব্যালট হলে হলে প্রেরণ না করার দাবি করেছিল ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য প্রার্থীরা। গতকাল শেষ বিকেল থেকে হলগুলোতে ব্যালট ও ব্যালট বাক্স পাঠানো শুরু করে রিটার্নিং কর্মকর্তারা। হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তা সেগুলো গ্রহণ করেন। জানতে চাইলে গতকাল সন্ধ্যায় জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার বলেন, ‘ব্যালট বাক্স ও ব্যালট আমাদের হলগুলোতে পাঠানো হচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করতে চাই, ব্যালট ও ব্যালট বাক্সের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। এটা আমাদের নৈতিকতার প্রশ্ন।’
এর আগে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবহার ও সকালে ব্যালট বাক্স হলে প্রেরণের দাবি নিয়ে ভিসিকে স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্রলীগ ছাড়া অন্যসব প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তারা ভোটের দিন সকালে ব্যালট বাক্স প্রেরণসহ কয়েক দফা দাবি করেন। প্রথমে বামজোট, স্বতন্ত্র জোট, কোটা সংস্কার আন্দোলন, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র মৈত্রী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কয়েকজন ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপির মাধ্যমে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। এর পর পরই ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকী, ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, জিএস প্রার্থী আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক। এ সময় তারাও সকালে ব্যালট বাক্স প্রেরণ ও নির্বাচনে মিডিয়ার ওপর অতিরিক্ত কড়াকড়ি না করার আবেদন করেন। নেতারা যখন ভেতরে ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঠিক তখন অন্য প্রার্থীরা ভিসির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে। স্বতন্ত্র প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান বলেন, ‘আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে নির্বাচন চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে নির্বাচন নিচ্ছে। এখন আবার রাতেই যদি ব্যালট ও ব্যালট বাক্স হলে প্রেরণ করা হয় তাহলে এর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থাকে। আমরা ভিসি স্যারকে জানিয়েছি যেন সকালে ব্যালট ও ব্যালট বাক্স প্রেরণ করা হয়। কিন্তু হলগুলোতে বিকাল থেকেই ব্যালট পাঠানো শুরু হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। এর মাধ্যমে প্রশাসন একটি গোষ্ঠীকে জিতিয়ে দিতে চাচ্ছেন। আমরা আবারো বলছি, নির্বাচনে কোনো ধরনের কারচুপি হলে ছাত্র সমাজ মেনে নেবে না। আমরা চাই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট।
কিন্তু যদি কোনো ধরনের কারচুপির আশ্রয় নেয়া হয় তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তার জবাব নেবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে আহ্বান জানায় আপনারা ভোট দিতে আসুন। আপনাদের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করবো। কারো হুমকি ধমকিকে আপনারা ভয় পাবেন না।’ ছাত্রদল ছাড়া অন্য প্রার্থীদের যৌথ স্মারকলিপিতে উত্থাপিত সাত দফা দাবি হলো- সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সকলের ভোট গ্রহণের বাস্তব পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে ভোট গ্রহণের সময় আরো চার ঘণ্টা বাড়ানো; নির্বাচন-কেন্দ্রিক শঙ্কা ও ধূম্রজাল নিরসনের লক্ষ্যে সকল ধরনের মিডিয়ার কেবল পোলিং বুথের অভ্যন্তর ছাড়া নির্বাচনী এলাকা ও ভোটকেন্দ্রের সকল তথ্য সংগ্রহের অবাধ সুযোগ তৈরি করা; ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের আসতে নিরুৎসাহিত করাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা; স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার ও পোলিং এজেন্ট নিয়োগের অনুমতি প্রদান; নির্বাচনী পর্যবেক্ষক ও ভোটারদের নিরাপত্তা বিধানে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ; প্রতিটি কেন্দ্রে সকাল বেলা ব্যালট পেপার নেয়া এবং ভোট গ্রহণের দিন সকাল বেলা সকল রুটে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা। অধ্যাপক অসীম সরকার বলেন, আমি মনে করি শিক্ষার্থীদের আমার প্রতি আস্থা আছে।
আমরা অন্যান্য কাজের মতো সর্বোচ্চ সততার সঙ্গে নির্বাচন সম্পন্ন করবো। আশা করছি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ একটা নির্বাচন আমরা দিতে পারবো। এ বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক সামাদ বলেন, এখানে শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করবেন। এটা শিক্ষকদের নৈতিকতার প্রশ্ন। আমরা আশা করি শিক্ষার্থীরা আমাদের শিক্ষকদের প্রতি আস্থা রাখবে।
১৮ হলে প্রস্তুত ৫০৮টি বুথ: এদিকে ৪২ হাজার ৯২৩ ভোটারের জন্য ১৮টি হলে ৫০৮টি বুথ তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলের প্রিজাইডিং অফিসার থেকে ব্যালট সংগ্রহ করে বুথে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পরবেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে হলের মূল গেটে প্রবেশ করতে পারলে ভোট দিতে পারবেন ভোটাররা। হল প্রাধ্যক্ষ রিটার্নিং কর্মকর্তাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ৩৫টি, শহীদুল্লাহ হলে ২০টি, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৩৫টি, অমর একুশে হলে ২০টি, জগন্নাথ হলে ২৫টি, কবি জসীম উদ্্দীন হলে ২০টি, মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ৩২টি, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ৩০টি, রোকেয়া হলে ৫০টি, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৪৫টি, শামসুন্নাহার হলে ৩৫টি, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে ২০টি, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ১৯টি, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ২১টি, স্যার এ এফ রহমান হলে ১৬টি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২৪টি, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ২০টি এবং বিজয় একাত্তর হলে ৪০টি বুথ তৈরি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সংসদে ২২৯ ও হল সংসদে ৫০৯ প্রার্থী: বহুল প্রত্যাশিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রেীয় সংসদে ২৫টি পদের বিপরীতে ২২৯ প্রার্থী ও হল সংসদে ১৩টি করে মোট ২৩৪ পদের বিপরীতে ৫০৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ডাকসুর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ২১ জন এবং জিএস পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া এজিএস পদে ১৩ জন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে ৯ জন, কমনরুম-ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ৯ জন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, সাহিত্য সম্পাদক পদে ৮ জন, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ১২ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১১ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১০ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৪ জন এবং ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে ৮৬ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে হল সংসদে ১৮টি হলে ১৩টি করে মোট ২৩৪ পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন মোট ৫০৯ জন। এর মধ্যে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ২৭ জন, জগন্নাথ হলে ২৮ জন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বলে ১৭ জন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ২৬ জন, অমর একুশে হলে ২৯ জন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২৭ জন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে ৩৪ জন, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ৩৩ জন, রোকেয়া হলে ৩০ জন, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৩০ জন, শামসুন্নাহার হলে ২৫ জন, কবি জসীম উদ্্দীন হলে ২৫ জন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলে ২২ জন, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৩৬ জন, বিজয় একাত্তর হলে ৩০ জন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ২৭ জন, স্যার এ এফ রহমান হলে ৩৭ জন এবং সূর্যসেন হলে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চালু থাকবে পরিবহন: এদিকে নির্বাচনের দিন শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসসমূহ চালু থাকবে। গতকাল রাতে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মু. সামাদ এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেন কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়া ক্যাম্পাসে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে লক্ষ্যে চালু থাকবে সকল রুটে চলাচলকারী বাসগুলো।’ পরিবহন ম্যানেজার কামরুল হাসান বলেন, ‘নির্বাচনের সময় বিভিন্ন রুটের বাসগুলো চলাচল করবে আগের মতো।’
নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ভিসির কাছে দশ শিক্ষকের আবেদন: ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে আবেদন করেছেন দশ শিক্ষক। গতকাল দুপুরে ক্ষমতাবলে ডাকসুর সভাপতি ও ভিসির কাছে এ আবেদন করেন শিক্ষকরা। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে চাওয়া শিক্ষকরা হলেন- গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অতনু রব্বানী, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাহমিনা খানম এবং শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাজ্জাদ এইচ সিদ্দিকী।
ভীতি উপেক্ষা করে ভোট দাও: সাদা দল: গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এসময় সকল ভয়-ভীতি ও চাপ উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের নির্বাচিত করার জন্য আহ্বান জানান সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিল এ নির্বাচনকে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করার স্বার্থে নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন কমিটিতে ভিন্ন মতের শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব রাখা হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা করেননি। বস্তুত গত এক দশক ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও চলছে একদলীয় শাসন।
এবার ১৮টি হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ১৮টি হলের প্রশাসনে প্রশাসন সমর্থক শিক্ষক ছাড়া ভিন্নমতের একজন প্রভোস্ট ও হাউজটিউটর নেই। ফলে নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত নির্বাচন কমিশনে বিরোধী মতের শিক্ষক নেই। তিনি বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিরপেক্ষতা নিয়েও বিরোধী প্রার্থী ও সংগঠনসমূহের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্তৃপক্ষ ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন ও নির্বাচনী আচরণবিধি তৈরি করে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বিরোধী ছাত্র সংগঠনসমূহের সঙ্গে আলোচনা করলেও গঠনতন্ত্র সংশোধন বা আচরণবিধিতে তাদের কোনো দাবি ও মতামতের প্রতিফলন দেখা যায়নি বলে তারা দাবি করেছেন।
হলে হলে শিক্ষার্থীদের সহাবস্থান নেই বলেও জানান তিনি। সকল ভয়-ভীতি ও চাপ উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের নির্বাচিত করার জন্য আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে আশা প্রকাশ করেন, ডাকসু নির্বাচন দেশের বিপন্ন নির্বাচন পদ্ধতি ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবারো ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে। ডাকসু নির্বাচনে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহারে সবার মনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে সাদা দলের প্রচার সচিব অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ডাকসু নির্বাচনে অতীতে স্টিলের ব্যালট বক্স ব্যবহার করা হতো। আমরা দাবি জানিয়েছিলাম, এবার যাতে স্বচ্ছ বক্স ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সে দাবি মানা হয়নি। এছাড়া সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ঢাবি সাদা দলের প্রচার সচিব প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর কালাম সরকার, প্রফেসর নুরুল আমিনসহ ঢাবি সাদা দলের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
মান্দাতার আমলের স্টিলের ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হচ্ছে নির্বাচনে।
প্রচার প্রচারণায় আচরণবিধির নানা অভিযোগ থাকলেও কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নজির গড়তে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। হলের বাইরে ভোট কেন্দ্র স্থাপন আর ভোট গ্রহণের সময় বাড়ানোর জোরালো দাবি ছিল শুরু থেকেই। এসব দাবি উপেক্ষা করা হয়েছে। ভোটের আগের এসব আলামতকে খুব ভালোভাবে নিতে পারেননি সাধারণ প্রার্থীরা। তাদের মধ্যে শেষ মুহূর্তে এসে ভর করেছে নানা শঙ্কা। দেশের আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার ডাকসুর নির্বাচনে চোখ পুরো দেশের। বিগত নির্বাচনগুলোর নানা নেতিবাচক অভিজ্ঞতা সামনে রেখে সবার অধির আগ্রহ কি হবে ডাকসুতে।
অতীতের জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে যেসব মডেল প্রত্যক্ষ করা গেছে তা কি ডাকসুতেও দেখা যাবে? নাকি সাধারণ ভোটাররা নিজেদের রায় দিয়ে পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যালটের শক্তি ফিরিয়ে আনবেন এমন প্রশ্ন এখন মুখে মুখে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনেও আজকের নির্বাচন এক বড় চ্যালেঞ্জ। শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তার অতীতের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারবে নাকি অপচেষ্টার কাছে আত্মসমর্পণ করবে এটিই এখন দেখার বিষয়। এমন পরিস্থিতিতে আজ সকাল আটটা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হবে ডাকসুর।
নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত প্রশাসন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মু. সামাদ বলেন, ‘বহুল প্রত্যাশিত ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমাদের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট কেন্দ্রে আসতে অন্যান্য দিনের মতো গাড়িগুলো চলাচল করবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি শিক্ষার্থীরা নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের নেতা নির্বাচিত করবে। যিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সব সমস্যা নিয়ে কাজ করবে। প্রশাসনের কাছে উপস্থাপন করে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান কিভাবে আরো সুন্দর হয় সে বিষয়ে কাজ করবে।’ প্রো-ভিসি বলেন, ‘আমারা সব আয়োজন সম্পন্ন করেছি। এখানে শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করবেন। এটা শিক্ষকদের নৈতিকতার প্রশ্ন। আমরা আশা করি শিক্ষার্থীরা আমাদের শিক্ষকদের প্রতি আস্থা রাখবে। শিক্ষকদের দায়িত্ব নিয়ে সন্দেহ করা শিক্ষার্থীদের ঠিক না।’
অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট, কী বলছে প্রশাসন: বহুল প্রত্যাশিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হচ্ছে অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে। স্টিলের রঙিন বাক্সে ব্যালট পেপার সংরক্ষিত করা হবে। যে বাক্সটি তালা দেয়া থাকবে। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রার্থীরা। যদিও প্রশাসন বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির নির্বাচন, রেজিস্ট্রার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনে এ বাক্স ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ডাকসুর আগের সব নির্বাচনেও এ ধরনের বাক্স ব্যবহার করা হয়েছিল। এবার ভোটার বেশি হওয়ায় কিছু বাক্স নতুনভাবে তৈরি করা হয়েছে। এদিকে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রার্থীরা। গতকালও ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব বাক্স পরিবর্তনের দাবি করেন তারা। বলেন, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহারের। এ বিষয়ে জিএস প্রার্থী রাশেদ খান বলেন, অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহারের মাধ্যমে কারচুপির আশঙ্কা থেকে যায়। আমি মনে করি এর মাধ্যমে একটি গোষ্ঠিকে সুবিধা দিতে চায় প্রশাসন। যারা রাতের আঁধারে ব্যালটে সিল মেরে বাক্সে ফেলে দিলেও কেউ কিছু বলতে পারবে না। আমরা এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মু. সামাদ বলেন, যে বাক্সগুলো ডাকসু নির্বাচনে ব্যবহার হচ্ছে এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচনসহ সব নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়। ডাকসুতেও আগের সব নির্বাচনে এসব বাক্স ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রার্থীরা যদি বিষয়টি আমাদের আগে জানাতো তাহলে আমরা বাক্সগুলো ব্যবহার না করে অন্য চিন্তা করতাম। কিন্তু তারা নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে এসে এসব বাক্সের ব্যবহার না করার দাবিতে আন্দোলন করছে। এ মুহূর্তে বাক্সগুলো পরিবর্তন করে অন্য বাক্সের ব্যবহার করা আমাদের দ্বারা সম্ভব নয়। এখানে কোনো অনৈতিক কাজের সম্ভাবনা নেই। কারণ শিক্ষকরাই নির্বাচনী কাজে সংশ্লিষ্ট থাকবেন।
প্রার্থীদের দাবি উপেক্ষিত, রাতেই হলে হলে ব্যালট: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ব্যালট ও ব্যালট বাক্স রাতেই হলগুলোতে পাঠিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও ভোটের আগের দিন ব্যালট হলে হলে প্রেরণ না করার দাবি করেছিল ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য প্রার্থীরা। গতকাল শেষ বিকেল থেকে হলগুলোতে ব্যালট ও ব্যালট বাক্স পাঠানো শুরু করে রিটার্নিং কর্মকর্তারা। হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মকর্তা সেগুলো গ্রহণ করেন। জানতে চাইলে গতকাল সন্ধ্যায় জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার বলেন, ‘ব্যালট বাক্স ও ব্যালট আমাদের হলগুলোতে পাঠানো হচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করতে চাই, ব্যালট ও ব্যালট বাক্সের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। এটা আমাদের নৈতিকতার প্রশ্ন।’
এর আগে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবহার ও সকালে ব্যালট বাক্স হলে প্রেরণের দাবি নিয়ে ভিসিকে স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্রলীগ ছাড়া অন্যসব প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তারা ভোটের দিন সকালে ব্যালট বাক্স প্রেরণসহ কয়েক দফা দাবি করেন। প্রথমে বামজোট, স্বতন্ত্র জোট, কোটা সংস্কার আন্দোলন, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র মৈত্রী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কয়েকজন ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপির মাধ্যমে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। এর পর পরই ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকী, ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, জিএস প্রার্থী আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক। এ সময় তারাও সকালে ব্যালট বাক্স প্রেরণ ও নির্বাচনে মিডিয়ার ওপর অতিরিক্ত কড়াকড়ি না করার আবেদন করেন। নেতারা যখন ভেতরে ভিসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঠিক তখন অন্য প্রার্থীরা ভিসির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে। স্বতন্ত্র প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান বলেন, ‘আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে নির্বাচন চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে নির্বাচন নিচ্ছে। এখন আবার রাতেই যদি ব্যালট ও ব্যালট বাক্স হলে প্রেরণ করা হয় তাহলে এর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থাকে। আমরা ভিসি স্যারকে জানিয়েছি যেন সকালে ব্যালট ও ব্যালট বাক্স প্রেরণ করা হয়। কিন্তু হলগুলোতে বিকাল থেকেই ব্যালট পাঠানো শুরু হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। এর মাধ্যমে প্রশাসন একটি গোষ্ঠীকে জিতিয়ে দিতে চাচ্ছেন। আমরা আবারো বলছি, নির্বাচনে কোনো ধরনের কারচুপি হলে ছাত্র সমাজ মেনে নেবে না। আমরা চাই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট।
কিন্তু যদি কোনো ধরনের কারচুপির আশ্রয় নেয়া হয় তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তার জবাব নেবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে আহ্বান জানায় আপনারা ভোট দিতে আসুন। আপনাদের নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করবো। কারো হুমকি ধমকিকে আপনারা ভয় পাবেন না।’ ছাত্রদল ছাড়া অন্য প্রার্থীদের যৌথ স্মারকলিপিতে উত্থাপিত সাত দফা দাবি হলো- সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সকলের ভোট গ্রহণের বাস্তব পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে ভোট গ্রহণের সময় আরো চার ঘণ্টা বাড়ানো; নির্বাচন-কেন্দ্রিক শঙ্কা ও ধূম্রজাল নিরসনের লক্ষ্যে সকল ধরনের মিডিয়ার কেবল পোলিং বুথের অভ্যন্তর ছাড়া নির্বাচনী এলাকা ও ভোটকেন্দ্রের সকল তথ্য সংগ্রহের অবাধ সুযোগ তৈরি করা; ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের আসতে নিরুৎসাহিত করাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা; স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার ও পোলিং এজেন্ট নিয়োগের অনুমতি প্রদান; নির্বাচনী পর্যবেক্ষক ও ভোটারদের নিরাপত্তা বিধানে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ; প্রতিটি কেন্দ্রে সকাল বেলা ব্যালট পেপার নেয়া এবং ভোট গ্রহণের দিন সকাল বেলা সকল রুটে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা। অধ্যাপক অসীম সরকার বলেন, আমি মনে করি শিক্ষার্থীদের আমার প্রতি আস্থা আছে।
আমরা অন্যান্য কাজের মতো সর্বোচ্চ সততার সঙ্গে নির্বাচন সম্পন্ন করবো। আশা করছি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ একটা নির্বাচন আমরা দিতে পারবো। এ বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক সামাদ বলেন, এখানে শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করবেন। এটা শিক্ষকদের নৈতিকতার প্রশ্ন। আমরা আশা করি শিক্ষার্থীরা আমাদের শিক্ষকদের প্রতি আস্থা রাখবে।
১৮ হলে প্রস্তুত ৫০৮টি বুথ: এদিকে ৪২ হাজার ৯২৩ ভোটারের জন্য ১৮টি হলে ৫০৮টি বুথ তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলের প্রিজাইডিং অফিসার থেকে ব্যালট সংগ্রহ করে বুথে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পরবেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে হলের মূল গেটে প্রবেশ করতে পারলে ভোট দিতে পারবেন ভোটাররা। হল প্রাধ্যক্ষ রিটার্নিং কর্মকর্তাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ৩৫টি, শহীদুল্লাহ হলে ২০টি, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৩৫টি, অমর একুশে হলে ২০টি, জগন্নাথ হলে ২৫টি, কবি জসীম উদ্্দীন হলে ২০টি, মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ৩২টি, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ৩০টি, রোকেয়া হলে ৫০টি, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৪৫টি, শামসুন্নাহার হলে ৩৫টি, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে ২০টি, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ১৯টি, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ২১টি, স্যার এ এফ রহমান হলে ১৬টি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২৪টি, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ২০টি এবং বিজয় একাত্তর হলে ৪০টি বুথ তৈরি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সংসদে ২২৯ ও হল সংসদে ৫০৯ প্রার্থী: বহুল প্রত্যাশিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রেীয় সংসদে ২৫টি পদের বিপরীতে ২২৯ প্রার্থী ও হল সংসদে ১৩টি করে মোট ২৩৪ পদের বিপরীতে ৫০৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ডাকসুর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ২১ জন এবং জিএস পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া এজিএস পদে ১৩ জন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে ৯ জন, কমনরুম-ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ৯ জন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, সাহিত্য সম্পাদক পদে ৮ জন, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ১২ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১১ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১০ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৪ জন এবং ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে ৮৬ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে হল সংসদে ১৮টি হলে ১৩টি করে মোট ২৩৪ পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন মোট ৫০৯ জন। এর মধ্যে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ২৭ জন, জগন্নাথ হলে ২৮ জন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বলে ১৭ জন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ২৬ জন, অমর একুশে হলে ২৯ জন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২৭ জন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে ৩৪ জন, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ৩৩ জন, রোকেয়া হলে ৩০ জন, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৩০ জন, শামসুন্নাহার হলে ২৫ জন, কবি জসীম উদ্্দীন হলে ২৫ জন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলে ২২ জন, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৩৬ জন, বিজয় একাত্তর হলে ৩০ জন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ২৭ জন, স্যার এ এফ রহমান হলে ৩৭ জন এবং সূর্যসেন হলে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চালু থাকবে পরিবহন: এদিকে নির্বাচনের দিন শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসসমূহ চালু থাকবে। গতকাল রাতে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মু. সামাদ এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেন কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়া ক্যাম্পাসে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সে লক্ষ্যে চালু থাকবে সকল রুটে চলাচলকারী বাসগুলো।’ পরিবহন ম্যানেজার কামরুল হাসান বলেন, ‘নির্বাচনের সময় বিভিন্ন রুটের বাসগুলো চলাচল করবে আগের মতো।’
নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ভিসির কাছে দশ শিক্ষকের আবেদন: ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের কাছে আবেদন করেছেন দশ শিক্ষক। গতকাল দুপুরে ক্ষমতাবলে ডাকসুর সভাপতি ও ভিসির কাছে এ আবেদন করেন শিক্ষকরা। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে চাওয়া শিক্ষকরা হলেন- গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অতনু রব্বানী, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাহমিনা খানম এবং শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাজ্জাদ এইচ সিদ্দিকী।
ভীতি উপেক্ষা করে ভোট দাও: সাদা দল: গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এসময় সকল ভয়-ভীতি ও চাপ উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের নির্বাচিত করার জন্য আহ্বান জানান সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিল এ নির্বাচনকে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করার স্বার্থে নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন কমিটিতে ভিন্ন মতের শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব রাখা হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা করেননি। বস্তুত গত এক দশক ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও চলছে একদলীয় শাসন।
এবার ১৮টি হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ১৮টি হলের প্রশাসনে প্রশাসন সমর্থক শিক্ষক ছাড়া ভিন্নমতের একজন প্রভোস্ট ও হাউজটিউটর নেই। ফলে নির্বাচন পরিচালনায় গঠিত নির্বাচন কমিশনে বিরোধী মতের শিক্ষক নেই। তিনি বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিরপেক্ষতা নিয়েও বিরোধী প্রার্থী ও সংগঠনসমূহের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্তৃপক্ষ ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন ও নির্বাচনী আচরণবিধি তৈরি করে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বিরোধী ছাত্র সংগঠনসমূহের সঙ্গে আলোচনা করলেও গঠনতন্ত্র সংশোধন বা আচরণবিধিতে তাদের কোনো দাবি ও মতামতের প্রতিফলন দেখা যায়নি বলে তারা দাবি করেছেন।
হলে হলে শিক্ষার্থীদের সহাবস্থান নেই বলেও জানান তিনি। সকল ভয়-ভীতি ও চাপ উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের নির্বাচিত করার জন্য আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে আশা প্রকাশ করেন, ডাকসু নির্বাচন দেশের বিপন্ন নির্বাচন পদ্ধতি ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবারো ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে। ডাকসু নির্বাচনে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহারে সবার মনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে সাদা দলের প্রচার সচিব অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ডাকসু নির্বাচনে অতীতে স্টিলের ব্যালট বক্স ব্যবহার করা হতো। আমরা দাবি জানিয়েছিলাম, এবার যাতে স্বচ্ছ বক্স ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সে দাবি মানা হয়নি। এছাড়া সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ঢাবি সাদা দলের প্রচার সচিব প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর কালাম সরকার, প্রফেসর নুরুল আমিনসহ ঢাবি সাদা দলের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
No comments