সরকার ছদ্মবেশে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে
স্বাধীনতার
৪৮ বছর পর জনগণকে নির্যাতন ও নিপীড়নের মধ্যদিয়ে সরকার ছদ্মবেশে একদলীয়
বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে বলে অভিযোগ বিএনপির। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল
ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ১৯৭৫ সালে আওয়ামী
লীগ স্বাধীনতাকে পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দিয়েছিল। আর এখন স্বাধীনতার ৪৮ বছর
পরে এসে তারা আবার জনগণকে নির্যাতন ও নিপিড়নের মধ্য দিয়ে ছদ্মবেশে একদলীয়
বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। গতকাল বিকালে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনাসভায়
তিনি এ অভিযোগ করেন। মির্জা আলমগীর বলেন, ১৯৭১ সালে যে চেতনা, যে আদর্শকে
সামনে নিয়ে দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।
সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ আজ ভুলুন্ঠিত হয়েছে। স্বাধীনতা মানে কি
শুধু ভূ-খণ্ডের স্বাধীনতা? স্বাধীনতা মানে কি শুধু একটা পতাকা? না।
স্বাধীনতা মানে হলো এই ভূ-খণ্ডে যেসব মানুষ বাস করে তাদের স্বাধীনতা।
সার্বিক স্বাধীনতা। তাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও মুক্তির স্বাধীনতা। তিনি বলেন, আজকে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে বিপন্ন হয়ে গেছে। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আজকে যারা সরকারে আছে তারা মানুষের অধিকার হরণ করে, জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। তারা বারবার বলতে চায়- এখন বাংলাদেশে এমন উন্নয়ন হয়েছে যা অতীতে কখনো হয়নি। গোটা পৃথিবীর কাছে রোল মডেল হয়েছে। কিন্তু এই উন্নয়নের ভেতরটা ফাঁকা। এই উন্নয়ন হচ্ছে দুর্নীতির উন্নয়ন। এই উন্নয়নের ফলে কিছু সংখ্যক মানুষ ধনী থেকে ধনী হয়েছে। মির্জা আলমগীর বলেন, দুর্ভাগ্যজনভাবে বাংলাদেশে এখন ধনীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এটা আন্তর্জাতিক রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের এই দখলদার সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। সুতরাং এই সরকারকে সরানো ছাড়া জনগণের মুক্তি সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া শুধু আমাদের নেত্রী নয়। তিনি বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের নেতা। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক। যিনি তার সারা জীবন এই গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন। খালেদা জিয়ার মতো এতো ত্যাগ এদেশের আর কোন নেতা স্বীকার করেননি। সেই নেত্রী আজকে কারগারে। শুধু কারাগারে নয়, পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে। প্রতিদিন তার শরীর খারাপ হচ্ছে। কি ভয়ঙ্কর দুর্ভাগ্য তার। বর্তমান সরকার তার চিকিৎসার ব্যবস্থা পর্যন্ত করছে না। এই অবস্থায় আমাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে- এই স্বাধীনতা দিবসে শপথ গ্রহণ করতে হবে। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মধ্যদিয়েই আমাদের নেত্রীকে, গণতন্ত্রের নেত্রীকে কারাগার থেকে মুক্ত করব। কারণ তাকে মুক্ত করলেই গণতন্ত্রকে মুক্ত করা হবে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তারা বলে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নয়- ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাহলে ২৬শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস পালন করে? ৭ই মার্চই তো স্বাধীনতা দিবস পালন করতে পারতো। তিনি বলেন, এই সরকার যা করছে তার সবকিছুই অস্বাভাবিক ঘটনা। তারা ভোটের আগের রাতে ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরে রেখে অস্বাভাবিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে।
যা এদেশে আগে কখনো ঘটেনি। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে তাদের নেতাকর্মী ও আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছিল ১/১১ এর সরকার। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর তারা নিজেদের মামলাগুলো তুলে নিয়ে আমাদের নেত্রীসহ নেতাকর্মীদের মামলাগুলো রেখে দিলো। এটা কেমন নিয়ম? আজকে সেই মামলারই একটি অংশে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে। আমাদের অন্য নেতাদের জামিন দেয়া হচ্ছে না। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ২২ পাকিস্তানি ধনীর সমালোচনা করতাম। কিন্তু আজ আওয়ামী লীগে ধনীর সংখ্যা দেখুন। কত ধনী আছে তার কোন হিসাব নেই। বিশ্বে অল্প সময়ে বড় ধনী সবচেয়ে বাংলাদেশে বেশি। স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে আমরা স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় এসেছি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের কোন স্বাধীনতা নেই। কেউ কোন কথা বলতে পারেনা। বাক্ স্বাধীনতা হরণ করেছে বর্তমান সরকার। আজ দেশে এক ব্যক্তির শাসন কায়েম করা হয়েছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন, ১৯৭১ সালের পর থেকে যতোদিন সেনাবাহিনীতে ছিলাম অনেক নির্বাচনে আমি দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু কোনোদিন কেউ আমাদের বলেনি- ওমুক দলকে জেতাতে হবে। আজ সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী ও অন্যান্য যতো বাহিনী আছে সবগুলোর একই অবস্থা। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্য হলো- দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে করাগারের ভেতরে তিলে তিলে হত্যা করা। যে কারণে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। সিনিয়র নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোষামোদির রাজনীতি আপাতত বন্ধ করেন। এখন অনেক দুঃসময়। দলের ভেতর আগে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। নেতাকর্মীদের কথা শোনেন। দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তা না হলে আমাদের কারোরই মুক্তি হবে না।
খালেদা জিয়াকেও মুক্ত করা যাবে না। ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা আজ মানুষের কাছে যেতে পারছি না। কিন্তু দেশকে গণতন্ত্রের ধারায় ফেরাতে হলে, দেশনেত্রীকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে হলে আমাদের মানুষের কাছে যেতে হবে। আমি বলবো- সারা দেশে জনে জনে জনতা গড়ে তুলুন। সবাই উচ্চকণ্ঠে আওয়াজ তুলুন- জেলের তালা ভাঙবো, খালেদা জিয়াকে আনবো। যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, দায়িত্ব পালন করতে না পারলে পদ ছেড়ে দেন। নেতাদের বলবো, এক বছরের মধ্যে কোন কমিটি দেয়ার কথা বলবেন না।
কারণ কমিটি দেয়ার সময় নেতাকর্মীদের ভিড় জমে। এরপর ৫ জন পুলিশ দেখলেই পালিয়ে যায়। আর তারাই যখন বড় বড় কথা বলেন তখন আমার লজ্জা হয়। এদের মধ্য আমিও একজন। সুতরাং আমরা যদি না পারি তাহলে নিজে থেকেই সরে যাওয়া উচিত। তা না হলে কিছুদিন পর কর্মীরা আমাদেরকে ঘিরে ধরে বলবে আপনারা ব্যর্থ। দলের নীতি নির্ধারকদের কাছে প্রশ্ন রেখে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, আমাদের সমস্যাটা কোথায়? কেনো আমরা পারছি না। সরকার পতনের মধ্যে দিয়েই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু বলেন, আমরা আন্দোলনে সফল হতে পারিনি। আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই ব্যর্থতার কারণে যদি অন্তর্দহনে জ্বলি তাহলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারবো না। তাই আমাদেরকে রাজপথে জীবন দেয়ার মতো আন্দোলন দিতে হবে। কেবল মাত্র স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাকে মুক্ত করতে পারবো না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে- দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন। এদিকে সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের বক্তব্য শেষে দর্শকসারি থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ভুয়া, ভুয়া বলে স্লোগান দিয়ে উঠেন। এছাড়া আলোচনা সভা চলাকালে কয়েকবার আন্দোলন কর্মসূচি চেয়ে স্লোগান দেন তৃনমূল নেতাকর্মীর।
স্বাধীনতা মানে হলো এই ভূ-খণ্ডে যেসব মানুষ বাস করে তাদের স্বাধীনতা।
সার্বিক স্বাধীনতা। তাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও মুক্তির স্বাধীনতা। তিনি বলেন, আজকে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে বিপন্ন হয়ে গেছে। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আজকে যারা সরকারে আছে তারা মানুষের অধিকার হরণ করে, জোর করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। তারা বারবার বলতে চায়- এখন বাংলাদেশে এমন উন্নয়ন হয়েছে যা অতীতে কখনো হয়নি। গোটা পৃথিবীর কাছে রোল মডেল হয়েছে। কিন্তু এই উন্নয়নের ভেতরটা ফাঁকা। এই উন্নয়ন হচ্ছে দুর্নীতির উন্নয়ন। এই উন্নয়নের ফলে কিছু সংখ্যক মানুষ ধনী থেকে ধনী হয়েছে। মির্জা আলমগীর বলেন, দুর্ভাগ্যজনভাবে বাংলাদেশে এখন ধনীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এটা আন্তর্জাতিক রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের এই দখলদার সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। সুতরাং এই সরকারকে সরানো ছাড়া জনগণের মুক্তি সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া শুধু আমাদের নেত্রী নয়। তিনি বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের নেতা। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক। যিনি তার সারা জীবন এই গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন। খালেদা জিয়ার মতো এতো ত্যাগ এদেশের আর কোন নেতা স্বীকার করেননি। সেই নেত্রী আজকে কারগারে। শুধু কারাগারে নয়, পরিত্যক্ত নির্জন কারাগারে। প্রতিদিন তার শরীর খারাপ হচ্ছে। কি ভয়ঙ্কর দুর্ভাগ্য তার। বর্তমান সরকার তার চিকিৎসার ব্যবস্থা পর্যন্ত করছে না। এই অবস্থায় আমাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে- এই স্বাধীনতা দিবসে শপথ গ্রহণ করতে হবে। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মধ্যদিয়েই আমাদের নেত্রীকে, গণতন্ত্রের নেত্রীকে কারাগার থেকে মুক্ত করব। কারণ তাকে মুক্ত করলেই গণতন্ত্রকে মুক্ত করা হবে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তারা বলে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নয়- ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাহলে ২৬শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস পালন করে? ৭ই মার্চই তো স্বাধীনতা দিবস পালন করতে পারতো। তিনি বলেন, এই সরকার যা করছে তার সবকিছুই অস্বাভাবিক ঘটনা। তারা ভোটের আগের রাতে ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরে রেখে অস্বাভাবিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে।
যা এদেশে আগে কখনো ঘটেনি। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে তাদের নেতাকর্মী ও আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছিল ১/১১ এর সরকার। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর তারা নিজেদের মামলাগুলো তুলে নিয়ে আমাদের নেত্রীসহ নেতাকর্মীদের মামলাগুলো রেখে দিলো। এটা কেমন নিয়ম? আজকে সেই মামলারই একটি অংশে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে। আমাদের অন্য নেতাদের জামিন দেয়া হচ্ছে না। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ২২ পাকিস্তানি ধনীর সমালোচনা করতাম। কিন্তু আজ আওয়ামী লীগে ধনীর সংখ্যা দেখুন। কত ধনী আছে তার কোন হিসাব নেই। বিশ্বে অল্প সময়ে বড় ধনী সবচেয়ে বাংলাদেশে বেশি। স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে আমরা স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় এসেছি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের কোন স্বাধীনতা নেই। কেউ কোন কথা বলতে পারেনা। বাক্ স্বাধীনতা হরণ করেছে বর্তমান সরকার। আজ দেশে এক ব্যক্তির শাসন কায়েম করা হয়েছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন, ১৯৭১ সালের পর থেকে যতোদিন সেনাবাহিনীতে ছিলাম অনেক নির্বাচনে আমি দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু কোনোদিন কেউ আমাদের বলেনি- ওমুক দলকে জেতাতে হবে। আজ সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী ও অন্যান্য যতো বাহিনী আছে সবগুলোর একই অবস্থা। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্য হলো- দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে করাগারের ভেতরে তিলে তিলে হত্যা করা। যে কারণে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। সিনিয়র নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোষামোদির রাজনীতি আপাতত বন্ধ করেন। এখন অনেক দুঃসময়। দলের ভেতর আগে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। নেতাকর্মীদের কথা শোনেন। দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তা না হলে আমাদের কারোরই মুক্তি হবে না।
খালেদা জিয়াকেও মুক্ত করা যাবে না। ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা আজ মানুষের কাছে যেতে পারছি না। কিন্তু দেশকে গণতন্ত্রের ধারায় ফেরাতে হলে, দেশনেত্রীকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে হলে আমাদের মানুষের কাছে যেতে হবে। আমি বলবো- সারা দেশে জনে জনে জনতা গড়ে তুলুন। সবাই উচ্চকণ্ঠে আওয়াজ তুলুন- জেলের তালা ভাঙবো, খালেদা জিয়াকে আনবো। যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, দায়িত্ব পালন করতে না পারলে পদ ছেড়ে দেন। নেতাদের বলবো, এক বছরের মধ্যে কোন কমিটি দেয়ার কথা বলবেন না।
কারণ কমিটি দেয়ার সময় নেতাকর্মীদের ভিড় জমে। এরপর ৫ জন পুলিশ দেখলেই পালিয়ে যায়। আর তারাই যখন বড় বড় কথা বলেন তখন আমার লজ্জা হয়। এদের মধ্য আমিও একজন। সুতরাং আমরা যদি না পারি তাহলে নিজে থেকেই সরে যাওয়া উচিত। তা না হলে কিছুদিন পর কর্মীরা আমাদেরকে ঘিরে ধরে বলবে আপনারা ব্যর্থ। দলের নীতি নির্ধারকদের কাছে প্রশ্ন রেখে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, আমাদের সমস্যাটা কোথায়? কেনো আমরা পারছি না। সরকার পতনের মধ্যে দিয়েই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু বলেন, আমরা আন্দোলনে সফল হতে পারিনি। আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এই ব্যর্থতার কারণে যদি অন্তর্দহনে জ্বলি তাহলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারবো না। তাই আমাদেরকে রাজপথে জীবন দেয়ার মতো আন্দোলন দিতে হবে। কেবল মাত্র স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাকে মুক্ত করতে পারবো না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে- দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন। এদিকে সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের বক্তব্য শেষে দর্শকসারি থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ভুয়া, ভুয়া বলে স্লোগান দিয়ে উঠেন। এছাড়া আলোচনা সভা চলাকালে কয়েকবার আন্দোলন কর্মসূচি চেয়ে স্লোগান দেন তৃনমূল নেতাকর্মীর।
No comments