উইলের রাজনীতি, জাপার ভবিষ্যৎ কি কাদেরই?
উইলের
রাজনীতি। উপমহাদেশে অভিনব কোনো ঘটনা নয়। বেনজির ভুট্টোর নির্মম
হত্যাকাণ্ডের পর সম্ভবত ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন ঘটনা সামনে আসে। যেখানে
উইলের মাধ্যমে দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ঠিক করে দেয়া হয়। হুসেইন মুহম্মদ
এরশাদের পর কে হবেন জাতীয় পার্টির প্রধান? প্রশ্নটি পুরনো। এ নিয়ে সাবেক এই
স্বৈরশাসক বরাবরই কৌশলের আশ্রয় নেন।
বারবার সিদ্ধান্ত বদল করার জন্য খ্যাতি রয়েছে এরশাদের। এই বয়সে এসেও তিনি চমক দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। যদিও কে না জানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন চাঞ্চল্য তৈরি করা খুবই কঠিন।
বলতে গেলে প্রায় অসম্ভব। তবুও তিনি চেষ্টা করছেন। নতুন বছরের প্রথম দিনই এরশাদের একটি উইল ঘিরে রাজনীতিতে ফের চাপান-উতর তৈরি হয়। যেখানে বিবৃতি দিয়েই ছোট ভাই জিএম কাদেরকে দলের ভবিষ্যৎ প্রধান ঘোষণা করেন তিনি।
২০১৪ সালে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর হঠাৎ করেই জাপার রাজনীতির কর্তৃত্ব চলে যায় রওশন এরশাদের হাতে। মূলত এরশাদকে পাশ কাটিয়ে নির্বাচনে থেকে যাওয়ার পুরস্কার পান তিনি। সংসদে বিরোধী দলের নেতাও নির্বাচিত হন। যদিও এরশাদও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হয়ে সুখে-শান্তিতেই পাঁচ বছর কাটিয়ে দেন। এবারের নির্বাচন ঘিরে এরশাদের কৌশল ঠিক কী ছিল তা এখনো পরিষ্কার নয়।
তবে তার একান্ত অনুগত রুহুল আমিন হাওলাদার দৃশ্যপট থেকে একেবারেই হারিয়ে যান। হাওলাদারকে সরিয়ে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে মহাসচিব বানান এরশাদ। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা ঘিরে দলের ভেতরে নানা অসন্তোষ তৈরি হয়। অভিযোগ ওঠে মনোনয়ন বাণিজ্যের। এ নিয়ে নানা গুজব বাতাসে। সরকারি দলের মহাজোটে থেকে নির্বাচন করে ২২টি আসনে জয়ী হয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়েছে জাপা। স্ত্রী রওশন নয়, এবার এরশাদ নিজেই হয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা। অন্যদিকে, রওশন চলে গেছেন অনেকটাই পর্দার আড়ালে। যদিও জাপায় এরশাদের উত্তরাধিকার নিয়ে অনেক দিন ধরেই ঠাণ্ডা লড়াই চলে আসছে। ২০১৬ সালে দলে প্রথম কো-চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি করেন এরশাদ। জিএম কাদেরকে ওই পদে বসান। ঘোষণা দেন, তার অবর্তমানে দলের হাল ধরবেন জিএম কাদের। এ নিয়ে তখন রওশনপন্থিদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন এরশাদ। রওশনকে জিএম কাদেরের উপর স্থান দেন। বানান সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান।
দৃশ্যত এবার জাপার বেশিরভাগ সংসদ সদস্যই সরকারে যোগ দেয়ার পক্ষে ছিলেন। দলের সংসদীয় কমিটির সভায়ও এমনই সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এরশাদ বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেন, জাপা বিরোধী দল হবে। শেষ পর্যন্ত হয়ও তাই। এর আগে দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্ধারণ করে দেয়া বিবৃতিতে এরশাদ বলেন, আমি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখছি যে, আমার অবর্তমানে বর্তমান কো-চেয়ারম্যান জনাব গোলাম মোহাম্মদ কাদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আশা করি, পার্টির জাতীয় কাউন্সিল আমার মতো তাকেও চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে পার্টির সার্বিক দায়িত্ব তাকে অর্পণ করবে। পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে আমি যতদিন দায়িত্ব পালন করবো, ততদিন জিএম কাদের আমাকে সহযোগিতা করবেন।
এরশাদের এই নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য দলের ভেতরে প্রকাশ্যে কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেননি। পরে জিএম কাদেরকে বিরোধী দলীয় উপনেতা বানিয়েও এরশাদ এ ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন যে, কাদেরই জাপার দ্বিতীয় প্রধান নেতা। জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব প্রশ্নে দলের একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে দলটির অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো বলছে, তৃণমূল নেতাদের মধ্যে এরশাদের প্রতি শতভাগ আনুগত্য রয়েছে। তারা সব সময়ই বিনাবাক্যে দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। এ অংশটি জিএম কাদেরকে দলের ভবিষ্যৎ প্রধান হিসেবে মেনে নিতে রাজি রয়েছেন। তবে সংসদ সদস্যদের একটি বড় অংশ এখনো রওশন এরশাদের প্রতি অনুগত।
উইলের রাজনীতি কিছুটা বিরল হলেও উত্তরাধিকারের রাজনীতি উপমহাদেশে একেবারেই সাধারণ ঘটনা। বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলই চলছে উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে। এরশাদের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তার শরীর আসলেই বেশ খারাপ। নানা রকম শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন তিনি। এ পরিস্থিতিতে দলের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি হিসেবে ভাই জিএম কাদেরকেই বেছে নিয়েছেন এরশাদ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জিএম কাদের কি দলের ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করতে পারবেন?
বারবার সিদ্ধান্ত বদল করার জন্য খ্যাতি রয়েছে এরশাদের। এই বয়সে এসেও তিনি চমক দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। যদিও কে না জানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন চাঞ্চল্য তৈরি করা খুবই কঠিন।
বলতে গেলে প্রায় অসম্ভব। তবুও তিনি চেষ্টা করছেন। নতুন বছরের প্রথম দিনই এরশাদের একটি উইল ঘিরে রাজনীতিতে ফের চাপান-উতর তৈরি হয়। যেখানে বিবৃতি দিয়েই ছোট ভাই জিএম কাদেরকে দলের ভবিষ্যৎ প্রধান ঘোষণা করেন তিনি।
২০১৪ সালে ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর হঠাৎ করেই জাপার রাজনীতির কর্তৃত্ব চলে যায় রওশন এরশাদের হাতে। মূলত এরশাদকে পাশ কাটিয়ে নির্বাচনে থেকে যাওয়ার পুরস্কার পান তিনি। সংসদে বিরোধী দলের নেতাও নির্বাচিত হন। যদিও এরশাদও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হয়ে সুখে-শান্তিতেই পাঁচ বছর কাটিয়ে দেন। এবারের নির্বাচন ঘিরে এরশাদের কৌশল ঠিক কী ছিল তা এখনো পরিষ্কার নয়।
তবে তার একান্ত অনুগত রুহুল আমিন হাওলাদার দৃশ্যপট থেকে একেবারেই হারিয়ে যান। হাওলাদারকে সরিয়ে মশিউর রহমান রাঙ্গাকে মহাসচিব বানান এরশাদ। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা ঘিরে দলের ভেতরে নানা অসন্তোষ তৈরি হয়। অভিযোগ ওঠে মনোনয়ন বাণিজ্যের। এ নিয়ে নানা গুজব বাতাসে। সরকারি দলের মহাজোটে থেকে নির্বাচন করে ২২টি আসনে জয়ী হয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়েছে জাপা। স্ত্রী রওশন নয়, এবার এরশাদ নিজেই হয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা। অন্যদিকে, রওশন চলে গেছেন অনেকটাই পর্দার আড়ালে। যদিও জাপায় এরশাদের উত্তরাধিকার নিয়ে অনেক দিন ধরেই ঠাণ্ডা লড়াই চলে আসছে। ২০১৬ সালে দলে প্রথম কো-চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি করেন এরশাদ। জিএম কাদেরকে ওই পদে বসান। ঘোষণা দেন, তার অবর্তমানে দলের হাল ধরবেন জিএম কাদের। এ নিয়ে তখন রওশনপন্থিদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন এরশাদ। রওশনকে জিএম কাদেরের উপর স্থান দেন। বানান সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান।
দৃশ্যত এবার জাপার বেশিরভাগ সংসদ সদস্যই সরকারে যোগ দেয়ার পক্ষে ছিলেন। দলের সংসদীয় কমিটির সভায়ও এমনই সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এরশাদ বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেন, জাপা বিরোধী দল হবে। শেষ পর্যন্ত হয়ও তাই। এর আগে দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্ধারণ করে দেয়া বিবৃতিতে এরশাদ বলেন, আমি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখছি যে, আমার অবর্তমানে বর্তমান কো-চেয়ারম্যান জনাব গোলাম মোহাম্মদ কাদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আশা করি, পার্টির জাতীয় কাউন্সিল আমার মতো তাকেও চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে পার্টির সার্বিক দায়িত্ব তাকে অর্পণ করবে। পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে আমি যতদিন দায়িত্ব পালন করবো, ততদিন জিএম কাদের আমাকে সহযোগিতা করবেন।
এরশাদের এই নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য দলের ভেতরে প্রকাশ্যে কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেননি। পরে জিএম কাদেরকে বিরোধী দলীয় উপনেতা বানিয়েও এরশাদ এ ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন যে, কাদেরই জাপার দ্বিতীয় প্রধান নেতা। জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব প্রশ্নে দলের একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে দলটির অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো বলছে, তৃণমূল নেতাদের মধ্যে এরশাদের প্রতি শতভাগ আনুগত্য রয়েছে। তারা সব সময়ই বিনাবাক্যে দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। এ অংশটি জিএম কাদেরকে দলের ভবিষ্যৎ প্রধান হিসেবে মেনে নিতে রাজি রয়েছেন। তবে সংসদ সদস্যদের একটি বড় অংশ এখনো রওশন এরশাদের প্রতি অনুগত।
উইলের রাজনীতি কিছুটা বিরল হলেও উত্তরাধিকারের রাজনীতি উপমহাদেশে একেবারেই সাধারণ ঘটনা। বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলই চলছে উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে। এরশাদের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তার শরীর আসলেই বেশ খারাপ। নানা রকম শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন তিনি। এ পরিস্থিতিতে দলের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি হিসেবে ভাই জিএম কাদেরকেই বেছে নিয়েছেন এরশাদ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জিএম কাদের কি দলের ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করতে পারবেন?
No comments