রাজনীতিবিদ-মন্ত্রী হয়, সৈয়দ আশরাফ সহজে হয় না
রাজনীতিবিদ
ও ব্যক্তি হিসাবে আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের
‘অসাধারণত্বের’ কথা স্মরণ করেছেন তার সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা। গতকাল
শুক্রবার এক স্মরণসভায় গত সরকারের মন্ত্রিসভায় আশরাফের সহকর্মী
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, রাজনীতিবিদ হয়, সংসদ সদস্য হয়, মন্ত্রী হয়। কিন্তু
একজন সৈয়দ আশরাফ সহজে হয় না। ক্ষমতায় থেকেও ক্ষমতার মোহ থেকে তিনি নিজেকে
সবসময় মুক্ত রেখেছেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গান-কবিতায় গত সরকারের
জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফের ওই স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সম্মিলিত
সাংস্কৃতিক জোট।
মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফ দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন তিনি। ৬৭ বছর বয়সী আশরাফ ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গত ৩রা জানুয়ারি থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে মারা যান। তার সততা ও নির্লোভ মানসিকতার প্রশংসা করছেন প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতারাও।
আশরাফের ব্যক্তিত্ব ও প্রজ্ঞার কথা তুলে ধরে সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর স্মরণসভায় বলেন, তার অন্তিমযাত্রায় লাখো মানুষের ঢল প্রমাণ করে, এ দেশের মানুষ সৈয়দ আশরাফের মতো লোককেই নেতা হিসেবে চায়।
লাখো মানুষের অশ্রুসিক্ত চোখ এ-কথাই বলে, এ দেশের মানুষ সৈয়দ আশরাফের আদর্শকে লালন করতে চায়। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও ওই পদ তাকে ‘কখনো আচ্ছন্ন করেনি’ বলে মন্তব্য করেন নূর।
নিজেকে কিছুটা আড়ালে রেখে সুচারুভাবে দলকে পরিচালনা করেছেন তিনি। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে তার জনপ্রিয়তা ছিল প্রবাদ প্রতিম। একজন রাজনীতিবিদের জীবনে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিছু হতে পারে না। সৈয়দ আশরাফকে বাংলাদেশের রাজনীতির ‘উজ্জ্বল নক্ষত্র’ হিসাবে বর্ণনা করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মাটির কাছাকাছি থেকেও নিজেকে আকাশের উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারার মতো এক বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই মানুষটিকে শ্রদ্ধা জানাই অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে।
আন্দোলনে-সংগ্রাম ও দলীয় কর্মকাণ্ডে সৈয়দ আশরাফকে জানার সুযোগ হওয়ার কথা তুলে ধরে নূর বলেন, আমার বলতে দ্বিধা নাই, একইসঙ্গে ঈর্ষণীয় ও অনুকরণীয় এ রকম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সমকালীন সময়ে আমি খুব একটা দেখি না। বিভিন্ন বিষয়ে অগাধ জ্ঞান থাকলেও ‘মৃদুভাষী এই মানুষটিকে কখনো পাণ্ডিত্য জাহির করতে দেখা যায়নি’।
সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি, আমরা ফেরেশতা নই, শয়তানও নই। আমরা দোষে-গুণে মানুষ। কিন্তু যারা দোষ না করে গুণে এগিয়ে থাকেন, তারা মহা মানুষ, ভালো গুণের মানুষ। সৈয়দ আশরাফ তেমনি একজন ছিলেন। তিনি গুণী মানুষ ছিলেন, সাহসী মানুষ ছিলেন, দক্ষ মানুষ ছিলেন।
ষাটের দশকের শেষে ছাত্রলীগের একজন নেতা হিসাবে দেখার এবং মুক্তিযুদ্ধে সৈয়দ আশরাফকে সঙ্গী হিসাবে পাওয়ার কথা জানিয়ে জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, জীবনের সর্বক্ষেত্রে ‘নীতি, নিষ্ঠা, আদর্শ ও দৃঢ়তার’ পরিচয় দিয়ে গেছেন আশরাফ।
এক-এগারোর সময় যখন অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বিন্দুমাত্র বিভ্রান্ত হননি।
ইনু বলেন, তিনি নীতিবান ছিলেন, নিষ্ঠাবান ছিলেন, আদর্শবান ছিলেন, কুশলী ছিলেন, সজ্জন ছিলেন। ক্ষমতা ও টাকার পেছনে ছোটেন নি কখনো। এসব বিষয় তার কাছ থেকে শেখার আছে আমাদের।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সৈয়দ আশরাফ ছিলেন একজন নির্লোভ মানুষ। তিনি বাংলাদেশকে ভালোবাসতেন। যে স্বপ্ন নিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিনি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করেছিলেন। তিনি নেই। তাকে সামনে রেখে আমাদের আগামীর পথ চলতে হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শোকসংগীত ‘তুমি, নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ পরিবেশন করেন গণসঙ্গীত শিল্পী সমন্বয় পরিষদের শিল্পীরা।
এরপর সৈয়দ আশরাফের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় নেতৃবৃন্দ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
অনুষ্ঠানে জীবনানন্দ দাশের ‘আবার আসিবো ফিরে’ কবিতা পাঠ করেন সৈয়দ হাসান ইমাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পরিচয়’ পাঠ করেন ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়।
সৈয়দ শামসুল হকের ‘আমার পরিচয়’ পাঠ করেন আহকাম উল্লাহ্, রেজিনা ওয়ালী লীনা পড়েন শামসুর রাহমানের ‘পান্থজন’। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ জানান, সৈয়দ আশরাফ অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শাহ আবদুল করিমের ‘বন্দে মায়া লাগাইছে’ গানটি শুনতেন। অনুষ্ঠানে তার স্মরণে গানটি গেয়ে শোনান শিল্পী লাভলী দেব।
শিল্পী মহিউজ্জামান চৌধুরী গেয়ে শোনান ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে’। গণসঙ্গীত শিল্পী সমন্বয় পরিষদের শিল্পীদের কণ্ঠে ‘আমরা সবাই বাঙালি’ গাওয়ার মধ্য দিয়ে স্মরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। অনুষ্ঠানে জোটের পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি পাঠ করেন জোটের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ।
মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফ দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন তিনি। ৬৭ বছর বয়সী আশরাফ ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গত ৩রা জানুয়ারি থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে মারা যান। তার সততা ও নির্লোভ মানসিকতার প্রশংসা করছেন প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতারাও।
আশরাফের ব্যক্তিত্ব ও প্রজ্ঞার কথা তুলে ধরে সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর স্মরণসভায় বলেন, তার অন্তিমযাত্রায় লাখো মানুষের ঢল প্রমাণ করে, এ দেশের মানুষ সৈয়দ আশরাফের মতো লোককেই নেতা হিসেবে চায়।
লাখো মানুষের অশ্রুসিক্ত চোখ এ-কথাই বলে, এ দেশের মানুষ সৈয়দ আশরাফের আদর্শকে লালন করতে চায়। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও ওই পদ তাকে ‘কখনো আচ্ছন্ন করেনি’ বলে মন্তব্য করেন নূর।
নিজেকে কিছুটা আড়ালে রেখে সুচারুভাবে দলকে পরিচালনা করেছেন তিনি। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে তার জনপ্রিয়তা ছিল প্রবাদ প্রতিম। একজন রাজনীতিবিদের জীবনে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কিছু হতে পারে না। সৈয়দ আশরাফকে বাংলাদেশের রাজনীতির ‘উজ্জ্বল নক্ষত্র’ হিসাবে বর্ণনা করে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মাটির কাছাকাছি থেকেও নিজেকে আকাশের উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারার মতো এক বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই মানুষটিকে শ্রদ্ধা জানাই অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে।
আন্দোলনে-সংগ্রাম ও দলীয় কর্মকাণ্ডে সৈয়দ আশরাফকে জানার সুযোগ হওয়ার কথা তুলে ধরে নূর বলেন, আমার বলতে দ্বিধা নাই, একইসঙ্গে ঈর্ষণীয় ও অনুকরণীয় এ রকম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সমকালীন সময়ে আমি খুব একটা দেখি না। বিভিন্ন বিষয়ে অগাধ জ্ঞান থাকলেও ‘মৃদুভাষী এই মানুষটিকে কখনো পাণ্ডিত্য জাহির করতে দেখা যায়নি’।
সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি, আমরা ফেরেশতা নই, শয়তানও নই। আমরা দোষে-গুণে মানুষ। কিন্তু যারা দোষ না করে গুণে এগিয়ে থাকেন, তারা মহা মানুষ, ভালো গুণের মানুষ। সৈয়দ আশরাফ তেমনি একজন ছিলেন। তিনি গুণী মানুষ ছিলেন, সাহসী মানুষ ছিলেন, দক্ষ মানুষ ছিলেন।
ষাটের দশকের শেষে ছাত্রলীগের একজন নেতা হিসাবে দেখার এবং মুক্তিযুদ্ধে সৈয়দ আশরাফকে সঙ্গী হিসাবে পাওয়ার কথা জানিয়ে জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, জীবনের সর্বক্ষেত্রে ‘নীতি, নিষ্ঠা, আদর্শ ও দৃঢ়তার’ পরিচয় দিয়ে গেছেন আশরাফ।
এক-এগারোর সময় যখন অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বিন্দুমাত্র বিভ্রান্ত হননি।
ইনু বলেন, তিনি নীতিবান ছিলেন, নিষ্ঠাবান ছিলেন, আদর্শবান ছিলেন, কুশলী ছিলেন, সজ্জন ছিলেন। ক্ষমতা ও টাকার পেছনে ছোটেন নি কখনো। এসব বিষয় তার কাছ থেকে শেখার আছে আমাদের।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সৈয়দ আশরাফ ছিলেন একজন নির্লোভ মানুষ। তিনি বাংলাদেশকে ভালোবাসতেন। যে স্বপ্ন নিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিনি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করেছিলেন। তিনি নেই। তাকে সামনে রেখে আমাদের আগামীর পথ চলতে হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শোকসংগীত ‘তুমি, নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ পরিবেশন করেন গণসঙ্গীত শিল্পী সমন্বয় পরিষদের শিল্পীরা।
এরপর সৈয়দ আশরাফের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতীয় নেতৃবৃন্দ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
অনুষ্ঠানে জীবনানন্দ দাশের ‘আবার আসিবো ফিরে’ কবিতা পাঠ করেন সৈয়দ হাসান ইমাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পরিচয়’ পাঠ করেন ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়।
সৈয়দ শামসুল হকের ‘আমার পরিচয়’ পাঠ করেন আহকাম উল্লাহ্, রেজিনা ওয়ালী লীনা পড়েন শামসুর রাহমানের ‘পান্থজন’। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ জানান, সৈয়দ আশরাফ অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শাহ আবদুল করিমের ‘বন্দে মায়া লাগাইছে’ গানটি শুনতেন। অনুষ্ঠানে তার স্মরণে গানটি গেয়ে শোনান শিল্পী লাভলী দেব।
শিল্পী মহিউজ্জামান চৌধুরী গেয়ে শোনান ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে’। গণসঙ্গীত শিল্পী সমন্বয় পরিষদের শিল্পীদের কণ্ঠে ‘আমরা সবাই বাঙালি’ গাওয়ার মধ্য দিয়ে স্মরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। অনুষ্ঠানে জোটের পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি পাঠ করেন জোটের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ।
No comments