ইসলামপন্থিদের ওপর কেন ভর করছে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো by ড. আলী রিয়াজ
আসন্ন
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোট পাওয়ার আশায় ইসলামপন্থিদের কদর
বেড়েছে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। কিন্তু ধর্ম
কিভাবে দেশটিতে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে
উঠেছে?
২০০৫ সালের মার্চ। ওই সময়ে প্রচ- কট্টর ইসলামপন্থি মুফতি ফজলুল হক আমিনী দাবি করেছিলেন, মাদরাসাগুলোর সমর্থন ছাড়া বাংলাদেশে জাতীয়পর্যায়ে কোনো দলই ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সারা দেশে ছড়িয়ে আছে এমন অনেক মাদরাসা। তাতে আছেন কমপক্ষে ১৪ লাখ শিক্ষার্থী। তারা দেওবন্দের অনুসারী। দেওবন্দ হলো ইসলামের একটি রক্ষণশীল অংশ।
আগামী ৩০শে ডিসেম্বর বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
এ নির্বাচনকে সামনে রেখে মহাজোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বেপরোয়াভাবে ইসলামপন্থিদের কাছে টানছে। তাহলে এর অর্থ কি, ফজলুল হক আমিনীর পূর্বাভাষই সত্য?
ইসলামপন্থিদের দলে টানা
১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে সেনা শাসকদের সময়ে বাংলাদেশে ইসলামপন্থি রাজনীতির উত্থান ঘটে। ওই সময়ে সেনা শাসকরা তাদের বৈধতার সংকটে ভুগছিলেন। আর তাই ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন ধর্মকে। সেনা শাসকগোষ্ঠী রাজনীতিতে ধর্মকে টেনে আনার জন্য দায়ী হলেও দেশে ইসলামপন্থি গ্রুপগুলোকে রাজনৈতিক আইনগত বৈধতা দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো।
নির্বাচনে সফলতা পাওয়ার জন্য ১৯৮০’র দশক থেকে বর্তমানের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপি ইসলামপন্থিদের দ্বারস্থ হচ্ছে। যুক্তি দেখানো হচ্ছে যে, এসব গ্রুপ ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক। কিন্তু প্রাপ্ত পরিসংখ্যান এই যুক্তিকে সমর্থন করে না।
১৯৭৯ সালে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল মাত্র দুটি ইসলামপন্থি দল। কিন্তু ১৯৯১ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ইসলামপন্থি দলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালে মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত হয় আরো একটি দল। কিন্তু ২০০১ সালে এ সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১১। ২০০৮ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ১০। ১৯৯১ সালে তারা শতকরা ১৪ ভাগের সামান্য বেশি ভোট পায়। কিন্তু ২০০৮ সালে তাদের সেই ভোট কমে দাঁড়ায় শতকরা প্রায় ৬ ভাগে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে পুরনো ইসলামপন্থি দলগুলোর একটি জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করার দায়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযুক্ত হওয়ার পর জামায়াতে ইসলামীর বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে ফাঁসি দিয়েছে ওই আদালত। বছরের পর বছর ইসলামী ঐক্যজোট খ- বিখ- হয়েছে। অন্যদিকে, নিজেদেরকে রক্ষণশীল রাজনৈতিক এজেন্ডা সম্বলিত সামাজিক আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করে রহস্যময় (অবসকিউরেনটিজম) হেফাজতে ইসলাম। এবার রাজনৈতিক দৃশ্যপটে উঠে এসেছে তারা। বর্তমানে কমপক্ষে ৭০টি সক্রিয় ইসলামপন্থি দল আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ১০টি।
মিথ্যা ধারণা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি ২০১৪ সাল থেকে এক কঠিন অবস্থার মুখে পড়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে বেশ সময় জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। যাহোক, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছে বিএনপি। অনেকেই আশা করেছিলেন যে, দীর্ঘদিনের ইসলামপন্থি মিত্র জামায়াতে ইসলামীকে ত্যাগ করবে তারা। নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে, আসন্ন নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দিতে পারে নি জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন ২২ জন রাজনীতিককে নির্বাচনে লড়ার জন্য মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি তার প্ল্যাটফরম থেকে।
অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। ৭০টি ইসলামপন্থি দলের মধ্য থেকে ৬০টিরও বেশি এই ক্ষমতাসীন দল ও তাদের মূল মিত্র জাতীয় পার্টির ঘনিষ্ঠ। জাতীয় পার্টিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক স্বৈরশাসক থেকে রাজনীতিকে পরিণত হওয়া এইচ এম এরশাদ। বিস্ময়কর হলো যে, বিএনপিকে অধিকমাত্রায় ইসলামপন্থিদের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে দেখা হয়। সেই বিএনপির সঙ্গে রয়েছে মাত্র ৫টি ইসলামপন্থি দল।
‘এ ম্যারিজ অব কনভেনিয়েন্স?’
আওয়ামী লীগকে পশ্চিমের অনেকে বিবেচনা করে থাকেন ধর্মনিরপেক্ষ দল হিসেবে। তারা কেন ইসলামপন্থিদের দ্বারস্থ হলো?
বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, আওয়ামী লীগের আদর্শের এই পটপরিবর্তনের অনেক কারণের মধ্যে একটি হলো, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থা সার্বিকভাবে ইসলামীকৃত হয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এ দেশটিতে বেড়ে ওঠা মধ্যম শ্রেণী ইসলামপন্থি রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তারা ধর্মের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করার ক্ষেত্রে কোনো কার্পণ্য করেন না। ২০১৪ সালে বিএনপির বর্জনের মধ্য দিয়ে বিতর্কিত ও একপেশে একটি নির্বাচন হয় বাংলাদেশে। এরপর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল তাদের বিশ্বাসযোগ্যতার অনেকটাই হারিয়ে ফেলে। তাই আওয়ামী লীগ ধর্মীয় গ্রুপগুলোর সমর্থন ব্যবহার করছে। এর মধ্য দিয়ে তারা তাদের রাজনৈতিক তাৎপর্য প্রমাণ করতে চাইছে।
ক্ষমতাসীন দলের মিত্রে পরিণত হয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এ দলটির মতো ধর্মীয় দলগুলোর সঙ্গে জোট হিতকর হতে পারে। কারণ, ব্যাপক সংখ্যক মানুষকে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখতে পারে।
(আলী রিয়াজ যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর। তার এই লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে জার্মান সরকার পরিচালিত অনলাইন ডয়েচে ভেলে’তে)
২০০৫ সালের মার্চ। ওই সময়ে প্রচ- কট্টর ইসলামপন্থি মুফতি ফজলুল হক আমিনী দাবি করেছিলেন, মাদরাসাগুলোর সমর্থন ছাড়া বাংলাদেশে জাতীয়পর্যায়ে কোনো দলই ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সারা দেশে ছড়িয়ে আছে এমন অনেক মাদরাসা। তাতে আছেন কমপক্ষে ১৪ লাখ শিক্ষার্থী। তারা দেওবন্দের অনুসারী। দেওবন্দ হলো ইসলামের একটি রক্ষণশীল অংশ।
আগামী ৩০শে ডিসেম্বর বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
এ নির্বাচনকে সামনে রেখে মহাজোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বেপরোয়াভাবে ইসলামপন্থিদের কাছে টানছে। তাহলে এর অর্থ কি, ফজলুল হক আমিনীর পূর্বাভাষই সত্য?
ইসলামপন্থিদের দলে টানা
১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে সেনা শাসকদের সময়ে বাংলাদেশে ইসলামপন্থি রাজনীতির উত্থান ঘটে। ওই সময়ে সেনা শাসকরা তাদের বৈধতার সংকটে ভুগছিলেন। আর তাই ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন ধর্মকে। সেনা শাসকগোষ্ঠী রাজনীতিতে ধর্মকে টেনে আনার জন্য দায়ী হলেও দেশে ইসলামপন্থি গ্রুপগুলোকে রাজনৈতিক আইনগত বৈধতা দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো।
নির্বাচনে সফলতা পাওয়ার জন্য ১৯৮০’র দশক থেকে বর্তমানের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপি ইসলামপন্থিদের দ্বারস্থ হচ্ছে। যুক্তি দেখানো হচ্ছে যে, এসব গ্রুপ ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক। কিন্তু প্রাপ্ত পরিসংখ্যান এই যুক্তিকে সমর্থন করে না।
১৯৭৯ সালে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল মাত্র দুটি ইসলামপন্থি দল। কিন্তু ১৯৯১ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ইসলামপন্থি দলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালে মূলধারার রাজনীতিতে যুক্ত হয় আরো একটি দল। কিন্তু ২০০১ সালে এ সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১১। ২০০৮ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ১০। ১৯৯১ সালে তারা শতকরা ১৪ ভাগের সামান্য বেশি ভোট পায়। কিন্তু ২০০৮ সালে তাদের সেই ভোট কমে দাঁড়ায় শতকরা প্রায় ৬ ভাগে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে পুরনো ইসলামপন্থি দলগুলোর একটি জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করার দায়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযুক্ত হওয়ার পর জামায়াতে ইসলামীর বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে ফাঁসি দিয়েছে ওই আদালত। বছরের পর বছর ইসলামী ঐক্যজোট খ- বিখ- হয়েছে। অন্যদিকে, নিজেদেরকে রক্ষণশীল রাজনৈতিক এজেন্ডা সম্বলিত সামাজিক আন্দোলন হিসেবে আখ্যায়িত করে রহস্যময় (অবসকিউরেনটিজম) হেফাজতে ইসলাম। এবার রাজনৈতিক দৃশ্যপটে উঠে এসেছে তারা। বর্তমানে কমপক্ষে ৭০টি সক্রিয় ইসলামপন্থি দল আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ১০টি।
মিথ্যা ধারণা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি ২০১৪ সাল থেকে এক কঠিন অবস্থার মুখে পড়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে বেশ সময় জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। যাহোক, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছে বিএনপি। অনেকেই আশা করেছিলেন যে, দীর্ঘদিনের ইসলামপন্থি মিত্র জামায়াতে ইসলামীকে ত্যাগ করবে তারা। নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে, আসন্ন নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দিতে পারে নি জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক আছে এমন ২২ জন রাজনীতিককে নির্বাচনে লড়ার জন্য মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি তার প্ল্যাটফরম থেকে।
অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। ৭০টি ইসলামপন্থি দলের মধ্য থেকে ৬০টিরও বেশি এই ক্ষমতাসীন দল ও তাদের মূল মিত্র জাতীয় পার্টির ঘনিষ্ঠ। জাতীয় পার্টিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক স্বৈরশাসক থেকে রাজনীতিকে পরিণত হওয়া এইচ এম এরশাদ। বিস্ময়কর হলো যে, বিএনপিকে অধিকমাত্রায় ইসলামপন্থিদের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে দেখা হয়। সেই বিএনপির সঙ্গে রয়েছে মাত্র ৫টি ইসলামপন্থি দল।
‘এ ম্যারিজ অব কনভেনিয়েন্স?’
আওয়ামী লীগকে পশ্চিমের অনেকে বিবেচনা করে থাকেন ধর্মনিরপেক্ষ দল হিসেবে। তারা কেন ইসলামপন্থিদের দ্বারস্থ হলো?
বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, আওয়ামী লীগের আদর্শের এই পটপরিবর্তনের অনেক কারণের মধ্যে একটি হলো, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থা সার্বিকভাবে ইসলামীকৃত হয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এ দেশটিতে বেড়ে ওঠা মধ্যম শ্রেণী ইসলামপন্থি রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তারা ধর্মের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করার ক্ষেত্রে কোনো কার্পণ্য করেন না। ২০১৪ সালে বিএনপির বর্জনের মধ্য দিয়ে বিতর্কিত ও একপেশে একটি নির্বাচন হয় বাংলাদেশে। এরপর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল তাদের বিশ্বাসযোগ্যতার অনেকটাই হারিয়ে ফেলে। তাই আওয়ামী লীগ ধর্মীয় গ্রুপগুলোর সমর্থন ব্যবহার করছে। এর মধ্য দিয়ে তারা তাদের রাজনৈতিক তাৎপর্য প্রমাণ করতে চাইছে।
ক্ষমতাসীন দলের মিত্রে পরিণত হয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এ দলটির মতো ধর্মীয় দলগুলোর সঙ্গে জোট হিতকর হতে পারে। কারণ, ব্যাপক সংখ্যক মানুষকে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখতে পারে।
(আলী রিয়াজ যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর। তার এই লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে জার্মান সরকার পরিচালিত অনলাইন ডয়েচে ভেলে’তে)
No comments