নির্বাচন নিয়ে কেন এই সংশয় by কাফি কামাল
আগামী
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় সব মহলে। যদিও ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে
নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা
হচ্ছে- কেউ নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না। বর্তমান সরকারের অধীনেই সংবিধান
অনুযায়ী যথাসময়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। আভাস দেয়া হচ্ছে-
নির্বাচনকালীন ছোট মন্ত্রিপরিষদ গঠন ও সংযোজন-বিয়োজনের। অন্যদিকে বিএনপি
বলছে, খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে শেখ হাসিনার অধীনে এ দেশে আর কোনো নির্বাচন
হবে না, হতে দেয়া হবে না। সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বড় প্লাটফর্ম
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তরফে উত্থাপন করা হয়েছে ৭ দফা দাবি। কিন্তু এর কোনোটিই
মানতে রাজি নয় সরকার।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে প্রার্থী হতে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার বাধ্যবাধকতা ইস্যুতে আদালতে একটি রিট আবেদন হয়েছিল ২০১৪ সালে, যা আজও নিষ্পত্তি হয়নি। সেই রিটের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না করতে নির্দেশনা চেয়ে এরই মধ্যে নতুন আরেকটি রিট দায়ের হয়েছে উচ্চ আদালতে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন আদৌ হবে কিনা- এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে সন্দেহ ও সংশয়। সংশয়ের ঊর্ধ্বে উঠতে পারছেন না রাজনৈতিক মহলও। ফলে এখন চা স্টলের আড্ডা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক কর্মীদের মুখে মুখে ফিরছে একটি প্রশ্ন- আদৌ নির্বাচন হবে তো?
এ সংশয়ের পালে নতুন হাওয়া দিচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘আমি দেশবাসীর উদ্দেশে কিছু বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। নির্বাচন নিয়ে এখন অনেক সংশয় রয়েছে। নির্বাচন কখন হবে জানি না। একটি দল ৭ দফা দিয়েছে (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট)। সরকার তা মানতে রাজি নয়। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী মানা সম্ভব নয়। এ অবস্থার মধ্যে আগামী দিনগুলো স্বচ্ছদিন বলে মনে হয় না আমার।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচন করেছি। এবারেও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এর নিশ্চয়তা চাই। নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কার, স্বাধীন বিচার বিভাগ চাই- এগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা জোটগতভাবে ৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। তবে দেশের স্বার্থে নতুন মেরূকরণ হতে পারে।’ সাম্প্রতিক সময়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কয়েকটি অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এলডিপির সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম। ১৪ই অক্টোবর তেজগাঁওয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘দেশে আদৌ কোনো নির্বাচন হবে কিনা এ নিয়ে আমি এখনো নিশ্চিত নই। নির্বাচন হলেও জনগণ ভোট দিতে পারবে কি-না সে প্রশ্ন রয়েছে। কেউ জানে না আগামী দিন কী হতে যাচ্ছে।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন কমিশন তো এখনও ঠিক করেই উঠতে পারেনি যে কী প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে এবং তাদের প্রতি অনাস্থা কীভাবে দূর করবে। বরং সিইসি প্রথমে বলেছিলেন, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন হবে। তবে পরে তিনি তার অবস্থান পরিবর্তন করেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনারই তার এক বক্তব্যে এ সংশয় তৈরি করেন। তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হবে না এমন নিশ্চয়তা দেয়ার সুযোগ নেই।’
সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক মহলের এই সংশয়ের পেছনে রয়েছে নানা কারণ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে যায়নি বিএনপি-জামায়াতসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল। তারা বর্জন করেছিল একতরফা নির্বাচন। দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারেও আগের অবস্থানের নড়চড় হয়নি বিরোধী জোটের। তার উপর সংবিধান প্রণেতা ডা. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এরই মধ্যে এক তরফা নির্বাচন ঠেকাতে তৈরি হয়েছে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যেকোনো মূল্যে নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা আদায় ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। ১৫ই অক্টোবর বিএনপিসহ নানা দল ও জোটের সমন্বয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ফ্রন্টের তরফে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সরকারের প্রতি ৭ দফা দাবি উত্থাপন ও নির্বাচনে বিজয়ী হলে পূরণের জন্য দেশবাসীর প্রতি ১১টি লক্ষ্যও ঘোষণা করা হয়। যা আগে কখনো দেখা যায়নি। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গঠিত হয়েছিল দুটি বড় জোট। কিন্তু এবার ক্ষমতাভোগীদের বাইরের দলগুলো দুটি জোটে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। বিএনপিসহ বেশিরভাগ দলের সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যেসব দাবি উত্থাপন করেছে তার সঙ্গে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সামঞ্জস্য রয়েছে স্বতন্ত্র বামজোটের। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে একাত্মতা জানাচ্ছে পেশাজীবী সংগঠন, সুশীল সমাজ, বিশিষ্ট নাগরিকসহ নানা মহল। যা সরকারের জন্য হয়ে উঠছে মাথাব্যথার কারণ। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ড. কামালের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে সুশীল সমাজ জড়িত রয়েছে সরাসরি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের গুরুত্বপূর্ণ ৩টি কারণ চিহ্নিত করেছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিএনপিসহ মধ্যপন্থি, মধ্যবামপন্থি ও ইসলামী মূল্যবোধ সম্পন্ন দলগুলোর সুনির্দিষ্ট দাবিতে ঐক্যপ্রতিষ্ঠা; দেশে মানবাধিকার ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের পর্যবেক্ষণ; এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বই ‘এ ব্রোকেন ড্রিম’-এর মাধ্যমে সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রকাশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, তিনটি ঘটনায় সরকারের জন্য অস্বস্তির, বিব্রতকর এবং চাপে পড়ার। জনমতের বিচারে সরকার ধীরে ধীরে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিরোধীদের দাবি মেনে সরকার নির্বাচন দেবে কিনা তা নিয়ে সংশয় যৌক্তিক। পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য করা, সরকারের নানা মহল থেকে চাপ দিয়ে দেশ ত্যাগ করানো এবং অসুস্থ সাজানোর পেছনে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে খোলামেলা লিখেছেন এস কে সিনহা তার বইয়ে। ফলে বিচার বিভাগের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপের প্রশ্ন ও বিতর্ক সামনে এসেছে ফের। তাছাড়া, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সড়ক পরিবহন আইনসহ রেকর্ডসংখ্যক বিল পাস হয়েছে। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ও সরকারের শেষ সময়ে এসে এমন কর্মকাণ্ড ক্ষমতাসীনদের জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের আরেকটি কারণ হচ্ছে, শেষ দুই মাসে সারা দেশে লাখ লাখ বিরোধী নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হাজার হাজার গায়েবি মামলা দায়েরের বিষয়টি। যেসব মামলায় নাম উল্লেখ্য আসামির চেয়ে বেশি রাখা হয়েছে অজ্ঞাতনামা আসামি। বিএনপি নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনের আগে ধরপাকড়ে সুবিধা করতেই আগাম এসব গায়েবি মামলা করেছে সরকার। বিএনপিসহ বেশিরভাগ বিরোধী রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের দাবিনামায় যেসব ইস্যু সংযুক্ত করেছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রয়েছে বামজোটের দাবির। যেমন জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে সিদ্ধান্তটি বাতিলের দাবিতে সোচ্চার রয়েছে বিএনপি। ইভিএমের মাধ্যমে কারচুপি সম্ভব জানিয়ে এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন। বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামানও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষণ নেই সরকারের পদক্ষেপ ও আচরণে। এতদিন বিএনপিকে কর্মসূচি পালনে বাধা দেয়া হতো এখন বামজোটকে বাধা দেয়া হচ্ছে। অনুমতি দেয়া হচ্ছে ডজন ডজন শর্তের বেড়াজালে। সবশেষ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচি পালনে অনুমতি না দেয়ার মধ্য দিয়ে বাড়ছে সে সংশয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার সব হিসাব-নিকাশ মিলিয়ে যখন বুঝতে পারবে জিতবো তখন নির্বাচন দেবে। যখন হেরে যাওয়ার সন্দেহ থাকবে তখন নির্বাচন দেবে না। আগামী নির্বাচনে জয়লাভ সম্পর্কে সরকার এখন নিশ্চিত হতে পারছে না। আন্তর্জাতিক মহলে যেসব কথা হচ্ছে- সেগুলোও সরকারের জন্য বিব্রতকর। এছাড়া যেসব আইন করছে, যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে তা নির্বাচনের পক্ষে ইতিবাচক নয়। ফলে এই সংশয়ের যৌক্তিকতা রয়েছে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন দেবে না। তারা নির্বাচন না করে অন্য কোনো প্রক্রিয়ার দিকে এগোবে। যার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তাদের কথায়। তারা নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে নানা ধরনের কথা বলছে। এমনকি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচিতেও বাধা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি- বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আওয়ামী লীগের অরাজনৈতিক আচরণের কারণে এ সংশয় তৈরি হয়েছে। দেশের মানুষ যা দাবি করছে, সরকার বলছে তার কিছুই দেবে না। তারা দুইবছর ধরে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে আর আমাদের বিরুদ্ধে দায়ের করছে গায়েবি মামলা। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির লক্ষণ নেই। আওয়ামী লীগের এমন আচরণ অব্যাহত থাকলে নির্বাচন নিয়ে সংশয় ও আশঙ্কা তো উড়িয়ে দেয়া যায় না। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজনৈতিক নেতাকর্মীর বাইরে দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে একটি আশঙ্কা আছে। আস্থাহীনতা আছে। ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবে কি-না, কেন্দ্রে যেতে পারলেও ভোট দিতে পারবে কি-না। এ সংশয় ও আশঙ্কা সাধারণ ভোটারদের মুখে মুখে। এ সংশয়ের কারণ একটি দুইটি নয়, অনেকগুলো। ফলে জনগণের সে স্পন্দনের প্রতিফলন ঘটছে রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্টজনদের মুখে।
অবশ্য রাজনৈতিক মহলসহ সুশীল সমাজের কাছে এ সংশয় নতুন নয়। প্রায় ৮ মাস আগে ২৭শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার এক আলোচনা সভায় প্রথম আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন ড. কামাল হোসেন, প্রফেসর ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আসম রব ও কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছিলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হলে বর্তমান সরকারকে সরে দাঁড়াতে হবে। কারণ দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। আমি কিন্তু ভাবতে পারছি না যে, ভোট হবে।’ ১৪ই এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় প্রথম আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিতের পর চলতি বছরের ৫ই মে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। রাজধানীর বনানীতে দলের চেয়ারম্যানের অফিসে স্বেচ্ছাসেবক পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় এই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। ৫ই সেপ্টেম্বর ‘রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনে কেমন জনপ্রতিনিধি পেলাম’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। দুইদিন পর ৭ই সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেছেন, ‘আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে সংশয় এবং শঙ্কা দুটোই রয়েছে।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে প্রার্থী হতে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার বাধ্যবাধকতা ইস্যুতে আদালতে একটি রিট আবেদন হয়েছিল ২০১৪ সালে, যা আজও নিষ্পত্তি হয়নি। সেই রিটের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা না করতে নির্দেশনা চেয়ে এরই মধ্যে নতুন আরেকটি রিট দায়ের হয়েছে উচ্চ আদালতে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন আদৌ হবে কিনা- এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে সন্দেহ ও সংশয়। সংশয়ের ঊর্ধ্বে উঠতে পারছেন না রাজনৈতিক মহলও। ফলে এখন চা স্টলের আড্ডা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক কর্মীদের মুখে মুখে ফিরছে একটি প্রশ্ন- আদৌ নির্বাচন হবে তো?
এ সংশয়ের পালে নতুন হাওয়া দিচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘আমি দেশবাসীর উদ্দেশে কিছু বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। নির্বাচন নিয়ে এখন অনেক সংশয় রয়েছে। নির্বাচন কখন হবে জানি না। একটি দল ৭ দফা দিয়েছে (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট)। সরকার তা মানতে রাজি নয়। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী মানা সম্ভব নয়। এ অবস্থার মধ্যে আগামী দিনগুলো স্বচ্ছদিন বলে মনে হয় না আমার।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচন করেছি। এবারেও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এর নিশ্চয়তা চাই। নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কার, স্বাধীন বিচার বিভাগ চাই- এগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা জোটগতভাবে ৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। তবে দেশের স্বার্থে নতুন মেরূকরণ হতে পারে।’ সাম্প্রতিক সময়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কয়েকটি অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এলডিপির সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম। ১৪ই অক্টোবর তেজগাঁওয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘দেশে আদৌ কোনো নির্বাচন হবে কিনা এ নিয়ে আমি এখনো নিশ্চিত নই। নির্বাচন হলেও জনগণ ভোট দিতে পারবে কি-না সে প্রশ্ন রয়েছে। কেউ জানে না আগামী দিন কী হতে যাচ্ছে।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন কমিশন তো এখনও ঠিক করেই উঠতে পারেনি যে কী প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে এবং তাদের প্রতি অনাস্থা কীভাবে দূর করবে। বরং সিইসি প্রথমে বলেছিলেন, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচন হবে। তবে পরে তিনি তার অবস্থান পরিবর্তন করেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনারই তার এক বক্তব্যে এ সংশয় তৈরি করেন। তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হবে না এমন নিশ্চয়তা দেয়ার সুযোগ নেই।’
সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক মহলের এই সংশয়ের পেছনে রয়েছে নানা কারণ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে যায়নি বিএনপি-জামায়াতসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল। তারা বর্জন করেছিল একতরফা নির্বাচন। দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারেও আগের অবস্থানের নড়চড় হয়নি বিরোধী জোটের। তার উপর সংবিধান প্রণেতা ডা. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এরই মধ্যে এক তরফা নির্বাচন ঠেকাতে তৈরি হয়েছে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যেকোনো মূল্যে নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা আদায় ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। ১৫ই অক্টোবর বিএনপিসহ নানা দল ও জোটের সমন্বয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ফ্রন্টের তরফে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সরকারের প্রতি ৭ দফা দাবি উত্থাপন ও নির্বাচনে বিজয়ী হলে পূরণের জন্য দেশবাসীর প্রতি ১১টি লক্ষ্যও ঘোষণা করা হয়। যা আগে কখনো দেখা যায়নি। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গঠিত হয়েছিল দুটি বড় জোট। কিন্তু এবার ক্ষমতাভোগীদের বাইরের দলগুলো দুটি জোটে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। বিএনপিসহ বেশিরভাগ দলের সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যেসব দাবি উত্থাপন করেছে তার সঙ্গে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সামঞ্জস্য রয়েছে স্বতন্ত্র বামজোটের। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে একাত্মতা জানাচ্ছে পেশাজীবী সংগঠন, সুশীল সমাজ, বিশিষ্ট নাগরিকসহ নানা মহল। যা সরকারের জন্য হয়ে উঠছে মাথাব্যথার কারণ। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ড. কামালের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে সুশীল সমাজ জড়িত রয়েছে সরাসরি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের গুরুত্বপূর্ণ ৩টি কারণ চিহ্নিত করেছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিএনপিসহ মধ্যপন্থি, মধ্যবামপন্থি ও ইসলামী মূল্যবোধ সম্পন্ন দলগুলোর সুনির্দিষ্ট দাবিতে ঐক্যপ্রতিষ্ঠা; দেশে মানবাধিকার ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের পর্যবেক্ষণ; এবং সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বই ‘এ ব্রোকেন ড্রিম’-এর মাধ্যমে সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রকাশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, তিনটি ঘটনায় সরকারের জন্য অস্বস্তির, বিব্রতকর এবং চাপে পড়ার। জনমতের বিচারে সরকার ধীরে ধীরে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিরোধীদের দাবি মেনে সরকার নির্বাচন দেবে কিনা তা নিয়ে সংশয় যৌক্তিক। পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য করা, সরকারের নানা মহল থেকে চাপ দিয়ে দেশ ত্যাগ করানো এবং অসুস্থ সাজানোর পেছনে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে খোলামেলা লিখেছেন এস কে সিনহা তার বইয়ে। ফলে বিচার বিভাগের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপের প্রশ্ন ও বিতর্ক সামনে এসেছে ফের। তাছাড়া, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সড়ক পরিবহন আইনসহ রেকর্ডসংখ্যক বিল পাস হয়েছে। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ও সরকারের শেষ সময়ে এসে এমন কর্মকাণ্ড ক্ষমতাসীনদের জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের আরেকটি কারণ হচ্ছে, শেষ দুই মাসে সারা দেশে লাখ লাখ বিরোধী নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হাজার হাজার গায়েবি মামলা দায়েরের বিষয়টি। যেসব মামলায় নাম উল্লেখ্য আসামির চেয়ে বেশি রাখা হয়েছে অজ্ঞাতনামা আসামি। বিএনপি নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনের আগে ধরপাকড়ে সুবিধা করতেই আগাম এসব গায়েবি মামলা করেছে সরকার। বিএনপিসহ বেশিরভাগ বিরোধী রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের দাবিনামায় যেসব ইস্যু সংযুক্ত করেছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রয়েছে বামজোটের দাবির। যেমন জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে সিদ্ধান্তটি বাতিলের দাবিতে সোচ্চার রয়েছে বিএনপি। ইভিএমের মাধ্যমে কারচুপি সম্ভব জানিয়ে এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন। বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামানও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষণ নেই সরকারের পদক্ষেপ ও আচরণে। এতদিন বিএনপিকে কর্মসূচি পালনে বাধা দেয়া হতো এখন বামজোটকে বাধা দেয়া হচ্ছে। অনুমতি দেয়া হচ্ছে ডজন ডজন শর্তের বেড়াজালে। সবশেষ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচি পালনে অনুমতি না দেয়ার মধ্য দিয়ে বাড়ছে সে সংশয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার সব হিসাব-নিকাশ মিলিয়ে যখন বুঝতে পারবে জিতবো তখন নির্বাচন দেবে। যখন হেরে যাওয়ার সন্দেহ থাকবে তখন নির্বাচন দেবে না। আগামী নির্বাচনে জয়লাভ সম্পর্কে সরকার এখন নিশ্চিত হতে পারছে না। আন্তর্জাতিক মহলে যেসব কথা হচ্ছে- সেগুলোও সরকারের জন্য বিব্রতকর। এছাড়া যেসব আইন করছে, যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে তা নির্বাচনের পক্ষে ইতিবাচক নয়। ফলে এই সংশয়ের যৌক্তিকতা রয়েছে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন দেবে না। তারা নির্বাচন না করে অন্য কোনো প্রক্রিয়ার দিকে এগোবে। যার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তাদের কথায়। তারা নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে নানা ধরনের কথা বলছে। এমনকি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচিতেও বাধা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি- বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আওয়ামী লীগের অরাজনৈতিক আচরণের কারণে এ সংশয় তৈরি হয়েছে। দেশের মানুষ যা দাবি করছে, সরকার বলছে তার কিছুই দেবে না। তারা দুইবছর ধরে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে আর আমাদের বিরুদ্ধে দায়ের করছে গায়েবি মামলা। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির লক্ষণ নেই। আওয়ামী লীগের এমন আচরণ অব্যাহত থাকলে নির্বাচন নিয়ে সংশয় ও আশঙ্কা তো উড়িয়ে দেয়া যায় না। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজনৈতিক নেতাকর্মীর বাইরে দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে একটি আশঙ্কা আছে। আস্থাহীনতা আছে। ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবে কি-না, কেন্দ্রে যেতে পারলেও ভোট দিতে পারবে কি-না। এ সংশয় ও আশঙ্কা সাধারণ ভোটারদের মুখে মুখে। এ সংশয়ের কারণ একটি দুইটি নয়, অনেকগুলো। ফলে জনগণের সে স্পন্দনের প্রতিফলন ঘটছে রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্টজনদের মুখে।
অবশ্য রাজনৈতিক মহলসহ সুশীল সমাজের কাছে এ সংশয় নতুন নয়। প্রায় ৮ মাস আগে ২৭শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার এক আলোচনা সভায় প্রথম আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন ড. কামাল হোসেন, প্রফেসর ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আসম রব ও কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছিলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হলে বর্তমান সরকারকে সরে দাঁড়াতে হবে। কারণ দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। আমি কিন্তু ভাবতে পারছি না যে, ভোট হবে।’ ১৪ই এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় প্রথম আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিতের পর চলতি বছরের ৫ই মে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। রাজধানীর বনানীতে দলের চেয়ারম্যানের অফিসে স্বেচ্ছাসেবক পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় এই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। ৫ই সেপ্টেম্বর ‘রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনে কেমন জনপ্রতিনিধি পেলাম’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। দুইদিন পর ৭ই সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেছেন, ‘আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে সংশয় এবং শঙ্কা দুটোই রয়েছে।
No comments