শতাধিক খুঁটি গিলে খেয়েছেন তিনি by মাহবুব খান বাবুল
আলোচনায়
সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী। ইতিমধ্যে গিলে খেয়েছেন শতাধিক
বৈদ্যুতিক খুঁটি। এক জায়গার মালামাল দিয়ে কাজ করছেন অন্য জায়গায়। কাজ করার
আগেই বিল নিয়ে গেছেন ঠিকাদার। কোনো দরপত্র ও ওয়ার্ক অর্ডার ছাড়াই দেদারছে
চলছে খুঁটি বসানোর কাজ। ভেস্তে যাচ্ছে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প (এপিপি)।
ব্যাংকে জমা ছাড়াই মাসোহারায় দিচ্ছেন কানেকশন। চলছে অবৈধ বিদ্যুতায়ন।
শুধুমাত্র এক ব্রিক মিলের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য দেয়া হয়েছে ২৪টি খুঁটি ও ৪
কিলোমিটার ক্যাবল। প্রি-পেইড মিটার লাগানোর নামে টাকার বিনিময়ে লক্ষ লক্ষ
বকেয়া ইউনিট গায়েব করা হচ্ছে। এমন সব অভিযোগ ওঠেছে সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী
প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন জুয়েলের বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক প্রকৌশলী বিদ্যুতের সকল ধরনের খুঁটি ও ট্রান্সফরমার অফিসে মজুত রাখতেন। যেকোনো দুর্যোগ বা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারতেন দৃঢ়তার সঙ্গে। পদোন্নতিজনিত কারণে তিনি চলে গেছেন। যাওয়ার আগে তিনি ২০০টি ভিন্ন ধরনের খুঁটির বরাদ্দ অনুমোদন করিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ছিল ৫০ কিলোমিটার ক্যাবল। গোটা উপজেলায় সিস্টেম লস রেখে গিয়েছিলেন শতকরা ৪ ভাগ। শাহবাজপুর ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামের লো-ভোল্টেজ সমস্যা সমাধানের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। সেখানে কাজ শুরুর প্রস্তুতিও ছিল। ২৬শে মে তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন জুয়েল। তার যোগদানের পর থেকেই পাল্টে যেতে শুরু হয়েছে সরাইল বিদ্যুতের ধরন। থমকে দাঁড়িয়েছে লো-ভোল্টেজ সমাধানের কাজ। নড়েচড়ে বসেছেন অফিসের কিছু অসৎ ও দুর্নীতিবাজ কর্মচারী। জনৈক বড় কর্তার চাচাত ভাই পরিচয়ে কালিকচ্ছ এলাকার এক ব্যক্তি দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন অফিস। ইচ্ছেমতো চুক্তি করে নিজ এলাকায় দিচ্ছেন খুঁটি। ৮ই জুন ব্যক্তিগত কাজে সরকারি গাড়ি নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী চলে যান চট্টগ্রামে। ৪ দিন পর ফিরে আসেন। ২৭ ও ২৮শে মে ৩৩ কেভি লাইনের খুঁটি পড়ে গিয়ে সারারাত সরাইল ছিল অন্ধকারে। তিনি ছিলেন অনুপস্থিত। দ্বিতীয়বার গত ১৭ই জুলাই সরকারি গাড়ি নিয়ে ৩-৪ দিনের সফরে যান চট্টগ্রামে। এপিপি’র তালিকাভুক্ত ধীতপুর গ্রামের কাজ না করেই ঠিকাদার উত্তোলন করে ফেলেছেন বিল। আর সেখানকার বরাদ্দকৃত খুঁটিগুলো এপিপি’র তালিকার বাইরে ১৫-২০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করে দিয়েছেন অন্যত্র। ক্যাবল তো আছেই। লো-ভোল্টেজ সমাধানের কাজের জন্য পূর্বের বরাদ্দের ৮৮টি এলটি (৯ মিটার) ও এইচটি ৪৪টি (১২ মিটার) খুঁটির সবগুলোই তিনি পছন্দের জায়গায় বিক্রি করে দিয়েছেন। এরমধ্যে নিয়ম না থাকলেও নোয়াগাঁও ইউনিয়নের একটি ব্রিক মিলেই তিনি ২৪টি খুঁটি ও ১টি ১০০ কেভিএ ট্রান্সফরমার বিক্রি করে বিদ্যুতের লাইন দিয়েছেন। এর মধ্যে ১৮টি খুঁটিই নতুন। আর ক্যাবল দিয়েছেন ৪ কিলোমিটার। এপিপি’র বাইরে মটখলায় ১২টি, কালিকচ্ছ এলাকায় ৬টি, বাড়িউড়ায় ৬টি, ছান্দের বাড়ি ও দেওড়ায় ৮টি খুঁটি ক্যাবলসহ বিক্রি করেছেন। ৫ হাজার টাকা বেতনে একজন পিএ রেখেছেন তিনি। কোরবানির ঈদের আগের দিন সরকারি গাড়ি নিয়ে চলে যান চট্টগ্রামে নিজের বাসায়। যাওয়ার আগে সরাইল সদরের সৈয়দটুলায়, শাহবাজপুর সহ ৬৫ হাজার টাকায় ৩টি ট্রান্সফরমার দিয়ে গেছেন। তারই ইশারায় দরপত্র আহ্বান ছাড়াই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেদারছে এপিপি’র বহির্ভূত কাজ করছেন নির্বাহী প্রকৌশলী।
ওদিকে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দিতে গিয়ে গ্রাহকের কাছে পিডিবি’র পাওনা লক্ষাধিক ইউনিটে নিজেদের পকেট ভারী করে। আর বিদ্যুতের কাছে গ্রাহকের পাওনা ইউনিটগুলো কারেকশনের আশ্বাস দিয়ে কিছু টু-পাইস কামিয়ে নেন। ফলে জুন মাসের শেষের দিকে সরাইল পিডিবি’র সিস্টেম লস দাঁড়ায় ৪৪ ভাগে। সিস্টেম লস কমানোর জন্য ব্রিকমিলগুলোর দিকে নজর দেন। কৌশলে পরে বিল কমিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে বেশ কয়েকটি ব্রিকমিলের বিল বাড়িয়ে দেন। মিলগুলো হচ্ছে- শিরিন ব্রিকস, লিজা ব্রিকস, আমানত ব্রিকস, আজম ব্রিকস, রূপালী ব্রিকস, নিউ সমতা ব্রিকস, দেশ ব্রিকস, কল্যাণ ব্রিকস ও দয়াল বাবা লাকড়ি মিল।
ডিজিটাল মিটার বাদ দিয়ে লাগানো হচ্ছে প্রি-পেইড মিটার। নির্ধারিত পরিমাণ টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। নগদ ৫ শ’ টাকা করে গ্রহণ করছেন এক্সেন। দিন শেষে এ টাকা অফিসে বসেই হচ্ছে ভাগ-বাটোয়ারা। শাহবাজপুর আতকা বাজার ‘রমিছ উদ্দিন রাইস মিল’। মালিক বিল্লাল মিয়া। কাস্টমার নং-৩৫৪১১৪৭৯। মিটার নং-০১০১৩০০১৫৩৮৮। ২৫শে জুলাই নগদ ৫ শ’ টাকায় লোড বৃদ্ধি করেন। বাড়ি গিয়ে দেখেন কাজ হয়নি। পরের দিন ২৬শে জুন এক্সেনের কাছে আসেন বিল্লাল। আবার ৫ শ’ টাকা নিয়ে ১৮ কিলোওয়াট থেকে ২৫ কিলোওয়াট করে দেন। এভাবে নিয়মিত চলছে কিলোওয়াট বৃদ্ধি বাণিজ্য।
গ্রাহকদের বকেয়া রিডিং টাকার বিনিময়ে গিলে খাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে স্বাক্ষর জাল করতেও দ্বিধা করছেন না। পূর্বের বিল থেকে রিডিং সমন্বয় করে সরকারের রাজস্ব আত্মসাৎ করছেন। কিছু ক্ষেত্রে রিডিং বকেয়া রেখেই রফাদফার মাধ্যমে বন্ধ করে দিচ্ছেন পোস্ট পেইড হিসাব। কালিকচ্ছের গলানিয়া গ্রামের মো. সুমন মিয়া। বই নং-৭০৭। হিসাব নং-এ-১৬৩২১। মিটার নং-৩৬২২০২। জুন ২০১৮-এ শূন্য ইউনিট দেখিয়ে বিল ধরিয়ে দিয়েছে ৮ হাজার ২২৮ টাকা। বিলটিতে পূর্বে ও বর্তমানের রিডিং লেখা ১০৯৬০। আর কাস্টমারের ব্যবহৃত ইউনিট-০। জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ২৯শে জুলাই। পিডিবি’র লোকজন স্বাক্ষর জাল করে ৮ হাজার টাকার বিলটি কেটে হাতে লিখে দেন ৪ হাজার টাকা। ২৬শে জুলাই সরাইল কৃষি ব্যাংকে বিলটি জমা হয়। আর ২৯শে জুলাই তারিখে ডিসি আরসি চার্জ ৬ শ’ টাকা জমা দিয়ে ওই সংযোগটিকে বিচ্ছিন্ন দেখানো হয়। এক বিল থেকেই গায়েব হয়ে গেছে সরকারের ৪ হাজার ২২৮ টাকা। প্রি-পেইড মিটার লাগানোর সুযোগে শত শত গ্রাহকের সঙ্গে জমে ওঠেছে বকেয়া বিল গায়েব বাণিজ্য।
বছর দুই আগে শেষ হয়েছে সরাইল পিডিবি অফিসের দ্বিতীয় তলার কাজ। নিচ তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তরিত হয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষ। পাশেই রয়েছে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও প্রধান অফিস সহকারীর কক্ষ। সেইসঙ্গে অফিসের জন্যই তৈরি একটি কক্ষে দেড় বছর ধরে বসবাস করছে ঠিকাদারের ১৫-২০ জন শ্রমিক। ওই কক্ষটি এখন যেন আবাসিক হোটেল। একাধিক ঠিকাদার বলেন, পূর্বের এক্সেনের বরাদ্দকৃত খুঁটি ও ক্যাবল দিয়েই বাণিজ্য চলছে। এখন আর কাজ করতে ইচ্ছে করছে না। দরপত্র ছাড়াই ২/১টি কাজ করেছি। বিল কবে পাবো জানি না। সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) মো. মাঈন উদ্দিন জুয়েল সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার সময় সিস্টেম লস ছিল ২৪ ভাগ। বর্তমানে ১৭ ভাগ। নিজেকে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের নেতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, লোড বৃদ্ধির সময় চুক্তি পরিবর্তন বাবদ ১৫০ টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হয়। এরপর কেউ যদি ইচ্ছে করে কিছু দেয়। সেটা তো নিতে হয়। আর খুঁটি বসাতে লেবারদের কিছু টাকা সবাই দিয়ে থাকে। ব্রিকমিলে ২৪ খুঁটি ও ১টি ট্রান্সফরমার প্রধান প্রকৌশলীর বরাদ্দ। এপিপি’র তালিকাভুক্ত ধীতপুর গ্রামের কাজ হচ্ছে নতুবা হবে। ব্যক্তিগত নয় অফিসিয়াল কাজে সরকারি গাড়ি নিয়ে যেকোনো জায়গায় যাওয়া যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক প্রকৌশলী বিদ্যুতের সকল ধরনের খুঁটি ও ট্রান্সফরমার অফিসে মজুত রাখতেন। যেকোনো দুর্যোগ বা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারতেন দৃঢ়তার সঙ্গে। পদোন্নতিজনিত কারণে তিনি চলে গেছেন। যাওয়ার আগে তিনি ২০০টি ভিন্ন ধরনের খুঁটির বরাদ্দ অনুমোদন করিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ছিল ৫০ কিলোমিটার ক্যাবল। গোটা উপজেলায় সিস্টেম লস রেখে গিয়েছিলেন শতকরা ৪ ভাগ। শাহবাজপুর ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামের লো-ভোল্টেজ সমস্যা সমাধানের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। সেখানে কাজ শুরুর প্রস্তুতিও ছিল। ২৬শে মে তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন জুয়েল। তার যোগদানের পর থেকেই পাল্টে যেতে শুরু হয়েছে সরাইল বিদ্যুতের ধরন। থমকে দাঁড়িয়েছে লো-ভোল্টেজ সমাধানের কাজ। নড়েচড়ে বসেছেন অফিসের কিছু অসৎ ও দুর্নীতিবাজ কর্মচারী। জনৈক বড় কর্তার চাচাত ভাই পরিচয়ে কালিকচ্ছ এলাকার এক ব্যক্তি দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন অফিস। ইচ্ছেমতো চুক্তি করে নিজ এলাকায় দিচ্ছেন খুঁটি। ৮ই জুন ব্যক্তিগত কাজে সরকারি গাড়ি নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী চলে যান চট্টগ্রামে। ৪ দিন পর ফিরে আসেন। ২৭ ও ২৮শে মে ৩৩ কেভি লাইনের খুঁটি পড়ে গিয়ে সারারাত সরাইল ছিল অন্ধকারে। তিনি ছিলেন অনুপস্থিত। দ্বিতীয়বার গত ১৭ই জুলাই সরকারি গাড়ি নিয়ে ৩-৪ দিনের সফরে যান চট্টগ্রামে। এপিপি’র তালিকাভুক্ত ধীতপুর গ্রামের কাজ না করেই ঠিকাদার উত্তোলন করে ফেলেছেন বিল। আর সেখানকার বরাদ্দকৃত খুঁটিগুলো এপিপি’র তালিকার বাইরে ১৫-২০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করে দিয়েছেন অন্যত্র। ক্যাবল তো আছেই। লো-ভোল্টেজ সমাধানের কাজের জন্য পূর্বের বরাদ্দের ৮৮টি এলটি (৯ মিটার) ও এইচটি ৪৪টি (১২ মিটার) খুঁটির সবগুলোই তিনি পছন্দের জায়গায় বিক্রি করে দিয়েছেন। এরমধ্যে নিয়ম না থাকলেও নোয়াগাঁও ইউনিয়নের একটি ব্রিক মিলেই তিনি ২৪টি খুঁটি ও ১টি ১০০ কেভিএ ট্রান্সফরমার বিক্রি করে বিদ্যুতের লাইন দিয়েছেন। এর মধ্যে ১৮টি খুঁটিই নতুন। আর ক্যাবল দিয়েছেন ৪ কিলোমিটার। এপিপি’র বাইরে মটখলায় ১২টি, কালিকচ্ছ এলাকায় ৬টি, বাড়িউড়ায় ৬টি, ছান্দের বাড়ি ও দেওড়ায় ৮টি খুঁটি ক্যাবলসহ বিক্রি করেছেন। ৫ হাজার টাকা বেতনে একজন পিএ রেখেছেন তিনি। কোরবানির ঈদের আগের দিন সরকারি গাড়ি নিয়ে চলে যান চট্টগ্রামে নিজের বাসায়। যাওয়ার আগে সরাইল সদরের সৈয়দটুলায়, শাহবাজপুর সহ ৬৫ হাজার টাকায় ৩টি ট্রান্সফরমার দিয়ে গেছেন। তারই ইশারায় দরপত্র আহ্বান ছাড়াই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেদারছে এপিপি’র বহির্ভূত কাজ করছেন নির্বাহী প্রকৌশলী।
ওদিকে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দিতে গিয়ে গ্রাহকের কাছে পিডিবি’র পাওনা লক্ষাধিক ইউনিটে নিজেদের পকেট ভারী করে। আর বিদ্যুতের কাছে গ্রাহকের পাওনা ইউনিটগুলো কারেকশনের আশ্বাস দিয়ে কিছু টু-পাইস কামিয়ে নেন। ফলে জুন মাসের শেষের দিকে সরাইল পিডিবি’র সিস্টেম লস দাঁড়ায় ৪৪ ভাগে। সিস্টেম লস কমানোর জন্য ব্রিকমিলগুলোর দিকে নজর দেন। কৌশলে পরে বিল কমিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে বেশ কয়েকটি ব্রিকমিলের বিল বাড়িয়ে দেন। মিলগুলো হচ্ছে- শিরিন ব্রিকস, লিজা ব্রিকস, আমানত ব্রিকস, আজম ব্রিকস, রূপালী ব্রিকস, নিউ সমতা ব্রিকস, দেশ ব্রিকস, কল্যাণ ব্রিকস ও দয়াল বাবা লাকড়ি মিল।
ডিজিটাল মিটার বাদ দিয়ে লাগানো হচ্ছে প্রি-পেইড মিটার। নির্ধারিত পরিমাণ টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। নগদ ৫ শ’ টাকা করে গ্রহণ করছেন এক্সেন। দিন শেষে এ টাকা অফিসে বসেই হচ্ছে ভাগ-বাটোয়ারা। শাহবাজপুর আতকা বাজার ‘রমিছ উদ্দিন রাইস মিল’। মালিক বিল্লাল মিয়া। কাস্টমার নং-৩৫৪১১৪৭৯। মিটার নং-০১০১৩০০১৫৩৮৮। ২৫শে জুলাই নগদ ৫ শ’ টাকায় লোড বৃদ্ধি করেন। বাড়ি গিয়ে দেখেন কাজ হয়নি। পরের দিন ২৬শে জুন এক্সেনের কাছে আসেন বিল্লাল। আবার ৫ শ’ টাকা নিয়ে ১৮ কিলোওয়াট থেকে ২৫ কিলোওয়াট করে দেন। এভাবে নিয়মিত চলছে কিলোওয়াট বৃদ্ধি বাণিজ্য।
গ্রাহকদের বকেয়া রিডিং টাকার বিনিময়ে গিলে খাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে স্বাক্ষর জাল করতেও দ্বিধা করছেন না। পূর্বের বিল থেকে রিডিং সমন্বয় করে সরকারের রাজস্ব আত্মসাৎ করছেন। কিছু ক্ষেত্রে রিডিং বকেয়া রেখেই রফাদফার মাধ্যমে বন্ধ করে দিচ্ছেন পোস্ট পেইড হিসাব। কালিকচ্ছের গলানিয়া গ্রামের মো. সুমন মিয়া। বই নং-৭০৭। হিসাব নং-এ-১৬৩২১। মিটার নং-৩৬২২০২। জুন ২০১৮-এ শূন্য ইউনিট দেখিয়ে বিল ধরিয়ে দিয়েছে ৮ হাজার ২২৮ টাকা। বিলটিতে পূর্বে ও বর্তমানের রিডিং লেখা ১০৯৬০। আর কাস্টমারের ব্যবহৃত ইউনিট-০। জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ২৯শে জুলাই। পিডিবি’র লোকজন স্বাক্ষর জাল করে ৮ হাজার টাকার বিলটি কেটে হাতে লিখে দেন ৪ হাজার টাকা। ২৬শে জুলাই সরাইল কৃষি ব্যাংকে বিলটি জমা হয়। আর ২৯শে জুলাই তারিখে ডিসি আরসি চার্জ ৬ শ’ টাকা জমা দিয়ে ওই সংযোগটিকে বিচ্ছিন্ন দেখানো হয়। এক বিল থেকেই গায়েব হয়ে গেছে সরকারের ৪ হাজার ২২৮ টাকা। প্রি-পেইড মিটার লাগানোর সুযোগে শত শত গ্রাহকের সঙ্গে জমে ওঠেছে বকেয়া বিল গায়েব বাণিজ্য।
বছর দুই আগে শেষ হয়েছে সরাইল পিডিবি অফিসের দ্বিতীয় তলার কাজ। নিচ তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তরিত হয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষ। পাশেই রয়েছে উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও প্রধান অফিস সহকারীর কক্ষ। সেইসঙ্গে অফিসের জন্যই তৈরি একটি কক্ষে দেড় বছর ধরে বসবাস করছে ঠিকাদারের ১৫-২০ জন শ্রমিক। ওই কক্ষটি এখন যেন আবাসিক হোটেল। একাধিক ঠিকাদার বলেন, পূর্বের এক্সেনের বরাদ্দকৃত খুঁটি ও ক্যাবল দিয়েই বাণিজ্য চলছে। এখন আর কাজ করতে ইচ্ছে করছে না। দরপত্র ছাড়াই ২/১টি কাজ করেছি। বিল কবে পাবো জানি না। সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) মো. মাঈন উদ্দিন জুয়েল সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার সময় সিস্টেম লস ছিল ২৪ ভাগ। বর্তমানে ১৭ ভাগ। নিজেকে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের নেতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, লোড বৃদ্ধির সময় চুক্তি পরিবর্তন বাবদ ১৫০ টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হয়। এরপর কেউ যদি ইচ্ছে করে কিছু দেয়। সেটা তো নিতে হয়। আর খুঁটি বসাতে লেবারদের কিছু টাকা সবাই দিয়ে থাকে। ব্রিকমিলে ২৪ খুঁটি ও ১টি ট্রান্সফরমার প্রধান প্রকৌশলীর বরাদ্দ। এপিপি’র তালিকাভুক্ত ধীতপুর গ্রামের কাজ হচ্ছে নতুবা হবে। ব্যক্তিগত নয় অফিসিয়াল কাজে সরকারি গাড়ি নিয়ে যেকোনো জায়গায় যাওয়া যায়।
No comments