চৌধুরী পরিবার রাজনীতি এবং... by সাজেদুল হক
এমনিতে
বাংলাদেশ অনেকটা বদলে গেছে। গসিপ নেই, বাহাস নেই। রাজপথ শান্ত। এসি রুমে
বক্তৃতাবাজি অবশ্য থেমে নেই। মাঝখানে সোশ্যাল মিডিয়া খুব সরব ছিল। এখন
সেখানেও নীরবতা। পিন পড়ার আওয়াজও শোনা যায়। আরেকটি নির্বাচন একেবারে দরজায়।
আঙুল গুনে দিন বলে দেয়া যায়। বন্ধ ঘরে অবশ্য প্রশ্ন ওঠছে। কেমন হবে সে
নির্বাচন? অংশগ্রহণমূলক না একতরফা। সমঝোতার না প্রতিদ্বন্দ্বিতার। তীব্র
লড়াই না একপেশে উৎসব। প্রশ্ন অনেক। উত্তর আছে সামান্যই।
আগামী নির্বাচনে কী করবে বিএনপি? বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। দলটির নির্বাচনী কৌশল নিয়ে একই দিনে প্রকাশিত দুটি বিপরীতধর্মী নিউজ ভাইরাল হয়েছে। লোকে প্রশ্ন তুলছে কোন্টি সত্য। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দৌড়ঝাঁপ করছেন। নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন, লন্ডন হয়ে ঢাকায় ফিরে এসেছেন তিনি। যাওয়ার কিছুদিন আগে বন্দি দলীয় চেয়ারপারসনের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। নাজিমউদ্দিন রোডে বিপরীতধর্মী রাজনীতিবিদদের আরেকটি বৈঠকের কথাও শোনা যায়। বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতাকে এ নিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি খোলাসা করে কিছু বলেননি। তবে গুঞ্জনটি নাকচ করেননি ওই নেতা। এরই মধ্যে বিরোধী নেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে দায়ের করা একটি রিটের শুনানি করতে আরো সময় নিয়েছেন তার আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার এক আইনজীবী বলেন, দেখি না সরকার কী করে।
ভদ্রলোক বিএনপির একটি জেলা কমিটির সেক্রেটারি। অনেকটা আত্মসমালোচনা করে বলছিলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের উচিত তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য আলাদা আলাদা করে শোনা। মাঝে মাঝে লোকদেখানো মতবিনিময় সভা করে লাভ নেই। সেখানে কোনো দিকনির্দেশনা থাকে না। তৃণমূল নেতারাও মন খুলে কথা বলতে পারেন না। তিনি বলেন, আমার জেলায় এমন কোনো ইউনিয়ন নেই, যে ইউনিয়নের ১৮-২০ জন নেতাকর্মীর নামে নতুন করে মামলা দেয়া হয়নি। শুনছি আরো মামলা হবে। পরিস্থিতির যদি পরিবর্তন না হয় নির্বাচনে গিয়েও বা কি লাভ হবে? আলাপচারিতায় উপস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা অবশ্য বলেন, বুদ্ধিজীবীসহ ওই ঘরানার মত হচ্ছে যেকোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাওয়া।
বাংলাদেশে জোট রাজনীতির ইতিহাস অনেক পুরনো। এবারও নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট রাজনীতিতে তৈরি হচ্ছে নানা সমীকরণ। তবে বৃহত্তর ঐক্যের একটি উদ্যোগ পুরোমাত্রায় ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই তৈরি হয়েছে সংশয়। যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার ঐক্যবদ্ধ ঘোষণার দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুপস্থিত ছিলেন জোটের অন্যতম প্রধান নেতা বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরী। তার দলের মহাসচিব বা যুগ্ম মহাসচিবকেও সেখানে দেখা যায়নি। রোববার রাতে প্রায় একই সময়ে দুটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টকশো’তে উপস্থিত ছিলেন নতুন এই জোটের দুই নেতা। জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের চিন্তা আর ধ্যান-ধারণার দূরত্ব যে অনেক তা একটু কান পাতলেই বোঝা যাচ্ছিলো। মাহমুদুর রহমান মান্না স্পষ্টতই দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করছিলেন যে, জোটে বিএনপি অন্তর্ভুক্ত হবে। আর ২০দলীয় জোটে জামায়াত থাকবে কি-না বা জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কী হবে সেটি বিএনপির নিজস্ব ব্যাপার।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনের বিষয়টিও স্মরণ করেন তিনি। তবে জোটে বিএনপির অন্তর্ভুক্তি প্রশ্নে অন্য একটি টকশো’তে মাহী বি. চৌধুরীর ব্যক্ত করা অবস্থান অনেকটাই আলাদা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এব্যাপারে প্রায় সবাই একমত যে, বিএনপিকে ছাড়া জোট ভোটের রাজনীতিতে কোনো ধরনের প্রভাব রাখতে পারবে না। বিএনপির কাছে দেড়শ’ আসন দাবির বিষয়টিও অনেকে হাস্যকর বলে অভিহিত করেন। যদিও বি. চৌধুরী ও মাহী বি. চৌধুরী ছাড়া জোটের অন্য কোনো নেতা এ দাবি সামনে আনেননি। বৃহৎ জোট গঠনে চৌধুরী পরিবারের ভূমিকা নিয়ে বিএনপির অনেকের মনেই এখন প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সরকারের সঙ্গে জোটের কোন কোন নেতার ব্যবসা-বাণিজ্য বৃহৎ জোট গঠনে বড় বাধা হিসেবে সামনে আসছে বলেও অনেকে মনে করেন।
জামায়াত প্রশ্নে চৌধুরী পরিবারের অবস্থানও এখন আলোচিত। ইতিহাসের পাতা উল্টে দেখা যাক। ১৯৯৯ সালে নতুন এক বাঁক নেয় বাংলাদেশের রাজনীতি। গঠিত হয় চারদলীয় জোট। বিএনপি-জামায়াত যার অন্যতম প্রধান অংশীদার। এই জোট আখেরে বিএনপির জন্য ফলদায়ক হয়েছে কি-না সে বিতর্ক আলাদা। জোট গঠনের সময় বি. চৌধুরী ছিলেন বিএনপির অন্যতম শীর্ষ নেতা। তার ছেলে মাহী বি. চৌধুরীও তখন বিএনপিতে। ২০০১ সালে নির্বাচনী প্রচারণায়ও রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। নির্বাচনে ভূমিধস জয়লাভ করে চারদলীয় জোট। জোটের প্রার্থী হিসেবেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন বি. চৌধুরী। মাহী বি. চৌধুরী বাবার আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে। পরে অবশ্য দল থেকে অসম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে হয় বি. চৌধুরীকে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশ-বিদেশের অনেক বিবেকবান মানুষই বিএনপিকে জামায়াত ত্যাগের পরামর্শ দিয়ে আসছে। নিবন্ধন হারানো দলটির আগামী নির্বাচনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকার সুযোগ বা সম্ভাবনা নেই। এই অবস্থায় বারবার জামায়াত ইস্যুকে সামনে আনা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
আরেকটি নির্বাচন। যথরীতি অনিশ্চয়তা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। পরিস্থিতি এখনো পুরো একক নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু সামনের দিনগুলোতে কী হবে। রাজনীতিবিদ থেকে জ্যোতিষী কেউই হলফ করে বলতে পারছেন না নির্বাচন কেমন হবে। যদিও ভোটের একটি আগাম ছবি একেবারেই পরিষ্কার।
আগামী নির্বাচনে কী করবে বিএনপি? বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। দলটির নির্বাচনী কৌশল নিয়ে একই দিনে প্রকাশিত দুটি বিপরীতধর্মী নিউজ ভাইরাল হয়েছে। লোকে প্রশ্ন তুলছে কোন্টি সত্য। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দৌড়ঝাঁপ করছেন। নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন, লন্ডন হয়ে ঢাকায় ফিরে এসেছেন তিনি। যাওয়ার কিছুদিন আগে বন্দি দলীয় চেয়ারপারসনের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। নাজিমউদ্দিন রোডে বিপরীতধর্মী রাজনীতিবিদদের আরেকটি বৈঠকের কথাও শোনা যায়। বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতাকে এ নিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি খোলাসা করে কিছু বলেননি। তবে গুঞ্জনটি নাকচ করেননি ওই নেতা। এরই মধ্যে বিরোধী নেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে দায়ের করা একটি রিটের শুনানি করতে আরো সময় নিয়েছেন তার আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার এক আইনজীবী বলেন, দেখি না সরকার কী করে।
ভদ্রলোক বিএনপির একটি জেলা কমিটির সেক্রেটারি। অনেকটা আত্মসমালোচনা করে বলছিলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের উচিত তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য আলাদা আলাদা করে শোনা। মাঝে মাঝে লোকদেখানো মতবিনিময় সভা করে লাভ নেই। সেখানে কোনো দিকনির্দেশনা থাকে না। তৃণমূল নেতারাও মন খুলে কথা বলতে পারেন না। তিনি বলেন, আমার জেলায় এমন কোনো ইউনিয়ন নেই, যে ইউনিয়নের ১৮-২০ জন নেতাকর্মীর নামে নতুন করে মামলা দেয়া হয়নি। শুনছি আরো মামলা হবে। পরিস্থিতির যদি পরিবর্তন না হয় নির্বাচনে গিয়েও বা কি লাভ হবে? আলাপচারিতায় উপস্থিত বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা অবশ্য বলেন, বুদ্ধিজীবীসহ ওই ঘরানার মত হচ্ছে যেকোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাওয়া।
বাংলাদেশে জোট রাজনীতির ইতিহাস অনেক পুরনো। এবারও নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট রাজনীতিতে তৈরি হচ্ছে নানা সমীকরণ। তবে বৃহত্তর ঐক্যের একটি উদ্যোগ পুরোমাত্রায় ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই তৈরি হয়েছে সংশয়। যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার ঐক্যবদ্ধ ঘোষণার দিন জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুপস্থিত ছিলেন জোটের অন্যতম প্রধান নেতা বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরী। তার দলের মহাসচিব বা যুগ্ম মহাসচিবকেও সেখানে দেখা যায়নি। রোববার রাতে প্রায় একই সময়ে দুটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টকশো’তে উপস্থিত ছিলেন নতুন এই জোটের দুই নেতা। জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের চিন্তা আর ধ্যান-ধারণার দূরত্ব যে অনেক তা একটু কান পাতলেই বোঝা যাচ্ছিলো। মাহমুদুর রহমান মান্না স্পষ্টতই দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করছিলেন যে, জোটে বিএনপি অন্তর্ভুক্ত হবে। আর ২০দলীয় জোটে জামায়াত থাকবে কি-না বা জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কী হবে সেটি বিএনপির নিজস্ব ব্যাপার।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনের বিষয়টিও স্মরণ করেন তিনি। তবে জোটে বিএনপির অন্তর্ভুক্তি প্রশ্নে অন্য একটি টকশো’তে মাহী বি. চৌধুরীর ব্যক্ত করা অবস্থান অনেকটাই আলাদা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এব্যাপারে প্রায় সবাই একমত যে, বিএনপিকে ছাড়া জোট ভোটের রাজনীতিতে কোনো ধরনের প্রভাব রাখতে পারবে না। বিএনপির কাছে দেড়শ’ আসন দাবির বিষয়টিও অনেকে হাস্যকর বলে অভিহিত করেন। যদিও বি. চৌধুরী ও মাহী বি. চৌধুরী ছাড়া জোটের অন্য কোনো নেতা এ দাবি সামনে আনেননি। বৃহৎ জোট গঠনে চৌধুরী পরিবারের ভূমিকা নিয়ে বিএনপির অনেকের মনেই এখন প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সরকারের সঙ্গে জোটের কোন কোন নেতার ব্যবসা-বাণিজ্য বৃহৎ জোট গঠনে বড় বাধা হিসেবে সামনে আসছে বলেও অনেকে মনে করেন।
জামায়াত প্রশ্নে চৌধুরী পরিবারের অবস্থানও এখন আলোচিত। ইতিহাসের পাতা উল্টে দেখা যাক। ১৯৯৯ সালে নতুন এক বাঁক নেয় বাংলাদেশের রাজনীতি। গঠিত হয় চারদলীয় জোট। বিএনপি-জামায়াত যার অন্যতম প্রধান অংশীদার। এই জোট আখেরে বিএনপির জন্য ফলদায়ক হয়েছে কি-না সে বিতর্ক আলাদা। জোট গঠনের সময় বি. চৌধুরী ছিলেন বিএনপির অন্যতম শীর্ষ নেতা। তার ছেলে মাহী বি. চৌধুরীও তখন বিএনপিতে। ২০০১ সালে নির্বাচনী প্রচারণায়ও রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। নির্বাচনে ভূমিধস জয়লাভ করে চারদলীয় জোট। জোটের প্রার্থী হিসেবেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন বি. চৌধুরী। মাহী বি. চৌধুরী বাবার আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে। পরে অবশ্য দল থেকে অসম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে হয় বি. চৌধুরীকে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশ-বিদেশের অনেক বিবেকবান মানুষই বিএনপিকে জামায়াত ত্যাগের পরামর্শ দিয়ে আসছে। নিবন্ধন হারানো দলটির আগামী নির্বাচনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকার সুযোগ বা সম্ভাবনা নেই। এই অবস্থায় বারবার জামায়াত ইস্যুকে সামনে আনা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
আরেকটি নির্বাচন। যথরীতি অনিশ্চয়তা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। পরিস্থিতি এখনো পুরো একক নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু সামনের দিনগুলোতে কী হবে। রাজনীতিবিদ থেকে জ্যোতিষী কেউই হলফ করে বলতে পারছেন না নির্বাচন কেমন হবে। যদিও ভোটের একটি আগাম ছবি একেবারেই পরিষ্কার।
No comments