বাধা পেরিয়ে শিক্ষার আলোয় ওরা by রাজিউর রহমান রুমী
সব
বাধা পেরিয়ে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে চায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কয়েক
শিক্ষার্থী। ওদের পণ নিজেদের চোখের আলো না থাকলেও দেশ ও সমাজকে শিক্ষার
আলোয় আলোকিত করা। সব বাধা পেরিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে ১৬ দৃষ্টি
প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় এবার পাবনায় সর্বাধিক সংখ্যক
১৬ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অংশগ্রহণ করছে। এসব অন্ধ যুবক শিক্ষার আলোয় আলোকিত
হবার জন্য শ্রুতিলেখকের সহায়তায় পাবনা শহরের শহীদ বুলবুল কলেজ, শহীদ এম
মনসুর আলী কলেজ ও জাগির হোসেন একাডেমি কেন্দ্র থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা
দিচ্ছে। সব বাধা ও প্রতিকূলতাকে জয় করে সোনালী ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন এসব
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। পাবনা সদর উপজেলার সিংড়া এলাকার সেবামূলক প্রতিষ্ঠান
‘মানব কল্যাণ ট্রাস্ট’ এর বাসিন্দা নরসিংদী জেলার শিহাবুদ্দিন ভুইয়া, মো.
আব্দুল্লাহ, টাঙ্গাইল জেলার আবদুল্লাহ আল আমিন, আবুল কালাম আজাদ,
গোপালগঞ্জের ইখতেয়ার মৃধা, জামালপুরের গোলাপ মল্লিক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার
শাহাদত হোসেন, পঞ্চগড় জেলার রোকনুজ্জামান, দিনাজপুরের আব্দুল আজিজ,
কুড়িগ্রামের ইমরান হোসেন, রাজশাহীর মনিরুজ্জামান, ময়মনসিংহ জেলার
মোজাম্মেল, জয়পুরহাটের মোহাম্মদ আলী, বরিশালের হুমায়ুন কবির ও পাবনার
মনিরুল ইসলাম। এই ১৬ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানব কল্যাণ ট্রাস্টের আশ্রয়ে থেকে
এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম
জানান, পরীক্ষার হলে প্রশ্নপত্রের উত্তর মুখে বলে শ্রুতি লেখকদের শোনান ও
শ্রুতি লেখকরা সেটি লিখে আবার তাদের পড়ে শোনান। এ কারণে তাদের জন্য তিন
ঘণ্টার অতিরিক্ত মাত্র ২৫ মিনিট বেশি সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। এ সময় যথেষ্ট
নয় বলে তারা দাবি করেছেন। তিনি আরো জানান, শিক্ষা বোর্ড থেকে শ্রুতি
লেখকদের অনুমোদন, রেজিস্ট্রেশন জটিলতা ও বোর্ডের ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালার
কারণে পদে পদে তাদের হয়রানির শিকার হতে হয়। এ কারণে সাত জনের এইচএসসি
পরীক্ষা দেয়া অনিশ্চিত হয়ে পরেছিল। পরীক্ষার তিন দিন আগে তারা জানতে পারে
বোর্ড থেকে শ্রুতি লেখকের অনুমোদন দিচ্ছে না। নির্ধারিত একজনের পাঁচ হাজার
টাকা করে ১৬ শ্রুতি লেখকের জন্য মোট ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করা থাকলেও নানা
তালবাহানা করে বোর্ড। অবশেষে পাবনার জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন ও পাবনা
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কায়সারুর ইসলাম বিষয়টা জানার পরে এ ব্যপারে
বিশেষ সহযোগিতা প্রদান করেন। এরপর ওই সাত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরীক্ষার আগের
দিন রাজশাহীতে গিয়ে বিষয়টা সমাধান করতে পারেন।
মানব কল্যাণ ট্রাস্ট সূত্রে জানা গেছে, দরিদ্র এসব দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর (অন্ধ) শিক্ষা সংগ্রামে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি যোগ হয়েছে নানা ধরনের আর্থ-সামাজিক প্রতিকূলতা। সব বাধা ও প্রতিকূলতাকে জয় করে তারা সোনালী ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন। এগিয়ে যাচ্ছেন সামনের দিকে।
পাবনার মানব কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হোসেন জানান, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের (অন্ধ) লেখপড়ার জন্য প্রয়োজন ব্রেইল পদ্ধতি। অথচ দেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ সুযোগ নেই। পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন শ্রুতি লেখকের। দরিদ্র এসব অন্ধদের শ্রুতি লেখক সম্মানী তো দূরের কথা লেখাপড়া করার ন্যূূনতম আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করারও সক্ষমতা নেই। তারপরেও থেমে থাকেনি এসব সংগ্রামী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর শিক্ষা জীবন।
তিনি আরো জানান, এই ১৬ পরীক্ষর্থীর মতো আরো ৭২ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানব কল্যাণ ট্রাস্টের আশ্রয়ে থেকে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করছেন। এ ছাড়া এ প্রতিষ্ঠান থেকে ১২ পথশিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা, আট জন ৯ম শ্রেণিতে, ১০ম শ্রেণিতে সাত জন, একাদশে ৯ জন, দুই জন এমএ সহ বিভিন্ন শ্রেণিতে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এ প্রতিষ্ঠানকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হলে সারা দেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সর্বোৎকৃষ্ট শিক্ষালয় হিসেবে গড়ে উঠবে বলে তিনি দাবি করেন।
মানব কল্যাণ ট্রাস্ট সূত্রে জানা গেছে, দরিদ্র এসব দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর (অন্ধ) শিক্ষা সংগ্রামে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি যোগ হয়েছে নানা ধরনের আর্থ-সামাজিক প্রতিকূলতা। সব বাধা ও প্রতিকূলতাকে জয় করে তারা সোনালী ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন। এগিয়ে যাচ্ছেন সামনের দিকে।
পাবনার মানব কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল হোসেন জানান, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের (অন্ধ) লেখপড়ার জন্য প্রয়োজন ব্রেইল পদ্ধতি। অথচ দেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ সুযোগ নেই। পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন শ্রুতি লেখকের। দরিদ্র এসব অন্ধদের শ্রুতি লেখক সম্মানী তো দূরের কথা লেখাপড়া করার ন্যূূনতম আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করারও সক্ষমতা নেই। তারপরেও থেমে থাকেনি এসব সংগ্রামী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর শিক্ষা জীবন।
তিনি আরো জানান, এই ১৬ পরীক্ষর্থীর মতো আরো ৭২ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানব কল্যাণ ট্রাস্টের আশ্রয়ে থেকে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করছেন। এ ছাড়া এ প্রতিষ্ঠান থেকে ১২ পথশিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা, আট জন ৯ম শ্রেণিতে, ১০ম শ্রেণিতে সাত জন, একাদশে ৯ জন, দুই জন এমএ সহ বিভিন্ন শ্রেণিতে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এ প্রতিষ্ঠানকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হলে সারা দেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সর্বোৎকৃষ্ট শিক্ষালয় হিসেবে গড়ে উঠবে বলে তিনি দাবি করেন।
No comments