জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কক্সবাজার সফর ২৭শে এপ্রিল
চলতি
মাসের শেষের দিকে কক্সবাজার ও রাখাইন সফর করতে চায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা
পরিষদ। পরিষদের প্রতিনিধিরা আগামী ২৭ ও ২৮শে এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে আগ্রহী।
সূত্র মতে, ওই সফর বিষয়ে জাতিসংঘ ছাড়াও মার্কিন দূতাবাস বাংলাদেশ সরকারের
সঙ্গে আলোচনা করছে। সরকারের তরফে নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তকে তাৎক্ষণিক
স্বাগত জানানো হয়েছে। তবে ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর অস্ট্রেলিয়া সফরে থাকবেন
বলে তাদের জানানো হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর
প্রতিনিধিদের সফরকালে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিষয়টি আলোকপাত
করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এপ্রিলের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি
জাতিসংঘে নিযুক্ত পেরুর স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত গুস্তাভো মেজা-সুআদ্রা
দু’দিন আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তারা রাখাইন ও কক্সবাজার সফর করতে চান।
সফরের সময় এবং বিস্তারিত বিষয় নিয়ে এখনো কাজ করা হচ্ছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো
জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমার সফরের বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে অং
সান সুচি সরকার। তবে তারা রাখাইন রাজ্যে যেতে পারবেন কিনা, তাদেরকে সেই
অনুমতি দেয়া হবে কিনা- তা এখন নিশ্চিত নয়। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের
প্রেসিডেন্ট পেরুর রাষ্ট্রদূত গুস্তাভো মেজা চুয়াড্রা নিজেই সেই অনিশ্চয়তার
কথা প্রকাশ করেছেন। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ
মিয়ানমার সফরে যাওয়ার প্রস্তাব করেছিল। তখন সুচি সরকারের তরফে বলা হয়েছিল-
সফরের এটা উত্তম সময় নয়। তবে এবার নেপি’ডর তরফে নিরাপত্তা পরিষদকে
মিয়ানমারে স্বাগত জানানোর সবুজ সংকেত দেয়া হয়েছে। তবে রাখাইন প্রশ্নে
সিদ্ধান্ত পেতে হয়তো আরো কিছুটা সময় লাগবে! সফর বিষয়ে পেরুর রাষ্ট্রদূত
গুস্তাভো মেজা চুয়াড্রা গণমাধ্যমকে বলেছেন, এ সফর সম্পর্কে প্রাথমিক
কাজকর্ম চূড়ান্ত করতে হবে। তার মধ্যে অন্যতম শর্ত হলো মিয়ানমার সরকার
নিরাপত্তা পরিষদকে কি রাখাইন রাজ্য সফরের অনুমতি দেবে কি-না। মেজা চুয়াড্রা
বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিরা রাখাইন যেতে আগ্রহী। তিনি বলেন,
কাউন্সিল মেম্বাররা আশা করে তারা মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইন
রাজ্য সফর করতে পারবেন। ওই রাজ্যে বিদ্রোহীদের দমনের নামে সেনারা বর্বর
কায়দায় যে অভিযান চালিয়েছে তা থেকে প্রাণে বাঁচতে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা
পালিয়ে পাশের বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে এখনো কিছু রোহিঙ্গা রয়েছেন।
রাখাইনের বাস্তব পরিস্থিতি দেখার চেয়ে তাদের সফরে ভালো কিছু আর হতে পারে না
বলেও মন্তব্য করেন তিনি। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এই সফর
আয়োজন করছে বৃটেন, কুয়েত ও পেরু। ২৫শে আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে
সহিংসতা শুরুর পর কমপক্ষে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়
বাংলাদেশে। রাষ্ট্রদূত মেজা সুয়াদ্রা এ-ও জানান, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা
ইরাক সফর করবেন। ইরাক পুনঃনির্মাণ এবং দেশটির বিবদমান সব পক্ষের সমঝোতা ও
সহাবস্থান নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সমর্থন ও সহায়তা প্রয়োজন। দেশটিতে
ইসলামিক স্টেট (আইএস)সহ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ের তাৎপর্যপূর্ণ
অগ্রগতি রয়েছে। রাষ্ট্রদূত মেজা জানান, আগামী মে মাসে দেশটিতে জাতীয়
নির্বাচন হওয়ার সূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
No comments