১ লাখ রুপিতে ছেলে হত্যার চুক্তি করে মা প্রেমলতা
জমি
নিয়ে বিরোধ। তাই ছেলেকে খুন করতে ঘাতকের সঙ্গে এক লাখ রুপিতে চুক্তি করে
মা প্রেমলতা সুতার। চুক্তি মতো কাজও হয়ে যায়। খুন করা হয় তার ছেলে মোহিতকে।
কিন্তু ঘটনা ধামাচাপা পড়ে থাকে নি। ৭ই এপ্রিল ভারতের রাজস্থানে ন্যাশনাল
হাইওয়ে-১১৩ এর নিম্বাহিদায় পরিত্যক্ত একটি স্থানে পাওয়া যায় মোহিতের
মৃতদেহ। এ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। তাতে বেরিয়ে আসে অবিশ্বাস্য সব কাহিনী। এতে
দেখা যায়, মা প্রেমলতা তার ছেলে মোহিতকে খুন করতে জামাই ও চার খুনির সঙ্গে
চুক্তি করে। প্রতাপগড়ে ছোটি সাদরি এলাকায় তাদের জমি নিয়ে ছেলের সঙ্গে বিরোধ
ছিল। সেই বিরোধের জের ধেরে মা প্রেমলতা খুনিদের হাতে তুলে দেয় এক লাখ
রুপি। তদন্তে এসব ফাঁস হওয়ার পর বেরিয়ে আসে সব তথ্য। পুলিশ গ্রেপ্তার করে
মা প্রেমলতা সুতার, তার জামাই কৃষ্ণ সুতার, মহাদেভ ঢাকাড় ও গণপত সিংকে।
উল্লেখ্য, নিহত মোহিত মানসিকভাবে সুস্থ ছিল না। নেশাসক্ত ছিল সে। তার পিতা
মারা যাওয়ার পর মায়ের ওপর মাঝে মাঝেই নির্যাতন করতো। ছেলের এমন নির্যাতনে
অতীষ্ঠ হয়ে মা প্রেমলতা দেড় মাস আগে চলে যান বামবোরি গ্রামে জামাইবাড়ি।
সেখানে মেয়ে ও তার জামাইয়ের সংসারে বসবাস করতে থাকেন তিনি। কিন্তু নিজের
গ্রামে ৪ বিঘা জমি ছিল প্রেমলতার। তিনি ওই জমি একজন মহাদেবের কাছে বিক্রি
করতে চান। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ছেলে মোহিত। সে কিছুতেই জমি বিক্রি করতে
দেবে না। অন্যদিকে যে করেই হোক জমি বিক্রি করতে হবে প্রেমলতাকে। তাই তিনি ও
জামাই মিলে বুদ্ধি বের করেন। তারা মোহিতকে হত্যা পরিকল্পনা করেন।
এক্ষেত্রে তারা ওই মহাদেবের সহযোগিতা চান। তিনি মোহিতকে হত্যা করতে আগাম ৫০
হাজার রুপি পরিশোধ করেন। হত্যার পর বাকি অর্থ পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত পাকা
হয়। ৬ই এপ্রিল মোহিত খেতে যায় একটি ধাবায় (হোটেল)। এ সময় তার খাবারে ঘুমের
ওষুধ মিশিয়ে দেয় গণপত। এমনকি তাকে বিয়ার পানের আমন্ত্রণ জানায়। ওদিকে মোহিত
খাওয়া শেষ করে তার মোটর সাইকেলে আরোহণ করে। এ সময় তার সঙ্গে যায় গণপতের
কর্মী অনীল নায়ক। তাদেরকে অনুসরণ করতে থাকে গণপত। শিবানা এলাকায় যাওয়ার পর
তাকে আবারো বিয়ার পান করানো হয়। এ সময় মোহিত চেতনা হারায়। এই সুযোগ ব্যবহার
করে গণপত। সে গায়ের পোশাক দিয়ে মোহিতকে শ্বাসরোধ করে। ঠান্ডা মাথায় এই
হত্যাকা- ঘটিয়ে তারা দু’জনেই ফিরে যায় ধাবায়। সেখানে তারা এমনভাবে কাজ করতে
থাকেন যেন, কিছুই ঘটেনি। কিন্তু মৃতদেহ পাওয়ার পর ক্লাইম্যাক্স জমতে থাকে।
কে হত্যা করেছে? কেন হত্যা করা হয়েছে? নানা রকম প্রশ্ন আসতে থাকে। মোহিত
মানসিকভাবে সুস্থ নয়। তাকে কে হত্যা করবে। তাই ঘাতককে খুঁজে পাওয়া ছিল
কঠিন। তবে পাপে তো ছাড়ে না বাপেরে। তাই টোল প্লাজার সিসিটিভির ফুটেজে ধরা
পড়ে যায় ঘাতক। তাতে দেখা যাওয়ার পর গণপতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সে দায়
স্বীকার করে। এরপরই মোহিতের মা প্রেমলতাকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
বাকিদে নেয়া হয়েছে পুলিশি রিমান্ডে। পঞ্চম অভিযুক্ত অনীল নায়েক রয়েছে
পলাতক। তার সন্ধান করছে পুলিশ।
No comments