যৌনতার বিনিময়ে খাদ্য: সিরিয়ার আলেপ্পোতে ত্রাণকর্মীদের নির্যাতনের শিকার নারীরা
আলেপ্পোর
নারীদের কাছে এ বছরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের কোনো যৌক্তিকতা ছিল
না। যদিও লেবাননের সংবাদ সংস্থা রাসিফ২২ আলেপ্পোকে ‘নারীদের রাজ্য’ হিসেবে
উল্লেখ করেছে। প্রায় চার মাস আগে বিদ্রোহী মিলিশিয়াদের দখল থেকে শহরটি
মুক্ত হয়। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া এই শহরের এক-চতুর্থাংশে এখনো কিছু সংখ্যক
পুরুষ দেখা যায়। শহরের বেশির ভাগ পুরুষকে হত্যা করা হয়েছে। কেউ কেউ
অন্যত্র পালিয়ে গেছে। আর বাকিরা বন্দি হয়েছে, নিখোঁজ রয়েছে অথবা শহরের
বাইরের শরণার্থী শিবিরগুলোতে অপেক্ষা করছে। শহরে প্রবেশের রাস্তাগুলোতে
পুঁতে রাখা বোমা ও অন্যান্য বিস্ফোরক সামগ্রী সরিয়ে ফেলার পর শহরে প্রবেশ
করবেন তারা।
যুদ্ধ শুরুর পূর্বে সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বসবাস করতো। আর বর্তমানে শহরটিতে ১ থেকে ৩ লাখ মানুষ রয়েছে। সিরিয়ার মানবাধিকার বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে আলেপ্পোর প্রতি ৫টি পরিবারের মধ্যে দু’টি পরিবারেই নারীরা পুরো পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেছে। এখানে ‘জীবিকানির্বাহক’ শব্দটির ব্যবহার বিভ্রান্তিকর। কেননা ত্রাণ সংস্থাগুলোর সহায়তা ছাড়া এসব নারীর কোনো রোজগার বা কর্মক্ষেত্র ছিল না। ত্রাণ সংস্থাগুলো তাদেরকে কাপড় ও খাবার সরবরাহ করতো। বেশির ভাগ পরিবারেই বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানি নেই। জেনারেটর মালিকদের থেকে চড়া দামে বিদ্যুৎ কিনতে হয় তাদের। দোকান থেকে পানিও কিনতে হয় চড়া দামে।
কিছু পরিবার সৌভাগ্যবান যে তাদের পরিবারে সিরিয়ার সেনাবাহিনীতে কর্মরত সদস্য রয়েছে। অনিয়মিত হলেও তারা সেখান থেকে কিছু পারিশ্রমিক পায়। শহরে বসবাসকারী তরুণরা সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১০ ডলার রোজগার করে। একজন নারী বলেন, এই অর্থে চা, চিনি ও রুটির খরচই হয় না। দুধ তো সেখানে বিলাসিতা। ছয় সন্তানের অভিভাবক এক নারী জানান, তার সন্তানদের মধ্যে কয়েকজন পুনরায় স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের কয়েকটি কক্ষ সংস্কার করে স্কুলের পাঠদান চলছে। আরেকটি সমস্যা হলো, যুদ্ধের সময়ে জন্ম নেয়া শিশুরা কোথাও নিবন্ধিত হয়নি। কেন না এই সময়ে সরকারি কর্মকর্তারা অবসরে ছিলেন। নিবন্ধিত না হওয়ায় সেসব শিশুরা কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি হতে পারছে না। এমন প্রত্যেক শিশুর নিবন্ধনের জন্য কর্তৃপক্ষ ৭ ডলার (৫৮০.৬০ টাকা) দাবি করছে। এ ছাড়া নিবন্ধনের জন্য সরকারি অফিসে যাতায়াতের জন্যও প্রায় ২২ সেন্ট (১৮.২৫ টাকা) খরচ হয়। আলেপ্পোর নারীদের কাছে এই অর্থ অনেক বড় বিষয়।
ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে গেলে পতিতা মনে করা হতো
এদিকে, আলেপ্পোতে বিধবা মায়েরা তুলনামূলক ভালো পরিস্থিতিতে রয়েছেন। কেননা ত্রাণ সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ত্রাণ নেয়ার জন্য অনেককে নিজেদের শরীর বিক্রি করতে হচ্ছে। ত্রাণ সংস্থাগুলো স্থানীয় কর্মীদের দিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেছে। আর এরা খাদ্যের বিনিময়ে নারীদের থেকে যৌন সুবিধা নিচ্ছে। এমন ঘটনার শিকার এক নারী বলেন, এক সংগঠনের কর্মকর্তা তাকে অস্থায়ী বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। এর বিনিময়ে তাকে নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ করার অঙ্গীকার করে। ওই নারী যখন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন, তখন তাকে আর ত্রাণ না দেয়ার কথা বলা হয়। আরো কয়েকজন নারী বলেন ধর্ষণ, হয়রানি ও অপমানের ভয়ে তারা ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র এড়িয়ে চলতেন। এক নারী বলেন, ত্রাণের বিনিময়ে যৌন হয়রানির ঘটনা এতই বৃদ্ধি পেয়েছিল যে, কোনো নারী ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে গেলে তাকে পতিতা মনে করা হতো। এই ভয়ে নারীরা বিতরণকেন্দ্র এড়িয়ে চলতো।
জাতিসংঘের বৈশ্বিক সংকট ও দুর্যোগ বিষয়ক সেন্টার রিলিফ ওয়েব ‘ভয়েস ফ্রম সিরিয়া’ নামক একটি বিস্তারিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে সিরিয়ায় নারীদের যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। ১৫৮ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদন দেশটির বিভিন্ন স্থাপনা ও শরণার্থী শিবিরগুলোতে নারী, কিশোরী ও আরো কম বয়সী মেয়েদের ওপর যৌন হামলা, নির্যাতন ও হয়রানির বিবরণ দিয়ে ভর্তি। আলেপ্পোর নারী, মেয়েদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ জায়গা হচ্ছে ওই স্থাপনা ও শিবিরগুলো। অর্থ ছাড়া সহায়তা পাওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। বেশির ভাগ সময় ত্রাণ বা সহায়তা দেয়া হয় অর্থ বা যৌন সেবার বিনিময়ে। দামেস্কের নিকটবর্তী গ্রাম কাফর বাতনা’র এক নারীর দেয় সাক্ষ্য অনুসারে, একবেলা খাবার পাওয়ার বদলে কখনো অল্পসময়ের জন্য বিয়ে করতে হয়। দু’টি দাতব্য সংস্থা স্বীকার করেছে, তারা এরকম ঘটনার বিষয়ে অবগত। তারা জানিয়েছে, এরকম কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত ত্রাণকর্মীদের তারা বরখাস্ত করে দিয়েছে। আলেপ্পোর নারীরা ত্রাণ প্যাকেজগুলোর ওপর নির্ভর করে জীবন যাপন করছে। অনেক নারী এরকম নির্যাতনের স্বীকার হলেও সে বিষয়ে অভিযোগ করে না। এক্ষেত্রে সমাজের চোখে কলঙ্কিত হওয়ার ভয়ও কাজ করে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতা
এতসব সত্ত্বেও এই অসহায় নারীদের দুর্দশার মাত্রা, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর হাতে বন্দি নারীদের দুর্দশার চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস এর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ওইসব বন্দি নারীদের পরিস্থিতি কিছুটা তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে, সরকারি বাহিনীর হাতে এইসব নারীদের যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার ৭ হাজার ৬৯৯টি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ৮৬৪টি ঘটনা ঘটে ২০০৮ থেকে ২০১১ সালে-সরকারি বন্দিশালায়। এ ছাড়া, মিলিশিয়া যোদ্ধা, আইএস ও অপরাধী চক্রের হাতে নির্যাতিত হওয়ার হাজার হাজার ঘটনাতো রয়েছেই। প্রতিবেদনটিতে উত্তরাঞ্চলের কুর্দি শাসিত অঞ্চলগুলোরও ব্যাপক সমালোচনা করা হয়। বলা হয়, নারীদের ও মেয়েদের কুর্দি যোদ্ধাদের বাহিনীতে যোগ দেয়ার জন্য বাধ্য করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়-নিঃসন্দেহে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম বিষয়টি হচ্ছে, যেভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সিরীয় নারীদের হতাশ করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স¤পূর্ণভাবে ওই নারীদের মৌলিক অধিকারগুলো রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। যেমন, জীবনের অধিকার, বাসস্থানের অধিকার, নির্যাতন বন্ধ করা ও বন্দি নারীদের মুক্ত করা। এই নারীদের জন্য আন্তর্জাতিক নারী দিবস হচ্ছে আরো নির্যাতন। কেননা এই দিনটি ‘বেঁচে থাকার জন্য অবিরাম সংগ্রামরত এই নারীদেরকে তাদের ও পশ্চিমা নারীদের পরিস্থিতির মধ্যকার পার্থক্যটা আবারো মনে করিয়ে দেয়।
(হারেৎস’এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে)
যুদ্ধ শুরুর পূর্বে সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই শহরে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বসবাস করতো। আর বর্তমানে শহরটিতে ১ থেকে ৩ লাখ মানুষ রয়েছে। সিরিয়ার মানবাধিকার বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে আলেপ্পোর প্রতি ৫টি পরিবারের মধ্যে দু’টি পরিবারেই নারীরা পুরো পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেছে। এখানে ‘জীবিকানির্বাহক’ শব্দটির ব্যবহার বিভ্রান্তিকর। কেননা ত্রাণ সংস্থাগুলোর সহায়তা ছাড়া এসব নারীর কোনো রোজগার বা কর্মক্ষেত্র ছিল না। ত্রাণ সংস্থাগুলো তাদেরকে কাপড় ও খাবার সরবরাহ করতো। বেশির ভাগ পরিবারেই বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানি নেই। জেনারেটর মালিকদের থেকে চড়া দামে বিদ্যুৎ কিনতে হয় তাদের। দোকান থেকে পানিও কিনতে হয় চড়া দামে।
কিছু পরিবার সৌভাগ্যবান যে তাদের পরিবারে সিরিয়ার সেনাবাহিনীতে কর্মরত সদস্য রয়েছে। অনিয়মিত হলেও তারা সেখান থেকে কিছু পারিশ্রমিক পায়। শহরে বসবাসকারী তরুণরা সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১০ ডলার রোজগার করে। একজন নারী বলেন, এই অর্থে চা, চিনি ও রুটির খরচই হয় না। দুধ তো সেখানে বিলাসিতা। ছয় সন্তানের অভিভাবক এক নারী জানান, তার সন্তানদের মধ্যে কয়েকজন পুনরায় স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের কয়েকটি কক্ষ সংস্কার করে স্কুলের পাঠদান চলছে। আরেকটি সমস্যা হলো, যুদ্ধের সময়ে জন্ম নেয়া শিশুরা কোথাও নিবন্ধিত হয়নি। কেন না এই সময়ে সরকারি কর্মকর্তারা অবসরে ছিলেন। নিবন্ধিত না হওয়ায় সেসব শিশুরা কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি হতে পারছে না। এমন প্রত্যেক শিশুর নিবন্ধনের জন্য কর্তৃপক্ষ ৭ ডলার (৫৮০.৬০ টাকা) দাবি করছে। এ ছাড়া নিবন্ধনের জন্য সরকারি অফিসে যাতায়াতের জন্যও প্রায় ২২ সেন্ট (১৮.২৫ টাকা) খরচ হয়। আলেপ্পোর নারীদের কাছে এই অর্থ অনেক বড় বিষয়।
ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে গেলে পতিতা মনে করা হতো
এদিকে, আলেপ্পোতে বিধবা মায়েরা তুলনামূলক ভালো পরিস্থিতিতে রয়েছেন। কেননা ত্রাণ সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ত্রাণ নেয়ার জন্য অনেককে নিজেদের শরীর বিক্রি করতে হচ্ছে। ত্রাণ সংস্থাগুলো স্থানীয় কর্মীদের দিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেছে। আর এরা খাদ্যের বিনিময়ে নারীদের থেকে যৌন সুবিধা নিচ্ছে। এমন ঘটনার শিকার এক নারী বলেন, এক সংগঠনের কর্মকর্তা তাকে অস্থায়ী বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। এর বিনিময়ে তাকে নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ করার অঙ্গীকার করে। ওই নারী যখন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন, তখন তাকে আর ত্রাণ না দেয়ার কথা বলা হয়। আরো কয়েকজন নারী বলেন ধর্ষণ, হয়রানি ও অপমানের ভয়ে তারা ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র এড়িয়ে চলতেন। এক নারী বলেন, ত্রাণের বিনিময়ে যৌন হয়রানির ঘটনা এতই বৃদ্ধি পেয়েছিল যে, কোনো নারী ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে গেলে তাকে পতিতা মনে করা হতো। এই ভয়ে নারীরা বিতরণকেন্দ্র এড়িয়ে চলতো।
জাতিসংঘের বৈশ্বিক সংকট ও দুর্যোগ বিষয়ক সেন্টার রিলিফ ওয়েব ‘ভয়েস ফ্রম সিরিয়া’ নামক একটি বিস্তারিত গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে সিরিয়ায় নারীদের যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। ১৫৮ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদন দেশটির বিভিন্ন স্থাপনা ও শরণার্থী শিবিরগুলোতে নারী, কিশোরী ও আরো কম বয়সী মেয়েদের ওপর যৌন হামলা, নির্যাতন ও হয়রানির বিবরণ দিয়ে ভর্তি। আলেপ্পোর নারী, মেয়েদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ জায়গা হচ্ছে ওই স্থাপনা ও শিবিরগুলো। অর্থ ছাড়া সহায়তা পাওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। বেশির ভাগ সময় ত্রাণ বা সহায়তা দেয়া হয় অর্থ বা যৌন সেবার বিনিময়ে। দামেস্কের নিকটবর্তী গ্রাম কাফর বাতনা’র এক নারীর দেয় সাক্ষ্য অনুসারে, একবেলা খাবার পাওয়ার বদলে কখনো অল্পসময়ের জন্য বিয়ে করতে হয়। দু’টি দাতব্য সংস্থা স্বীকার করেছে, তারা এরকম ঘটনার বিষয়ে অবগত। তারা জানিয়েছে, এরকম কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত ত্রাণকর্মীদের তারা বরখাস্ত করে দিয়েছে। আলেপ্পোর নারীরা ত্রাণ প্যাকেজগুলোর ওপর নির্ভর করে জীবন যাপন করছে। অনেক নারী এরকম নির্যাতনের স্বীকার হলেও সে বিষয়ে অভিযোগ করে না। এক্ষেত্রে সমাজের চোখে কলঙ্কিত হওয়ার ভয়ও কাজ করে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতা
এতসব সত্ত্বেও এই অসহায় নারীদের দুর্দশার মাত্রা, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর হাতে বন্দি নারীদের দুর্দশার চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস এর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ওইসব বন্দি নারীদের পরিস্থিতি কিছুটা তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে, সরকারি বাহিনীর হাতে এইসব নারীদের যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার ৭ হাজার ৬৯৯টি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ৮৬৪টি ঘটনা ঘটে ২০০৮ থেকে ২০১১ সালে-সরকারি বন্দিশালায়। এ ছাড়া, মিলিশিয়া যোদ্ধা, আইএস ও অপরাধী চক্রের হাতে নির্যাতিত হওয়ার হাজার হাজার ঘটনাতো রয়েছেই। প্রতিবেদনটিতে উত্তরাঞ্চলের কুর্দি শাসিত অঞ্চলগুলোরও ব্যাপক সমালোচনা করা হয়। বলা হয়, নারীদের ও মেয়েদের কুর্দি যোদ্ধাদের বাহিনীতে যোগ দেয়ার জন্য বাধ্য করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়-নিঃসন্দেহে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম বিষয়টি হচ্ছে, যেভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সিরীয় নারীদের হতাশ করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স¤পূর্ণভাবে ওই নারীদের মৌলিক অধিকারগুলো রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। যেমন, জীবনের অধিকার, বাসস্থানের অধিকার, নির্যাতন বন্ধ করা ও বন্দি নারীদের মুক্ত করা। এই নারীদের জন্য আন্তর্জাতিক নারী দিবস হচ্ছে আরো নির্যাতন। কেননা এই দিনটি ‘বেঁচে থাকার জন্য অবিরাম সংগ্রামরত এই নারীদেরকে তাদের ও পশ্চিমা নারীদের পরিস্থিতির মধ্যকার পার্থক্যটা আবারো মনে করিয়ে দেয়।
(হারেৎস’এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে)
No comments