ইসরায়েলি বসতি স্থাপনে বৈধতা দিয়ে আইন পাস
ইসরায়েলের পার্লামেন্ট গত সোমবার পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন নিয়ে একটি বিতর্কিত আইন পাস করেছে। এর ফলে সেখানকার অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলিদের জন্য নির্মিত মোট ৩ হাজার ৮০০ বাড়ি আইনি বৈধতা পেয়ে গেল। তবে আইনটি আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। নতুন আইন অনুযায়ী বসতি এলাকাগুলোর ফিলিস্তিনি জমির মালিকেরা আর্থিক ক্ষতিপূরণ অথবা বিকল্প জমি পাবেন। ইসরায়েল সরকার কয়েক সপ্তাহ ধরে বসতি স্থাপনের কার্যক্রমে বেশ জোর দিয়েছিল। এমন প্রেক্ষাপটেই বিতর্কিত আইনটি পার্লামেন্টে অনুমোদিত হলো। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সমর্থন পেয়ে ইসরায়েল বসতি কার্যক্রম নতুন করে এগিয়ে নিতে চাইছে। তারা কয়েক হাজার নতুন বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। ট্রাম্প ইসরায়েলি বসতির ব্যাপারে তাঁর পূর্বসূরি বারাক ওবামার তুলনায় অনেক নমনীয় ভূমিকা নিয়েছেন। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের কড়া সমালোচক ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা। ফিলিস্তিনিদের মতে,
বিতর্কিত নতুন আইনটি শান্তির পরিপন্থী এবং তা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুযোগ ব্যাহত করবে। তবে ইসরায়েলি আইনটি বাস্তবায়ন সহজ হবে না। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেলই ইতিমধ্যে বলে দিয়েছেন, আইনটি অসাংবিধানিক এবং তিনি এর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে লড়বেন না। বসতিবিরোধী ইসরায়েলি পর্যবেক্ষক সংস্থা পিস নাও জানায়, নতুন আইন অনুযায়ী পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের সব বসতি এবং আনুষ্ঠানিক অনুমোদনবিহীন প্রায় ৫৩টি ঘাঁটি এলাকার বসতিগুলো বৈধতা পাবে। ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইৎসহাক হেরজগ ওই আইনের নিন্দা জানিয়ে একে ‘ইসরায়েলের জন্য মারাত্মক বিপদ’ আখ্যা দিয়েছেন। বলেছেন, এই আইনের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) অভিযুক্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফিলিস্তিনিরাও আইনটির নিন্দা জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি নেতা মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ্ বলেন, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ আরও অস্থিতিশীলতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। নতুন আইনটি অগ্রহণযোগ্য। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত নিকোলাই ম্লাদেনভ বলেছেন, আইনটি আরব-ইসরায়েল শান্তির সম্ভাবনাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করবে। ১৯৬৭ সালে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেওয়ার পর থেকে ইসরায়েলিরা সেখানে প্রায় ১৪০টি বসতি তৈরি করেছে।
No comments