পাকিস্তানে ধরপাকড়, ২৫০০ কারাগারে

সরকারবিরোধী আন্দোলন-বিক্ষোভে উত্তাল পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ। সাবেক পাক ক্রিকেটার ইমরান খানের নেতৃত্বে আজাদী ও বিতর্কিত আধাত্মিক নেতা তাহির-উল কাদরির নেতৃত্বে ইনকিলাব র‌্যালি চলছে। পুরো পাঞ্জাব প্রদেশকে ঘিরে বড় ধরনের শো-ডাউনের আগে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে সরকার। এ পর্যন্ত ইমরানের পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) ও কাদরির পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক (পিএটি) দলের প্রায় আড়াই হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের পর তাদের পাঞ্জাবের ২৭টি কারাগারে রাখা হয়েছে। সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ বলে (৩-এমপিও) সাত দিন থেকে একমাস পর্যন্ত আটককৃতদের কারাগারে রাখতে পারবেন। ডন এক প্রতিবেদনে জানায়, সরকারের কাছ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারেই রাখা হবে। দুদিন ধরে চলমান এই সমাবেশকে ঘিরে পুরো ইসলামাবাদকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করেছে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন)।
সরকার প্রথমে সমাবেশে কড়াকড়ি আরোপ করলেও পরে তা কিছুটা শিথিল করে। এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের দাবিতে দুই দলই অটল আছেন। এদিকে বর্তমানে পাকিস্তানে সব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন ইমরান খান। তাকে ঘিরেই অনেকে সরকার উৎখাতের কথা বলছেন। রোববার ডন নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, সর্বোচ্চে এক সপ্তাহের মধ্যেই সরকারের পতন হবে। সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়ে তাহির-উল কাদরি বলেন, এই সময়ের মধ্যেই তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নিতে হবে। পুলিশের কাছে নওয়াজ শরিফের আত্মসমর্পণেরও দাবি করেন তিনি। অন্যদিকে সমাবেশকে ঘিরে আত্মঘাতী হামলার আশংকা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিসার আলী খান। উচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, পিটিআই ও পিএটি র‌্যালি ঘিরে জঙ্গিরা হামলার পরিকল্পনা করছে। ডনের খবরে বলা হয়, ইমরান-কাদরিকে আলোচনার টেবিলে বসার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। ডন। এদিকে, পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাজপথে সমবেত হয়েছে। এদিকে জনপ্রিয় ধর্মীয় নেতা তাহির-উল কাদরি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে গ্রেফতারের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম ঘোষণা করেছেন। লাহোর থেকে তাহির-উল কাদরি ও ইমরান খানের নেতৃত্বে আসা বিক্ষোভকারীরা তাদের দাবি আদায়ে ইসলামাবাদে একত্রে মিশে যায়। ইমরান শনিবার নওয়াজ শরিফের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
তিনি নির্বাচনে কারচুপির জন্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। রোববার বিকালে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে ইমরান খানের এক বক্তৃতায় সরকারের কাছে তার দলের দাবিগুলো তুলে ধরার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) একজন মুখপাত্র শিরিন মাজারি। ইমরান খান এর আগে বলেন, আমাদের দাবি পূরণ না করে আমরা ফিরে যাব না। তিনি নির্বাচনে কারচুপির জন্য অভিযুক্ত সব কর্মকর্তাকে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বিচারের দাবি জানান। শনিবার বিকালে ইমরান খান শরিফকে পদত্যাগের হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, অন্যথায় তার সমর্থকরা রোববার রাজধানীর রেড জোন-এ ঢুকে পড়বে। এদিকে অপর সরকারবিরোধী রাজনীতিক তাহির-উল কাদরি তার সমর্থকদের হত্যার অভিযোগে নওয়াজ শরিফকে গ্রেফতারের দাবি জানান। তিনি শনিবার তার দাবি মানতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন। তিনি বলেন, তার দাবি পূরণ করা না হলে এ জন্য কোনো প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হলে তিনি দায়ী হবেন না। কাদরি বলেন, নওয়াজ শরিফ ও তার ভাই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ খানের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই এবং তাদের মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত ও তাদের গ্রেফতার করতে হবে। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.