‘পূর্ব বাংলার জনগণ যা চাইবে, তা–ই হবে’
বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ১৫ অক্টোবর (১৯৭১) এক চিঠিতে বাংলাদেশকে দ্রুত স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। ৭ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের এনবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইন্দিরা গান্ধীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এখনো কি রাজনৈতিক সমঝোতার পথ খোলা আছে, নাকি গেরিলাযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনই একমাত্র পথ? জবাবে ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, ‘পূর্ব বাংলার জনগণ যা চাইবে, তা-ই হবে। তারা কোন পথে যাবে তা নির্ধারণ করার অধিকার আমাদের নেই। এটি তাদের দেশ, এটি তাদের লড়াই এবং তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’ ১৯ অক্টোবর ফ্রান্সের লা মঁদ পত্রিকায় ইয়াহিয়া খানের একটি সাক্ষাৎকার ছাপা হয়। বিচারে শেখ মুজিবের মৃত্যুদণ্ড হলে প্রেসিডেন্ট তাঁর ক্ষমতাবলে মুজিবকে ক্ষমা করে দেবেন কি না এই প্রশ্নের জবাবে ইয়াহিয়া বলেন, ‘আমাকে দেশের মানুষের মনোভাব জানতে হবে। জনগণ চাইলে আমি ক্ষমা করব।’ ২৮ নভেম্বর সাপ্তাহিক নিউজউইক-এ প্রকাশিত আর্নল্ড ডি বোচগ্রেভকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইয়াহিয়া বলেন, ‘বিচারে তাঁর দণ্ড হলে কী করা হবে, তা প্রেসিডেন্টের এখতিয়ারে। এটি বড় একটি ঝামেলা। কিন্তু জাতি চাইলে আমি তাঁকে ছেড়ে দেব।’ সরকারি পত্রিকা পাকিস্তান টাইমস-এ ইয়াহিয়ার কথার ব্যাখ্যা করে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট আদতে মুজিবের মুক্তির কথা ভাবছেন, তবে এটি একান্তই পাকিস্তানের নিজস্ব ব্যাপার।
ইয়াহিয়ার মন্তব্যে উৎসাহিত হয়ে পাকিস্তানের ৪২ জন খ্যাতনামা ব্যক্তি শেখ মুজিবের আশু মুক্তি চেয়ে যৌথ বিবৃতি দেন। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে ছিলেন তেহরিক-ই-ইস্তিকলাল পার্টির প্রধান এয়ার মার্শাল (অব.) আসগর খান, লেনিন শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজ, পাকিস্তান সোশ্যালিস্ট পার্টির নেতা চৌধুরী আসলাম, পাকিস্তান টাইমস-এর সাবেক সম্পাদক মাজহার আলী খান, পাকিস্তান ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সভাপতি মির্জা মোহাম্মদ ইব্রাহিম প্রমুখ। বিবৃতিদাতাদের বেশির ভাগই ছিলেন বামপন্থী। পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছিল। ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ প্রশ্নে দূতিয়ালি করার জন্য পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছিলেন। বাংলাদেশ প্রশ্নে একটি সম্মানজনক সমাধান এবং শেখ মুজিবের মুক্তির জন্য তিনি বিশ্বনেতাদের কাছে দেনদরবার করছিলেন। এই পর্যায়ে নভেম্বরে তাঁর ওয়াশিংটন সফর ঠিক হয়। মার্কিন প্রশাসনের মনোভাবে অবশ্য কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যায়নি। ইন্দিরা ও মুজিবের ব্যাপারে নিক্সন ও কিসিঞ্জারের বিন্দুমাত্র আগ্রহ কিংবা শ্রদ্ধাবোধ ছিল না। ৪ নভেম্বর নিক্সন-ইন্দিরা বৈঠক হয়। বৈঠকে কিসিঞ্জার ও হাকসার উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকের পর ওভাল অফিসে কিসিঞ্জারের সঙ্গে নিক্সন একান্তে আলাপ করেন। তাঁদের কথোপকথন থেকে জানা যায়:
নিক্সন: অন্যান্য দেশকে যুক্তরাষ্ট্র যে সাহায্য দেয়, ভারতকে তার চেয়ে বেশি দেওয়া হয়। তারপরও ওরা এটি স্বীকার করে না। জাহান্নামে যাক তারা।
কিসিঞ্জার: আমি রাখঢাক করে বলব না। এই বেজন্মারা আমাদের সঙ্গে চূড়ান্ত রকমের নিষ্ঠুর খেলা খেলছে। দুর্ভিক্ষ ঠেকানো, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সরবরাহ (পূর্ব পাকিস্তানে), অসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠা, সাধারণ ক্ষমা, একতরফা সেনা প্রত্যাহার, কী না আমরা করেছি। অস্ত্র পাঠানোও শেষ হয়ে গেছে।
নিক্সন: আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতাকে ফাঁসি না দেওয়ার ব্যাপারটি পাকিস্তানিরা মেনে নিয়েছে। তাঁর নামটা যেন কী? মুজিব? কীভাবে উচ্চারণ করো?
কিসিঞ্জার: ইয়াহিয়া বলেছে, সে বাংলাদেশের একজন নেতার সঙ্গে দেখা করতে রাজি। না না না, মুজিব নয়। মুজিবের সঙ্গে দেখা করা ইয়াহিয়ার জন্য হবে আত্মহত্যার শামিল।
নিক্সন: ইন্দিরা গান্ধীকে জানাতে হবে, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যদিও কোনো চুক্তি নেই, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তারা নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ। (ইন্দিরার উদ্দেশে কর্কশ কণ্ঠে) ওল্ড বিচ!
কিসিঞ্জার: আপনাকে প্রকাশ্যে (ইন্দিরাকে) সৌজন্য দেখাতে হবে।...
নিক্সন: তারা বলেছে, তাঁকে (মুজিবকে) ফাঁসিতে ঝোলাবে না-মুজু, মুজু হ্যাঁ, তুমি তাঁর নামটা বলেছ।
কিসিঞ্জার: মুজিব।
নিক্সন: আমি শক্তভাবে (ইন্দিরার সঙ্গে) কথা বলব।
নিক্সন-ইন্দিরা দ্বিতীয় বৈঠকটি হয় ৫ নভেম্বর বিকেলে। বৈঠকের পর নিক্সন কিসিঞ্জারকে বলেন, সে (ইন্দিরা) আমাদের নিয়ে খেলছে। এই নারী আমাদের চুষে নিচ্ছে।
ইয়াহিয়া নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি চাল চাললেন। তিনি নুরুল আমিনকে প্রধানমন্ত্রী এবং ভুট্টোকে উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ করে একধরনের অন্তর্বর্তী অসামরিক সরকার গঠন করলেন। নুরুল আমিন ছিলেন নামমাত্র প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের জনগণ থেকে তখন তিনি পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছিল। ইয়াহিয়া চীনা সমর্থন আদায়ের জন্য তাঁর বিশেষ দূত হিসেবে ভুট্টোকে চীনে পাঠালেন। তাঁর সঙ্গে গেলেন এয়ার মার্শাল রহিম খান এবং চিফ অব জেনারেল স্টাফ গুল হাসান। নভেম্বরের ৬-৮ তারিখে তাঁরা বেইজিংয়ে চীনা নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। চীনা আলোচকদের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের নেতারা ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী চেন ই। তাঁরা পাকিস্তানকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থনের আশ্বাস দিলেও সামরিক সমর্থনের ব্যাপারে কোনো অঙ্গীকার করেননি। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে শীত ক্রমেই জেঁকে বসছে। সিকিম সীমান্তে হিমালয়ে চীনা সেনা সমাবেশ করা এ সময় প্রায় অসম্ভব। সুতরাং চীনা সেনাবাহিনী এই মুহূর্তে কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।
চৌ এন লাই ‘পূর্ব পাকিস্তানের আন্দোলন’ রাজনৈতিকভাবে মীমাংসার ওপর জোর দেন এবং শক্তি প্রয়োগ পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাবে বলে মন্তব্য করেন। ওই সময় পাকিস্তানে একটি গুজব ছড়ানো হয়েছিল যে ভারত পাকিস্তানকে আক্রমণ করলে চীন পাকিস্তানের সাহায্যে এগিয়ে আসবে বলে চীনা নেতারা কথা দিয়েছেন। অথচ এ রকম কিছু আলোচনা হয়নি।
ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) প্রধান কে এফ রুস্তমজির ডায়েরি থেকে জানা যায়, জেনারেল মানেকশ এবং অন্যান্য বাহিনীর প্রধানেরা জানতেন যে যুদ্ধের জন্য তাঁদের তৈরি হতে হবে। কিন্তু তখনো তাঁরা ইন্দিরার মন বুঝে উঠতে পারেননি। ৭ আগস্ট সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের ২০ বছরমেয়াদি ‘মৈত্রী চুক্তি’ সই হয়। আগস্টের শেষ দিকে ইন্দিরা গান্ধী পশ্চিমবঙ্গ সফরে যান। তিনি ঘুরে ঘুরে সামরিক প্রস্তুতি দেখেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর কয়েকটি শিবির ঘুরে দেখেন। তখন পর্যন্ত বিএসএফই মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য দিয়ে আসছিল। সফর শেষে তিনি বিএসএফের ইন্সপেক্টর জেনারেল গোলক মজুমদারকে ডেকে খোলাখুলিভাবে জানতে চান, এই গতিতে চললে ঢাকায় পৌঁছাতে তাদের কত দিন লাগবে? জবাবে গোলক মজুমদার বলেন, ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্য ছাড়া কখনো সম্ভব নয়।’ বিএসএফ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মোকাবিলা করতে পারবে না, ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনীর সমর্থন লাগবে।
নিক্সন: অন্যান্য দেশকে যুক্তরাষ্ট্র যে সাহায্য দেয়, ভারতকে তার চেয়ে বেশি দেওয়া হয়। তারপরও ওরা এটি স্বীকার করে না। জাহান্নামে যাক তারা।
কিসিঞ্জার: আমি রাখঢাক করে বলব না। এই বেজন্মারা আমাদের সঙ্গে চূড়ান্ত রকমের নিষ্ঠুর খেলা খেলছে। দুর্ভিক্ষ ঠেকানো, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সরবরাহ (পূর্ব পাকিস্তানে), অসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠা, সাধারণ ক্ষমা, একতরফা সেনা প্রত্যাহার, কী না আমরা করেছি। অস্ত্র পাঠানোও শেষ হয়ে গেছে।
নিক্সন: আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতাকে ফাঁসি না দেওয়ার ব্যাপারটি পাকিস্তানিরা মেনে নিয়েছে। তাঁর নামটা যেন কী? মুজিব? কীভাবে উচ্চারণ করো?
কিসিঞ্জার: ইয়াহিয়া বলেছে, সে বাংলাদেশের একজন নেতার সঙ্গে দেখা করতে রাজি। না না না, মুজিব নয়। মুজিবের সঙ্গে দেখা করা ইয়াহিয়ার জন্য হবে আত্মহত্যার শামিল।
নিক্সন: ইন্দিরা গান্ধীকে জানাতে হবে, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যদিও কোনো চুক্তি নেই, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তারা নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ। (ইন্দিরার উদ্দেশে কর্কশ কণ্ঠে) ওল্ড বিচ!
কিসিঞ্জার: আপনাকে প্রকাশ্যে (ইন্দিরাকে) সৌজন্য দেখাতে হবে।...
নিক্সন: তারা বলেছে, তাঁকে (মুজিবকে) ফাঁসিতে ঝোলাবে না-মুজু, মুজু হ্যাঁ, তুমি তাঁর নামটা বলেছ।
কিসিঞ্জার: মুজিব।
নিক্সন: আমি শক্তভাবে (ইন্দিরার সঙ্গে) কথা বলব।
নিক্সন-ইন্দিরা দ্বিতীয় বৈঠকটি হয় ৫ নভেম্বর বিকেলে। বৈঠকের পর নিক্সন কিসিঞ্জারকে বলেন, সে (ইন্দিরা) আমাদের নিয়ে খেলছে। এই নারী আমাদের চুষে নিচ্ছে।
ইয়াহিয়া নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি চাল চাললেন। তিনি নুরুল আমিনকে প্রধানমন্ত্রী এবং ভুট্টোকে উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ করে একধরনের অন্তর্বর্তী অসামরিক সরকার গঠন করলেন। নুরুল আমিন ছিলেন নামমাত্র প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের জনগণ থেকে তখন তিনি পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছিল। ইয়াহিয়া চীনা সমর্থন আদায়ের জন্য তাঁর বিশেষ দূত হিসেবে ভুট্টোকে চীনে পাঠালেন। তাঁর সঙ্গে গেলেন এয়ার মার্শাল রহিম খান এবং চিফ অব জেনারেল স্টাফ গুল হাসান। নভেম্বরের ৬-৮ তারিখে তাঁরা বেইজিংয়ে চীনা নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। চীনা আলোচকদের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের নেতারা ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী চেন ই। তাঁরা পাকিস্তানকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থনের আশ্বাস দিলেও সামরিক সমর্থনের ব্যাপারে কোনো অঙ্গীকার করেননি। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে শীত ক্রমেই জেঁকে বসছে। সিকিম সীমান্তে হিমালয়ে চীনা সেনা সমাবেশ করা এ সময় প্রায় অসম্ভব। সুতরাং চীনা সেনাবাহিনী এই মুহূর্তে কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।
চৌ এন লাই ‘পূর্ব পাকিস্তানের আন্দোলন’ রাজনৈতিকভাবে মীমাংসার ওপর জোর দেন এবং শক্তি প্রয়োগ পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাবে বলে মন্তব্য করেন। ওই সময় পাকিস্তানে একটি গুজব ছড়ানো হয়েছিল যে ভারত পাকিস্তানকে আক্রমণ করলে চীন পাকিস্তানের সাহায্যে এগিয়ে আসবে বলে চীনা নেতারা কথা দিয়েছেন। অথচ এ রকম কিছু আলোচনা হয়নি।
ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) প্রধান কে এফ রুস্তমজির ডায়েরি থেকে জানা যায়, জেনারেল মানেকশ এবং অন্যান্য বাহিনীর প্রধানেরা জানতেন যে যুদ্ধের জন্য তাঁদের তৈরি হতে হবে। কিন্তু তখনো তাঁরা ইন্দিরার মন বুঝে উঠতে পারেননি। ৭ আগস্ট সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের ২০ বছরমেয়াদি ‘মৈত্রী চুক্তি’ সই হয়। আগস্টের শেষ দিকে ইন্দিরা গান্ধী পশ্চিমবঙ্গ সফরে যান। তিনি ঘুরে ঘুরে সামরিক প্রস্তুতি দেখেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর কয়েকটি শিবির ঘুরে দেখেন। তখন পর্যন্ত বিএসএফই মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য দিয়ে আসছিল। সফর শেষে তিনি বিএসএফের ইন্সপেক্টর জেনারেল গোলক মজুমদারকে ডেকে খোলাখুলিভাবে জানতে চান, এই গতিতে চললে ঢাকায় পৌঁছাতে তাদের কত দিন লাগবে? জবাবে গোলক মজুমদার বলেন, ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্য ছাড়া কখনো সম্ভব নয়।’ বিএসএফ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মোকাবিলা করতে পারবে না, ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনীর সমর্থন লাগবে।
ইন্দিরা একমত হন। তিনি বলেন, তাঁর চিন্তা হলো পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তানকে কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে। মজুমদার বলেন, এ জন্য জমি ভালো রকম শুকনো থাকতে হবে, যাতে করে ট্যাংক চলতে পারে। তিনি জানতে চান, কখন সবুজ সংকেত পাওয়া যাবে? জবাবে ইন্দিরা বলেন, ‘ধরুন, নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে।’ এপ্রিলেই জেনারেল মানেকশ ইন্দিরাকে জানিয়েছিলেন ২৫ নভেম্বরের আগে তাঁদের প্রস্তুতি শেষ হবে না। ১৫ নভেম্বর জেনারেল জ্যাকব জেনারেল ইন্দরজিৎ সিং গিলকে ব্যক্তিগত এক বার্তায় বলেন, ‘আগের পরিস্থিতি দ্রুত আক্রমণের জন্য তৈরি। বর্ষাকাল শেষ। সেনাবাহিনী তৈরি হওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছে এবং হিমালয়ের ঠান্ডা আবহাওয়া চীনা সেনাদের যেকোনো পদক্ষেপ পর্যুদস্ত করবে।’
আগামীকাল: ভুট্টো ইয়াহিয়াকে নিয়ে খেলছিলেন
মহিউদ্দিন আহমদ: লেখক ও গবেষক।
mohi2005@gmail.com
আগামীকাল: ভুট্টো ইয়াহিয়াকে নিয়ে খেলছিলেন
মহিউদ্দিন আহমদ: লেখক ও গবেষক।
mohi2005@gmail.com
No comments