আমি এখন অনেক সতর্ক -প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
অতীতের
চেয়ে এখন অনেক বেশি সতর্ক বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ ও
গবেষকদের বিশেষ অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এ
কথা বলেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশ-বিদেশে
বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনা ও গবেষণার জন্য বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, জাতীয়
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (এনএসটি) ফেলোশিপ এবং গবেষকদের বিশেষ অনুদান দেয়া হয়।
এরই অংশ হিসেবে গতকাল আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালের ফেলোশিপ ও
অনুদানের চেক স্ব স্ব ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেন।
অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ বিএনপির আমলে বন্ধ করে দেয়ার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার অভিজ্ঞতা আছে, এভাবে কাজ করে গেলেও সরকার পরিবর্তন হলে সেই সরকারের যদি দেশপ্রেম না থাকে, দেশের মানুষের প্রতি যদি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ না থাকে তাহলে যেকোনো সময় যেকোনো কিছু তারা বন্ধ করে দিতে পারে। তাই, আমি এখন অতীতের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক। অনুষ্ঠানে তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গবেষণার জন্য অনেক মেধাবীকে বিদেশে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর অনেকের গবেষণা মাঝপথেই বাতিল করে দেয়। গবেষণা যাতে কেউ বন্ধ করতে না পারে সেজন্য বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপকে ট্রাস্ট ফান্ডে রূপান্তর করা হবে বলে উল্লেখ করেন দেশের সরকার প্রধান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর দেখা গেলো গবেষণা খাতে কোনো বরাদ্দ নেই। সে বছরই গবেষণার জন্য ১২ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ দিয়েছিলাম। এখন যে সারা বছরই তরিতরকারি পাওয়া যাচ্ছে, এটি সে সময়কার বরাদ্দে কৃষি গবেষণার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়, ২০০১ সালে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে সেসব প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছিল। যারা বিদেশে গবেষণা করছিলেন, তাদের গবেষণাও বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে আবার সেসব প্রকল্প চালু করতে হয়েছে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধিসহ দেশের সার্বিক অগ্রগতির বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা একসময় বাংলাদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতো তারা মনে করতো বাংলাদেশ ভিক্ষা চেয়ে চলবে। এখন তারা দেখছে- বাংলাদেশ তা নয়। বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী দেশ। আমাদেরকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। দেশ ও জাতির প্রতি ‘কর্তব্যবোধ, মমত্ববোধ ও ভালোবাসা’ থাকলেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ শুরু করেছি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা একটা টার্নিং পয়েন্ট। এই পদ্মাসেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমাকে, আমার পরিবারকে দুর্নীতিবাজ বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে, দেশকে হেয় করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু পদ্মা সেতুকে আমি যখন চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করলাম, সেখানে দুর্নীতির কোনো কিছু তারা দেখাতে পারলো না।
বাংলাদেশের কেউ জ্বালাও-পোড়াও আর দেখতে চায়না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ হত্যা, শিশু হত্যা, বোমা হামলার কারণে ছাত্রছাত্রী স্কুল-কলেজে যেতে পারবে না- এই দৃশ্য আমরা আর দেখতে চাই না। বাংলাদেশের কেউ এটা চায় না। দেশের সবাই নিরাপদে চলবে, সুন্দরভাবে বাঁচবে- এটাই আমরা চাই। আজকের শিশুরা আগামী দিনের কর্ণধার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেক মেধাবী, আমাদের চাইতেও বেশি মেধাবী। তারা এই যুগের ডিজিটাল বাচ্চা হিসেবে বড় হচ্ছে। শিশুরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবে, উন্নত জীবনধারণ করবে- সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। আজকের যারা শিশু, তারাই আগামী দিনে কর্ণধার হবে। আর সেটা হতে হবে আরও বেশি শিক্ষিত হয়ে, জ্ঞান অর্জন করে।
শিক্ষার্থীদের সবার আগে লেখাপড়া, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা, খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার দিকে মন দেয়ার মাধ্যমে বহুমুখী প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ২০৪১ সালে আমাদের নতুন প্রজন্ম যাতে উন্নত জীবন পায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের বর্তমানকে আমরা উৎসর্গ করেছি। তাই নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক সৃষ্টি হোক, দেশ আরও এগিয়ে যাক- আমরা সেই প্রত্যাশাই করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর শিক্ষানীতির আলোকেই আমরা নতুন শিক্ষানীতি করেছি। শিক্ষাকে বহুমুখীকরণের উদ্যোগও আমরা নিয়েছি। এ লক্ষ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের পাশাপাশি ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি প্রতিষ্ঠা করেছি। তিনি বলেন, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের বিজ্ঞানবিষয়ক লেখাপড়ার আগ্রহ কমে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষার্থীদের সেই আগ্রহ বেড়েছে। উচ্চশিক্ষার জন্য আগে বৃত্তি দেয়া হয়নি। সেই বৃত্তি দেয়ার ব্যবস্থাও করেছি। ২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা স্বতন্ত্র ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নীতি-২০১১ প্রণয়ন করেছি। দুটি নীতিতেই জাতির পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সিরাজুল হক খান। এ বছর ৫০ জন এমএস, ১৬০ জন পিএইচডি, ১১ জন পোস্ট ডক্টোরাল স্টুডেন্ট এবং গবেষককে দেশ-বিদেশে উচ্চ শিক্ষা-গবেষণার জন্য ফেলোশিপ প্রদান করা হয়।
নাশকতা মামলায় জামিনপ্রাপ্তরা নজরদারিতে-প্রধানমন্ত্রী
জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নাশকতার মামলায় যারা জামিন পেয়েছে, তারা যাতে আবারও অনুরূপ অপতৎপরতা চালাতে না পারে, সেজন্য তাদের নিবিড় নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া, পার্বত্য শান্তিচুক্তির সকল ধারা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সামরিক শক্তি দিয়ে নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিক ভাবে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই আমরা পার্বত্য শান্তিচুক্তি করেছিলাম। ইতিমধ্যে অনেক ধারাই বাস্তবায়ন হয়েছে। আগামীতে শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হবে। গতকাল সংসদে প্রশ্নোত্তর-পর্বে তিনি একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন রাঙ্গামাটি থেকে নির্বাচিত ঊষাতন তালুকদার। জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে যাবতীয় ব্যবস্থা আমরা করেছি। যারা চাকরি চেয়েছিল, আমরা তাদের চাকরি দিয়েছি। ভারত থেকে ৬৪ হাজার শরণার্থী ফেরত এনেছি। তাদের জীবন- জীবিকার জন্য যা যা করা দরকার তা আমরা করেছি। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কর্মকর্তাদের সহায়তা পেলে আরও দ্রুত করা সম্ভব হতো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হঠাৎ করেই চুক্তি করেছি, তা নয়। আমি ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর ওই অঞ্চলে যখনই কোনো ঘটনা ঘটেছে আমি তখনই ছুটে গেছি। সমস্যার বিষয়গুলো আমার জানা ছিল, সমাধানের পথ কি তা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করেছি। আমরা সব সময় বলেছি, সমাধান হবে সংবিধানের ভেতরে থেকে। তিনি আরও বলেন, যখন চুক্তি হয় বিএনপি-জামায়াত তার বিরোধিতা করেছিল। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে। উনি তখন ফেনীর সংসদ সদস্য। উনাকে প্রশ্ন করেছিলাম, ফেনী যদি ভারত হয়ে যায়, তাহলে কি উনি ভারতের সংসদে গিয়ে বসবেন। তিনি বলেন, যেদিন অস্ত্র সমর্পণ হয়, সেদিন বিএনপি পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় হরতাল-অবরোধ ডেকে ছিল, যাতে অস্ত্র সমর্পণ না হয়। নিরাপত্তার সকল বাধা উপেক্ষা করে এই ১০ই ফেব্রুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রামে সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। শামসুল হক চৌধুরীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এয়ারপোর্ট করতে হলে, পাহাড় কেটে করতে হবে। সেটা পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য ভালো হবে না। আমরা রাস্তা করে দিচ্ছি, কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বেশি দূরে নয়। প্রশস্ত রাস্তা আছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য রাস্তা দিয়ে চলাই সুন্দর হবে। এয়ারপোর্টের দরকার নেই।
পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হয়নি
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিভিন্ন প্যাকেজের নির্মাণকাজ তদারকির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি স্থগিত করে। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে বিশ্বব্যাংকের সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়। তিনি বলেন, তবে একপর্যায়ে বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে আবারও ফিরে আসার ঘোষণা দিলেও নতুন নতুন শর্তারোপ করে দীর্ঘসূত্রতার পথ অবলম্বন করেছিল। এ কারণে বিশ্বব্যাংকের ঋণ না নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সাহসী ও স্বাধীনচেতা নেতৃত্ব ও দৃঢ় সিদ্ধান্তের ফলেই সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা সম্ভব হয়। এ সেতু নির্মাণে অন্য কোনো দেশ থেকে ঋণ নেয়া হচ্ছে না। সংসদ নেতা আরও বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের আওতায় পদ্মা সেতুতে ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। গ্যাসপ্রাপ্তি ও পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্পের অর্থায়ন প্রাপ্তিসাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাস পাইপলাইন সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও রয়েছে। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহের জন্য পায়রা বন্দরে একটি ল্যান্ডবেসড এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনাও সরকার নিয়েছে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পৃথিবীর বৃহত্তম হাইওয়ে সেতুর মধ্যে (ভায়াডাক্টসহ) পদ্মা সেতুর অবস্থান ২৫তম। তবে নদীর ওপর নির্মিত সেতুর মধ্যে এ সেতুর অবস্থান প্রথম এবং ফাউন্ডেশনের গভীরতার দিক থেকেও এ সেতুর অবস্থান প্রথম।
নাশকতা মামলায় জামিনপ্রাপ্তরা নজরদারিতে
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নাশকতার মামলায় যারা জামিন পেয়েছে, তারা যাতে আবারও অনুরূপ অপতৎপরতা চালাতে না পারে, সেজন্য তাদের নিবিড় নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া বিদেশি নাগরিকদের বসবাসের এলাকা ও চলাচলের রাস্তাগুলোতে গোয়েন্দা কার্যক্রম অধিকতর জোরদার করা হয়েছে। ডিপ্লোমেটিক এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ চলমান টহল আরও নিবিড় ও চেকপোস্ট ডিউটি জোরদার করা হয়েছে। তিনি জানান, নিরাপত্তা ঝুঁকি পর্যালোচনা করে জনসাধারণের নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা নিশ্চিতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পুলিশের মাধ্যমে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ জনসাধারণের সম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিটি অভিযোগ যথাযথভাবে তদন্ত করে অভিযোগের গুরুত্বানুসারে চাকরি থেকে বরখাস্তসহ বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে বলেও তিনি সংসদকে জানান।
অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ বিএনপির আমলে বন্ধ করে দেয়ার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার অভিজ্ঞতা আছে, এভাবে কাজ করে গেলেও সরকার পরিবর্তন হলে সেই সরকারের যদি দেশপ্রেম না থাকে, দেশের মানুষের প্রতি যদি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ না থাকে তাহলে যেকোনো সময় যেকোনো কিছু তারা বন্ধ করে দিতে পারে। তাই, আমি এখন অতীতের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক। অনুষ্ঠানে তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গবেষণার জন্য অনেক মেধাবীকে বিদেশে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর অনেকের গবেষণা মাঝপথেই বাতিল করে দেয়। গবেষণা যাতে কেউ বন্ধ করতে না পারে সেজন্য বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপকে ট্রাস্ট ফান্ডে রূপান্তর করা হবে বলে উল্লেখ করেন দেশের সরকার প্রধান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর দেখা গেলো গবেষণা খাতে কোনো বরাদ্দ নেই। সে বছরই গবেষণার জন্য ১২ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ দিয়েছিলাম। এখন যে সারা বছরই তরিতরকারি পাওয়া যাচ্ছে, এটি সে সময়কার বরাদ্দে কৃষি গবেষণার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়, ২০০১ সালে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে সেসব প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছিল। যারা বিদেশে গবেষণা করছিলেন, তাদের গবেষণাও বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে আবার সেসব প্রকল্প চালু করতে হয়েছে।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধিসহ দেশের সার্বিক অগ্রগতির বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা একসময় বাংলাদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতো তারা মনে করতো বাংলাদেশ ভিক্ষা চেয়ে চলবে। এখন তারা দেখছে- বাংলাদেশ তা নয়। বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী দেশ। আমাদেরকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। দেশ ও জাতির প্রতি ‘কর্তব্যবোধ, মমত্ববোধ ও ভালোবাসা’ থাকলেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ শুরু করেছি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা একটা টার্নিং পয়েন্ট। এই পদ্মাসেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমাকে, আমার পরিবারকে দুর্নীতিবাজ বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে, দেশকে হেয় করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু পদ্মা সেতুকে আমি যখন চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করলাম, সেখানে দুর্নীতির কোনো কিছু তারা দেখাতে পারলো না।
বাংলাদেশের কেউ জ্বালাও-পোড়াও আর দেখতে চায়না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ হত্যা, শিশু হত্যা, বোমা হামলার কারণে ছাত্রছাত্রী স্কুল-কলেজে যেতে পারবে না- এই দৃশ্য আমরা আর দেখতে চাই না। বাংলাদেশের কেউ এটা চায় না। দেশের সবাই নিরাপদে চলবে, সুন্দরভাবে বাঁচবে- এটাই আমরা চাই। আজকের শিশুরা আগামী দিনের কর্ণধার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেক মেধাবী, আমাদের চাইতেও বেশি মেধাবী। তারা এই যুগের ডিজিটাল বাচ্চা হিসেবে বড় হচ্ছে। শিশুরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবে, উন্নত জীবনধারণ করবে- সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। আজকের যারা শিশু, তারাই আগামী দিনে কর্ণধার হবে। আর সেটা হতে হবে আরও বেশি শিক্ষিত হয়ে, জ্ঞান অর্জন করে।
শিক্ষার্থীদের সবার আগে লেখাপড়া, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা, খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার দিকে মন দেয়ার মাধ্যমে বহুমুখী প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ২০৪১ সালে আমাদের নতুন প্রজন্ম যাতে উন্নত জীবন পায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের বর্তমানকে আমরা উৎসর্গ করেছি। তাই নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক সৃষ্টি হোক, দেশ আরও এগিয়ে যাক- আমরা সেই প্রত্যাশাই করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর শিক্ষানীতির আলোকেই আমরা নতুন শিক্ষানীতি করেছি। শিক্ষাকে বহুমুখীকরণের উদ্যোগও আমরা নিয়েছি। এ লক্ষ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের পাশাপাশি ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি প্রতিষ্ঠা করেছি। তিনি বলেন, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের বিজ্ঞানবিষয়ক লেখাপড়ার আগ্রহ কমে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষার্থীদের সেই আগ্রহ বেড়েছে। উচ্চশিক্ষার জন্য আগে বৃত্তি দেয়া হয়নি। সেই বৃত্তি দেয়ার ব্যবস্থাও করেছি। ২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা স্বতন্ত্র ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নীতি-২০১১ প্রণয়ন করেছি। দুটি নীতিতেই জাতির পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সিরাজুল হক খান। এ বছর ৫০ জন এমএস, ১৬০ জন পিএইচডি, ১১ জন পোস্ট ডক্টোরাল স্টুডেন্ট এবং গবেষককে দেশ-বিদেশে উচ্চ শিক্ষা-গবেষণার জন্য ফেলোশিপ প্রদান করা হয়।
নাশকতা মামলায় জামিনপ্রাপ্তরা নজরদারিতে-প্রধানমন্ত্রী
জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নাশকতার মামলায় যারা জামিন পেয়েছে, তারা যাতে আবারও অনুরূপ অপতৎপরতা চালাতে না পারে, সেজন্য তাদের নিবিড় নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া, পার্বত্য শান্তিচুক্তির সকল ধারা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সামরিক শক্তি দিয়ে নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিক ভাবে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই আমরা পার্বত্য শান্তিচুক্তি করেছিলাম। ইতিমধ্যে অনেক ধারাই বাস্তবায়ন হয়েছে। আগামীতে শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হবে। গতকাল সংসদে প্রশ্নোত্তর-পর্বে তিনি একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন রাঙ্গামাটি থেকে নির্বাচিত ঊষাতন তালুকদার। জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে যাবতীয় ব্যবস্থা আমরা করেছি। যারা চাকরি চেয়েছিল, আমরা তাদের চাকরি দিয়েছি। ভারত থেকে ৬৪ হাজার শরণার্থী ফেরত এনেছি। তাদের জীবন- জীবিকার জন্য যা যা করা দরকার তা আমরা করেছি। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কর্মকর্তাদের সহায়তা পেলে আরও দ্রুত করা সম্ভব হতো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হঠাৎ করেই চুক্তি করেছি, তা নয়। আমি ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর ওই অঞ্চলে যখনই কোনো ঘটনা ঘটেছে আমি তখনই ছুটে গেছি। সমস্যার বিষয়গুলো আমার জানা ছিল, সমাধানের পথ কি তা নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করেছি। আমরা সব সময় বলেছি, সমাধান হবে সংবিধানের ভেতরে থেকে। তিনি আরও বলেন, যখন চুক্তি হয় বিএনপি-জামায়াত তার বিরোধিতা করেছিল। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে। উনি তখন ফেনীর সংসদ সদস্য। উনাকে প্রশ্ন করেছিলাম, ফেনী যদি ভারত হয়ে যায়, তাহলে কি উনি ভারতের সংসদে গিয়ে বসবেন। তিনি বলেন, যেদিন অস্ত্র সমর্পণ হয়, সেদিন বিএনপি পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় হরতাল-অবরোধ ডেকে ছিল, যাতে অস্ত্র সমর্পণ না হয়। নিরাপত্তার সকল বাধা উপেক্ষা করে এই ১০ই ফেব্রুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রামে সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। শামসুল হক চৌধুরীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এয়ারপোর্ট করতে হলে, পাহাড় কেটে করতে হবে। সেটা পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য ভালো হবে না। আমরা রাস্তা করে দিচ্ছি, কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বেশি দূরে নয়। প্রশস্ত রাস্তা আছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য রাস্তা দিয়ে চলাই সুন্দর হবে। এয়ারপোর্টের দরকার নেই।
পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হয়নি
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিভিন্ন প্যাকেজের নির্মাণকাজ তদারকির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি স্থগিত করে। কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে বিশ্বব্যাংকের সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়। তিনি বলেন, তবে একপর্যায়ে বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে আবারও ফিরে আসার ঘোষণা দিলেও নতুন নতুন শর্তারোপ করে দীর্ঘসূত্রতার পথ অবলম্বন করেছিল। এ কারণে বিশ্বব্যাংকের ঋণ না নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সাহসী ও স্বাধীনচেতা নেতৃত্ব ও দৃঢ় সিদ্ধান্তের ফলেই সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা সম্ভব হয়। এ সেতু নির্মাণে অন্য কোনো দেশ থেকে ঋণ নেয়া হচ্ছে না। সংসদ নেতা আরও বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের আওতায় পদ্মা সেতুতে ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। গ্যাসপ্রাপ্তি ও পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্পের অর্থায়ন প্রাপ্তিসাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাস পাইপলাইন সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও রয়েছে। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহের জন্য পায়রা বন্দরে একটি ল্যান্ডবেসড এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনাও সরকার নিয়েছে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পৃথিবীর বৃহত্তম হাইওয়ে সেতুর মধ্যে (ভায়াডাক্টসহ) পদ্মা সেতুর অবস্থান ২৫তম। তবে নদীর ওপর নির্মিত সেতুর মধ্যে এ সেতুর অবস্থান প্রথম এবং ফাউন্ডেশনের গভীরতার দিক থেকেও এ সেতুর অবস্থান প্রথম।
নাশকতা মামলায় জামিনপ্রাপ্তরা নজরদারিতে
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নাশকতার মামলায় যারা জামিন পেয়েছে, তারা যাতে আবারও অনুরূপ অপতৎপরতা চালাতে না পারে, সেজন্য তাদের নিবিড় নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া বিদেশি নাগরিকদের বসবাসের এলাকা ও চলাচলের রাস্তাগুলোতে গোয়েন্দা কার্যক্রম অধিকতর জোরদার করা হয়েছে। ডিপ্লোমেটিক এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ চলমান টহল আরও নিবিড় ও চেকপোস্ট ডিউটি জোরদার করা হয়েছে। তিনি জানান, নিরাপত্তা ঝুঁকি পর্যালোচনা করে জনসাধারণের নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা নিশ্চিতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পুলিশের মাধ্যমে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ জনসাধারণের সম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিটি অভিযোগ যথাযথভাবে তদন্ত করে অভিযোগের গুরুত্বানুসারে চাকরি থেকে বরখাস্তসহ বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে বলেও তিনি সংসদকে জানান।
No comments