বিরোধীদের ‘দমিয়ে রাখায়’ সন্ত্রাসীদের বিস্তার হতে পারে -মার্কিন গোয়েন্দা–প্রধানের শঙ্কা
মার্কিন
গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক জেমস ক্ল্যাপার বলেছেন,
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ‘দমিয়ে রাখতে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেষ্টা
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তৎপরতা বাড়িয়ে দিতে পারে। বার্তা
সংস্থা এপি জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটে বিশ্বজুড়ে
নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ে শুনানিতে এ শঙ্কার কথা বলেন ক্ল্যাপার।
এপির খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে কয়েকজন বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় বিরোধী দল বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীকে দায়ী করে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এ তৎপরতা বলে মনে করা হয়। তবে সরকারি এ অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জেমস ক্ল্যাপার।
সিনেটে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে ক্ল্যাপার উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিক এবং সংখ্যালঘুদের ওপর ১১টি বড় ধরনের হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এ ছাড়া ২০১৩ সাল থেকে ১১ জন প্রগতিশীল লেখক এবং ব্লগার হত্যার দায় স্বীকার করেছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এবং আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা (একিউআইএস)।
এপির খবরে বলা হয়, বর্তমান সরকার বাংলাদেশে আইএসের উপস্থিতির কথা স্বীকার করে না। বরং তারা এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দেশীয় ইসলামি গোষ্ঠী এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দায়ী করে।
এইচ টি ইমামের সমালোচনা: জেমস ক্ল্যাপারের এ বক্তব্যকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ‘অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত’ আখ্যায়িত করেছেন। বিবিসি বাংলাকে গতকাল সন্ধ্যায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘আমরা মনে করি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এ ধরনের উদ্ধৃতি করাটা সৌজন্যমূলকও নয়। বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অপজিশনকে (বিরোধীদের) কোনোভাবেই আন্ডারমাইন (দমিয়ে রাখা) করছেন না। যদি করতেন, তাহলে বিএনপি কিংবা অন্যান্য অপজিশন যাঁরা আছেন, তাঁরা প্রকাশ্যে সভা করতে পারতেন না। তাঁরা নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করতে পারতেন না।’
আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বাস্তবতা স্বীকার করেন কি না—বিবিসির এ প্রশ্নের জবাবে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিমসহ সবগুলো জঙ্গি দলের যদি গোড়ায় যান তাহলে দেখবেন, প্রত্যেকটার উৎপত্তিই হচ্ছে জামায়াত।’
বিশ্লেষকদের কথা: এ প্রসঙ্গে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বিবিসিকে বলেন, বিভাজনের রাজনীতির কারণে স্থানীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো তাদের তৎপরতা বিস্তৃত করার চেষ্টা করছে। এই গোষ্ঠীগুলো আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলোকে অনুসরণ করতে পারে বলে তাঁর ধারণা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কিছু একটা ঘটনা ঘটলেই বিএনপির দিকে তাক করা হয়, জামায়াতের দিকে তাক করা হয়। আমি ঠিক এভাবে বিষয়টাকে দেখতে চাই না। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, কিছুটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জামায়াত জড়িয়ে গেছে। ফলে এটা সরাসরিভাবে না বললেও, কিছু কিছু কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্ক যে আছে তা তো অস্বীকার করা যাবে না। তবে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কতটা জড়িত, সে নিয়ে প্রশ্ন আছে। এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলবেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম অবশ্য ক্ল্যাপারের বক্তব্য মানতে রাজি নন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ক্ল্যাপারের বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের যে ভূমিকা, সারা বিশ্বে জঙ্গিবাদ উৎসাহিত করতে তা আড়াল করা হয়েছে।
মার্কিন দূতাবাসের ভাষ্য: এদিকে মার্কিন শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা জেমস ক্ল্যাপারের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট গতকাল প্রথম আলোকে ই-মেইল বার্তায় বলেন, মার্কিন সিনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির অনুরোধে জেমস ক্ল্যাপার বৈশ্বিক হুমকির বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন। ক্ল্যাপারের ওই বিবৃতিতে পরামর্শমূলক তথ্য এবং আলোচনার জন্য বিশ্লেষণের উপাদান রয়েছে। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা, এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের ভাষ্য এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই এটি দেওয়া হয়েছে।
বার্নিকাট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে। বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স’ (আদৌ বরদাশত না করা) নীতিকে যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপকভাবে সমর্থন করে। যেসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাংলাদেশকে তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশও তাদের লক্ষ্যবস্তু। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, সহিষ্ণুতা, পরিমিতিবোধ এবং ধর্মের শান্তিপূর্ণ চর্চা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বড় শক্তি।
এপির খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে কয়েকজন বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনায় বিরোধী দল বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীকে দায়ী করে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এ তৎপরতা বলে মনে করা হয়। তবে সরকারি এ অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জেমস ক্ল্যাপার।
সিনেটে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে ক্ল্যাপার উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিক এবং সংখ্যালঘুদের ওপর ১১টি বড় ধরনের হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এ ছাড়া ২০১৩ সাল থেকে ১১ জন প্রগতিশীল লেখক এবং ব্লগার হত্যার দায় স্বীকার করেছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এবং আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা (একিউআইএস)।
এপির খবরে বলা হয়, বর্তমান সরকার বাংলাদেশে আইএসের উপস্থিতির কথা স্বীকার করে না। বরং তারা এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দেশীয় ইসলামি গোষ্ঠী এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দায়ী করে।
এইচ টি ইমামের সমালোচনা: জেমস ক্ল্যাপারের এ বক্তব্যকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ‘অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত’ আখ্যায়িত করেছেন। বিবিসি বাংলাকে গতকাল সন্ধ্যায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘আমরা মনে করি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এ ধরনের উদ্ধৃতি করাটা সৌজন্যমূলকও নয়। বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অপজিশনকে (বিরোধীদের) কোনোভাবেই আন্ডারমাইন (দমিয়ে রাখা) করছেন না। যদি করতেন, তাহলে বিএনপি কিংবা অন্যান্য অপজিশন যাঁরা আছেন, তাঁরা প্রকাশ্যে সভা করতে পারতেন না। তাঁরা নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করতে পারতেন না।’
আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বাস্তবতা স্বীকার করেন কি না—বিবিসির এ প্রশ্নের জবাবে এইচ টি ইমাম বলেন, ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিমসহ সবগুলো জঙ্গি দলের যদি গোড়ায় যান তাহলে দেখবেন, প্রত্যেকটার উৎপত্তিই হচ্ছে জামায়াত।’
বিশ্লেষকদের কথা: এ প্রসঙ্গে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বিবিসিকে বলেন, বিভাজনের রাজনীতির কারণে স্থানীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো তাদের তৎপরতা বিস্তৃত করার চেষ্টা করছে। এই গোষ্ঠীগুলো আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলোকে অনুসরণ করতে পারে বলে তাঁর ধারণা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কিছু একটা ঘটনা ঘটলেই বিএনপির দিকে তাক করা হয়, জামায়াতের দিকে তাক করা হয়। আমি ঠিক এভাবে বিষয়টাকে দেখতে চাই না। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, কিছুটা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জামায়াত জড়িয়ে গেছে। ফলে এটা সরাসরিভাবে না বললেও, কিছু কিছু কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্ক যে আছে তা তো অস্বীকার করা যাবে না। তবে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কতটা জড়িত, সে নিয়ে প্রশ্ন আছে। এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলবেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম অবশ্য ক্ল্যাপারের বক্তব্য মানতে রাজি নন। তিনি বিবিসিকে বলেন, ক্ল্যাপারের বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের যে ভূমিকা, সারা বিশ্বে জঙ্গিবাদ উৎসাহিত করতে তা আড়াল করা হয়েছে।
মার্কিন দূতাবাসের ভাষ্য: এদিকে মার্কিন শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা জেমস ক্ল্যাপারের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট গতকাল প্রথম আলোকে ই-মেইল বার্তায় বলেন, মার্কিন সিনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির অনুরোধে জেমস ক্ল্যাপার বৈশ্বিক হুমকির বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন। ক্ল্যাপারের ওই বিবৃতিতে পরামর্শমূলক তথ্য এবং আলোচনার জন্য বিশ্লেষণের উপাদান রয়েছে। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা, এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের ভাষ্য এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই এটি দেওয়া হয়েছে।
বার্নিকাট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে। বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স’ (আদৌ বরদাশত না করা) নীতিকে যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপকভাবে সমর্থন করে। যেসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাংলাদেশকে তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশও তাদের লক্ষ্যবস্তু। বাংলাদেশের গণতন্ত্র, সহিষ্ণুতা, পরিমিতিবোধ এবং ধর্মের শান্তিপূর্ণ চর্চা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বড় শক্তি।
No comments