মেয়াদোত্তীর্ণ অটোরিকশার ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব by আনোয়ার হোসেন
ঢাকায়
চলাচলরত প্রায় ১২ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা মেয়াদোত্তীর্ণ। মিটার
ব্যবহারের শর্ত অমান্য করে এসব অটোরিকশার চালকেরা যাত্রীদের গলা কাটছেন।
চলছেন নিজেদের ইচ্ছায়। এমন পরিস্থিতিতে অটোরিকশার ভাড়া সরকারিভাবে আবারও
বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ব্যয় বিশ্লেষণে এসব অটোরিকশার দাম গতবারের চেয়ে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা বেশি এবং অন্য কয়েকটি খরচ দেখিয়ে যাত্রী ভাড়া ও মালিকের জমা বাড়ানোর এই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে। আট সদস্যের যে কমিটি এই প্রস্তাব করেছে, তাতে কোনো যাত্রী প্রতিনিধি নেই।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সূত্র বলেছে, নতুন করে প্রথম দুই কিলোমিটারের জন্য ভাড়ার প্রস্তাব করা হয়েছে ৪০ টাকা। বর্তমানে তা ২৫ টাকা। পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে ১২ টাকা। বর্তমানে প্রতি কিলোমিটারের সরকার-নির্ধারিত ভাড়া ৭ টাকা ৬৪ পয়সা। এ ছাড়া প্রতি মিনিট ওয়েটিংয়ের (যাত্রাবিরতি, সিগন্যাল ও যানজট) জন্য ৬০ পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
বর্তমানে অটোরিকশার দৈনিক জমা (মালিকের আয়) কাগজে-কলমে ৬০০ টাকা। তবে মালিকেরা দুই পালায় ভাড়া দিয়ে জমা বাবদ আয় করছেন গড়ে ১ হাজার ২০০ টাকা। নতুন প্রস্তাবে জমা বৃদ্ধি করে ৮০০ টাকা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এই ভাড়ার হার নির্ধারণ করেছে বিআরটিএর গঠিত একটি কমিটি। প্রস্তাবটি সম্প্রতি অনুমোদনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
বিআরটিএর সূত্র বলেছে, ভাড়া বৃদ্ধির আগে প্রতিবারই ব্যয় বিশ্লেষণের নামে আনুষ্ঠানিকতা রক্ষা করা হয়। এতে মালিক-শ্রমিক নেতাদের দাবিই মুখ্য হয়ে ওঠে। এবারের আট সদস্যবিশিষ্ট ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটির প্রধান বিআরটিএর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। কমিটিতে অটোরিকশার মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা আছেন চারজন। বাকি তিন সদস্যের একজন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপসচিব এবং আরেকজন ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রতিনিধি। কমিটির সদস্যসচিব হচ্ছেন বিআরটিএর পরিচালক (প্রকৌশল)। কিন্তু কমিটিতে যাত্রীদের কোনো প্রতিনিধি নেই। অভিযোগ উঠেছে, মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের চাহিদা মেনে ব্যয় বিশ্লেষণে অযৌক্তিক ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ কারণে অটোরিকশার প্রস্তাবিত ভাড়া ও মালিকের দৈনিক জমার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
২০০২ সাল থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালুর পর এর আগে অন্তত ছয়বার এভাবে ব্যয় বিশ্লেষণ করে মালিকের জমা ও যাত্রী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু মালিক-শ্রমিকেরা কখনোই তা মানেননি।
ভুক্তভোগী ও বিআরটিএর একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, নতুন করে সরকার ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দিলে বর্তমানে নেওয়া বাড়তি ভাড়ার সঙ্গে নতুন করে আরও কিছু যোগ করে যাত্রীদের অতিরিক্ত গলা কাটা শুরু করবেন চালকেরা। মালিকেরাও তাঁদের মনগড়া জমা বাড়াবেন। অতীতেও চালক-মালিকেরা বিআরটিএর সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেরা ভাড়া ও জমার হার ঠিক করে পরে ইচ্ছামতো বাড়িয়েছেন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, আগে মিটার ঠিক করে বর্তমান ভাড়া বাস্তবায়ন করতে হবে। এরপর গণশুনানি করে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে। ওই কমিটিতে অবশ্যই যাত্রীদের প্রতিনিধি রাখতে হবে। তিনি বলেন, কমিটি যে ব্যয় বিশ্লেষণ করেছে, তার অনেক সূচকই ভুল। কারণ, মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো যানবাহনের মূল্য বাড়তে পারে না। এ ছাড়া হুট করে অটোরিকশার ভাড়া বাড়ালে তা অন্য যানবাহনের ভাড়ার ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, শৃঙ্খলা আনার লক্ষ্যেই ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন তো চালক-মালিকেরা সরকারি সিদ্ধান্ত মানছেন না। মালিক-শ্রমিক নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জমা ও ভাড়া বৃদ্ধি পেলে তাঁরা মানবেন।
অবশ্য অতীতের প্রতিটি ব্যয় বিশ্লেষণ এবং সেই অনুযায়ী ভাড়া বৃদ্ধির আগে মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধিরা একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটিতে মালিক-শ্রমিকদের আধিক্য ও যাত্রী প্রতিনিধি না থাকার বিষয়ে বিআরটিএর চেয়ারম্যান বলেন, কমিটি মন্ত্রণালয় করে দেয়। আর মালিক-শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা ঠিক না।
দেখা গেছে, অটোরিকশার চালকেরা এখন নির্ধারিত হারের চেয়ে দ্বিগুণ থেকে চার গুণ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন। এমনকি চুক্তিতে গেলেও চালকেরা যান তাঁদের ইচ্ছা অনুযায়ী গন্তব্যে। উল্টো যাত্রীদের কাছে চালকের আবদার, ‘পুলিশ ধরলে বইলেন মিটারে যাচ্ছি।’
বিশ্লেষণে গোঁজামিল : সর্বশেষ অটোরিকশার ভাড়া বৃদ্ধি করা হয় ২০১১ সালে। সে সময় একটি অটোরিকশার স্যালভেজ ভ্যালু বা মেয়াদ শেষে এর মূল্য ধরা হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু এবার অটোরিকশার মূল্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। মেয়াদোত্তীর্ণ অটোরিকশার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এভাবে অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে অটোরিকশার ভাড়া ও জমা দুটিই বেড়ে যাচ্ছে।
সূত্র বলেছে, অটোরিকশার মূল্যের সঙ্গে সুদ যোগ করা হয়েছে ৪৬ হাজার টাকা। যেখানে মালিকের বিনিয়োগ নেই, সেখানে কীভাবে ব্যাংক ঋণের সুদ যুক্ত হয়, তা ব্যাখ্যা করা হয়নি। নিবন্ধন, রুট পারমিট, রোড ট্যাক্স ও ইনস্যুরেন্স বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। কিন্তু পুরোনো অটোরিকশার কীভাবে নিবন্ধন খরচ হয়, তা নিয়ে সমালোচনা আছে বিআরটিএতেই। দুর্ঘটনা ও আপৎকালীন কারণে আকস্মিক খরচ হিসেবে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০ হাজার টাকা, যা রাজধানী ঢাকার মতো শহরে বেমানান।
এসব অসংগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, বাস্তবতা মেনেই ব্যয় বিশ্লেষণ করতে হয়। আগের ব্যয় বিশ্লেষণ সম্পর্কে তাঁর ধারণা নেই।
পুরোনো অটোরিকশা মেয়াদোত্তীর্ণ: অটোরিকশা নামানোর সময় এর বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ বছর। তা শেষ হওয়ার পর আরও দুই বছর বৃদ্ধি করা হয়। অর্থাৎ ঢাকায় চলাচলরত প্রায় ১২ হাজার অটোরিকশার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে গত বছরের ডিসেম্বরে।
মালিকদের দাবির মুখে গত বছর অটোরিকশার মেয়াদ তিন বছর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়। তবে উচ্চ আদালতে মামলা হলে এই সিদ্ধান্ত আটকে যায়। ফলে এখন যেসব অটোরিকশা চলছে, এর বেশির ভাগই অবৈধ। সাম্প্রতিক সময়ে মিশুকের পরিবর্তে প্রায় ৫০০ অটোরিকশা নামানো হয়েছে।
ব্যয় বিশ্লেষণে এসব অটোরিকশার দাম গতবারের চেয়ে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা বেশি এবং অন্য কয়েকটি খরচ দেখিয়ে যাত্রী ভাড়া ও মালিকের জমা বাড়ানোর এই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে। আট সদস্যের যে কমিটি এই প্রস্তাব করেছে, তাতে কোনো যাত্রী প্রতিনিধি নেই।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সূত্র বলেছে, নতুন করে প্রথম দুই কিলোমিটারের জন্য ভাড়ার প্রস্তাব করা হয়েছে ৪০ টাকা। বর্তমানে তা ২৫ টাকা। পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে ১২ টাকা। বর্তমানে প্রতি কিলোমিটারের সরকার-নির্ধারিত ভাড়া ৭ টাকা ৬৪ পয়সা। এ ছাড়া প্রতি মিনিট ওয়েটিংয়ের (যাত্রাবিরতি, সিগন্যাল ও যানজট) জন্য ৬০ পয়সা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
বর্তমানে অটোরিকশার দৈনিক জমা (মালিকের আয়) কাগজে-কলমে ৬০০ টাকা। তবে মালিকেরা দুই পালায় ভাড়া দিয়ে জমা বাবদ আয় করছেন গড়ে ১ হাজার ২০০ টাকা। নতুন প্রস্তাবে জমা বৃদ্ধি করে ৮০০ টাকা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এই ভাড়ার হার নির্ধারণ করেছে বিআরটিএর গঠিত একটি কমিটি। প্রস্তাবটি সম্প্রতি অনুমোদনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
বিআরটিএর সূত্র বলেছে, ভাড়া বৃদ্ধির আগে প্রতিবারই ব্যয় বিশ্লেষণের নামে আনুষ্ঠানিকতা রক্ষা করা হয়। এতে মালিক-শ্রমিক নেতাদের দাবিই মুখ্য হয়ে ওঠে। এবারের আট সদস্যবিশিষ্ট ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটির প্রধান বিআরটিএর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। কমিটিতে অটোরিকশার মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা আছেন চারজন। বাকি তিন সদস্যের একজন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপসচিব এবং আরেকজন ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের প্রতিনিধি। কমিটির সদস্যসচিব হচ্ছেন বিআরটিএর পরিচালক (প্রকৌশল)। কিন্তু কমিটিতে যাত্রীদের কোনো প্রতিনিধি নেই। অভিযোগ উঠেছে, মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের চাহিদা মেনে ব্যয় বিশ্লেষণে অযৌক্তিক ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ কারণে অটোরিকশার প্রস্তাবিত ভাড়া ও মালিকের দৈনিক জমার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
২০০২ সাল থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালুর পর এর আগে অন্তত ছয়বার এভাবে ব্যয় বিশ্লেষণ করে মালিকের জমা ও যাত্রী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু মালিক-শ্রমিকেরা কখনোই তা মানেননি।
ভুক্তভোগী ও বিআরটিএর একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, নতুন করে সরকার ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দিলে বর্তমানে নেওয়া বাড়তি ভাড়ার সঙ্গে নতুন করে আরও কিছু যোগ করে যাত্রীদের অতিরিক্ত গলা কাটা শুরু করবেন চালকেরা। মালিকেরাও তাঁদের মনগড়া জমা বাড়াবেন। অতীতেও চালক-মালিকেরা বিআরটিএর সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেরা ভাড়া ও জমার হার ঠিক করে পরে ইচ্ছামতো বাড়িয়েছেন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, আগে মিটার ঠিক করে বর্তমান ভাড়া বাস্তবায়ন করতে হবে। এরপর গণশুনানি করে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে। ওই কমিটিতে অবশ্যই যাত্রীদের প্রতিনিধি রাখতে হবে। তিনি বলেন, কমিটি যে ব্যয় বিশ্লেষণ করেছে, তার অনেক সূচকই ভুল। কারণ, মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো যানবাহনের মূল্য বাড়তে পারে না। এ ছাড়া হুট করে অটোরিকশার ভাড়া বাড়ালে তা অন্য যানবাহনের ভাড়ার ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, শৃঙ্খলা আনার লক্ষ্যেই ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন তো চালক-মালিকেরা সরকারি সিদ্ধান্ত মানছেন না। মালিক-শ্রমিক নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জমা ও ভাড়া বৃদ্ধি পেলে তাঁরা মানবেন।
অবশ্য অতীতের প্রতিটি ব্যয় বিশ্লেষণ এবং সেই অনুযায়ী ভাড়া বৃদ্ধির আগে মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধিরা একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটিতে মালিক-শ্রমিকদের আধিক্য ও যাত্রী প্রতিনিধি না থাকার বিষয়ে বিআরটিএর চেয়ারম্যান বলেন, কমিটি মন্ত্রণালয় করে দেয়। আর মালিক-শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা ঠিক না।
দেখা গেছে, অটোরিকশার চালকেরা এখন নির্ধারিত হারের চেয়ে দ্বিগুণ থেকে চার গুণ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন। এমনকি চুক্তিতে গেলেও চালকেরা যান তাঁদের ইচ্ছা অনুযায়ী গন্তব্যে। উল্টো যাত্রীদের কাছে চালকের আবদার, ‘পুলিশ ধরলে বইলেন মিটারে যাচ্ছি।’
বিশ্লেষণে গোঁজামিল : সর্বশেষ অটোরিকশার ভাড়া বৃদ্ধি করা হয় ২০১১ সালে। সে সময় একটি অটোরিকশার স্যালভেজ ভ্যালু বা মেয়াদ শেষে এর মূল্য ধরা হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু এবার অটোরিকশার মূল্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। মেয়াদোত্তীর্ণ অটোরিকশার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এভাবে অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে অটোরিকশার ভাড়া ও জমা দুটিই বেড়ে যাচ্ছে।
সূত্র বলেছে, অটোরিকশার মূল্যের সঙ্গে সুদ যোগ করা হয়েছে ৪৬ হাজার টাকা। যেখানে মালিকের বিনিয়োগ নেই, সেখানে কীভাবে ব্যাংক ঋণের সুদ যুক্ত হয়, তা ব্যাখ্যা করা হয়নি। নিবন্ধন, রুট পারমিট, রোড ট্যাক্স ও ইনস্যুরেন্স বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। কিন্তু পুরোনো অটোরিকশার কীভাবে নিবন্ধন খরচ হয়, তা নিয়ে সমালোচনা আছে বিআরটিএতেই। দুর্ঘটনা ও আপৎকালীন কারণে আকস্মিক খরচ হিসেবে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০ হাজার টাকা, যা রাজধানী ঢাকার মতো শহরে বেমানান।
এসব অসংগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, বাস্তবতা মেনেই ব্যয় বিশ্লেষণ করতে হয়। আগের ব্যয় বিশ্লেষণ সম্পর্কে তাঁর ধারণা নেই।
পুরোনো অটোরিকশা মেয়াদোত্তীর্ণ: অটোরিকশা নামানোর সময় এর বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ বছর। তা শেষ হওয়ার পর আরও দুই বছর বৃদ্ধি করা হয়। অর্থাৎ ঢাকায় চলাচলরত প্রায় ১২ হাজার অটোরিকশার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে গত বছরের ডিসেম্বরে।
মালিকদের দাবির মুখে গত বছর অটোরিকশার মেয়াদ তিন বছর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়। তবে উচ্চ আদালতে মামলা হলে এই সিদ্ধান্ত আটকে যায়। ফলে এখন যেসব অটোরিকশা চলছে, এর বেশির ভাগই অবৈধ। সাম্প্রতিক সময়ে মিশুকের পরিবর্তে প্রায় ৫০০ অটোরিকশা নামানো হয়েছে।
No comments