পুরাকীর্তি- খাঞ্জালি মসজিদ by মাসুদ আলম
যশোরের অভয়নগর উপজেলার শুভরাড়া গ্রামের ভৈরব নদের তীরে খাঞ্জালি মসজিদ l ছবি: প্রথম আলো |
কারুকার্য
ও নির্মাণশৈলী বিবেচনায় স্থাপত্যশিল্পের এক অনন্য নিদর্শন খাঞ্জালি মসজিদ।
অবস্থান যশোরের অভয়নগর উপজেলার শুভরাড়া গ্রামে ভৈরব নদের তীরে। বাংলার
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ইসলাম প্রচারক হজরত খানজাহান আলী (রহ.)-এর
স্মৃতিবিজড়িত মসজিদটি সাড়ে ৫০০ বছরের বেশি পুরোনো।
ইতিহাস গবেষকদের মতে, যশোরের মুড়লী কসবা থেকে হজরত খানজাহান আলী (রহ.) ১৫ শতকের শেষ ভাগে সৈন্য ও অনুসারীদের নিয়ে ভৈরব নদের তীর ধরে পূর্ব দিকে এগিয়ে যান। এ সময় তিনি বেশ কিছু রাস্তা নির্মাণ, দিঘি খনন ও মসজিদ স্থাপন করেন। এগুলো তাঁর যাত্রাপথের সাক্ষ্য দেয়। খানজাহান আলীর এসব কীর্তি বাগেরহাট-যশোর অঞ্চলে ‘খাঞ্জালি’ নামে পরিচিত।
অভয়নগর উপজেলা সদর নওয়াপাড়া থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে শুভরাড়া গ্রাম। অসংখ্য গাছগাছালি ও বাঁশবাগানে ঠাসা গ্রামটি। সেখানে ভৈরবের তীরে খাঞ্জালি মসজিদের গম্বুজটি দূর থেকেই নজরে পড়ে। সড়ক ও নদীপথে নওয়াপাড়া থেকে শুভরাড়ায় যাওয়া যায়। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক সতীশচন্দ্র মিত্রের যশোহর-খুলনার ইতিহাস গ্রন্থের (১৯১৪ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত) প্রথম খণ্ডের ‘খালিফাতাবাদ’ অধ্যায়ে খাঞ্জালি মসজিদের উল্লেখ রয়েছে। ওই বর্ণনা অনুযায়ী, হজরত খানজাহান আলী (রহ.) সম্ভবত নড়াইল অঞ্চলে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সামনের একটি বিলের অবস্থা দেখে বা অন্য কোনো কারণে সে সংকল্প বাদ দিয়ে তিনি ভৈরবকূল ধরে এগিয়ে যাওয়ার পথ বেছে নেন। এভাবে তিনি শুভরাড়া গ্রামে গিয়ে পৌঁছান।
খ্রিষ্টীয় ১৪৪৫ থেকে ১৪৫৯ সালের মধ্যে কোনো এক সময় খাঞ্জালি মসজিদটি নির্মাণ করা হয় বলে ইতিহাস গবেষকেরা মনে করেন। এতে একটিমাত্র গম্বুজ এবং চার কোণে চারটি মিনার আছে। মসজিদটির ভেতরের মাপ ১৬ ফুট ১০ ইঞ্চি বাই ১৬ ফুট ১০ ইঞ্চি। উচ্চতা ২৫ ফুট। বাইরের মাপ এক মিনারের মধ্যবিন্দু থেকে অন্য মিনারের মধ্যবিন্দু পর্যন্ত ২৮ ফুট ছয় ইঞ্চি। মসজিদটির উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণে তিনটি দরজা অছে। পূর্ব দিকে সদর দরজা এবং এর খিলান ১১ ফুট উঁচু এবং ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি প্রস্থের। এই মসজিদ নির্মাণে প্রকাণ্ড ও ক্ষুদ্র—সব রকমের ইটই ব্যবহৃত হয়েছিল। এসব ইটের আকার ১২ ইঞ্চি বাই ১০ ইঞ্চি থেকে ৪ ইঞ্চি বাই ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনা কার্যালয় সূত্র জানায়, কারুকাজ ও নির্মাণশৈলী অবিকৃত রেখে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পাঁচবার মসজিদটি সংস্কার করা হয়েছে। কিছু সংস্কারকাজ এখনো বাকি রয়েছে।
স্থানীয় প্রবীণ লোকজন বলেন, প্রায় ১০০ বছর আগে খাঞ্জালি মসজিদের ছাদ ভেঙে পড়ে। এরপরও গোলপাতার ছাউনি দিয়ে মসজিদটিতে নিয়মিত নামাজ আদায় করতে থাকেন স্থানীয় লোকজন। পরে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মসজিদটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আকবার হোসেন বলেন, সংস্কারের সময় মসজিদটির দেয়ালের গাঁথুনিতে একটু সমস্যা হয়েছে। তা ছাড়া দরজা ঠিক করা হয়নি। মসজিদের ভেতরের অনেক ইট ও নকশা ভেঙে গেছে। অনেক কাজ এখনো বাকি। অবশিষ্ট সংস্কারকাজ সম্পন্ন করার জন্য তাঁরা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক মো. আমিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউনেসকো স্বীকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নীতিমালা বা কোড পুরোপুরি অনুসরণ করেই মসজিদটি সংস্কার-সংরক্ষণ করা হয়েছে। মৌলিকত্বের কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। আগে মসজিদ যেমন ছিল, সংস্কারের পর ঠিক তেমন আছে।’
ইতিহাস গবেষকদের মতে, যশোরের মুড়লী কসবা থেকে হজরত খানজাহান আলী (রহ.) ১৫ শতকের শেষ ভাগে সৈন্য ও অনুসারীদের নিয়ে ভৈরব নদের তীর ধরে পূর্ব দিকে এগিয়ে যান। এ সময় তিনি বেশ কিছু রাস্তা নির্মাণ, দিঘি খনন ও মসজিদ স্থাপন করেন। এগুলো তাঁর যাত্রাপথের সাক্ষ্য দেয়। খানজাহান আলীর এসব কীর্তি বাগেরহাট-যশোর অঞ্চলে ‘খাঞ্জালি’ নামে পরিচিত।
অভয়নগর উপজেলা সদর নওয়াপাড়া থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে শুভরাড়া গ্রাম। অসংখ্য গাছগাছালি ও বাঁশবাগানে ঠাসা গ্রামটি। সেখানে ভৈরবের তীরে খাঞ্জালি মসজিদের গম্বুজটি দূর থেকেই নজরে পড়ে। সড়ক ও নদীপথে নওয়াপাড়া থেকে শুভরাড়ায় যাওয়া যায়। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক সতীশচন্দ্র মিত্রের যশোহর-খুলনার ইতিহাস গ্রন্থের (১৯১৪ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত) প্রথম খণ্ডের ‘খালিফাতাবাদ’ অধ্যায়ে খাঞ্জালি মসজিদের উল্লেখ রয়েছে। ওই বর্ণনা অনুযায়ী, হজরত খানজাহান আলী (রহ.) সম্ভবত নড়াইল অঞ্চলে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সামনের একটি বিলের অবস্থা দেখে বা অন্য কোনো কারণে সে সংকল্প বাদ দিয়ে তিনি ভৈরবকূল ধরে এগিয়ে যাওয়ার পথ বেছে নেন। এভাবে তিনি শুভরাড়া গ্রামে গিয়ে পৌঁছান।
খ্রিষ্টীয় ১৪৪৫ থেকে ১৪৫৯ সালের মধ্যে কোনো এক সময় খাঞ্জালি মসজিদটি নির্মাণ করা হয় বলে ইতিহাস গবেষকেরা মনে করেন। এতে একটিমাত্র গম্বুজ এবং চার কোণে চারটি মিনার আছে। মসজিদটির ভেতরের মাপ ১৬ ফুট ১০ ইঞ্চি বাই ১৬ ফুট ১০ ইঞ্চি। উচ্চতা ২৫ ফুট। বাইরের মাপ এক মিনারের মধ্যবিন্দু থেকে অন্য মিনারের মধ্যবিন্দু পর্যন্ত ২৮ ফুট ছয় ইঞ্চি। মসজিদটির উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণে তিনটি দরজা অছে। পূর্ব দিকে সদর দরজা এবং এর খিলান ১১ ফুট উঁচু এবং ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি প্রস্থের। এই মসজিদ নির্মাণে প্রকাণ্ড ও ক্ষুদ্র—সব রকমের ইটই ব্যবহৃত হয়েছিল। এসব ইটের আকার ১২ ইঞ্চি বাই ১০ ইঞ্চি থেকে ৪ ইঞ্চি বাই ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনা কার্যালয় সূত্র জানায়, কারুকাজ ও নির্মাণশৈলী অবিকৃত রেখে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পাঁচবার মসজিদটি সংস্কার করা হয়েছে। কিছু সংস্কারকাজ এখনো বাকি রয়েছে।
স্থানীয় প্রবীণ লোকজন বলেন, প্রায় ১০০ বছর আগে খাঞ্জালি মসজিদের ছাদ ভেঙে পড়ে। এরপরও গোলপাতার ছাউনি দিয়ে মসজিদটিতে নিয়মিত নামাজ আদায় করতে থাকেন স্থানীয় লোকজন। পরে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মসজিদটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আকবার হোসেন বলেন, সংস্কারের সময় মসজিদটির দেয়ালের গাঁথুনিতে একটু সমস্যা হয়েছে। তা ছাড়া দরজা ঠিক করা হয়নি। মসজিদের ভেতরের অনেক ইট ও নকশা ভেঙে গেছে। অনেক কাজ এখনো বাকি। অবশিষ্ট সংস্কারকাজ সম্পন্ন করার জন্য তাঁরা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক মো. আমিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউনেসকো স্বীকৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নীতিমালা বা কোড পুরোপুরি অনুসরণ করেই মসজিদটি সংস্কার-সংরক্ষণ করা হয়েছে। মৌলিকত্বের কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। আগে মসজিদ যেমন ছিল, সংস্কারের পর ঠিক তেমন আছে।’
No comments