ফসলের খেতে হঠাৎ ঘর by ইকবাল গফুর
টাঙ্গাইলের সখীপুরের সিলিমপুর গ্রামে জলমগ্ন ফসলি জমিতে সারি সারি টিনের ঘর তোলা হয়েছে। গত সপ্তাহে তোলা ছবি l প্রথম আলো |
গাজীপুরের
শ্রীপুরের ধনুয়া থেকে টাঙ্গাইলের সখীপুরের ওপর দিয়ে কালিহাতীর এলেঙ্গা
পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার গ্যাসের পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্প সামনে রেখে সখীপুরের
পাঁচটি গ্রামে ফসলের খেতে তোলা হয়েছে ১১টি বড় টিনের ঘর। স্থানীয় লোকজন
বলছেন, বেশি ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য একটি চক্র এসব ঘর তৈরি করেছে।
গাজীপুরের জয়দেবপুর, চন্দ্রা, গোড়াই, এলেঙ্গা, টাঙ্গাইল ও ঢাকা ইপিজেড শিল্প এলাকায় গ্যাসের অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের জন্য শ্রীপুরের বরমী সাবস্টেশন থেকে জয়দেবপুর সিজিএস পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার এবং শ্রীপুরের ধনুয়া থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের প্রকল্পটি গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানির (জিটিসিএল)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সখীপুরের সিলিমপুর গ্রামের আবদুল হামিদের জমিতে ৫০ হাত লম্বা একটি, কালিদাস তেঁতুলিয়া চালায় স্কুলশিক্ষক শাহজাহানের জমিতে দুটি, গজারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আমিন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্যবিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমানের জমিতে দুটি, পাথারপুর গ্রামের গোলাম নবী, বিল্লাল হোসেন ও স্কুলশিক্ষক আজাহারুল ইসলামের জমিতে তিনটি, কালমেঘা গ্রামে হুমায়ুন খান, আলম খান, মুসলেম উদ্দিন মৃধার জমিতে তিনটিসহ ১১টি ঘর তুলেছে ওই চক্র। সূত্র জানায়, শ্রীপুরের কয়েকজন লোক ওই ১০ জনের কাছ থেকে এক বছর মেয়াদে জমি ভাড়া নিয়ে এসব অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করেছেন।
আতিকুর রহমান বলেন, ‘গ্যাস পাইপলাইনে আমার ৬৩ শতাংশ আবাদি জমি পড়েছে। গাজীপুরের এক সাংসদের ভাতিজা পরিচয়ে এক ব্যক্তি আমার কাছ থেকে ওই জমি এক বছরের জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে পাতলা টিন, চিকন খুঁটি দিয়ে কোনোমতে লম্বা ঘর তুলেছেন। ওই ঘরের ক্ষতিপূরণ বাবদ তাঁরা সিস্টেমে (কৌশলে) সরকারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করবেন।’ তবে ওই ১০ জমি মালিকের কেউই ঘর নির্মাণকারীদের নাম-পরিচয় দিতে চাননি। শুধু বলেছেন, তাঁরা সবাই শ্রীপুরের বাসিন্দা।
উপজেলার গজারিয়া, কালমেঘা ও পাথারপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘরগুলোর উচ্চতা চার থেকে পাঁচ ফুট। প্রস্থ ৮-১০ ফুটের মতো। ঘরগুলো দৈর্ঘ্যে ৪০০ থেকে ৫০০ ফুট। এসব ঘরে প্রবেশের দরজা খুঁজে পাওয়াই কঠিন। ফসলি জমির এসব ঘরকে স্থানীয় লোকজন ‘গ্যাসের ঘর’ বলছেন।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব ঘর নির্মাণে যিনি টাকা খরচ করছেন, তাঁর নাম হাজি মোস্তফা। বাড়ি শ্রীপুরে। তবে থাকেন ঢাকায়। পরে কালিদাস তেঁতুলিয়া চালায় স্কুলশিক্ষক শাহজাহানের জমিতে ঘর তৈরিতে ব্যস্ত কাকন নামের একজনের কাছ থেকে মোস্তফার মুঠোফোনের নম্বর সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন এ বিষয়ে কথা বলব না, নানা ঝামেলায় আছি। পরে ফোনে কথা হবে।’ এরপর তিনি সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘শুনেছি, অধিক টাকা ক্ষতিপূরণের আশায় পাশের জেলার একটি চক্র আমার ইউনিয়নের কিছু মানুষের জমি ভাড়া নিয়ে নামকাওয়াস্তে ঘর তুলেছে। ওই সব ঘরমালিককে ধরে আইনের আওতায় আনা হলে নতুন করে এ ধরনের কাজ কেউ করার সাহস পাবে না।’
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রশীদ বলেন, ঘর তোলার বিষয়ে গত বুধবার আইনশৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে।
সখীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাজাহান আলী বলেন, যাঁরা জমির মূল্য বাড়াতে ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আশায় এসব স্থাপনা করেছেন, তাঁরা সঠিক করেননি।
শ্রীপুর-এলেঙ্গা সিজিএস পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার লাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে মানচিত্র অনুযায়ী যে জায়গা দিয়ে লাইনটি যাবে, সেসব জায়গার ভিডিওচিত্র আগেই ধারণ করা হয়েছে। অতএব কেউ চালাকি করে ক্ষতিপূরণ তোলার আশায় ঘর তুলে থাকলে তাঁরা ধরা খাবেন।
গাজীপুরের জয়দেবপুর, চন্দ্রা, গোড়াই, এলেঙ্গা, টাঙ্গাইল ও ঢাকা ইপিজেড শিল্প এলাকায় গ্যাসের অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের জন্য শ্রীপুরের বরমী সাবস্টেশন থেকে জয়দেবপুর সিজিএস পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার এবং শ্রীপুরের ধনুয়া থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের প্রকল্পটি গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানির (জিটিসিএল)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সখীপুরের সিলিমপুর গ্রামের আবদুল হামিদের জমিতে ৫০ হাত লম্বা একটি, কালিদাস তেঁতুলিয়া চালায় স্কুলশিক্ষক শাহজাহানের জমিতে দুটি, গজারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আমিন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্যবিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমানের জমিতে দুটি, পাথারপুর গ্রামের গোলাম নবী, বিল্লাল হোসেন ও স্কুলশিক্ষক আজাহারুল ইসলামের জমিতে তিনটি, কালমেঘা গ্রামে হুমায়ুন খান, আলম খান, মুসলেম উদ্দিন মৃধার জমিতে তিনটিসহ ১১টি ঘর তুলেছে ওই চক্র। সূত্র জানায়, শ্রীপুরের কয়েকজন লোক ওই ১০ জনের কাছ থেকে এক বছর মেয়াদে জমি ভাড়া নিয়ে এসব অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করেছেন।
আতিকুর রহমান বলেন, ‘গ্যাস পাইপলাইনে আমার ৬৩ শতাংশ আবাদি জমি পড়েছে। গাজীপুরের এক সাংসদের ভাতিজা পরিচয়ে এক ব্যক্তি আমার কাছ থেকে ওই জমি এক বছরের জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে পাতলা টিন, চিকন খুঁটি দিয়ে কোনোমতে লম্বা ঘর তুলেছেন। ওই ঘরের ক্ষতিপূরণ বাবদ তাঁরা সিস্টেমে (কৌশলে) সরকারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করবেন।’ তবে ওই ১০ জমি মালিকের কেউই ঘর নির্মাণকারীদের নাম-পরিচয় দিতে চাননি। শুধু বলেছেন, তাঁরা সবাই শ্রীপুরের বাসিন্দা।
উপজেলার গজারিয়া, কালমেঘা ও পাথারপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘরগুলোর উচ্চতা চার থেকে পাঁচ ফুট। প্রস্থ ৮-১০ ফুটের মতো। ঘরগুলো দৈর্ঘ্যে ৪০০ থেকে ৫০০ ফুট। এসব ঘরে প্রবেশের দরজা খুঁজে পাওয়াই কঠিন। ফসলি জমির এসব ঘরকে স্থানীয় লোকজন ‘গ্যাসের ঘর’ বলছেন।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব ঘর নির্মাণে যিনি টাকা খরচ করছেন, তাঁর নাম হাজি মোস্তফা। বাড়ি শ্রীপুরে। তবে থাকেন ঢাকায়। পরে কালিদাস তেঁতুলিয়া চালায় স্কুলশিক্ষক শাহজাহানের জমিতে ঘর তৈরিতে ব্যস্ত কাকন নামের একজনের কাছ থেকে মোস্তফার মুঠোফোনের নম্বর সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন এ বিষয়ে কথা বলব না, নানা ঝামেলায় আছি। পরে ফোনে কথা হবে।’ এরপর তিনি সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘শুনেছি, অধিক টাকা ক্ষতিপূরণের আশায় পাশের জেলার একটি চক্র আমার ইউনিয়নের কিছু মানুষের জমি ভাড়া নিয়ে নামকাওয়াস্তে ঘর তুলেছে। ওই সব ঘরমালিককে ধরে আইনের আওতায় আনা হলে নতুন করে এ ধরনের কাজ কেউ করার সাহস পাবে না।’
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলুর রশীদ বলেন, ঘর তোলার বিষয়ে গত বুধবার আইনশৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে।
সখীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাজাহান আলী বলেন, যাঁরা জমির মূল্য বাড়াতে ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আশায় এসব স্থাপনা করেছেন, তাঁরা সঠিক করেননি।
শ্রীপুর-এলেঙ্গা সিজিএস পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার লাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে মানচিত্র অনুযায়ী যে জায়গা দিয়ে লাইনটি যাবে, সেসব জায়গার ভিডিওচিত্র আগেই ধারণ করা হয়েছে। অতএব কেউ চালাকি করে ক্ষতিপূরণ তোলার আশায় ঘর তুলে থাকলে তাঁরা ধরা খাবেন।
No comments