পুলিশের অপরাধ খুঁজে পায় না পুলিশ, বেড়েই চলছে অপরাধ প্রবণতা by নুরুজ্জামান লাবু
একের
পর এক অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের অপরাধ তদন্ত
করতে গিয়ে ‘অপরাধ’ খুঁজে পায় না পুলিশ। কথিত ইমেজ রক্ষার নামে আড়াল করা
হচ্ছে পুলিশের অপরাধ কর্মকাণ্ড। অথচ গুটি কয়েকজনের জন্য পুরো বাহিনীর সুনাম
ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা অপরাধী পুলিশ সদস্যকে
শাস্তি নয়, বাঁচানোর জন্যই নানা চেষ্টা-তদবির করেন। ফলে অপরাধ করেও পার
পেয়ে যাচ্ছে পুলিশ কর্মকর্তারা। তদন্তের নামে চলে দীর্ঘ সময় ক্ষেপণ করা হয়।
একপর্যায়ে ভুক্তভোগীরাও হতাশ হয়ে পিছুটান দেয়। আবার ভুক্তভোগীদের ভয়-ভীতি
দেখানোও তো হরহামেশাই ঘটছে। সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে এমন বেশ কয়েকটি ঘটনার
তথ্য পাওয়া গেছে। গত ২রা ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্লবী এলাকায় নাহিদ নামে এক
যুবককে অপহরণের পর চাহিদা মতো অর্থ না পাওয়ায় হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পল্লবী
থানার উপ-পরিদর্শক তৌহিদুল আরেফিন এবং সহকারী উপ-পরিদর্শক সুব্রত রায় এই
অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন নাহিদের পরিবারের
সদস্যরা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে এর স্বপক্ষে বিস্তর প্রমাণাদিও
দিয়েছেন। এত বড় অপরাধের পরও সেই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক
কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উল্টো পুলিশের মিরপুর জোনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা
দুই পুলিশ সদস্যের পক্ষ নিয়েই কথা বলছেন। বিষয়টি তদন্তের নামে ইতিমধ্যে
তিন মাস সময় ক্ষেপণ করেছেন। তবু এর কোনও সুরাহা হয়নি। এমনকি ভুক্তভোগী
পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়েরের পর আদালত তা গোয়েন্দা পুলিশকে
তদন্ত করতে বলে। গোয়েন্দা পুলিশও কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে নিলেও সেই তদন্ত শেষ
করেনি। নাহিদের বোন শিলা বলছেন, উল্টো অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্য ও তাদের
সহযোগীরা তাকে এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের নানাভাবে হয়রানি ও হুমকি দিয়ে
আসছে।
রাজধানীর কাফরুল এলাকার ১৭ বছরের এক কিশোরীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন ডিএমপির মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার শেখ রাজিবুল হাসান। প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রেখে ও মিথ্যে প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীকে তুলে নিয়ে যান তিনি। একপর্যায়ে গোপনে তাকে বিয়েও করেন। প্রথম দিকে সেই কিশোরীকে তুলে নেয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরে সেই কিশোরীকে পরিবারের কাছে ফেরত দেন। কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা থানা ও র্যাবের কাছে অপহরণের অভিযোগ করেন। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত বলে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি তারা। বর্তমানে কিশোরীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করলেও এনিয়ে কোনও বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দিয়ে আসছেন সেই পুলিশ কর্মকর্তা। অসহায় পরিবারটি ভয়ে চুপসে আছে। আর বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই সদস্যকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সংশ্লিষ্ট ডিসির কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আর কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা কোনও অভিযোগ না পাওয়ার কথা বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন।
গত বছরের মাঝামাঝিতে পল্লবী থানায় জনি নামে এক বিহারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। জনির সঙ্গে আটককৃত অন্যদের সামনেই এ ঘটনা ঘটলেও সেটি ‘হার্ট অ্যাটাক’ বলে চালিয়ে দেয়া হয়। তৎকালীন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা অভিযুক্ত এসআই জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু এর কিছুদিন পর বদলি হয়ে একই পুলিশ কর্মকর্তা মিরপুর থানায় নির্যাতন করে সুজন নামে এক ঝুট ব্যবসায়ীকে হত্যা করেন। সেই ঘটনাও প্রথম দিকে ‘হার্ট অ্যাটাক বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হলে সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখনও অধরা রয়েছে তার সহযোগী দুই পুলিশ সদস্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথমবারেই এসআই জাহিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলে ঝুট ব্যবসায়ী সুজনকে মরতে হতো না।
গত অক্টোবর মাসে শেরেবাংলানগর থানার এসআই আনোয়ার পরকীয়ার জের ধরে এক গাড়িচালককে ধরে নিয়ে পায়ে গুলি করে সন্ত্রাসী বানানোর চেষ্টা করে। এমনকি ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রও উদ্ধার দেখানো হয়। কিন্তু পরে জানা যায় সবই সাজানো নাটক। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও সেই অস্ত্রের বিষয়টি এখনও সুরাহা হয়নি। অস্ত্রটি এসআই আনোয়ার কোথায় পেয়েছিলেন তা জানা যায়নি এখনও। জানা গেছে, পুলিশের ইমেজ রক্ষার নামে অনেক বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তদন্তে থাকা খোদ পুলিশ কর্মকর্তারাই।
সম্প্রতি একই ঘটনা ঘটেছে ব্লগার অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড ও পয়লা বৈশাখে টিএসসিতে একাধিক নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায়। অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আশেপাশে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও এগিয়ে না যাওয়ায় দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি উঠে আসে। কিন্তু পুলিশের তদন্তে কোনও অবহেলা খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর শ্লীলতাহানির ঘটনায় কয়েক বখাটেকে ধরে যেই পুলিশ কর্মকর্তার হাতে সোপর্দ করা হয়েছিল। তিনি তাদের ছেড়ে দিয়েছিলেন। ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তার বিরুদ্ধেও।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুপারভিশনের অভাবেই অধস্তনরা সাধারণ বা ফৌজদারি অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এটি বন্ধ করতে হলে অপরাধে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করতে হবে। যাতে অন্য কেউ অপরাধে জড়িয়ে পড়ার সাহস না পায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরাধ দমনের নামে অনেক ক্ষেত্রে অপরাধেই জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ। সাধারণ মানুষের কাছে ক্রমশ পুলিশ একটি আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুটি কয়েক দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ সদস্যের কারণে পুরো বাহিনীর দুর্নাম হচ্ছে। এমনকি অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার কারণে পুলিশ সদস্যদের মাঝেও অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. জিয়া রহমান বলেন, বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য পুলিশ বাহিনীর আমূল পরিবর্তন দরকার। এই বাহিনীতে বর্তমানে কমিটমেন্ট এবং রিসোর্সের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, রাজধানীসহ সারা দেশে প্রতিমাসে গড়ে ১২ শতাধিক ছোট-বড় অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, গত তিন বছরে অর্ধ লক্ষাধিক অভিযোগ জমা পড়ছে পুলিশ সদর দপ্তরের সিকিউরিটি সেল এবং ডিসিপ্লিন বিভাগে। গত বছরেই প্রায় ১৫ হাজার অভিযোগ জমা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত দুর্নীতি ও শৃঙ্খলাভঙ্গসহ নানা অপরাধে পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার ৩৪ হাজার ১২৯ জন পুলিশ সদস্য শাস্তি পেয়েছেন। এর মধ্যে বড় ধরনের অপরাধে গুরুদণ্ড হয়েছে ২ হাজার ৪শ পুলিশ সদস্যের। লঘু দণ্ড পেয়েছে ৩১ হাজার ৭২৯ পুলিশ সদস্য।
পুলিশ সদর দফতরের ডিসিপ্লিন অ্যান্ড প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ড শাখার তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত ১১৪ জন ইন্সপেক্টরকে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। এর মধ্যে ১০৯ জনকে লঘু দণ্ড এবং ৫ জন ইন্সপেক্টর গুরু দণ্ড পান। এর মধ্যে ২০১২ সালে ৪৬ ইন্সপেক্টর, ২০১৩ সালে ৩৯ জন ইন্সপেক্টর এবং গত বছরের জুন পর্যন্ত ২৯ ইন্সপেক্টরকে বিভিন্ন অপরাধে শাস্তি দেয়া হয়।
রাজধানীর কাফরুল এলাকার ১৭ বছরের এক কিশোরীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন ডিএমপির মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার শেখ রাজিবুল হাসান। প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রেখে ও মিথ্যে প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিশোরীকে তুলে নিয়ে যান তিনি। একপর্যায়ে গোপনে তাকে বিয়েও করেন। প্রথম দিকে সেই কিশোরীকে তুলে নেয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরে সেই কিশোরীকে পরিবারের কাছে ফেরত দেন। কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা থানা ও র্যাবের কাছে অপহরণের অভিযোগ করেন। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত বলে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি তারা। বর্তমানে কিশোরীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করলেও এনিয়ে কোনও বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দিয়ে আসছেন সেই পুলিশ কর্মকর্তা। অসহায় পরিবারটি ভয়ে চুপসে আছে। আর বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই সদস্যকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সংশ্লিষ্ট ডিসির কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আর কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা কোনও অভিযোগ না পাওয়ার কথা বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন।
গত বছরের মাঝামাঝিতে পল্লবী থানায় জনি নামে এক বিহারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। জনির সঙ্গে আটককৃত অন্যদের সামনেই এ ঘটনা ঘটলেও সেটি ‘হার্ট অ্যাটাক’ বলে চালিয়ে দেয়া হয়। তৎকালীন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা অভিযুক্ত এসআই জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু এর কিছুদিন পর বদলি হয়ে একই পুলিশ কর্মকর্তা মিরপুর থানায় নির্যাতন করে সুজন নামে এক ঝুট ব্যবসায়ীকে হত্যা করেন। সেই ঘটনাও প্রথম দিকে ‘হার্ট অ্যাটাক বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হলে সেই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখনও অধরা রয়েছে তার সহযোগী দুই পুলিশ সদস্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথমবারেই এসআই জাহিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলে ঝুট ব্যবসায়ী সুজনকে মরতে হতো না।
গত অক্টোবর মাসে শেরেবাংলানগর থানার এসআই আনোয়ার পরকীয়ার জের ধরে এক গাড়িচালককে ধরে নিয়ে পায়ে গুলি করে সন্ত্রাসী বানানোর চেষ্টা করে। এমনকি ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রও উদ্ধার দেখানো হয়। কিন্তু পরে জানা যায় সবই সাজানো নাটক। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও সেই অস্ত্রের বিষয়টি এখনও সুরাহা হয়নি। অস্ত্রটি এসআই আনোয়ার কোথায় পেয়েছিলেন তা জানা যায়নি এখনও। জানা গেছে, পুলিশের ইমেজ রক্ষার নামে অনেক বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তদন্তে থাকা খোদ পুলিশ কর্মকর্তারাই।
সম্প্রতি একই ঘটনা ঘটেছে ব্লগার অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড ও পয়লা বৈশাখে টিএসসিতে একাধিক নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায়। অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আশেপাশে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও এগিয়ে না যাওয়ায় দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি উঠে আসে। কিন্তু পুলিশের তদন্তে কোনও অবহেলা খুঁজে পাওয়া যায়নি। আর শ্লীলতাহানির ঘটনায় কয়েক বখাটেকে ধরে যেই পুলিশ কর্মকর্তার হাতে সোপর্দ করা হয়েছিল। তিনি তাদের ছেড়ে দিয়েছিলেন। ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তার বিরুদ্ধেও।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুপারভিশনের অভাবেই অধস্তনরা সাধারণ বা ফৌজদারি অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এটি বন্ধ করতে হলে অপরাধে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করতে হবে। যাতে অন্য কেউ অপরাধে জড়িয়ে পড়ার সাহস না পায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরাধ দমনের নামে অনেক ক্ষেত্রে অপরাধেই জড়িয়ে পড়ছে পুলিশ। সাধারণ মানুষের কাছে ক্রমশ পুলিশ একটি আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গুটি কয়েক দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ সদস্যের কারণে পুরো বাহিনীর দুর্নাম হচ্ছে। এমনকি অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার কারণে পুলিশ সদস্যদের মাঝেও অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. জিয়া রহমান বলেন, বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য পুলিশ বাহিনীর আমূল পরিবর্তন দরকার। এই বাহিনীতে বর্তমানে কমিটমেন্ট এবং রিসোর্সের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, রাজধানীসহ সারা দেশে প্রতিমাসে গড়ে ১২ শতাধিক ছোট-বড় অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, গত তিন বছরে অর্ধ লক্ষাধিক অভিযোগ জমা পড়ছে পুলিশ সদর দপ্তরের সিকিউরিটি সেল এবং ডিসিপ্লিন বিভাগে। গত বছরেই প্রায় ১৫ হাজার অভিযোগ জমা হয়েছে। এ ছাড়া ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত দুর্নীতি ও শৃঙ্খলাভঙ্গসহ নানা অপরাধে পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার ৩৪ হাজার ১২৯ জন পুলিশ সদস্য শাস্তি পেয়েছেন। এর মধ্যে বড় ধরনের অপরাধে গুরুদণ্ড হয়েছে ২ হাজার ৪শ পুলিশ সদস্যের। লঘু দণ্ড পেয়েছে ৩১ হাজার ৭২৯ পুলিশ সদস্য।
পুলিশ সদর দফতরের ডিসিপ্লিন অ্যান্ড প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ড শাখার তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত ১১৪ জন ইন্সপেক্টরকে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। এর মধ্যে ১০৯ জনকে লঘু দণ্ড এবং ৫ জন ইন্সপেক্টর গুরু দণ্ড পান। এর মধ্যে ২০১২ সালে ৪৬ ইন্সপেক্টর, ২০১৩ সালে ৩৯ জন ইন্সপেক্টর এবং গত বছরের জুন পর্যন্ত ২৯ ইন্সপেক্টরকে বিভিন্ন অপরাধে শাস্তি দেয়া হয়।
No comments