সিলেটে সিসি ক্যামেরায় ভেসে উঠলো রাহুলের খুনিদের মুখ by ওয়েছ খছরু
সিসি ক্যামেরার চিত্র, ইনসেটে গ্রেপ্তারকৃত অভিজিৎ |
ড্রেনে
মিলেছিল সিলেটের রাহুলের গলাকাটা লাশ। সকালের দিকে স্থানীয় লোকজন লাশ দেখে
পুলিশকে খবর দেন। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ শুরু করে তদন্ত। কিন্তু রাহুলকে
কারা খুন করেছে- তার কোন হদিসই পাওয়া যাচ্ছিল না। ড্রেনের পাশে মাদার কেয়ার
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কোন তথ্য দেয়নি। আশপাশের লোকজনের মুখেও ছিল কুলুপ
আঁটা। ফলে ঘটনার পর রাহুল খুনের কোন কিনারাই করতে পারছিল না পুলিশ। এমন সময়
পুলিশের সিসিটিভি ক্যামেরা ইউনিটের সদস্যরা নেন প্রযুক্তির সহায়তা। নগরীর
রিকাবীবাজারের মাদার কেয়ার হাসপাতালের সামনে রাখা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ
সংগ্রহ করা হয়। আর ফুটেজেও ভেসে উঠে খুনিদের চেহারা। রাতের আঁধারে কিভাবে
খুন হলো রাহুল তারও প্রকাশ পায় দ্রুত। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়-
লাশ উদ্ধারের আগের দিন অর্থাৎ গত ৪ঠা এপ্রিল রাত ৮টায় কয়েক জন যুবক
রিকাবীবাজার এলাকার রাস্তায় আক্রমণ করে রাহুলকে। এ সময় যুবকরা বার বার
রাহুলকে নিয়ে প্রান্তিক চত্বর এলাকায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু রাহুল
তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে পাশেই থাকা মাদার কেয়ার হাসপাতালে ঢুকার চেষ্টা
করছিল। এই অবস্থায় যুবকরা বেধড়ক মারধর করে রাহুলকে। এই মারপিটের মুখেই
রাহুল এক সময় আশ্রয় নেয় মাদার কেয়ার হাসপাতালের ভেতরেই। পরক্ষণে হাসপাতাল
কর্তৃপক্ষ কলাপসেবল ফটক লাগিয়ে দেয়। গোটা রাতের ফুটেজ তল্লাশি করে পুলিশ
দেখতে পায় রাহুল আর হাসপাতাল থেকে বের হয়নি। অবশেষে পরদিন সকালে হাসপাতালের
পাশেই ছড়ার মধ্যে তার গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। অথচ ঘটনা সম্পর্কে হাসপাতাল
কর্তৃপক্ষ ও আশপাশের লোকজন কোন তথ্যই দেননি পুলিশকে।
পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরায় হামলাকারী ৬-৭ জন লোকের ছবি সংগ্রহ করে। এরপর তাদের তথ্য সংগ্রহে চালায় অনুসন্ধান। পুলিশ খবর নিয়ে জানতে পারে হামলাকারী সিলেটের রিকাবীবাজার এলাকার ছাত্রলীগ কর্মীরা। আর ঘটনাকালীন সময়ে নেতৃত্বে ছিল ছাত্রলীগ কর্মী অভিজিৎ। পুলিশ অভিজিতের খোঁজ নিতে থাকে। আর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর অভিজিৎ খুনের ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে। অভিজিতের দেয়া বক্তব্য ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের মিল রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত অভিজিতের পুরো নাম অভিজিৎ দাস। তার বাড়ি সুনামগঞ্জ শহরের আমরিয়া সরদারপুর জয়নগর বাজার গ্রামে। তার পিতা স্কুল শিক্ষক। গত ৫ই এপ্রিল সিলেট নগরীর রিকাবীবাজার মাদার কেয়ার পলি ক্লিনিক ও ইয়াকুব ম্যানশনের মাঝের ড্রেন থেকে রাহুল আহমদের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ড্রেনের উপর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও।
রাহুল আহমদের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। সে আগে সনাতন ধর্মের অনুসারী ছিল। বিয়ের পর সে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। সিলেট নগরীর বাগবাড়িতে একটি ভাড়া বাসায় পরিবারসহ বসবাস করতো রাহুল। রাহুল কখনও নিজেকে যুবলীগ আবার কখনও যুবদল নেতা বলে পরিচয় দিতো। এ ঘটনায় পুলিশ তখন মাদার কেয়ার পলি ক্লিনিকের নাইটগার্ড তারেক আহমদ সুমন ও ওয়ার্ডবয় মো. ইসরক উদ্দিনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, রাহুল অনেক দিন ধরেই রিকাবীবাজার এলাকার আড্ডা দিতো। এ কারণে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সে ফুটপাত নিয়ন্ত্রণ করতো। নগরীর আলীয়া মাদরাসা মাঠ থেকে শুরু করে রিকাবীবাজার পয়েন্ট এলাকা পর্যন্ত ফুটপাতের ভাসমান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদার টাকা তুলতো। এ নিয়ে রাহুলের সঙ্গে বিরোধ ছিল স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মীদের। রিকাবীবাজার এলাকায় ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করে। ওই দুটি গ্রুপ আবার মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগ কেন্দ্রিক। একটি গ্রুপের নেতা ছিল অভিজিৎ। ছাত্রলীগের কোন পদ-পদবিতে না থাকলেও সে অনেকটা উগ্র-আচরণের কারণে ব্যবসায়ীদের কাছে আতঙ্কময় হয়ে উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিজিৎ এক সময় রাহুলের কাছে ফুটপাতের চাঁদা দাবি করে। এ নিয়ে রাহুলের সঙ্গে অভিজিৎ ও সহকর্মীদের বিরোধ চলছিল। খুনের আগে বেশ কয়েকবার অভিজিৎ ও তার সহকর্মীরা রাহুলকে হুমকিও দিয়েছিল। এসব ঘটনায় ৪টা জুলাই রাতে অভিজিৎ ও তার সহযোগিরা রিকাবীবাজার এলাকায় রাহুলের উপর হামলা চালিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছে, রাহুলকে ছাত্রলীগ কর্মী অভিজিতের কবল থেকে রক্ষা করার পর সে হাসপাতালের চতুর্থ তলার দিকে চলে যায়। এরপর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পর দিন তার লাশ পাওয়া গেছে। এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে রাহুল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকল আসামি ইতিমধ্যে শনাক্ত করা শেষ হয়েছে। স্থানীয় সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ থেকে তাদেরকে শনাক্ত করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ওই হত্যাকাণ্ডে ৬ থেকে ৭ জন জড়িত রয়েছে। সিলেটের লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রবিউল ইসলাম মাসুম জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত অভিজিৎ খুনের ঘটনা স্বীকার করলেও অনেক কিছুই লুকাচ্ছে। এ কারণে আদালতে তার ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। বিকালে অভিজিৎকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় লাশ উদ্ধারের পরপরই রাহুলের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছিল। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত অভিজিৎ খুনের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক ও ডিভিআর মেশিন জব্দ করে।
পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরায় হামলাকারী ৬-৭ জন লোকের ছবি সংগ্রহ করে। এরপর তাদের তথ্য সংগ্রহে চালায় অনুসন্ধান। পুলিশ খবর নিয়ে জানতে পারে হামলাকারী সিলেটের রিকাবীবাজার এলাকার ছাত্রলীগ কর্মীরা। আর ঘটনাকালীন সময়ে নেতৃত্বে ছিল ছাত্রলীগ কর্মী অভিজিৎ। পুলিশ অভিজিতের খোঁজ নিতে থাকে। আর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর অভিজিৎ খুনের ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে। অভিজিতের দেয়া বক্তব্য ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের মিল রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত অভিজিতের পুরো নাম অভিজিৎ দাস। তার বাড়ি সুনামগঞ্জ শহরের আমরিয়া সরদারপুর জয়নগর বাজার গ্রামে। তার পিতা স্কুল শিক্ষক। গত ৫ই এপ্রিল সিলেট নগরীর রিকাবীবাজার মাদার কেয়ার পলি ক্লিনিক ও ইয়াকুব ম্যানশনের মাঝের ড্রেন থেকে রাহুল আহমদের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ড্রেনের উপর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও।
রাহুল আহমদের গ্রামের বাড়ি বরিশালে। সে আগে সনাতন ধর্মের অনুসারী ছিল। বিয়ের পর সে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। সিলেট নগরীর বাগবাড়িতে একটি ভাড়া বাসায় পরিবারসহ বসবাস করতো রাহুল। রাহুল কখনও নিজেকে যুবলীগ আবার কখনও যুবদল নেতা বলে পরিচয় দিতো। এ ঘটনায় পুলিশ তখন মাদার কেয়ার পলি ক্লিনিকের নাইটগার্ড তারেক আহমদ সুমন ও ওয়ার্ডবয় মো. ইসরক উদ্দিনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে।
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, রাহুল অনেক দিন ধরেই রিকাবীবাজার এলাকার আড্ডা দিতো। এ কারণে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সে ফুটপাত নিয়ন্ত্রণ করতো। নগরীর আলীয়া মাদরাসা মাঠ থেকে শুরু করে রিকাবীবাজার পয়েন্ট এলাকা পর্যন্ত ফুটপাতের ভাসমান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদার টাকা তুলতো। এ নিয়ে রাহুলের সঙ্গে বিরোধ ছিল স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মীদের। রিকাবীবাজার এলাকায় ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করে। ওই দুটি গ্রুপ আবার মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগ কেন্দ্রিক। একটি গ্রুপের নেতা ছিল অভিজিৎ। ছাত্রলীগের কোন পদ-পদবিতে না থাকলেও সে অনেকটা উগ্র-আচরণের কারণে ব্যবসায়ীদের কাছে আতঙ্কময় হয়ে উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিজিৎ এক সময় রাহুলের কাছে ফুটপাতের চাঁদা দাবি করে। এ নিয়ে রাহুলের সঙ্গে অভিজিৎ ও সহকর্মীদের বিরোধ চলছিল। খুনের আগে বেশ কয়েকবার অভিজিৎ ও তার সহকর্মীরা রাহুলকে হুমকিও দিয়েছিল। এসব ঘটনায় ৪টা জুলাই রাতে অভিজিৎ ও তার সহযোগিরা রিকাবীবাজার এলাকায় রাহুলের উপর হামলা চালিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছে, রাহুলকে ছাত্রলীগ কর্মী অভিজিতের কবল থেকে রক্ষা করার পর সে হাসপাতালের চতুর্থ তলার দিকে চলে যায়। এরপর তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। পর দিন তার লাশ পাওয়া গেছে। এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে রাহুল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকল আসামি ইতিমধ্যে শনাক্ত করা শেষ হয়েছে। স্থানীয় সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ থেকে তাদেরকে শনাক্ত করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ওই হত্যাকাণ্ডে ৬ থেকে ৭ জন জড়িত রয়েছে। সিলেটের লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রবিউল ইসলাম মাসুম জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত অভিজিৎ খুনের ঘটনা স্বীকার করলেও অনেক কিছুই লুকাচ্ছে। এ কারণে আদালতে তার ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। বিকালে অভিজিৎকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় লাশ উদ্ধারের পরপরই রাহুলের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছিল। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত অভিজিৎ খুনের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক ও ডিভিআর মেশিন জব্দ করে।
No comments