কুতুবদিয়া নিরিবিলি by এস এম রানা
শুঁটকি
খেতে ইচ্ছা করছে। একেবারে টাটকা শুঁটকি, যা লবণ দিয়ে শুকানো হয়নি। খোলা
থেকে নিয়েই রান্না করা যায় এমন। হোক তা লইট্টা, ছুরি কিংবা চিংড়ি। অনেক
জায়গায়ই এমনটা মেলে, তবে সেই সঙ্গে জায়গাটা যদি সুন্দর হয়, রথ দেখা, কলা
বেচা_দুই-ই হবে। তাই কুতুবদিয়া। কক্সজারের বাতিঘর। শান্ত নিরিবিলি সুন্দর
পৃথিবী। দিনটা ছিল শুক্রবার। সকালেই চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাসস্টেশন
থেকে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ঘাটে পৌঁছানোর জন্য বাস ধরি। এস আলম পরিবহনের
বাসে চড়ে ১৪০ টাকা ভাড়ায় মগনামা ঘাটে পৌঁছাতে সময় লাগল সাড়ে তিন ঘণ্টা।
মগনামা থেকে সাগর শুরু হয়। ঘাটটি ইট-পাথরের। চাইলে ঘাটে জলযোগও করা যায়।
ঘাট থেকে ৩০ মিনিট পর পর ইঞ্জিনচালিত নৌকা ছাড়ে কুতুবদিয়ার উদ্দেশে।
স্পিডবোটেও যাওয়া যায়। ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা।
শাহেদ ভাই চলেছে আমার সঙ্গে। নৌকা ছাড়লে ঢেউয়ের কোলে চড়ি। ঢেউ বড় হয়ে এলে আল্লাহ আল্লাহ করি। সহযাত্রী দু-একজন বলেন, 'ডরের কিছু নাই, কিছু ন অইব।'
২৫ মিনিট পর আলী আকবর ডেইল ঘাটে নোঙর করে নৌকা। ভাড়া চুকিয়ে নেমে পড়ি। প্যারাবন পেলাম ঘাটের কাছেই। জেলের দলে দেখলাম কেউ ছেঁড়া জাল জোড়া দিচ্ছে, কেউ মাছ বাছছে; কাটাকুটিও করছে কয়েকজন। কয়েকজনকে কিছু মাছ শুঁটকিপল্লীতে নিয়ে যেতে দেখলাম। আমরা তাদের পিছু নিই। ছবি তুলে ফেলি অনেক।
নামাজ পড়ি উপজেলা সদরে। বড় একটি পুকুরকে ঘিরে পুরো উপজেলা পরিষদ চত্বর, থানা এবং অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি অফিস। আমরা দ্বীপের পশ্চিম প্রান্তে রওনা দিই। সেখানে শুঁটকিপল্লী আরো বড়। আছে শান্ত এক সৈকত, বাতিঘর এবং দেশের একমাত্র বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প।
শাহেদ ভাইয়ের এক আত্মীয়র বাড়িতে দুপুরের ভোজ নিই। বিশাল আয়োজন। মেহমানদের জন্য দ্বীপবাসীর মমতার শেষ নেই। সামুদ্রিক তাজা মাছ, নানা পদের শুঁটকি, দেশি মুরগি_আরো কত কী যে খাওয়াল!
উদর পুরিয়ে ৩টায় হাঁটা দিলাম। দ্বীপবাসীকে বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে দেশের একমাত্র বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পটি এখানে স্থাপিত হয়েছে। টারবাইনগুলো ঘুরছে বাতাসে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ জমা হয় ব্যাটারিতে। সেই বিদ্যুৎই দ্বীপবাসীকে সীমিত পর্যায়ে দেওয়া হয়। দ্বীপে লবণের চাষও হয় ব্যাপক। শুঁটকি আর লবণেই চলে কুতুবদিয়া।
বিকেল ৪টায় সৈকতে এসে নামি। সারি সারি ঝাউগাছ। উচ্চতা ৪০ থেকে ৫০ ফুট। দেখে মনে হতে পারে, গাছগুলো আকাশ ছোঁয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। সামনে এগোতেই বোঝা গেল, বালুর রাজ্যে পা পড়েছে। গতি কমে আসে। হাঁটতে হাঁটতে দাঁড়াই, দেখতে দেখতে হাঁটি। উর্মির নৃত্য মাতাল করে দেয়। পায়ের কাছে ঢেউ এসে কী যেন চায়। আমি অবোধ, বুঝতে নারি। সূর্য যখন গোল লাল থালায় পরিণত হয়, তখন আর চোখ ফেরাই না।
সৈকত ধরে আরেকটু গিয়ে বিশাল সব পাথর দেখি। একটা পাথরকে ঠিক মানুষের মতো দেখায়...ওই তো মাথা, পায়ের দিকটাও বোঝা যায়। জোয়ারের সময় সাগরে হারায়, ভাটায় ফিরে আসে। আরো হেঁটে আলী আকবর ডেইল বাজারে যাই। নশতা করি। বাতিঘর দেখতে হাঁটা দিই। আদি বাতিঘরটা সাগর নিয়ে গেছে। পরে এখনকারটা হয়েছে। রাতের বেলা দিক খুঁজে ফেরা নাবিককে পথ দেখায় এ ঘর। ঘরের আশপাশ সুসজ্জিত। দ্বীপের পশ্চিম প্রান্তের আলী আকবর ডেইল থেকে উত্তর প্রান্তের ধুরং বাজার পর্যন্ত সৈকতের সবটাই সুন্দর। বাতিঘর দেখে আবার বাজারে আসি। ৮টা বাজলে ফিরে আসার পথ ধরি, নইলে পারাপারের নৌকা পাওয়া যাবে না।
ছবি : লেখক
শাহেদ ভাই চলেছে আমার সঙ্গে। নৌকা ছাড়লে ঢেউয়ের কোলে চড়ি। ঢেউ বড় হয়ে এলে আল্লাহ আল্লাহ করি। সহযাত্রী দু-একজন বলেন, 'ডরের কিছু নাই, কিছু ন অইব।'
২৫ মিনিট পর আলী আকবর ডেইল ঘাটে নোঙর করে নৌকা। ভাড়া চুকিয়ে নেমে পড়ি। প্যারাবন পেলাম ঘাটের কাছেই। জেলের দলে দেখলাম কেউ ছেঁড়া জাল জোড়া দিচ্ছে, কেউ মাছ বাছছে; কাটাকুটিও করছে কয়েকজন। কয়েকজনকে কিছু মাছ শুঁটকিপল্লীতে নিয়ে যেতে দেখলাম। আমরা তাদের পিছু নিই। ছবি তুলে ফেলি অনেক।
নামাজ পড়ি উপজেলা সদরে। বড় একটি পুকুরকে ঘিরে পুরো উপজেলা পরিষদ চত্বর, থানা এবং অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি অফিস। আমরা দ্বীপের পশ্চিম প্রান্তে রওনা দিই। সেখানে শুঁটকিপল্লী আরো বড়। আছে শান্ত এক সৈকত, বাতিঘর এবং দেশের একমাত্র বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প।
শাহেদ ভাইয়ের এক আত্মীয়র বাড়িতে দুপুরের ভোজ নিই। বিশাল আয়োজন। মেহমানদের জন্য দ্বীপবাসীর মমতার শেষ নেই। সামুদ্রিক তাজা মাছ, নানা পদের শুঁটকি, দেশি মুরগি_আরো কত কী যে খাওয়াল!
উদর পুরিয়ে ৩টায় হাঁটা দিলাম। দ্বীপবাসীকে বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে দেশের একমাত্র বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পটি এখানে স্থাপিত হয়েছে। টারবাইনগুলো ঘুরছে বাতাসে। উৎপাদিত বিদ্যুৎ জমা হয় ব্যাটারিতে। সেই বিদ্যুৎই দ্বীপবাসীকে সীমিত পর্যায়ে দেওয়া হয়। দ্বীপে লবণের চাষও হয় ব্যাপক। শুঁটকি আর লবণেই চলে কুতুবদিয়া।
বিকেল ৪টায় সৈকতে এসে নামি। সারি সারি ঝাউগাছ। উচ্চতা ৪০ থেকে ৫০ ফুট। দেখে মনে হতে পারে, গাছগুলো আকাশ ছোঁয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। সামনে এগোতেই বোঝা গেল, বালুর রাজ্যে পা পড়েছে। গতি কমে আসে। হাঁটতে হাঁটতে দাঁড়াই, দেখতে দেখতে হাঁটি। উর্মির নৃত্য মাতাল করে দেয়। পায়ের কাছে ঢেউ এসে কী যেন চায়। আমি অবোধ, বুঝতে নারি। সূর্য যখন গোল লাল থালায় পরিণত হয়, তখন আর চোখ ফেরাই না।
সৈকত ধরে আরেকটু গিয়ে বিশাল সব পাথর দেখি। একটা পাথরকে ঠিক মানুষের মতো দেখায়...ওই তো মাথা, পায়ের দিকটাও বোঝা যায়। জোয়ারের সময় সাগরে হারায়, ভাটায় ফিরে আসে। আরো হেঁটে আলী আকবর ডেইল বাজারে যাই। নশতা করি। বাতিঘর দেখতে হাঁটা দিই। আদি বাতিঘরটা সাগর নিয়ে গেছে। পরে এখনকারটা হয়েছে। রাতের বেলা দিক খুঁজে ফেরা নাবিককে পথ দেখায় এ ঘর। ঘরের আশপাশ সুসজ্জিত। দ্বীপের পশ্চিম প্রান্তের আলী আকবর ডেইল থেকে উত্তর প্রান্তের ধুরং বাজার পর্যন্ত সৈকতের সবটাই সুন্দর। বাতিঘর দেখে আবার বাজারে আসি। ৮টা বাজলে ফিরে আসার পথ ধরি, নইলে পারাপারের নৌকা পাওয়া যাবে না।
ছবি : লেখক
No comments