সুন্দরবন পর্যবেক্ষণ শুরু জাতিসংঘ দলের
সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি
পর্যবেক্ষণে কাজ শুরু করেছে জাতিসংঘের ২৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। ৪টি দলে
বিভক্ত তারা সকাল থেকে ছোট ছোট ট্রলারযোগে ছড়িয়ে পড়ে বনের বিভিন্ন
প্রান্তে। বিশেষ করে শ্যালা নদীর যে স্থানে তেলবাহী ট্যাংকারটি ডুবে ছিল
মূলত সেই স্থানেই অবস্থান করছে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ দলটি। এখান থেকেই তারা
কাজ করছে নদী-খালের বিভিন্ন পয়েন্টে। প্রাকৃতিক এ বনের বৃক্ষরাজি ও
জলরাশির জলজ-বনের প্রাণিকুলের আচরণও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এ দলের
সদস্যরা। নদীর পানি-মাটি ও গাছপালার ওপর তেলের সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাবের
নমুনা সংগ্রহ করবেন তারা।
বিশেষজ্ঞ দলের প্রবীণ এ্যামিলিয়া ওয়ালসন নেতৃত্বে পর্যবেক্ষণ শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞ দলে থাকা জাতিসংঘ বাংলাদেশের ঢাকা অফিসের পলিসি ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রেস অফিসার কাউসার আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ৯ ডিসেম্বর পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীর মৃগামারী এলাকায় তেলবাহী ট্যাংকার ডুবির ঘটনা ঘটে। এতে সাড়ে ৩ লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল জোয়ার-ভাটার টানে ছড়িয়ে পড়ে বনের অভ্যন্তরীণ নদী-খালে। এতে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে জলজ ও স্থলজ প্রাণীসহ বনের বৃক্ষরাজি। ম্যানগ্রোভ এ বনে সুন্দরী, গেওয়া, পশুর, গরান, গোলপাতাসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল ও ১৩ প্রজাতির অর্কিড রয়েছে। বন্য প্রাণীর বৃহত্তম আবাসস্থল এ বনে বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল-মায়া হরিণ, লোনা পানির কুমির, অজগর, কচ্ছপ, বিশ্বের বিলুপ্ত প্রায় ইরাবতী ডলফিনসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ৩২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর ও ৩শ প্রজাতির পাখি রয়েছে। ২০০৪ সালে সুন্দরবনে ইউএনডিপির অর্থায়নে পরিচালিত প্রাণী জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে ৪৪০টি, হরিণ দেড় লাখ, বানর ৫০ হাজার, বন্য শূকর ২৫ হাজার, কুমির ২০০টি, উট-বিড়াল রয়েছে ২৫ হাজার। ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৬ প্রজাতির চিংড়ি, ১৩ প্রজাতির কাকড়া, ১ প্রজাতির লবস্টার ও ৪২ প্রজাতির মালাস্কা রয়েছে।
তেলবাহী ট্যাংকার ডুবির পর ম্যানগ্রোভ এ বনের অস্তিত্ব নিয়ে দেশী-বিদেশী পরিবেশবিদসহ আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সুন্দরবনের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় আগ্রহ প্রকাশ করে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা। তাই সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে জাতিসংঘের ওই প্রতিনিধি দলটি সোমবার রাতে সুন্দরবনে পৌঁছায়। মঙ্গলবার পুরোদমে কাজ করতে নামেন তারা। প্রতিনিধি দলের প্রধান এ্যামিলিয়া ওয়ালসন নেতৃত্বে এ দলটি সুন্দরবনে অবস্থানকালে শ্যালা নদীসহ বনের বিভিন্ন খাল ও জলরাশিতে জলজ ও বন্যপ্রাণীর আচরণ পর্যবেক্ষণ করবেন। দেখবেন বনের বৃক্ষরাজির বর্তমান অবস্থাও। সপ্তাহব্যাপী এ দলটি সুন্দরবনে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন বনবিভাগ। এ বিষয়ে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, জাতিসংঘের দলটি ঠিক কত দিন বনের ভেতরে অবস্থান করবেন তিনি নিশ্চিত নয়। তবে তাদের কার্যক্রমে বনবিভাগ সহায়তা করছে।
এদিকে বনের জীববৈচিত্র্যের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি যাচাইয়ে কাজ করছে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ খুলনা বিভাগের একটি পর্যবেক্ষণ দল। এ দলের জলজপ্রাণী গবেষক মো. মফিজুর রহমান জানান, এখনও পর্যন্ত তারা তেলের ক্ষতিকর প্রভাবের তেমন কোনো আলামত পাননি।
জাতিসংঘের ২৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলের সুন্দরবনে পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানিয়েছে সুন্দরবন বিশেষজ্ঞ ও সেভ দ্যা সুন্দরবনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। তিনি জানান, বিলম্ব হলেও সরকার এ প্রতিনিধি দলটিকে সংকটাপন্ন সুন্দরবনের বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণের সুযোগ করে দিয়েছে। এ প্রতিনিধি দলটি আমাদের গর্ব ওয়াল্ড হ্যারিটেজ সুন্দরবনে অয়েল ট্যাংকার ডুবিতে তেল নিঃসরণের ফলে জীব বৈচিত্র্যের যে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে তা সঠিকভাবে নিরূপণ করতে সক্ষম হবে। সে অনুযায়ী বন বিভাগ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে সুন্দরবন আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিশেষজ্ঞ দলের প্রবীণ এ্যামিলিয়া ওয়ালসন নেতৃত্বে পর্যবেক্ষণ শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞ দলে থাকা জাতিসংঘ বাংলাদেশের ঢাকা অফিসের পলিসি ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রেস অফিসার কাউসার আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ৯ ডিসেম্বর পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীর মৃগামারী এলাকায় তেলবাহী ট্যাংকার ডুবির ঘটনা ঘটে। এতে সাড়ে ৩ লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল জোয়ার-ভাটার টানে ছড়িয়ে পড়ে বনের অভ্যন্তরীণ নদী-খালে। এতে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে জলজ ও স্থলজ প্রাণীসহ বনের বৃক্ষরাজি। ম্যানগ্রোভ এ বনে সুন্দরী, গেওয়া, পশুর, গরান, গোলপাতাসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল ও ১৩ প্রজাতির অর্কিড রয়েছে। বন্য প্রাণীর বৃহত্তম আবাসস্থল এ বনে বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল-মায়া হরিণ, লোনা পানির কুমির, অজগর, কচ্ছপ, বিশ্বের বিলুপ্ত প্রায় ইরাবতী ডলফিনসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ৩২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর ও ৩শ প্রজাতির পাখি রয়েছে। ২০০৪ সালে সুন্দরবনে ইউএনডিপির অর্থায়নে পরিচালিত প্রাণী জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে ৪৪০টি, হরিণ দেড় লাখ, বানর ৫০ হাজার, বন্য শূকর ২৫ হাজার, কুমির ২০০টি, উট-বিড়াল রয়েছে ২৫ হাজার। ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৬ প্রজাতির চিংড়ি, ১৩ প্রজাতির কাকড়া, ১ প্রজাতির লবস্টার ও ৪২ প্রজাতির মালাস্কা রয়েছে।
তেলবাহী ট্যাংকার ডুবির পর ম্যানগ্রোভ এ বনের অস্তিত্ব নিয়ে দেশী-বিদেশী পরিবেশবিদসহ আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সুন্দরবনের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় আগ্রহ প্রকাশ করে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা। তাই সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে জাতিসংঘের ওই প্রতিনিধি দলটি সোমবার রাতে সুন্দরবনে পৌঁছায়। মঙ্গলবার পুরোদমে কাজ করতে নামেন তারা। প্রতিনিধি দলের প্রধান এ্যামিলিয়া ওয়ালসন নেতৃত্বে এ দলটি সুন্দরবনে অবস্থানকালে শ্যালা নদীসহ বনের বিভিন্ন খাল ও জলরাশিতে জলজ ও বন্যপ্রাণীর আচরণ পর্যবেক্ষণ করবেন। দেখবেন বনের বৃক্ষরাজির বর্তমান অবস্থাও। সপ্তাহব্যাপী এ দলটি সুন্দরবনে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন বনবিভাগ। এ বিষয়ে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, জাতিসংঘের দলটি ঠিক কত দিন বনের ভেতরে অবস্থান করবেন তিনি নিশ্চিত নয়। তবে তাদের কার্যক্রমে বনবিভাগ সহায়তা করছে।
এদিকে বনের জীববৈচিত্র্যের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি যাচাইয়ে কাজ করছে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ খুলনা বিভাগের একটি পর্যবেক্ষণ দল। এ দলের জলজপ্রাণী গবেষক মো. মফিজুর রহমান জানান, এখনও পর্যন্ত তারা তেলের ক্ষতিকর প্রভাবের তেমন কোনো আলামত পাননি।
জাতিসংঘের ২৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলের সুন্দরবনে পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানিয়েছে সুন্দরবন বিশেষজ্ঞ ও সেভ দ্যা সুন্দরবনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। তিনি জানান, বিলম্ব হলেও সরকার এ প্রতিনিধি দলটিকে সংকটাপন্ন সুন্দরবনের বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণের সুযোগ করে দিয়েছে। এ প্রতিনিধি দলটি আমাদের গর্ব ওয়াল্ড হ্যারিটেজ সুন্দরবনে অয়েল ট্যাংকার ডুবিতে তেল নিঃসরণের ফলে জীব বৈচিত্র্যের যে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে তা সঠিকভাবে নিরূপণ করতে সক্ষম হবে। সে অনুযায়ী বন বিভাগ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে সুন্দরবন আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
No comments