কেন বারবার লক্ষ্যবস্তু গাজা?
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফিলিস্তিনের গাজা
উপত্যকায় বারবার অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েল। বড় অভিযানগুলোর মধ্যে ২০০৮ ও
২০১২ সালের পর গত ৭ জুলাই থেকে আরেকটি রক্তাক্ত অভিযান শুরু করেছে তারা।
প্রশ্ন হলো, কেন বারবার গাজায় অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল।
>>ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন হতাহত হচ্ছে অনেক শিশু। গতকাল আহত এক শিশুকে রাফা শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয় l ছবি: এএফপি
ভৌগোলিকভাবে
ইসরায়েল ও মিসরের মাঝখানে অবস্থান গাজা উপত্যকার। ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল
যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর দখল করা ভূখণ্ডের মধ্যে শুধু গাজা থেকেই সেনা ও
বসতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারা একেই গাজা থেকে নিজেদের দখলদারির অবসান
বলে মনে করে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। এখনো গাজার অধিকাংশ সীমান্তই
নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। শুধু দক্ষিণের সীমান্তচৌকির নিয়ন্ত্রণ
মিসরের হাতে।
ইসরায়েল গাজার সীমান্ত, নৌ ও আকাশপথগুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। কোনো মানুষ বা মালামাল গাজায় ঢোকা কিংবা বের হওয়া—সবই হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যে। ইসরায়েলের দাবি, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এটা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু ইসরায়েলের এ তৎপরতার কারণে গাজার বাসিন্দারা কার্যত অবরুদ্ধ। গাজাবাসী তাদের আর্থসামাজিক দুরবস্থার জন্য দায়ী করে ইসরায়েলকে। আর হামাসসহ কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলের এ তৎপরতাকে অসহনীয় ও অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করে।
নিজেদের সনদ অনুযায়ী হামাস ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংগঠনটি বলেছে, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অস্ত্রবিরতির বিষয়টি বিবেচনা করবে। হামাস বলছে, পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি দখলদারি অব্যাহত থাকায়ই বিভিন্ন সময়ে তারা দেশটি লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ২০০৮ সালে গাজায় বড় ধরনের অভিযান চালায় ইসরায়েল। ডিসেম্বরে শুরু করে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ২২ দিনের ওই অভিযানে এক হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। বিপরীতে নিহত হয় ইসরায়েলের ১৩ সেনা। চার বছর পর ২০১২ সালের নভেম্বরে ‘অপারেশন পিলার অব ডিফেন্স’ নামে আবারও রক্তাক্ত অভিযান চালায় ইসরায়েল। এতে ১৬৭ ফিলিস্তিনি ও ছয় ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়। এ অভিযানের স্থায়িত্ব ছিল আট দিন। হামাসকে দমনের নামে এসব অভিযান পরিচালনা করা হলেও এর মূল্য দিতে হয়েছে ফিলিস্তিনি সাধারণ মানুষকে।
ইসরায়েল সর্বশেষ ‘অপারেশন প্রটেক্টিভ এজ’ নামে গাজায় যে অভিযান শুরু করেছে, তার স্থায়িত্ব ও ধ্বংসযজ্ঞ আগের দুটি অভিযানকে ছাড়িয়ে গেছে। নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১৪ শ ছাড়িয়েছে। এদের অধিকাংশই শিশুসহ সাধারণ মানুষ। ইসরায়েলের দাবি, নিহত হয়েছে তাদেরও ৬৩ সেনা ও সাধারণ নাগরিক।
অপারেশন প্রটেক্টিভ এজের শুরু ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অপহরণ ও হত্যার অভিযোগকে কেন্দ্র করে। গত জুনে ইসরায়েলি তিন তরুণকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার জন্য ইসরায়েল হামাসকে দায়ী করে। এরপর গত ২ জুলাই জেরুজালেম থেকে ফিলিস্তিনি এক কিশোরকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। অভিযোগ ওঠে, ইসরায়েলি তরুণদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ফিলিস্তিনি ওই কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হামাস ইসরায়েল লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালাচ্ছে অভিযোগ তুলে ৭ জুলাই থেকে গাজা অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েল বলছে, হামাসের রকেট হামলা বন্ধ করতে এ অভিযান শুরু করেছে তারা। হামলার জন্য ব্যবহৃত গাজার সুড়ঙ্গগুলো ধ্বংস না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
বিশ্লেষকদের একটি অংশ মনে করেন, হামাস গাজায় নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছে। ঘনিষ্ঠ মিত্র সিরিয়া ও ইরানের কাছ থেকে সহায়তা কমে যাওয়া, মিসরে সমমনা সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের পতন এবং মিসর-ইসরায়েলের অবরোধে গাজার অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছেও জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে হামাস। এ পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানো শুরু করে তারা। তাদের প্রত্যাশা, এতে করে হয়তো হারানো জনপ্রিয়তা ফিরে পাওয়া যাবে এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েলের অবরোধ প্রত্যাহারের পথ তৈরি হবে।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে খুব শিগগির দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ৭ জুলাই হামলা শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এ পর্যন্ত কয়েক দফা সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি হলেও তা কার্যকর হয়নি। ইসরায়েল বলছে, গাজা থেকে ইসরায়েলে হামলা চালানোর জন্য ব্যবহৃত সুড়ঙ্গগুলো ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত তাদের অভিযান চলবে। এমনকি যুদ্ধবিরতি হলেও লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত কিছু জায়গায় তাদের অভিযান চলবে। অন্যদিকে হামাস বলছে, গাজার ওপর থেকে অবরোধ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাবে না তারা।
তারপরও দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। মিসরের পরিকল্পনা অনুযায়ী সেই প্রক্রিয়া চলছে। যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে। তাই হামাসের সঙ্গে ওয়াশিংটনের কোনো যোগাযোগ নেই। তবে হামাসকে সমর্থনকারী তুরস্ক ও কাতার এই যুদ্ধবিরতির আলোচনায় সম্পৃক্ত রয়েছে। বিবিসি।
ইসরায়েল গাজার সীমান্ত, নৌ ও আকাশপথগুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। কোনো মানুষ বা মালামাল গাজায় ঢোকা কিংবা বের হওয়া—সবই হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যে। ইসরায়েলের দাবি, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এটা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু ইসরায়েলের এ তৎপরতার কারণে গাজার বাসিন্দারা কার্যত অবরুদ্ধ। গাজাবাসী তাদের আর্থসামাজিক দুরবস্থার জন্য দায়ী করে ইসরায়েলকে। আর হামাসসহ কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলের এ তৎপরতাকে অসহনীয় ও অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করে।
নিজেদের সনদ অনুযায়ী হামাস ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংগঠনটি বলেছে, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অস্ত্রবিরতির বিষয়টি বিবেচনা করবে। হামাস বলছে, পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি দখলদারি অব্যাহত থাকায়ই বিভিন্ন সময়ে তারা দেশটি লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ২০০৮ সালে গাজায় বড় ধরনের অভিযান চালায় ইসরায়েল। ডিসেম্বরে শুরু করে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ২২ দিনের ওই অভিযানে এক হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। বিপরীতে নিহত হয় ইসরায়েলের ১৩ সেনা। চার বছর পর ২০১২ সালের নভেম্বরে ‘অপারেশন পিলার অব ডিফেন্স’ নামে আবারও রক্তাক্ত অভিযান চালায় ইসরায়েল। এতে ১৬৭ ফিলিস্তিনি ও ছয় ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়। এ অভিযানের স্থায়িত্ব ছিল আট দিন। হামাসকে দমনের নামে এসব অভিযান পরিচালনা করা হলেও এর মূল্য দিতে হয়েছে ফিলিস্তিনি সাধারণ মানুষকে।
ইসরায়েল সর্বশেষ ‘অপারেশন প্রটেক্টিভ এজ’ নামে গাজায় যে অভিযান শুরু করেছে, তার স্থায়িত্ব ও ধ্বংসযজ্ঞ আগের দুটি অভিযানকে ছাড়িয়ে গেছে। নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১৪ শ ছাড়িয়েছে। এদের অধিকাংশই শিশুসহ সাধারণ মানুষ। ইসরায়েলের দাবি, নিহত হয়েছে তাদেরও ৬৩ সেনা ও সাধারণ নাগরিক।
অপারেশন প্রটেক্টিভ এজের শুরু ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অপহরণ ও হত্যার অভিযোগকে কেন্দ্র করে। গত জুনে ইসরায়েলি তিন তরুণকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার জন্য ইসরায়েল হামাসকে দায়ী করে। এরপর গত ২ জুলাই জেরুজালেম থেকে ফিলিস্তিনি এক কিশোরকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। অভিযোগ ওঠে, ইসরায়েলি তরুণদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ফিলিস্তিনি ওই কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হামাস ইসরায়েল লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালাচ্ছে অভিযোগ তুলে ৭ জুলাই থেকে গাজা অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েল বলছে, হামাসের রকেট হামলা বন্ধ করতে এ অভিযান শুরু করেছে তারা। হামলার জন্য ব্যবহৃত গাজার সুড়ঙ্গগুলো ধ্বংস না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
বিশ্লেষকদের একটি অংশ মনে করেন, হামাস গাজায় নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছে। ঘনিষ্ঠ মিত্র সিরিয়া ও ইরানের কাছ থেকে সহায়তা কমে যাওয়া, মিসরে সমমনা সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের পতন এবং মিসর-ইসরায়েলের অবরোধে গাজার অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছেও জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে হামাস। এ পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানো শুরু করে তারা। তাদের প্রত্যাশা, এতে করে হয়তো হারানো জনপ্রিয়তা ফিরে পাওয়া যাবে এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েলের অবরোধ প্রত্যাহারের পথ তৈরি হবে।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে খুব শিগগির দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ৭ জুলাই হামলা শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এ পর্যন্ত কয়েক দফা সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি হলেও তা কার্যকর হয়নি। ইসরায়েল বলছে, গাজা থেকে ইসরায়েলে হামলা চালানোর জন্য ব্যবহৃত সুড়ঙ্গগুলো ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত তাদের অভিযান চলবে। এমনকি যুদ্ধবিরতি হলেও লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত কিছু জায়গায় তাদের অভিযান চলবে। অন্যদিকে হামাস বলছে, গাজার ওপর থেকে অবরোধ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যাবে না তারা।
তারপরও দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। মিসরের পরিকল্পনা অনুযায়ী সেই প্রক্রিয়া চলছে। যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে। তাই হামাসের সঙ্গে ওয়াশিংটনের কোনো যোগাযোগ নেই। তবে হামাসকে সমর্থনকারী তুরস্ক ও কাতার এই যুদ্ধবিরতির আলোচনায় সম্পৃক্ত রয়েছে। বিবিসি।
No comments