আটক বাণিজ্য: দুই মন্ত্রীর তোপের মুখে পড়েছিলেন মিজানুর @প্রথম আলো
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেছেন, 'আমি অনেক আগে সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছিলাম যে সরষের ভেতর ভূত আছে, সেই ভূত চিহ্নিত করুন, সমস্যার সমাধান করুন। বলেছিলাম, দেশে আটক বাণিজ্য চলছে, এ বাণিজ্য বন্ধ করুন। এসব বক্তব্যের কারণে তখন অন্তত দুজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী আমার সমালোচনা করে বলেছিলেন, আমি নাকি জামায়াত-শিবিরে রূপান্তরিত হয়েছি। তাঁদের আজ প্রশ্ন করি, যারা নতুন করে অপহূত হলো, উদ্ধার করা হলো, তাদের অপহরণকারীদের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। এখন তাঁরা কী বলবেন?' আজ শনিবার দুপুরে বরগুনায় মানবাধিকার কর্মী সমাবেশ উদ্বোধনকালে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
দেশের বর্তমান অবস্থা 'চরম ভীতিকর' উল্লেখ করে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, 'আমরা অনেক আগেই আপত্তি তুলেছি, সাদা পোশাকে যেন কাউকে আটক করা না হয়। এখন অবস্থা যখন ভীতির পর্যায়ে চলে গেল, তখন প্রজ্ঞাপন করে সাদা পোশাকে কোনো অভিযান না চালাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। কোনো অভিযোগে কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করতে হলে অবশ্যই পোশাক পরিহিত অবস্থায় এবং সংশ্লিষ্ট বাহিনীর পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) দেখাতে হবে। এমনকি যাঁকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হবে অবশ্যই সেই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাক্ষী রেখে আটক করতে হবে। এ জন্য রাষ্ট্রের অতিরিক্ত বাজেট বা বরাদ্দের দরকার নেই। এটা নিশ্চিত করা হলে দেশে খুন, গুম, অপহরণের এই ভয়ানক অবস্থা অনেকাংশে কমে যাবে।'
মিজানুর রহমান বলেন, 'এই শঙ্কাময় জীবন আমরা চাই না। নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। এটা কোনো ছোট বিষয় নয়।' খুন, অপহরণের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা জানতে চাই, এর পেছনে কারা জড়িত?'
দলীয় 'রেড অ্যালার্ট' জারি প্রসঙ্গে
নাম উল্লেখ না করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, একটি দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি দলটি লাল সংকেত (রেড অ্যালার্ট) জারি করে তাঁদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। ওই দলের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, সারা দেশের মানুষের কথা, নিরাপত্তার কথা না ভেবে কী করে নিজের দলের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে ?
'চাটুকারদের কাছ থেকে দূরে থাকুন'
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমার মুখে এসব কথা শোভা পায় না। তবু বলি, চাটুকরদের কাছ থেকে দূরে থাকুন এবং দলের যে নেতাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তাঁদের বলুন সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে। কঠোরভাবে বলে দিন, কাজের মধ্য দিয়ে তাঁদের যোগ্যতা, দক্ষতা নির্ধারিত হবে, অন্য কোনো পন্থায় নয়। তার পরও ব্যর্থতার এই দায় আপনি নেবেন না। এসব অপরাধ নির্মূলে উদ্যোগ নেবেন। আমাদের প্রত্যাশা, আপনি দৃঢ় হবেন।'
দুই দলের উদ্দেশে
প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশ করে মিজানুর রহমান বলেন, 'দেশের বর্তমান এই ভীতিকর অবস্থাকে রাজনৈতিক বুলি আউরে পাড় পাবেন না। এ নিয়ে রাজনৈতিক খেলা কাম্য নয়। একে অপরকে দোষারোপ করার মধ্য দিয়ে নাগরিক জীবনকে আরও শঙ্কার মধ্যে ফেলে দেবেন না। বর্তমানে দেশের এ অবস্থার প্রধান দায় বর্তায় রাষ্ট্রের ওপর।'
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও ফারিয়া লারা ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মশালায় কর্মী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কমিশনের সদস্য কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, কমিশনের সচিব এম এ সালাম, ফারিয়া লারা ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন খান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক বনশ্রী মিত্র নিয়োগী, বরগুনা জেলা প্রশাসক আবদুল ওহাব ভূইঞা ও পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ।
কর্মশালায় 'মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার নিশ্চয়তায় চাই উত্পীড়নমুক্ত শিক্ষাঙ্গন ও জনপদ' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বরগুনার প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক এম জসীম উদ্দীন। কর্মশালায় বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার প্রশাসনের কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মী ও তৃণমূল পর্যায়ের মানবাধিকারকর্মীসহ ২০৫ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
দেশের বর্তমান অবস্থা 'চরম ভীতিকর' উল্লেখ করে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, 'আমরা অনেক আগেই আপত্তি তুলেছি, সাদা পোশাকে যেন কাউকে আটক করা না হয়। এখন অবস্থা যখন ভীতির পর্যায়ে চলে গেল, তখন প্রজ্ঞাপন করে সাদা পোশাকে কোনো অভিযান না চালাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। কোনো অভিযোগে কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করতে হলে অবশ্যই পোশাক পরিহিত অবস্থায় এবং সংশ্লিষ্ট বাহিনীর পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) দেখাতে হবে। এমনকি যাঁকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হবে অবশ্যই সেই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাক্ষী রেখে আটক করতে হবে। এ জন্য রাষ্ট্রের অতিরিক্ত বাজেট বা বরাদ্দের দরকার নেই। এটা নিশ্চিত করা হলে দেশে খুন, গুম, অপহরণের এই ভয়ানক অবস্থা অনেকাংশে কমে যাবে।'
মিজানুর রহমান বলেন, 'এই শঙ্কাময় জীবন আমরা চাই না। নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। এটা কোনো ছোট বিষয় নয়।' খুন, অপহরণের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা জানতে চাই, এর পেছনে কারা জড়িত?'
দলীয় 'রেড অ্যালার্ট' জারি প্রসঙ্গে
নাম উল্লেখ না করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, একটি দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি দলটি লাল সংকেত (রেড অ্যালার্ট) জারি করে তাঁদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। ওই দলের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, সারা দেশের মানুষের কথা, নিরাপত্তার কথা না ভেবে কী করে নিজের দলের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে ?
'চাটুকারদের কাছ থেকে দূরে থাকুন'
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, 'মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমার মুখে এসব কথা শোভা পায় না। তবু বলি, চাটুকরদের কাছ থেকে দূরে থাকুন এবং দলের যে নেতাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তাঁদের বলুন সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে। কঠোরভাবে বলে দিন, কাজের মধ্য দিয়ে তাঁদের যোগ্যতা, দক্ষতা নির্ধারিত হবে, অন্য কোনো পন্থায় নয়। তার পরও ব্যর্থতার এই দায় আপনি নেবেন না। এসব অপরাধ নির্মূলে উদ্যোগ নেবেন। আমাদের প্রত্যাশা, আপনি দৃঢ় হবেন।'
দুই দলের উদ্দেশে
প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশ করে মিজানুর রহমান বলেন, 'দেশের বর্তমান এই ভীতিকর অবস্থাকে রাজনৈতিক বুলি আউরে পাড় পাবেন না। এ নিয়ে রাজনৈতিক খেলা কাম্য নয়। একে অপরকে দোষারোপ করার মধ্য দিয়ে নাগরিক জীবনকে আরও শঙ্কার মধ্যে ফেলে দেবেন না। বর্তমানে দেশের এ অবস্থার প্রধান দায় বর্তায় রাষ্ট্রের ওপর।'
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও ফারিয়া লারা ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মশালায় কর্মী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কমিশনের সদস্য কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, কমিশনের সচিব এম এ সালাম, ফারিয়া লারা ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন খান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক বনশ্রী মিত্র নিয়োগী, বরগুনা জেলা প্রশাসক আবদুল ওহাব ভূইঞা ও পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ।
কর্মশালায় 'মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার নিশ্চয়তায় চাই উত্পীড়নমুক্ত শিক্ষাঙ্গন ও জনপদ' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বরগুনার প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক এম জসীম উদ্দীন। কর্মশালায় বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার প্রশাসনের কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মী ও তৃণমূল পর্যায়ের মানবাধিকারকর্মীসহ ২০৫ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
No comments