এএপির বিতর্কিত পদক্ষেপে স্বস্তি খুঁজছে বিজেপি
ভারতের রাজনীতিতে নতুন শক্তি হিসেবে আম আদমি পার্টির (এএপি) উত্থান প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছিল। এখন এএপির কিছু পদক্ষেপ আগামী লোকসভা নির্বাচনে সাফল্যের ব্যাপারে আশান্বিত করে তুলেছে দলটিকে। এএপির উত্থানে বিজেপির চিন্তার কারণ, কংগ্রেসের ক্ষয়িষ্ণু জনসমর্থনের বেশির ভাগই এএপির ঝুলিতে গেলে বিজেপির দিল্লি দখলের স্বপ্ন অধরা থেকে যেতে পারে। তবে বিজেপি এখন সেই আশঙ্কা থেকে বেরিয়ে এসে এএপির সাম্প্রতিক বিতর্কিত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরছে জনগণের সামনে। এএপিকে প্রবল সমালোচনার মুখে দাঁড় করিয়েছে দুই মন্ত্রীর নৈশ অভিযান আর দলীয় প্রধান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ধরনা। একটি ঘটনায় রাজ্যের আইনমন্ত্রী সোমনাথ ভারতী রাজধানীর খিড়কি অঞ্চলে বসবাসকারী আফ্রিকার নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঝরাতে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালালেও তাঁর নির্দেশ মেনে পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অস্বীকার করে।
অন্য ঘটনার নেতৃত্ব দেন মহিলা কল্যাণমন্ত্রী রেখা বিড়লা। সেখানেও পুলিশ তাঁর নির্দেশ মানেনি। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ মানতে পুলিশের অস্বীকৃতির পর ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী ধরনায় বসেন। মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনে আইনমন্ত্রী সোমনাথ যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চেয়েছিলেন, তাঁরা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিক। উগান্ডার দুই নারী সোমনাথকে শনাক্ত করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে বয়ান দিয়েছেন। ফলে সোমনাথের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কেজরিওয়ালের ওপর চাপ বাড়ছে। ওই ঘটনা ভারত-উগান্ডা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কেও অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। মন্ত্রীদের নৈশ অভিযান ও সরকারের ধরনার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষিত, শালীন, শহুরে মানুষ যাঁরা এএপিকে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের মনেও প্রশ্ন উঠছে, এ কাজ কোনো সরকারকে মানায় কি না। এএপির মধ্যেও এর সমালোচনা হচ্ছে। বিজেপি মনে করছে, এএপির উত্থানের পেছনে আবেগ ছিল, রাজনীতি ছিল কম। বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা অরুণ জেটলির মতে, লোকসভার ভোটের সময় দেশের মানুষ অবশ্যই এই আবেগের মোহজাল থেকে বেরিয়ে দৃঢ়, বলিষ্ঠ নেতৃত্বের হাতে দেশের ভার তুলে দেবে।
No comments