ভারতীয় পত্রিকায় শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ভারতের খেদমতগারির স্বীকৃতি by বদরুদ্দীন উমর
দিল্লির
Indian Express পত্রিকায় পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদক শেখর গুপ্তের একটি
প্রবন্ধ ঢাকার Daily Star-এ ০২.০৯.২০১৩ তারিখে পুনর্মুদ্রিত হয়েছে।
প্রবন্ধটির নাম National Interest : Dear Norendrabhai. গুজরাটের
মুখ্যমন্ত্রী এবং বর্তমানে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) অন্যতম
শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদীকে
উদ্দেশ করে এ প্রবন্ধটি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ
বিবেচনায় এর বক্তব্য নিয়ে কিছু কথা বলার প্রয়োজন হল। তাছাড়া এই বক্তব্য
যিনি প্রদান করেছেন তিনি ভারতের উচ্চ পর্যায়ের এমন একজন সাংবাদিক, যার
সঙ্গে বিজেপির উচ্চতম নেতৃত্বের সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠ। তিনি লিখেছেন,
লালকৃষ্ণ আদভানি, সুষমা স্বরাজ, রাজনাথ, অরুণ জেটলির পরিবর্তে নরেন্দ্র
মোদীর উদ্দেশে তিনি তার বক্তব্য প্রদান করছেন, কারণ প্রথম দু’জন এখন অন্য
কারও কথা শোনার মতো অবস্থায় নেই। তাদের অবস্থান খুবই উগ্র। পরের দু’জনের
দৃষ্টিভঙ্গি কিছু নরম হওয়া সত্ত্বেও এবং তারা কিছু চেষ্টা করা সত্ত্বেও
তাতে কোনো কাজ হয়নি। কাজটি হল, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উন্নয়নের
ক্ষেত্রে তিস্তার জলবণ্টন ও ছিটমহল (বহপষধাবং) সমস্যার সমাধান করা এবং ভারত
সরকার এ দুই নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যে চুক্তি করেছে, তা পার্লামেন্টে পাস
করে সমস্যা দুটির নিষ্পত্তি করা। এক্ষেত্রে অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার এই যে,
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সম্পাদক এমন একজন বিজেপি নেতার কাছে তার আহ্বান
জানিয়েছেন, যার থেকে নিকৃষ্ট সাম্প্রদায়িক বিজেপি নেতা কমই আছেন, যিনি ২০০২
সালে সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামা সৃষ্টি করে গুজরাটে হাজার হাজার নিরীহ মুসলমান
হত্যা করেছিলেন। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শত্র“তার ক্ষেত্রে যিনি
সব রকম বক্তব্যই প্রায় প্রদান করে থাকেন। যিনি তার কঠোর নেতিবাচক বক্তব্য
তিস্তার জলবণ্টন এবং ছিটমহল সমস্যার বিষয়ে বেশ স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন!
যাই হোক, কার কাছে উপরোক্ত পত্রিকা সম্পাদক মশাই বক্তব্য দিচ্ছেন, সেটা
আসল কথা নয়। আসল কথা হল, এ বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বাংলাদেশের বর্তমান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতপ্রীতি এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের
প্রতি ভারতের উল্টো মনোভাবের বিষয়ে যা বলেছেন সেটা।
শেখর গুপ্ত বলেছেন, শেখ হাসিনার উদারনীতি ও সাহসী ভারত-বন্ধু সরকার ভারতকে অনেক সুযোগ-সুবিধা ও ছাড় দেয়া সত্ত্বেও দুই সরকার তিস্তার জলবণ্টন ও ছিটমহলগুলোর হস্তান্তর বিষয়ে যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, তা পার্লামেন্টে অনুমোদনের বিরুদ্ধে বিজেপি অবস্থান গ্রহণ করে দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা ও বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এভাবে প্রতিকূলতা সৃষ্টি না করে বিজেপি যাতে বিল দুটি পার্লামেন্টে পাস করার পক্ষে ভোট দেয়, এ জন্য তার প্রিয় ‘নরেন্দ্রভাই’-এর কাছে শেখর গুপ্ত উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন! যে ব্যক্তি তার ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতা ও মুসলিম হত্যার জন্য ‘গুজরাটের কসাই’ নামে ভারতেই পরিচিত, তাকে অন্য বিজেপি নেতাদের থেকেও বাংলাদেশের ব্যাপারে নমনীয় তিনি কী কারণে বোধ করলেন এটা বোঝা মুশকিল। এর একটা বোধগম্য কারণ হচ্ছে, তিনি হয়তো মনে করেন, অন্য কোনো পুরনো বিজেপি নেতা নয়, ‘নরেন্দ্রভাই’ই এখন বিজেপির সব থেকে শক্তিশালী বিজেপি নেতা, আগামী নির্বাচনে বিজেপি সরকার গঠন করলে যার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি!
যাই হোক, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ‘উদারনৈতিক ও সাহসী’ বাংলাদেশ সরকার ভারতকে একতরফাভাবে যে সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে, ভারতের স্বার্থে কী কী করেছে তার বিবরণ দিতে গিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সম্পাদক তার পাঠকদের মনে করিয়ে দেয়ার জন্য বলেছেন, কীভাবে বাংলাদেশ সরকার তাদের দেশের পলাতক উলফা নেতা রাজখোয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে এবং অনুপ চেটিয়াকে কারাগারে আটক রেখেছে। ত্রিপুরা তার ভূগর্ভস্থ গ্যাস এখন যেভাবে জ্বালানিতে রূপান্তরিত করতে পারছে, সেটা সম্ভব হতো না যদি বাংলাদেশ সরকার ভীষণ ভারি জেনারেটরগুলো নিজেদের নদীতে বার্জের মাধ্যমে সেখানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা না করত। এই জেনারেটরগুলো ভারতের সংকীর্ণ ও ঘোরালো পাহাড়ি পথ দিয়ে নিয়ে যাওয়া কোনোক্রমেই সম্ভব ছিল না। বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে বাধ্য করেছে তাদের তৎপরতা বন্ধ করতে। তারা জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সরকারের আমলের সেই সব অসাংবিধানিক আইন রদ করেছে, যেগুলোর দ্বারা বাংলাদেশকে একটি ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল! এছাড়া যে বিস্ময়কর কথা সম্পাদক মশাই বলেছেন তা হল, শেখ হাসিনার সরকার বিডিআরকে বিলুপ্ত করেছে, যে সংস্থা ভারতের অনেক ক্ষতি করেছে, তাদের জওয়ানদের হত্যা করেছে ইত্যাদি!
শেখ হাসিনা জিয়াউর রহমান ও এরশাদের সময়কার সেই সব অসাংবিধানিক আইন রদ করেছেন, যেগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল- এই সত্য দর্শন তার কীভাবে হল বোঝা গেল না। কারণ সংবিধানের মুখবন্ধে বিসমিল্লাহ এবং এরশাদের সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলামবিষয়ক সংশোধনী এখনও বহাল রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ একটি ধর্মবিযুক্ত (secular) রাষ্ট্র কীভাবে হল, তার অর্থ তারাই জানেন! যাই হোক, বিডিআর সম্পর্কিত বক্তব্যটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের স্বার্থে শেখ হাসিনার সরকার কর্তৃক বিডিআর বিলুপ্তিকে শেখর গুপ্ত ভারতের প্রতি বর্তমান সরকারের একটি বন্ধুসুলভ কাজ বলে উল্লেখ করেছেন! বিডিআর বিলুপ্ত করার আগে ঘটেছিল পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ এবং খুনখারাবির ঘটনা। তাতে যে ভারত সরকারের হাত ছিল, এটা অনেক মহল থেকেই বলা হয়েছিল। এখন ভারতের একটি শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার প্রবীণ সম্পাদক শেখর গুপ্তের বক্তব্যের মধ্যে তার সমর্থন ও স্বীকৃতিই পাওয়া গেল! বিডিআরের বিলুপ্তি পিলখানার ঘটনার মতো ঘটনা না ঘটিয়ে সম্ভব ছিল না। কাজেই ভারতের স্বার্থে বিডিআর বিলুপ্ত করে তার জায়গায় বর্ডার গার্ড নামে নতুন একটি বাহিনী শেখ হাসিনা সরকার ভারত-বন্ধু হিসেবে তৈরি করেছে, একথা ভারতীয় শাসক মহল থেকে এখন প্রকাশ্যেই বলা হল!
এহেন ভারত-বন্ধুকে আগামী নির্বাচনের প্রাক্কালে সাহায্য না করে তিস্তা ও ছিটমহল-সংক্রান্ত ভূমি চুক্তি যদি ভারতীয় পার্লামেন্টেই বাতিল হয়ে যায়, তাহলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বড় আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এ আশংকা প্রকাশ করে যা বলা হয়েছে তার থেকে বোঝা যায় যে, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে নয়, ভারতীয় শাসকশ্রেণী ও সরকারের স্বার্থে যাতে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার আবার নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারে, এ লক্ষ্যেই ভারতীয় শাসকশ্রেণী কাজ করছে। এই লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বিজেপি যাতে কোনো বাধা সৃষ্টি না করতে পারে এ জন্যই ভারতীয় পত্রিকা সম্পাদক মহোদয় দুর্বিনীত ও ঘোরতর মুসলিমবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক তার ‘নরেন্দ্রভাই’-এর কাছে মূল্যবান আহ্বান জানিয়েছেন! ভারত সরকার যেখানে বাংলাদেশকে কিছুই না দিয়ে নিজেরা সব কিছু পেতে অভ্যস্ত হয়েছে, সেখানে ‘নরেন্দ্রভাই’-এর কাছে এই আহ্বান যে মাঠে মারা যাবে এতে সন্দেহ নেই।
বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
শেখর গুপ্ত বলেছেন, শেখ হাসিনার উদারনীতি ও সাহসী ভারত-বন্ধু সরকার ভারতকে অনেক সুযোগ-সুবিধা ও ছাড় দেয়া সত্ত্বেও দুই সরকার তিস্তার জলবণ্টন ও ছিটমহলগুলোর হস্তান্তর বিষয়ে যে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, তা পার্লামেন্টে অনুমোদনের বিরুদ্ধে বিজেপি অবস্থান গ্রহণ করে দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা ও বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এভাবে প্রতিকূলতা সৃষ্টি না করে বিজেপি যাতে বিল দুটি পার্লামেন্টে পাস করার পক্ষে ভোট দেয়, এ জন্য তার প্রিয় ‘নরেন্দ্রভাই’-এর কাছে শেখর গুপ্ত উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন! যে ব্যক্তি তার ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতা ও মুসলিম হত্যার জন্য ‘গুজরাটের কসাই’ নামে ভারতেই পরিচিত, তাকে অন্য বিজেপি নেতাদের থেকেও বাংলাদেশের ব্যাপারে নমনীয় তিনি কী কারণে বোধ করলেন এটা বোঝা মুশকিল। এর একটা বোধগম্য কারণ হচ্ছে, তিনি হয়তো মনে করেন, অন্য কোনো পুরনো বিজেপি নেতা নয়, ‘নরেন্দ্রভাই’ই এখন বিজেপির সব থেকে শক্তিশালী বিজেপি নেতা, আগামী নির্বাচনে বিজেপি সরকার গঠন করলে যার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি!
যাই হোক, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ‘উদারনৈতিক ও সাহসী’ বাংলাদেশ সরকার ভারতকে একতরফাভাবে যে সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে, ভারতের স্বার্থে কী কী করেছে তার বিবরণ দিতে গিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সম্পাদক তার পাঠকদের মনে করিয়ে দেয়ার জন্য বলেছেন, কীভাবে বাংলাদেশ সরকার তাদের দেশের পলাতক উলফা নেতা রাজখোয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে এবং অনুপ চেটিয়াকে কারাগারে আটক রেখেছে। ত্রিপুরা তার ভূগর্ভস্থ গ্যাস এখন যেভাবে জ্বালানিতে রূপান্তরিত করতে পারছে, সেটা সম্ভব হতো না যদি বাংলাদেশ সরকার ভীষণ ভারি জেনারেটরগুলো নিজেদের নদীতে বার্জের মাধ্যমে সেখানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা না করত। এই জেনারেটরগুলো ভারতের সংকীর্ণ ও ঘোরালো পাহাড়ি পথ দিয়ে নিয়ে যাওয়া কোনোক্রমেই সম্ভব ছিল না। বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে বাধ্য করেছে তাদের তৎপরতা বন্ধ করতে। তারা জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সরকারের আমলের সেই সব অসাংবিধানিক আইন রদ করেছে, যেগুলোর দ্বারা বাংলাদেশকে একটি ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল! এছাড়া যে বিস্ময়কর কথা সম্পাদক মশাই বলেছেন তা হল, শেখ হাসিনার সরকার বিডিআরকে বিলুপ্ত করেছে, যে সংস্থা ভারতের অনেক ক্ষতি করেছে, তাদের জওয়ানদের হত্যা করেছে ইত্যাদি!
শেখ হাসিনা জিয়াউর রহমান ও এরশাদের সময়কার সেই সব অসাংবিধানিক আইন রদ করেছেন, যেগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল- এই সত্য দর্শন তার কীভাবে হল বোঝা গেল না। কারণ সংবিধানের মুখবন্ধে বিসমিল্লাহ এবং এরশাদের সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলামবিষয়ক সংশোধনী এখনও বহাল রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ একটি ধর্মবিযুক্ত (secular) রাষ্ট্র কীভাবে হল, তার অর্থ তারাই জানেন! যাই হোক, বিডিআর সম্পর্কিত বক্তব্যটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের স্বার্থে শেখ হাসিনার সরকার কর্তৃক বিডিআর বিলুপ্তিকে শেখর গুপ্ত ভারতের প্রতি বর্তমান সরকারের একটি বন্ধুসুলভ কাজ বলে উল্লেখ করেছেন! বিডিআর বিলুপ্ত করার আগে ঘটেছিল পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ এবং খুনখারাবির ঘটনা। তাতে যে ভারত সরকারের হাত ছিল, এটা অনেক মহল থেকেই বলা হয়েছিল। এখন ভারতের একটি শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার প্রবীণ সম্পাদক শেখর গুপ্তের বক্তব্যের মধ্যে তার সমর্থন ও স্বীকৃতিই পাওয়া গেল! বিডিআরের বিলুপ্তি পিলখানার ঘটনার মতো ঘটনা না ঘটিয়ে সম্ভব ছিল না। কাজেই ভারতের স্বার্থে বিডিআর বিলুপ্ত করে তার জায়গায় বর্ডার গার্ড নামে নতুন একটি বাহিনী শেখ হাসিনা সরকার ভারত-বন্ধু হিসেবে তৈরি করেছে, একথা ভারতীয় শাসক মহল থেকে এখন প্রকাশ্যেই বলা হল!
এহেন ভারত-বন্ধুকে আগামী নির্বাচনের প্রাক্কালে সাহায্য না করে তিস্তা ও ছিটমহল-সংক্রান্ত ভূমি চুক্তি যদি ভারতীয় পার্লামেন্টেই বাতিল হয়ে যায়, তাহলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বড় আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এ আশংকা প্রকাশ করে যা বলা হয়েছে তার থেকে বোঝা যায় যে, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে নয়, ভারতীয় শাসকশ্রেণী ও সরকারের স্বার্থে যাতে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার আবার নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারে, এ লক্ষ্যেই ভারতীয় শাসকশ্রেণী কাজ করছে। এই লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বিজেপি যাতে কোনো বাধা সৃষ্টি না করতে পারে এ জন্যই ভারতীয় পত্রিকা সম্পাদক মহোদয় দুর্বিনীত ও ঘোরতর মুসলিমবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক তার ‘নরেন্দ্রভাই’-এর কাছে মূল্যবান আহ্বান জানিয়েছেন! ভারত সরকার যেখানে বাংলাদেশকে কিছুই না দিয়ে নিজেরা সব কিছু পেতে অভ্যস্ত হয়েছে, সেখানে ‘নরেন্দ্রভাই’-এর কাছে এই আহ্বান যে মাঠে মারা যাবে এতে সন্দেহ নেই।
বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
No comments