কৃষকের কণ্ঠস্বর শাইখ সিরাজ by খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ
শাইখ
সিরাজ হয়ে উঠছেন কৃষকের মুখপাত্র। আমাদের দেশে বিভিন্ন পেশা ও ধরনের
মানুষের পক্ষে কথা বলার জন্য তাদের প্রতিনিধি রয়েছে, ফোরাম রয়েছে, লোকজন
রয়েছে। ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের আছে মহাশক্তিশালী সংগঠন চেম্বার। সরকারের ওপর
প্রভাব বিস্তার করতে এমনকি কখনও কখনও সরকারকে বাধ্য করার ক্ষেত্রে তারা
সক্ষমতা প্রদর্শন করেছেন। অনেকে বলেন, তারা সব সময়ে সরকারের মধ্যেই ঢুকে
থাকেন এবং সরকার তাদের স্বার্থেই কাজ করে থাকেন। এছাড়া সাংবাদিকদের রয়েছে
শক্তিশালী সমিতি। বিভিন্ন পেশাজীবীরও নিজ নিজ মঞ্চ রয়েছে তাদের স্বার্থ
রক্ষার জন্য। এমনকি শ্রমিকদেরও রয়েছে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ইউনিয়ন। দেশের
সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত। তারা সংগঠিত নন। তাদের পক্ষে
কথা বলার মতো উল্লেখযোগ্য কোনো সংগঠন নেই। কৃষকদের নামে কিছু রাজনৈতিক দলের
অঙ্গসংগঠন আছে, যারা দলের স্বার্থে কাজ করে, কৃষকের স্বার্থে নয়। সরকারে
কৃষকদের প্রতিনিধি নেই। জাতীয় সংসদে ব্যবসায়ী-শিল্পপতি রয়েছেন,
আইনজীবী-পেশাজীবী রয়েছেন। কোনো কৃষক নেই। তাই কৃষকদের কথা বলার কেউ নেই। এই
শূন্যস্থানটিতে এগিয়ে এসেছেন শাইখ সিরাজ। তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি
হিসেবে নয়। জনপ্রতিনিধি হিসেবেও নয়। তিনি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে কৃষকদের
লবিস্টের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। বিশ্বময় লবিস্টরা মোটা অংকের ফি পেয়ে
থাকেন। শাইখ সিরাজ কৃষকদের কাছ থেকে ফি আদায় করেন না। যুগ যুগ ধরে অবহেলিত,
অসহায়, দরিদ্র কৃষকদের পক্ষে কাজ করা বুঝি তার ব্রত। শিক্ষকতা যেমন
শিক্ষকদের ব্রত ও পেশা, তেমনি সাংবাদিকতা শাইখ সিরাজের পেশা ও ব্রত। এ
পেশার মাধ্যমেই তিনি মানবসেবার ব্রত পালনে আগ্রহী। কর্মজীবনের শুরু থেকেই
মিডিয়া জগতে তার প্রবেশ ঘটে। বেতার-টেলিভিশনে অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মধ্য
দিয়ে তার সাংবাদিকতায় প্রবেশ। লক্ষণীয়, সে সময় থেকে এ পর্যন্ত অনেকেই সংবাদ
পরিবেশনা, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা, বিনোদন, কথা-সাংবাদিকতা প্রভৃতি মিডিয়া
অঙ্গনে অবদান রেখেছেন, সুখ্যাতি কুড়িয়েছেন। কিন্তু এসব পরিচিত ক্ষেত্র রেখে
শাইখ সিরাজ বেছে নিয়েছিলেন স্বল্প পরিচিত একটি অঙ্গন, কৃষি সাংবাদিকতা।
মাটি ও মানুষ নিয়ে তার পুরনো দিনের অনুষ্ঠানগুলো এখনও অনেকের স্মৃতিপটে
জেগে রয়েছে।
তার এই ব্যতিক্রমী পেশা নির্বাচন পরিকল্পিত, না দৈব ঘটনা তা আমি জানি না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় দেখেছি, নতুন কোনো ডিপার্টমেন্ট খোলা হলে অনেক ভালো ছাত্র বহুল পরিচিত ও কাক্সিক্ষত বিষয়ে ভর্তি না হয়ে নতুন বিভাগটিতে ভর্তি হয়। অনেকটা ‘ঐ নতুনের কেতন ওড়ে’ কবিতার ছন্দে। কৃষি সাংবাদিকতার অকর্ষিত ক্ষেত্রেও তেমন মনোভাব নিয়ে শাইখ সিরাজ এসেছিলেন কি-না, তা তিনিই বলতে পারবেন। তবে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, সে সময়ে দেশের জাতীয় আয়ে কৃষির অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। কৃষি-শ্রমিক তথা কৃষিজীবীর সংখ্যা ছিল জনসংখ্যার কমবেশি অর্ধাংশ। অথচ সংবাদপত্রে কৃষি বা কৃষকের কোনো খবর ছাপা হতো না। রেডিও-টিভিতে সংবাদ প্রচারে কৃষির খবর ছিল না। ফিচার অনুষ্ঠানেও কৃষি থাকত না। অবশ্য কৃষকের জন্য রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় একটি নিয়মিত অনুষ্ঠান হতো। এমন একটি সম্ভাবনাময় অথচ পিছিয়ে থাকা ক্ষেত্র শনাক্তকরণে শাইখ সিরাজের সক্ষমতা তার বাস্তবমুখিতার পরিচয় বহন করে। মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি কৃষিকে চিনতে শিখেছেন এবং কৃষিক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। তখনকার অনুষ্ঠানগুলো ছিল তথ্য প্রদানমূলক। কোন সার কতটুকু দিতে হয়, কোন কীটনাশক কখন কী পরিমাণে প্রয়োগ করতে হয়- এসব তথ্য পরিবেশনই ছিল অনুষ্ঠানের প্রধান উপজীব্য। কৃষকরা চিঠিপত্রের মাধ্যমে প্রশ্ন করতেন। এখনকার মতো তাৎক্ষণিক টেলিফোনে নয়। এভাবেই দক্ষতার সঙ্গে কৃষি অনুষ্ঠান করে শাইখ সিরাজ সুপরিচিত হয়ে ওঠেন।
তারপর দ্বিতীয় অধ্যায়। ফরিদুর রেজা সাগরের নেতৃত্বে ব্যক্তিখাতে চ্যানেল আই সম্প্রচার শুরু করল। শাইখ সিরাজ এর সঙ্গে যুক্ত থেকে নতুন আঙ্গিকে শুরু করলেন কৃষি-সাংবাদিকতা। বিষয় পুরনো, মাত্রা নতুন। শাইখ সিরাজ চ্যানেল আইতে কৃষিবিষয়ক প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ও সংবাদ পরিবেশন শুরু করলেন। তিনি ও তার দল গ্রামগঞ্জ চষে সচিত্র কৃষি সংবাদ সংগ্রহ করতে লাগলেন। শুধু সংবাদই নয়, সংশ্লিষ্ট মানুষদের কথাও। কৃষকের মুখ থেকে ক্যামেরায় ধারণ করা শুরু হল সংবাদের পেছনের কথা। টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে কৃষক। এ ছিল অচিন্তনীয়। কিন্তু কৃষক যখন ক্যামেরার সামনে সহজ সরল ভাষায় অকপটে তার মনোভাব ব্যক্ত করতে শুরু করল, তখন শহুরে সাংবাদিক তথা দর্শকের বোধোদয় ঘটতে লাগল। শহর আর গ্রামের সীমানাপ্রাচীর ধসে পড়ল। একদিকে শহরে কৃষি ও কৃষক পরিচিত হয়ে উঠল, অন্যদিকে টেলিভিশন মিডিয়া বিশাল গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করল।
শাইখ সিরাজের সর্বশেষ অবদান হল কৃষকের লবিস্ট হিসেবে তার কর্মযজ্ঞ। প্রতিবছর জাতীয় বাজেট প্রস্তুতকালে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সব সেক্টরের স্টেকহোল্ডাররা নিজ নিজ সমিতি, মঞ্চ, চেম্বার প্রভৃতির মাধ্যমে লবিং শুরু করে দেন বাজেটে তাদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য। দেশের বড় অর্থনৈতিক সেক্টর কৃষির কথা বলার কেউ নেই। কৃষকের দাবি পেশ করার কেউ নেই। এগিয়ে এলেন শাইখ সিরাজ। দীর্ঘকাল কৃষি আর কৃষক নিয়ে কাজ করার ফলে তাদের সমস্যা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল ছিলেন তিনি। তিনি এক অনন্য পন্থা গ্রহণ করলেন। গত কয়েক বছর ধরে তিনি জাতীয় বাজেটের আগে কৃষকের বাজেট প্রণয়ন করেন এবং কৃষকদের পক্ষ থেকে তা যথারীতি অর্থমন্ত্রীর কাছে পেশ করে আসছেন। কাজটি করছেন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে। দেশের পাঁচ-ছয়টি পল্লী এলাকায় কৃষক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। কয়েক হাজার কৃষক সমবেত হন প্রতিটি সমাবেশে। শাইখ সিরাজ চ্যানেল আই-এর ক্যামেরা নিয়ে হাজির হন সভায়। সঙ্গে নিয়ে যান অর্থমন্ত্রী বা নীতিনির্ধারকদের কাউকে। একবার আমিও গিয়েছিলাম। সমবেত কৃষকেরা ক্যামেরার সামনে মাইকে বর্ণনা করেন তাদের দাবি-দাওয়া এবং সেই সঙ্গে বলেন কেমন বাজেট চাই। শুরুতে কৃষকেরা বাজেট বুঝতেন না। এখন তাদের কথা শুনলে মনে হয়, কৃষকেরা সংসদে বসলে বাজেট প্রণয়নও করতে পারবেন। এসব কৃষক সমবেশ থেকে বেরিয়ে আসা কথাবার্তা অবলম্বনে শাইখ সিরাজ তৈরি করেন কৃষকের বাজেট। তারপর তা পেশ করা হয় অর্থমন্ত্রীর কাছে। সব কিছুই কৃষকদের জানিয়ে দেয়া হয় চ্যানেল আই-এর মাধ্যমে। এভাবেই শাইখ সিরাজ হয়ে উঠেছেন কৃষকের বিশ্বাসযোগ্য লবিস্ট। তথাকথিত কৃষক সংগঠনগুলো এতকালে যা পারেনি, শাইখ সিরাজ তা পেরেছেন এবং প্রতিবছর করে যাচ্ছেন স্বউদ্যোগে এবং কৃষকের অংশগ্রহণে।
গতকাল ছিল শাইখ সিরাজের জন্মদিন। কামনা করি তিনি সুস্থ থাকুন, দীর্ঘজীবন লাভ করুন এবং স্বপ্রণোদিত হয়ে কৃষকদের জন্য কাজ করে যান। এ প্রক্রিয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা কৃষকসমাজ ধীরে ধীরে সংগঠিত হয়ে উঠবে এবং নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে নিজেরাই সোচ্চার হবে। অন্তত সে পর্যন্ত শাইখ সিরাজকে এ কাজটি চালিয়ে যেতে হবে।
খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
তার এই ব্যতিক্রমী পেশা নির্বাচন পরিকল্পিত, না দৈব ঘটনা তা আমি জানি না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় দেখেছি, নতুন কোনো ডিপার্টমেন্ট খোলা হলে অনেক ভালো ছাত্র বহুল পরিচিত ও কাক্সিক্ষত বিষয়ে ভর্তি না হয়ে নতুন বিভাগটিতে ভর্তি হয়। অনেকটা ‘ঐ নতুনের কেতন ওড়ে’ কবিতার ছন্দে। কৃষি সাংবাদিকতার অকর্ষিত ক্ষেত্রেও তেমন মনোভাব নিয়ে শাইখ সিরাজ এসেছিলেন কি-না, তা তিনিই বলতে পারবেন। তবে একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, সে সময়ে দেশের জাতীয় আয়ে কৃষির অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। কৃষি-শ্রমিক তথা কৃষিজীবীর সংখ্যা ছিল জনসংখ্যার কমবেশি অর্ধাংশ। অথচ সংবাদপত্রে কৃষি বা কৃষকের কোনো খবর ছাপা হতো না। রেডিও-টিভিতে সংবাদ প্রচারে কৃষির খবর ছিল না। ফিচার অনুষ্ঠানেও কৃষি থাকত না। অবশ্য কৃষকের জন্য রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় একটি নিয়মিত অনুষ্ঠান হতো। এমন একটি সম্ভাবনাময় অথচ পিছিয়ে থাকা ক্ষেত্র শনাক্তকরণে শাইখ সিরাজের সক্ষমতা তার বাস্তবমুখিতার পরিচয় বহন করে। মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি কৃষিকে চিনতে শিখেছেন এবং কৃষিক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। তখনকার অনুষ্ঠানগুলো ছিল তথ্য প্রদানমূলক। কোন সার কতটুকু দিতে হয়, কোন কীটনাশক কখন কী পরিমাণে প্রয়োগ করতে হয়- এসব তথ্য পরিবেশনই ছিল অনুষ্ঠানের প্রধান উপজীব্য। কৃষকরা চিঠিপত্রের মাধ্যমে প্রশ্ন করতেন। এখনকার মতো তাৎক্ষণিক টেলিফোনে নয়। এভাবেই দক্ষতার সঙ্গে কৃষি অনুষ্ঠান করে শাইখ সিরাজ সুপরিচিত হয়ে ওঠেন।
তারপর দ্বিতীয় অধ্যায়। ফরিদুর রেজা সাগরের নেতৃত্বে ব্যক্তিখাতে চ্যানেল আই সম্প্রচার শুরু করল। শাইখ সিরাজ এর সঙ্গে যুক্ত থেকে নতুন আঙ্গিকে শুরু করলেন কৃষি-সাংবাদিকতা। বিষয় পুরনো, মাত্রা নতুন। শাইখ সিরাজ চ্যানেল আইতে কৃষিবিষয়ক প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ও সংবাদ পরিবেশন শুরু করলেন। তিনি ও তার দল গ্রামগঞ্জ চষে সচিত্র কৃষি সংবাদ সংগ্রহ করতে লাগলেন। শুধু সংবাদই নয়, সংশ্লিষ্ট মানুষদের কথাও। কৃষকের মুখ থেকে ক্যামেরায় ধারণ করা শুরু হল সংবাদের পেছনের কথা। টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে কৃষক। এ ছিল অচিন্তনীয়। কিন্তু কৃষক যখন ক্যামেরার সামনে সহজ সরল ভাষায় অকপটে তার মনোভাব ব্যক্ত করতে শুরু করল, তখন শহুরে সাংবাদিক তথা দর্শকের বোধোদয় ঘটতে লাগল। শহর আর গ্রামের সীমানাপ্রাচীর ধসে পড়ল। একদিকে শহরে কৃষি ও কৃষক পরিচিত হয়ে উঠল, অন্যদিকে টেলিভিশন মিডিয়া বিশাল গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করল।
শাইখ সিরাজের সর্বশেষ অবদান হল কৃষকের লবিস্ট হিসেবে তার কর্মযজ্ঞ। প্রতিবছর জাতীয় বাজেট প্রস্তুতকালে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সব সেক্টরের স্টেকহোল্ডাররা নিজ নিজ সমিতি, মঞ্চ, চেম্বার প্রভৃতির মাধ্যমে লবিং শুরু করে দেন বাজেটে তাদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য। দেশের বড় অর্থনৈতিক সেক্টর কৃষির কথা বলার কেউ নেই। কৃষকের দাবি পেশ করার কেউ নেই। এগিয়ে এলেন শাইখ সিরাজ। দীর্ঘকাল কৃষি আর কৃষক নিয়ে কাজ করার ফলে তাদের সমস্যা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল ছিলেন তিনি। তিনি এক অনন্য পন্থা গ্রহণ করলেন। গত কয়েক বছর ধরে তিনি জাতীয় বাজেটের আগে কৃষকের বাজেট প্রণয়ন করেন এবং কৃষকদের পক্ষ থেকে তা যথারীতি অর্থমন্ত্রীর কাছে পেশ করে আসছেন। কাজটি করছেন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে। দেশের পাঁচ-ছয়টি পল্লী এলাকায় কৃষক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। কয়েক হাজার কৃষক সমবেত হন প্রতিটি সমাবেশে। শাইখ সিরাজ চ্যানেল আই-এর ক্যামেরা নিয়ে হাজির হন সভায়। সঙ্গে নিয়ে যান অর্থমন্ত্রী বা নীতিনির্ধারকদের কাউকে। একবার আমিও গিয়েছিলাম। সমবেত কৃষকেরা ক্যামেরার সামনে মাইকে বর্ণনা করেন তাদের দাবি-দাওয়া এবং সেই সঙ্গে বলেন কেমন বাজেট চাই। শুরুতে কৃষকেরা বাজেট বুঝতেন না। এখন তাদের কথা শুনলে মনে হয়, কৃষকেরা সংসদে বসলে বাজেট প্রণয়নও করতে পারবেন। এসব কৃষক সমবেশ থেকে বেরিয়ে আসা কথাবার্তা অবলম্বনে শাইখ সিরাজ তৈরি করেন কৃষকের বাজেট। তারপর তা পেশ করা হয় অর্থমন্ত্রীর কাছে। সব কিছুই কৃষকদের জানিয়ে দেয়া হয় চ্যানেল আই-এর মাধ্যমে। এভাবেই শাইখ সিরাজ হয়ে উঠেছেন কৃষকের বিশ্বাসযোগ্য লবিস্ট। তথাকথিত কৃষক সংগঠনগুলো এতকালে যা পারেনি, শাইখ সিরাজ তা পেরেছেন এবং প্রতিবছর করে যাচ্ছেন স্বউদ্যোগে এবং কৃষকের অংশগ্রহণে।
গতকাল ছিল শাইখ সিরাজের জন্মদিন। কামনা করি তিনি সুস্থ থাকুন, দীর্ঘজীবন লাভ করুন এবং স্বপ্রণোদিত হয়ে কৃষকদের জন্য কাজ করে যান। এ প্রক্রিয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা কৃষকসমাজ ধীরে ধীরে সংগঠিত হয়ে উঠবে এবং নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে নিজেরাই সোচ্চার হবে। অন্তত সে পর্যন্ত শাইখ সিরাজকে এ কাজটি চালিয়ে যেতে হবে।
খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
No comments