শিক্ষকদের ওপর হামলা সরকারের ফ্যাসিস্ট চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ by বদরুদ্দীন উমর
১৯
আগস্ট বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকরা সরকারের কাছে তাদের দাবি-দাওয়া
জানানোর জন্য শহীদ মিনারে সমবেত হয়েছিলেন। বেসরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক
স্কুলের শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যেকটি সরকারের আমলেই বারবার নিজেদের
নানা দাবি নিয়ে আন্দোলন করে এসেছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের কিছু ছোটখাটো
দাবি পূরণ হলেও তাদের দাবি প্রত্যেক সরকারের দ্বারাই উপেক্ষিত হয়ে এসেছে।
শুধু তা-ই নয়, দাবি জানাতে গিয়ে শিক্ষকরা প্রায়ই সরকারের নির্দেশে পুলিশি
হামলার শিকার হয়েছেন। ১৯ আগস্টও তা-ই ঘটেছে। শিক্ষকরা শহীদ মিনারে তাদের
সভা শেষ করে মিছিল বের করার সময় পুলিশ তাদের ওপর হামলা করে। বেধড়ক
লাঠিচার্জ করে, রাবার বুলেট ছুঁড়ে ও পানি ছিটিয়ে তারা আন্দোলনরত শিক্ষকদের
ছত্রভঙ্গ করে। ১৫ জন শিক্ষককে পুলিশ গ্রেফতার করে এবং সাতজন তাদের আক্রমণে
আহত হন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর থেকে
স্পষ্টই বোঝা যায়, সরকারের কাছে নিজেদের দাবি-দাওয়া জানাতে গিয়ে এই গরিব
বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকরা তাদের যা পাওনা সেটা ভালোভাবেই পেয়েছেন!
শহীদ মিনারে সমবেত শিক্ষকরা সবাই বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক
হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য দেয়া লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এ কারণে
নিয়োগের দাবিতেই শিক্ষকরা তাদের সমাবেশ করছিলেন। তাদের কর্মসূচি ছিল সমাবেশ
শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গিয়ে তাকে স্মারকলিপি দেয়া। সরকার
পরিচালিত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় ৪২ হাজার শিক্ষক চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ
হয়েছিলেন। কিন্তু তাদের মধ্যে ১৪ হাজার শিক্ষককে বিভিন্ন স্কুলে নিয়োগ দেয়া
হলেও অন্যরা নিয়োগ পাননি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা
বলেন, দেশে এখন কোনো বেসরকারি স্কুল নেই। সব বেসরকারি স্কুলই সরকারি হয়েছে।
এ কারণে বেসরকারি স্কুলে অতিরিক্ত শিক্ষকদের কোনো নিয়োগ দেয়া সম্ভব নয়।
(দৈনিক বর্তমান ২০.০৮.২০১৩)
শিক্ষা বিভাগের সরকারি কর্মচারীদের এ বক্তব্যে না হয় বোঝা গেল, কিন্তু তার জন্য আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার কী প্রয়োজন হল? তারা জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মতো লাঠিসোটা, ইটপাটকেল, এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মিছিলে আসেননি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আক্রমণ করাও তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। এই কর্মহীন, গরিব শিক্ষকরা দেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে নিজেদের স্মারকলিপি প্রদান করতে চেয়েছিলেন। কোনো গণতান্ত্রিক দেশেই এ ধরনের আন্দোলন, সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ নয়। তা হতে পারে না। কাজেই নির্বাচনের সময় যে প্রধানমন্ত্রীকে এসব শিক্ষকসহ অন্যদের কাছে ভোট ভিক্ষার জন্য যেতে হয়, তাদের নানা রকম প্রতিশ্র“তি দিতে হয়, তিনি গদিতে বসার পর শিক্ষকদের কাছ থেকে স্মারকলিপি পর্যন্ত গ্রহণ করার পরিবর্তে তাদের ওপর যখন পুলিশ দিয়ে হামলা চালান, তখন প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের চরিত্র বিষয়ে কার আর সন্দেহ থাকতে পারে? শিক্ষকরা দেশের জনগণের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলে সেটা গ্রহণ করাই তার কর্তব্য। সব থেকে ভালো হয়, গণতান্ত্রিক কায়দায় যদি প্রধানমন্ত্রী নিজে বের হয়ে এসে শিক্ষকদের সামনে দাঁড়িয়ে সরকারের কোনো অসুবিধা থাকলে সেটা ব্যাখ্যা করা এবং সাধ্যমতো তাদের চাকরির ব্যবস্থার কথা বলা। এটা সম্ভব না হলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে স্মারকলিপি শিক্ষকদের কাছ থেকে গ্রহণ করতে পারতেন। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবেই এ কাজ সম্পন্ন করা যেত। আসলে শিক্ষকরা তা-ই চেয়েছিলেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বা সরাসরি তার হাতে স্মারকলিপি দেয়ার কোনো দাবিও করেননি। এ অবস্থায় শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মিছিল করে গেলে রাষ্ট্র ও সরকার কীভাবে আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হতো, সেটা বোঝার কোনো উপায় নেই। কাজেই একে গদির গরম ছাড়া আর কীভাবে আখ্যায়িত করা যায়? এই গদির গরমে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ব্যক্তিরা কীভাবে জনগণ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন রাখেন এবং শুধু তাই নয়, জনগণের ওপর ফ্যাসিস্ট হামলা চালাতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করেন না- এটা বাংলাদেশে যেভাবে দেখা যায় সেটা কোনো প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেখা যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু বাংলাদেশ প্রথম থেকেই এ ধরনের একটি শাসন ব্যবস্থার অধীনেই তার যাত্রা শুরু করেছে এবং প্রত্যেকটি নির্বাচিত ও অনির্বাচিত সরকার একই কায়দায় এই ঐতিহ্য রক্ষা করে এসেছে। ১৯ আগস্ট আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর সরকারি পুলিশের হামলা তারই একটি মামুলি উদাহরণ মাত্র।
প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের শাসকশ্রেণী ও সরকার এখন এমন ফ্যাসিস্ট চরিত্র পরিগ্রহ করেছে যাতে শুধু শিক্ষকরা কেন, কারও পক্ষেই সরকারি হামলার মুখে না পড়ে কোনো আন্দোলন করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশে এখন সভা-সমিতি, মিছিল কার্যত প্রায় নিষিদ্ধ বললেই চলে। ঢাকার মুক্তাঙ্গনের মতো জায়গায় এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালেও সভা-সমাবেশ করা যেত। কিন্তু তারপর থেকে মুক্তাঙ্গন সরকার কর্তৃক সভা-সমাবেশের জন্য নিষিদ্ধ হয়। বস্তুত এর দ্বারা ঢাকায় সভা-সমিতির জায়গা বলতে আর কিছুই রাখা হয়নি। পল্টন ময়দানের অবস্থা মুক্তাঙ্গনের মতোই। কাজেই এখন সভা-সমাবেশের জায়গা হয়েছে প্রেস ক্লাবের সামনে রাস্তার ওপর! এভাবেই বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট কায়দায় সরকার গণতান্ত্রিক শাসন চর্চা করছে!! এখানে শিক্ষকদের দাবির প্রসঙ্গে ফিরে এসে বলা দরকার যে, সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমন আইন করছে যে, কোনো শিক্ষক যদি সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলে বা আন্দোলন করে তাহলে তার এমপিওভুক্তি বাতিল করা হবে!!! এর থেকে ‘বিশুদ্ধ গণতান্ত্রিক’ কারবার কোনো সরকারের পক্ষে আর কী হতে পারে?
বাংলাদেশে কোনো গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা আছে এটা তো বলাই যাবে না, এমনকি এখানে কোনো দলীয় শাসন আছে এটা বলার মতো অবস্থাও নেই। কারণ প্রধানমন্ত্রী দেশটিকে পারিবারিক জমিদারি মনে করে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন। এজন্য তাদের দলের নেতাদের কাজ হল, প্রধানমন্ত্রীর সব বক্তব্যই তোতা পাখির মতো করে বলা। এক্ষেত্রে হাস্যকর হলেও তাদের ট্রাজিক ভূমিকা হল সভা-সমিতিতে, সংবাদ সম্মেলনে চোখ-মুখ নাচিয়ে শেখ হাসিনার চোঙা ফুঁকা। অবস্থা দেখে মনে হয় না যে, আওয়ামী জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো কার্যকর ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। তার সম্ভাবনা যে নেই, এটা মন্ত্রিসভার সদস্য থেকে নিয়ে তাদের দলীয় নেতাদের জো হুজুরগিরি থেকেই বোঝা যায়। কম বুদ্ধির লোকের অন্যদের পরামর্শ-উপদেশের প্রয়োজন বুদ্ধিওয়ালাদের থেকে বেশি। আওয়ামী লীগের দুর্ভাগ্য যে, সে সুযোগ থেকে দলটি সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান নির্বাচিত সরকার বেপরোয়াভাবে ফ্যাসিস্ট কায়দায় পরিচালিত হচ্ছে। ১৯ আগস্ট শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও মিছিলের ওপর যে পুলিশি হামলা হয়েছে, এটা ব্যতিক্রমী কোনো ব্যাপার নয়। সর্বক্ষেত্রে জনগণের আন্দোলনের বিরুদ্ধে এখন এভাবেই সরকারের ফ্যাসিস্ট হামলা হচ্ছে।
বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
শিক্ষা বিভাগের সরকারি কর্মচারীদের এ বক্তব্যে না হয় বোঝা গেল, কিন্তু তার জন্য আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার কী প্রয়োজন হল? তারা জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মতো লাঠিসোটা, ইটপাটকেল, এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মিছিলে আসেননি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আক্রমণ করাও তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। এই কর্মহীন, গরিব শিক্ষকরা দেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে নিজেদের স্মারকলিপি প্রদান করতে চেয়েছিলেন। কোনো গণতান্ত্রিক দেশেই এ ধরনের আন্দোলন, সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ নয়। তা হতে পারে না। কাজেই নির্বাচনের সময় যে প্রধানমন্ত্রীকে এসব শিক্ষকসহ অন্যদের কাছে ভোট ভিক্ষার জন্য যেতে হয়, তাদের নানা রকম প্রতিশ্র“তি দিতে হয়, তিনি গদিতে বসার পর শিক্ষকদের কাছ থেকে স্মারকলিপি পর্যন্ত গ্রহণ করার পরিবর্তে তাদের ওপর যখন পুলিশ দিয়ে হামলা চালান, তখন প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের চরিত্র বিষয়ে কার আর সন্দেহ থাকতে পারে? শিক্ষকরা দেশের জনগণের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলে সেটা গ্রহণ করাই তার কর্তব্য। সব থেকে ভালো হয়, গণতান্ত্রিক কায়দায় যদি প্রধানমন্ত্রী নিজে বের হয়ে এসে শিক্ষকদের সামনে দাঁড়িয়ে সরকারের কোনো অসুবিধা থাকলে সেটা ব্যাখ্যা করা এবং সাধ্যমতো তাদের চাকরির ব্যবস্থার কথা বলা। এটা সম্ভব না হলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে স্মারকলিপি শিক্ষকদের কাছ থেকে গ্রহণ করতে পারতেন। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবেই এ কাজ সম্পন্ন করা যেত। আসলে শিক্ষকরা তা-ই চেয়েছিলেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বা সরাসরি তার হাতে স্মারকলিপি দেয়ার কোনো দাবিও করেননি। এ অবস্থায় শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মিছিল করে গেলে রাষ্ট্র ও সরকার কীভাবে আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হতো, সেটা বোঝার কোনো উপায় নেই। কাজেই একে গদির গরম ছাড়া আর কীভাবে আখ্যায়িত করা যায়? এই গদির গরমে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ব্যক্তিরা কীভাবে জনগণ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন রাখেন এবং শুধু তাই নয়, জনগণের ওপর ফ্যাসিস্ট হামলা চালাতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করেন না- এটা বাংলাদেশে যেভাবে দেখা যায় সেটা কোনো প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেখা যাওয়ার কথা নয়। কিন্তু বাংলাদেশ প্রথম থেকেই এ ধরনের একটি শাসন ব্যবস্থার অধীনেই তার যাত্রা শুরু করেছে এবং প্রত্যেকটি নির্বাচিত ও অনির্বাচিত সরকার একই কায়দায় এই ঐতিহ্য রক্ষা করে এসেছে। ১৯ আগস্ট আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর সরকারি পুলিশের হামলা তারই একটি মামুলি উদাহরণ মাত্র।
প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের শাসকশ্রেণী ও সরকার এখন এমন ফ্যাসিস্ট চরিত্র পরিগ্রহ করেছে যাতে শুধু শিক্ষকরা কেন, কারও পক্ষেই সরকারি হামলার মুখে না পড়ে কোনো আন্দোলন করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশে এখন সভা-সমিতি, মিছিল কার্যত প্রায় নিষিদ্ধ বললেই চলে। ঢাকার মুক্তাঙ্গনের মতো জায়গায় এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালেও সভা-সমাবেশ করা যেত। কিন্তু তারপর থেকে মুক্তাঙ্গন সরকার কর্তৃক সভা-সমাবেশের জন্য নিষিদ্ধ হয়। বস্তুত এর দ্বারা ঢাকায় সভা-সমিতির জায়গা বলতে আর কিছুই রাখা হয়নি। পল্টন ময়দানের অবস্থা মুক্তাঙ্গনের মতোই। কাজেই এখন সভা-সমাবেশের জায়গা হয়েছে প্রেস ক্লাবের সামনে রাস্তার ওপর! এভাবেই বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট কায়দায় সরকার গণতান্ত্রিক শাসন চর্চা করছে!! এখানে শিক্ষকদের দাবির প্রসঙ্গে ফিরে এসে বলা দরকার যে, সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমন আইন করছে যে, কোনো শিক্ষক যদি সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলে বা আন্দোলন করে তাহলে তার এমপিওভুক্তি বাতিল করা হবে!!! এর থেকে ‘বিশুদ্ধ গণতান্ত্রিক’ কারবার কোনো সরকারের পক্ষে আর কী হতে পারে?
বাংলাদেশে কোনো গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা আছে এটা তো বলাই যাবে না, এমনকি এখানে কোনো দলীয় শাসন আছে এটা বলার মতো অবস্থাও নেই। কারণ প্রধানমন্ত্রী দেশটিকে পারিবারিক জমিদারি মনে করে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন। এজন্য তাদের দলের নেতাদের কাজ হল, প্রধানমন্ত্রীর সব বক্তব্যই তোতা পাখির মতো করে বলা। এক্ষেত্রে হাস্যকর হলেও তাদের ট্রাজিক ভূমিকা হল সভা-সমিতিতে, সংবাদ সম্মেলনে চোখ-মুখ নাচিয়ে শেখ হাসিনার চোঙা ফুঁকা। অবস্থা দেখে মনে হয় না যে, আওয়ামী জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো কার্যকর ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। তার সম্ভাবনা যে নেই, এটা মন্ত্রিসভার সদস্য থেকে নিয়ে তাদের দলীয় নেতাদের জো হুজুরগিরি থেকেই বোঝা যায়। কম বুদ্ধির লোকের অন্যদের পরামর্শ-উপদেশের প্রয়োজন বুদ্ধিওয়ালাদের থেকে বেশি। আওয়ামী লীগের দুর্ভাগ্য যে, সে সুযোগ থেকে দলটি সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান নির্বাচিত সরকার বেপরোয়াভাবে ফ্যাসিস্ট কায়দায় পরিচালিত হচ্ছে। ১৯ আগস্ট শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও মিছিলের ওপর যে পুলিশি হামলা হয়েছে, এটা ব্যতিক্রমী কোনো ব্যাপার নয়। সর্বক্ষেত্রে জনগণের আন্দোলনের বিরুদ্ধে এখন এভাবেই সরকারের ফ্যাসিস্ট হামলা হচ্ছে।
বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
No comments